কিছু উলামায়ে সু বিভিন্নভাবে মুয়াহহিদদের আক্বীদা বিশ্বাস ভ্রান্ত প্রমান করে তাগুতদের সন্তুষ্ট করার মতো হীন কাজে লিপ্ত।তাদের বিভ্রন্তিকর উক্তিগুলোর একটি হলো বর্তমান আলোচনার
বিষয়বস্তু।তারা দাবি করে "আল্লাহর রাসুল আব্দুল্লাহ বিন
উবাইয়ের মতো মুনাফিকের সাথেও যুদ্ধ করেননি তাহলে কিভাবে
বর্তমান শাসকদের সাথে যুদ্ধ করা যায়"
"জঙ্গিরা কোরআনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে গোমরাহ করছে জঙ্গিরা বলে
يا ايها النبي جاهد الكفار والمنافقينআল্লাহ এ আয়াতে কাফেরদের
সাথে যুদ্ধের ও মুনাফিকের সাথে যুদ্ধের কথা একই আয়াতে বলেছেন
সুতরাং মুনাফিকের সাথেও যুদ্ধ করতে হবে কিন্তু জঙ্গিরা কোরআনের ব্যাখ্যা
বুঝেনা রাসুল জীবনে কখনো মুনাফিকের সাথে যুদ্ধ করেননি সুতরাং তাদের
সাথে যুদ্ধ করার অর্থ হলো তাদের সাথে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা
খন্ডনের জন্য দলীল পেশ করা।"
এ জঙ্গির পক্ষ থেকে তাদের উপরোল্লেখিত কথাগুলোর উত্তর দেওয়া হচ্ছে কয়েকটি পয়েন্টে
প্রথমত:মুনাফিক দুই প্রকার।বিশ্বাসগত দিক থেকে মুনাফিক ও আমলগত
দিক থেকে মুনাফিক।আমলগত দিক থেকে মুনাফিক হলো নেফাক সম্পর্কে
বর্নিত আলামত সমূহের কোন একটি যদি তার মাঝে প্রকাশ পায়।
যে আলামতগুলো হাদিসে বর্নিত হয়েছে।যেমন যখন কথা বলে মিথ্যা বলে
ইত্যাদি।আর বিশ্বাসগত দিক থেকে মুনাফিক বলে ঐ ব্যক্তিকে যে অন্তরে
কুফর গোপন রেখে বাহ্যিকভাবে নিজেকে মুসলিম রূপে পরিচয় দেয়।
২ প্রকার মুনাফিকের সংঙ্গা থেকেই স্পষ্টভাবে বুঝে আসে যে,
আক্বীদগত মুনাফিক মুলত কাফের।কেননা,সে ইমানের ৩ রোকনের একটি
আদায় করেনি। তা হলো অন্তরে বিশ্বাস করা।আর কোন জিনিসের
রোকন কেউ আদায় না করলে তার ঐকাজ গ্রহণযোগ্য নয়
যেমন নামাজের একটি রোকন হলো সিজদা করা এখন কেউ সিজদা না
করলে তার নামাজই হবেনা।আর আলমের দিক থেকে মুনাফিক মুলত
ফাসেকের পর্যায়ে। সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়না।কিন্তু
আক্বীদাগত মুনাফিক মুমিন নয়।সুতরাং আমরা আক্বীদাগত মুনাফিকের
সাথে যুদ্ধ করাকে রাসুলের আনীত দ্বীন বলে বিশ্বাস করি।
আক্বীদাগত মুনাফিক কাফের হওয়ার দলীল:আল্লাহ তায়ালা আব্দুল্লাহ
ইবনে উবাইয়ের মতো মুনাফিকদের ব্যাপারে একটি আয়াত নাযিল করেন রাসুল তাকে দাফন করার পরে
আল্লাহ তায়ালা রাসুলকে লক্ষ্য করে বলেন(আয়াতটি কেয়ামত পর্যন্ত প্রযোজ্য,রহিত নয়)
ولا تصل علي أحد منهم مات أبدا ولا تقم علي قبره انهم كفروا بالله و رسوله
وماتوا وهم فاسقون অর্থাৎ আপনি এ সমস্ত মুনাফিকদের কারো জানাযায় কখনো
