হিন্দুস্তানে ইসলামের বিজয়ের কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ - ১
সমাজে সঠিক চেতনা সৃষ্টি করা
সমাজে সঠিক চেতনা সৃষ্টি করা
হিন্দুস্তান উপমহাদেশে ইসলামের বিজয়ের জন্য কিছু কার্যকরী পদক্ষেপের পরিকল্পনার ব্যপারে চিন্তা ভাবনা করার পর অনুভব হচ্ছে যে, সেই সময় বেশি দূরে নয় যখন দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে ইসলাম বিজয়ী হবে, বিশেষ করে মাজলুম মুসলমানরা মুক্তি পাবে। সে সময়টাকে নিকটবর্তী করার জন্যে আমরা কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করব ইংশাআল্লাহ।
১/ সঠিক চেতনা তাদের মধ্যে সৃষ্টি করা।
সঠিক অনুভূতি তাদের মধ্যে তৈরি করার ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় উদ্ধ্যেশ্যঃ-
প্রথমতঃ এ ভূখন্ডের বসবাসকারী প্রত্যেকটা মুসলমান উম্মাহর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করবে, এবং সেগুলোকে নিজের বাস্তব জীবনে বুঝার চেষ্টা করবে। উপমহাদেশের প্রত্যেকটা মুসলমানের এটা ভালো করে জানা থাকা উচিত যে,
এই ভূখন্ড এবং বসবাসকারী মুসলমানরা আজ এক নতুন জায়ানবাদী, ক্রুসেড ও হিন্দুত্ববাদী যুদ্ধের মুখোমুখি অবস্থান করছে। যা বিশ্ব ব্যপি ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধেরই একটা অংশ। এবং ইহাও ভাল করে জানা উচিত যে, এই উপমহাদেশের কোন একটি রাষ্ট্রও ইসলামী রাষ্ট্র নয়। শুধু সাংবিধানিক দৃষ্টিতেইই নয়, এবং বাস্তবিক কার্যক্রমের ভিত্তিতেও ইসলামী নয়। এবং এই বাস্তবতা অনুধাবন করার পর ফলাফল এটাও বের হবে যে, নির্বাচন বা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়ে ক্ষমতার পালা বদলের মাধ্যেম ইসলামী হুকুমাত ফিরে আসবে না। কারণ প্রথমে সেই ভিত্তিকেই (গণতন্ত্র) নির্মূল করতে হবে। যার উপর এই ভূখন্ডের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত। কেননা ইহাই ইসলামের ধ্বংশকারী।
তাই সর্বপ্রথম এই আহবান নিয়েই দাঁড়ানো আবশ্যক যে, বাংলাদেশ সহ সকল ভুখন্ডে শরিয়াতের বিধি-বিধানই প্রতিষ্ঠিত হবে। যা হবে সমস্ত পরিবর্তন-পরিবর্ধন থেকে মুক্ত। তাতে কোন কিছু বাতিল বা বাদ দেয়া সম্ভব নয়। এবং এই সংবিধানের জন্য জনগণের ভোটেরও কোন প্রয়োজন নেই। বরং ইহা অধিকাংশের গ্রহন-বর্জন এবং সমস্ত মানব-রচিত সংবধান ও নিয়মের থেকে পবিত্র। যে ফায়সালা ইহার বিপরীত হবে, মৌলিক ভাবেই তা বাতিল বলে গন্য হবে। এই বিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এমন মৌলিক নিতিমালা বাস্তবায়ন করবে যার মধ্যে কোন ধরনের বিরোধীতা করা সম্ভব নয়। বরং এই আইনগূলো রাস্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে সমস্ত বিধি-নিষেধের উপর বিজয়ী থাকবে। এবং শরিয়াহ এর এই আল্লাহ প্রদত্ব বিধানগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য যে সকল কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক, তা সবই গ্রহন করতে হবে। সাথে সাথে ইহার জন্যে উলামায়ে কেরাম ও দ্বীনের দায়ীদের থেকেও পরামর্শ নেয়া উচিত হবে।
