Originally posted by karimul islam
View Post
বড়দের সমালোচনার ব্যাপারে কিছু আলোচনা ইতিপূর্বে ফোরামে হয়েছে। ভাইদের উচিৎ তখনকার বিষয়গুলো স্মরণ রাখা।
শুধু হিন্দুস্তানী আকাবির বলেই কথা নয়, যে কোন আলেমের ভুলের সমালোচনার ক্ষেত্রেই মনে রাখা উচিৎ:
১. ভুলের সমালোচনা আর উক্ত ভুলের শিকার ইমাম, আকাবির বা আলেমের সমালোচনা এক নয়। ভুলের সমালোচনা করতে গিয়ে অহেতুক ব্যক্তির উপর আক্রমণ না করা চাই। কারণ স্বীকৃত ইমাম বা আকাবিরগণ কিছু বললে সাধারণত দলীল ছাড়া বলেন না। তাই উক্ত দলীল চিণ্হিত করে তা পর্যালোচনা করে প্রমাণ করা চাই যে, এ মাসআলায় তিনি যে মত দিয়েছেন তা সঠিক নয়। দলীল পর্যালোচনা না করে ব্যক্তির সমালোচনা উচিৎ নয়। হতে পারে তিনি উক্ত ভুল মাসআলার কারণেও আল্লাহ তাআলার কাছে মাহবুব হযেছেন, প্রতিদান পেয়েছেন; আর আমি অহেতুক তার ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করে আল্লাহ তাআলাকে নারাজ করেছি।
২. সাধারণত সকল ইমামেরই কিছু না কিছু মাসআলায় ভুল বিচ্যুতি থাকে। এ কারণে তাকে পরিত্যাগ করে দেয়া যায় না। কেননা, তাহলে আমাদের সামনে অনুসরণ করার মত কাউকেই আর সহীহ সালেম পাবো না। ইমাম যাহাবী রহ. এর উক্তি এ ব্যাপারে প্রসিদ্ধ।
৩. উক্ত ভুল বিচ্যুতি কি দলীল বুঝার ভুলের কারণে না’কি খাহেশাত প্রবণতার কারণে তা দেখা উচিৎ। যারা ন্যায়-নিষ্ট মুখলিছ হিসেবে স্বীকৃত তারা সাধারণত দলীল প্রমাণের আলোকেই কথা বলে থাকেন, খাহেশাতের কারণে নয়। কাজেই তাদের সমালোচনা দলীলভিত্তিক হতে হবে। দলীলের খণ্ডন দলীল দিয়ে করতে হবে। অহেতুক তাদের ব্যক্তি সমালোচনা শরীয়তের দৃষ্টিতেও যেমন বৈধ নয়, দাওয়াতের কাজেও ফলপ্রসু নয়। আর জুলুম আল্লাহ তাআলা সহ্য করেন না।
৪. কোন কোন আলেমের ভুলকে সুবিধাবাদি লোকেরা দলীল বানিয়ে নেয়। তখন সুবিধাবাদিদের সমালোচনা করতে গিয়ে উক্ত আলেমেরও অহেতুক সমালোচনা করা হয়। এটা উচিৎ নয়। যেমনটা আবু হানিফা রহ. এবং ইবনে তাইমিয়া রহ. বেলায় ঘটছে।
৫. কয়েক ক্ষেত্রে কিছু ভুলের কারণে আহলে সুন্নত থেকেও বের হযে যায় না, সলফ থেকেও বিচ্যুত গণ্য করা হয় না। দু’চার জায়গায় ভুল করলেও শত হাজারো মাসআলায় হয়তো তিনি সহীহ শরয়ী সমাধান দিয়ে গেছেন।
৬. মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। মানবীয় দুর্বলতা এবং পরিবেশ-পরিস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়া থেকেও মুক্ত নয়। সকলের তবিয়তও একরকম নয়। এসব কারণে মাসআলাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। একেজনের কাছে যেটা ফরয আরেকজনের কাছে সেটা হারাম সাব্যস্ত হয়। কাজেই ইজতিহাদি মাসআলায় কারো সমালোচনা না করা চাই। শাসকদের তাকফীর একটা ইজতিহাদি মাসআলা। কারো বুঝে না আসলে তার সমালোচনা না করা চাই। তিনি যে দলীল পেশ করেন কিংবা যে সন্দেহ প্রকাশ করেন তার সহীহ সমাধান দিই। তার ব্যক্তি সমালোচনায় না যাই। তবে সুস্পষ্ট শরীয়তের খেলাফ যার অবস্থান হবে তার কথা ভিন্ন।
৭. ছোট মুখে বড় কথা মানায় না। বড়রা বড়দের সমালোচনা যেভাবে করতে পারেন, আমরা ছোটরা সেভাবে করাটা শোভনীয় নয়। এতে ফায়েদা হওয়ার পরিবর্তে সমালোচনাকারী নিজেই সমালোচিত হয়ে পড়ে। তথন তার কথার তেমন কোন মূল্য থাকে না।
.................................................. ................
এ কয়টা কথা দলীল প্রমাণ উল্লেখ ছাড়াই বললাম। তবে কথাগুলো দলীল ছাড়া নয়। দলীল উল্লেখ করতে গেলে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে তাই উল্লেখ করা হলো না। তাছাড়া এটা কোন স্বতন্ত্র আলোচনাও না। তাই উল্লেখ করলাম না। শুধু পয়েন্ট আকারে কয়েকটা মূলনীতি উল্লেখ করলাম। =============================
এবার karimul islam ভাইয়ের কমেন্টের ব্যাপারে কয়েকটা কথা বলি।
* ভাই, আপনি ভুল আর দোষকে এক করে ফেলেছেন। নিশ্চয়ই দু’টা এক নয়।
* আলোচনা আরো মার্জিত হওয়া চাই।
* ফোরাম খোলাই হয়েছে দাওয়াহ’র জন্য। নামই দেয়া হয়েছে, ‘দাওয়াহ ইলাল্লাহ’।
* (তাদের নোংড়া মতবাদ) কথাটা কতটা নোংড়া তা ভেবে দেখা উচিৎ ছিল।
Comment