শরীক হবেন না ও তাদের কবরের পাশে(দাফন ও মাগফিরাতের) জন্য দাড়াবেন না
(কেননা)তারা আল্লাহ ও তার রাসুলের সাথে কুফরী করেছে ও কাফের অবস্থায়
ইন্তেকাল করেছে।সুরা তাওবা ৮৪ নং আয়াত।এ আয়াতের শানে নুযুল বোখারীতে
বর্নিত আছে এটি আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযায় শরীক হওয়ার পরে
রাসুলকে এমন মুনাফিকদের জানাযায় শরীক হওয়া থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
(হাদিসটি দীর্ঘ হওয়ার কারনে উল্লেখ করা হলোনা)।বুখারী শরীফ হাদিস নং
৪৪৮৩,৪৪৮৪,৪৪৮৫।
এ সংক্রান্ত আরো দলীল আছে সংক্ষিপ্ততার জন্য একটা দিলাম।
এ আয়াতে আল্লাহ এ মুনাফিকদেরব্যাপারে বলছেন,তারা আল্লাহ ও তার
রাসুলের সাথে কুফরী করেছে।সুতরাং আক্বীদাগত মুনাফিক ও কাফেরদের
একটা অংশ।তাদের সাথে যুদ্ধ করা যায়।
আকেরটি দলীল তাদের কাফের হওয়ার ব্যাপারে।সুরা মুনাফিকের১ নং আয়াত
এখানে বলা হয়েছে "যখন মুনাফিকরা আপনার কাছে আসে তখন তারা
বলে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি অবশ্যইআল্লাহর রাসুল। আল্লাহ ও জানেন
আপনি নিশ্চয়ই তার রাসুল আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন নিশ্চয়ই মুনাফিকরা
মিথ্যাবাদী।এখানে আল্লাহ মুনাফিকদের এ কথা আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি
এ ব্যাপারেতাদেরকে মিথ্যাবাদী ঘোষনা করেছেনএটা সবাইই জানে যে,
আল্লাহর রাসুলকে রাসুল বলে স্বীকার না করলে সে মুমিন নয়।
এখানে তাদের সাক্ষীর ক্ষেত্রে তাদেরকে মিথ্যাবাদী ঘোষনাকরেছেন আল্লাহ
তায়ালা।সুতরাং এ সাক্ষ্য বাতিল ও তারা মুহাম্মদ সাঃ কে রাসুল
সাক্ষী না দেওয়ার কারনে কাফের।
এ সুরারই ৩ নং আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে"এটা এ কারনে যে,তারা ইমান আনার পরে কুফরী করেছে তাই তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেওয়া হয়েছে"।
সুরা মুনাফিকুন ৩ নং আয়াত।এ আয়াত থেকে স্পষ্টই বুঝা যায় আব্দুল্লাহ বিন উবাই
ও তার সহচররা কাফের ছিল।
সুতরাং আমরা কাফেরদের ও মুর্তাদদের সাথেই যুদ্ধ করছি মুসলিমদের সাথে
বা আমলগত মুনাফিকদের সাথে নয়।
দ্বিতীয়ত:মুনাফিকের সংঙ্গায় লিখা আছে যারা বাহ্যিকভাবে ইমান প্রকাশ করে
কিন্তু আমাদের শাসকদের অবস্থা তাদের থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন।তারা প্রকাশ্যে কুফরীতে লিপ্ত।
যেমন আল্লাহর শরীয়তকে বাতিল করে নিজেরা শরীয়ত প্রনয়ন করে
নিজেদেরকে আল্লাহর আসনে বসানো।
এটা স্পষ্ট কুফরী।সুরা তাওবার ৩১ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় তিরমিজি শরীফে