এমনি ভাবে উপমহাদের মুসলমানদেরকে ইহাও ভাল ভাবে বুঝতে হবে যে, ইসলামী হুকুমাত বাস্তবায়ন ধর্মনিরপেক্ষ, সেকুলার এবং শরিয়াতের বিরোধীতাকারী ব্যক্তিরা কখনই পারবে না। বরং এই ফরজ তো ঐ ব্যাক্তিদের হাতেই বাস্তবায়িত হবে, যারা ইসলাম, নেক বন্দেগী, আমানত এবং তাক্বওয়ার গুণাবলীতে পরিপূর্ণ গুণান্নিত হবে। কারণ আল্লাহর দ্বীনের বাস্তবায়ন তো একটি ইবাদাত এবং বড় একটি আমানত। যাকে আদায় করা শুধু ঐ ব্যাক্তিদের পক্ষেই সম্ভব যে মুখলিস ও পূর্ন শরিয়াতের অনুসারী। কিন্তু ঐ সমস্ত ব্যাক্তিরা যাদের কথা বলার; যাদের কথা বলার জন্যে ইসলাম বা শরিয়াতের অনুযায়ী হওয়া শর্ত থাকে না, বরং স্পষ্ট ভাবে বিক্ষিপ্ত চিন্তাধারার গ্রহন করে, তাদেরকে এই ভূখন্ডে ইসলামী শাষন বাস্তবায়নের জিম্মাদারি দেয়ার চিন্তাই বা কি ভাবে করা যায়?
এই বিষয়টা বাস্তবায়নের জন্য জরুরী হচ্ছে, দ্বীনী ও শরয়ী ইলম শিক্ষা দানকারী মাদ্রাসা সমূহে এমন নিসাব প্রণয়ন করা যার মাধ্যমে শিক্ষা সমাপ্তকারী উলামায়ে কেরামগণ কাজী ওকিল এবং ইসলামী বিধিবিধানে দক্ষ হয়ে শরয়ী বিচারালয়, শরয়ী ওকালাত, গবেষণা ও ফতোয়া প্রদান এবং বিচার কার্যের সাথে সম্পর্কিত সকল কিছুই আঞ্জাম দিতে পারবেন।
প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যাক্তিই এখানে একটি প্রশ্ন তোলবে যে, এই সবগুলোই কি মৌলিক পরিবর্তন এবং সর্বোচ্চ বিপ্লবী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা ছাড়াই কি সম্ভব হবে?
ইতিহাসের পাঠ থেকে জানা যায় যে, যখন মানুষের সমাজে এবং গোত্রের মধ্যে সমস্যা একেবারে গোড়া পর্যন্ত পৌছে যায় এবং এলাকার সর্বক্ষেত্রেই ফাসাদ ছড়িয়ে পরে, তাহলে সামগ্রিক ভাবে বড় কোন বিপ্লব সংঘঠিত হওয়া ছাড়া অবস্থার সংশোধন সম্ভব হয় না।
উম্মাহর এই কঠিন মুহুর্তে এমন কোন বিষয় কি দৃষ্টিগোচর হচ্ছে যার ফলে সশস্ত্র বিপ্লব ছাড়াই বিশ্বব্যাপী ক্রুসেডার শক্তিগুলো এবং তাদের বন্ধু ত্বাগুত সরকারগুলো কি গ্রেফতার হওয়া মুসলিমদেরকে ছেড়ে দিবে? এবং তাদেরকে হটানোর জন্যে বড় কোন শক্তিশালী আক্রমন বা প্রতিরোধের প্রয়োজন পড়বে না ?!!!
দ্বিতীয়ত: এসমস্ত চেতনা ও অনুভূতি সমাজে ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে করে উদ্দ্যেশিত পরিবর্তন আনার জন্য একটি গণবিপ্লব বাস্তবায়িত হয়। যাহা হবে শরিয়াতের গভীর ইলম ও বর্তমান সময়ের বাস্তবতা বুঝের সঠিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। এবং তা অন্যান্য আন্দোলনরত দলের মত প্রেস কনফারেন্স বা রাজনৈতিক মঞ্চসমূহের মাটি আচড়িয়ে বেড়াবে না।
Comment