হাসান সনদে বর্নিত হাদিসটি দেখে নিলেই এ বিষয়টা যে কুফরী তা স্পষ্টভাবে
বুঝে আসে।আর যে শাসক থেকে স্পষ্ট কুফরীপাওয়া যায় তার সাথে
যুদ্ধ করা ফরজ রাসুলের সুন্নাহ অনুযায়ী।ওবাদা ইবনে সামিত রাযি থেকে
বর্নিত তবে তোমরা শাসকদের থেকে স্পষ্ট কুফরীপেলে যে কুফরীর ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলীল রয়েছে যুদ্ধ করবে (হাদিসের শেষাংশ)
বুখারীশরীফ হাদিস নং ৬৭৭৯।
সুতরাং আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল আছে তাদের মাঝে এমন স্পষ্ট কুফর (নিজের
হাতে আইন রচনা করা আল্লাহরটাকে বর্বর আইন বলা ইত্যাদি) পাওয়ার কারনেই যুদ্ধ করছি।
মুসলিমদের সাথে নয়।
তৃতীয়ত:তাদের এটা বুঝা উচিত যে রাসুলের সিআইডি
হোযায়ফা রাযি থেকে বর্নিত আছে,
তিনি বলেছেন,নেফাক ছিল রাসুলের যুগে
আর বর্তমানে তা হলো ইমান আনার পরে
কুফরী। বুখারী শরীফ ৬৮৩১ নং হাদিস।
সুতরাং বর্তমানে মুনাফিক নাই হয়তো মুমিন
নয়তো কাফের।
এটির কারন হিসেবে তার থেকে বর্নিত আরেকটি হাদিস"আজকের যমানার মুনাফিকরা নবীজীর জমানার মুনাফিকদের থেকে জঘন্য।তারা ঐসময় গোপন করতো(কুফরী) আর বর্তমানে তারা প্রকাশ্যে
(কুফরী) করছে।
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় কুফরী প্রকাশ
না করে গোপন করলে তা হলো নেফাক।
আর ঐ সময় তার সাথে যুদ্ধ করাও সম্ভব নয়।কারন তার অন্তর কেটে এটা দেখার জন্য আমরা দায়বদ্ধ নয় যে,তার অন্তরে সে কুফরী গোপন রেখেছে।
কিন্তু যখন প্রকাশ্যে কুফরী করবে তখন তার সাথে যুদ্ধ করতে হবে।তখন তার
আর কাফেরের মাঝে কোন তফাৎ থাকবেনা
তবে এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে,কুফরী স্পষ্ট হওয়ার পরেও তাকে মুনাফিক বলা যাবে।
আর কুরআনে যতস্থানে মুনাফিক আছে
এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আক্বীদাগত মুনাফিক।কিন্তু তারা কাফের। কাফের আর তাদের মাঝে তফাৎ নাই।সুরা মুনাফিকের ১ নং আয়াতের প্রতি মনোযোগ দিন সহজেই
বুঝবেন যে,আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক বলেছেন আবার তাদের ব্যাপারে বলেছেন
রাসুলকে রাসুল বলে তারা যে সাক্ষ্য দিচ্ছে
এটা মিথ্যা(আর এ কারনে কাফের যেহেতু রাসুলকে রাসুল বলে বিশ্বাস না কররলে কাফের)সুতরাং একই আয়াতে আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক ও বলেছেন আর তাদের কাফের হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
চতুর্থত :তাহলে মুনাফিকদের সাথে জিহাদ করার অর্থ কি?আর কেন রাসুল সাঃ
তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন না?
আয়াতটিতে আল্লাহ কাফের ও মুনাফিক ২ গ্রুপের বিরুদ্ধেই যুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন।
আর এখানে মুনাফিক দ্বারা উদ্দেশ্য
আক্বীদাগত মুনাফিক ও তাদের সাথেও তরবারী দ্বারাই জিহাদ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন আসে তাহলে আল্লাহ কেন
এখানে মুনাফিকদের কথাও আনলেন শুধু
কাফেরদের কথা আনলেই তো পারতেন।যেহেতু তারাও কাফেরদের একটা অংশ।
এর উত্তর হলো মুনাফিক কাফেরই কিন্তু
সে যেহেতু আগে তার কুফরীটা গোপন করেছে তাই আসল কাফের ও তার মাঝে
একটু প্রার্থক্য হয়ে গেছে সে কুফরী গোপন রাখার কারনে (যদিও পরে প্রকাশ হয়ে গেছে)আর আসল কাফের শুরুতেই প্রকাশ্যে কুফরী করে আসছে।এতটুকু প্রার্থক্যের জন্য আল্লাহ ২ গ্রুপের কথাই স্পষ্ট করে বলেছেন।
এখন বাকি রইল,কেন রাসুল (সাঃ)তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন না।
এটি রাসুলের হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্ট।
রাসুল উমরকে বলেছেন যখন তিনি আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে হত্যা করার অনুমতি চেয়েছেন তাকে ছেড়ে দাও যেন কাফেররা একথা বলতে না পারে মুহাম্মদ
সাঃ তার সাথীদেরকে হত্যা করেছেন।(দীর্ঘ
হাদিসের শেষাংষ)।বুখারী শরীফ হাদিস নং
৪৭১৬,৪৭১৮
হাদিসের অনেক কিতাবে ও বুখারীতে ও আরো কয়েক জায়গায় হাদিসটা আছে।
সুতরাং রাসুল সাঃ তাদেরকে হত্যা না করার
একটা কারন উল্লেখ করেছেন।এ কারনে নিষেধ করেননি যে,তাদেরকে হত্যা করা জায়েয নাই।এমন হলে নবীজী উমরকে বলতেন,তাকে তুমি কিভাবে হত্যা করবে এটা তো হারাম যেমনিভাবে তিনি খালেদ ও ওসামকে তিরষ্কার করেছিলেন।কারন এটা কোন নববীর জন্যই সম্ভব নয় তার সামনে তার সঙ্গীরা খারাপ কাজ করতে ইচ্ছা করবে আর তিনি তা স্পষ্ট করে নিষেধ করবেন না।
সুতরাং এ থেকেই বুঝা যায় তাদের হত্যা করা যাবে কিন্তু রাসুল একটা কারনে হত্যা করেননি।আর বর্তমানে এ আশংকা নেই
তাই তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
আর আমরা তাদেরকে মুনাফিক বলে যুদ্ধ করিনা মুর্তাদ বলে যুদ্ধ করি এটিই মূল।
বিষয়বস্তু।তারা দাবি করে "আল্লাহর রাসুল আব্দুল্লাহ বিন
উবাইয়ের মতো মুনাফিকের সাথেও যুদ্ধ করেননি তাহলে কিভাবে
বর্তমান শাসকদের সাথে যুদ্ধ করা যায়"
"জঙ্গিরা কোরআনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে গোমরাহ করছে জঙ্গিরা বলে
يا ايها النبي جاهد الكفار والمنافقينআল্লাহ এ আয়াতে কাফেরদের
সাথে যুদ্ধের ও মুনাফিকের সাথে যুদ্ধের কথা একই আয়াতে বলেছেন
সুতরাং মুনাফিকের সাথেও যুদ্ধ করতে হবে কিন্তু জঙ্গিরা কোরআনের ব্যাখ্যা
বুঝেনা রাসুল জীবনে কখনো মুনাফিকের সাথে যুদ্ধ করেননি সুতরাং তাদের
সাথে যুদ্ধ করার অর্থ হলো তাদের সাথে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা
খন্ডনের জন্য দলীল পেশ করা।"
এ জঙ্গির পক্ষ থেকে তাদের উপরোল্লেখিত কথাগুলোর উত্তর দেওয়া হচ্ছে কয়েকটি পয়েন্টে
প্রথমত:মুনাফিক দুই প্রকার।বিশ্বাসগত দিক থেকে মুনাফিক ও আমলগত
দিক থেকে মুনাফিক।আমলগত দিক থেকে মুনাফিক হলো নেফাক সম্পর্কে
বর্নিত আলামত সমূহের কোন একটি যদি তার মাঝে প্রকাশ পায়।
যে আলামতগুলো হাদিসে বর্নিত হয়েছে।যেমন যখন কথা বলে মিথ্যা বলে
ইত্যাদি।আর বিশ্বাসগত দিক থেকে মুনাফিক বলে ঐ ব্যক্তিকে যে অন্তরে
কুফর গোপন রেখে বাহ্যিকভাবে নিজেকে মুসলিম রূপে পরিচয় দেয়।
২ প্রকার মুনাফিকের সংঙ্গা থেকেই স্পষ্টভাবে বুঝে আসে যে,
আক্বীদগত মুনাফিক মুলত কাফের।কেননা,সে ইমানের ৩ রোকনের একটি
আদায় করেনি। তা হলো অন্তরে বিশ্বাস করা।আর কোন জিনিসের
রোকন কেউ আদায় না করলে তার ঐকাজ গ্রহণযোগ্য নয়
যেমন নামাজের একটি রোকন হলো সিজদা করা এখন কেউ সিজদা না
করলে তার নামাজই হবেনা।আর আলমের দিক থেকে মুনাফিক মুলত
ফাসেকের পর্যায়ে। সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়না।কিন্তু
আক্বীদাগত মুনাফিক মুমিন নয়।সুতরাং আমরা আক্বীদাগত মুনাফিকের
সাথে যুদ্ধ করাকে রাসুলের আনীত দ্বীন বলে বিশ্বাস করি।
আক্বীদাগত মুনাফিক কাফের হওয়ার দলীল:আল্লাহ তায়ালা আব্দুল্লাহ
ইবনে উবাইয়ের মতো মুনাফিকদের ব্যাপারে একটি আয়াত নাযিল করেন রাসুল তাকে দাফন করার পরে
আল্লাহ তায়ালা রাসুলকে লক্ষ্য করে বলেন(আয়াতটি কেয়ামত পর্যন্ত প্রযোজ্য,রহিত নয়)
ولا تصل علي أحد منهم مات أبدا ولا تقم علي قبره انهم كفروا بالله و رسوله
وماتوا وهم فاسقون অর্থাৎ আপনি এ সমস্ত মুনাফিকদের কারো জানাযায় কখনো
শরীক হবেন না ও তাদের কবরের পাশে(দাফন ও মাগফিরাতের) জন্য দাড়াবেন না
(কেননা)তারা আল্লাহ ও তার রাসুলের সাথে কুফরী করেছে ও কাফের অবস্থায়
ইন্তেকাল করেছে।সুরা তাওবা ৮৪ নং আয়াত।এ আয়াতের শানে নুযুল বোখারীতে
বর্নিত আছে এটি আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযায় শরীক হওয়ার পরে
রাসুলকে এমন মুনাফিকদের জানাযায় শরীক হওয়া থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
(হাদিসটি দীর্ঘ হওয়ার কারনে উল্লেখ করা হলোনা)।বুখারী শরীফ হাদিস নং
৪৪৮৩,৪৪৮৪,৪৪৮৫।
এ সংক্রান্ত আরো দলীল আছে সংক্ষিপ্ততার জন্য একটা দিলাম।
এ আয়াতে আল্লাহ এ মুনাফিকদেরব্যাপারে বলছেন,তারা আল্লাহ ও তার
রাসুলের সাথে কুফরী করেছে।সুতরাং আক্বীদাগত মুনাফিক ও কাফেরদের
একটা অংশ।তাদের সাথে যুদ্ধ করা যায়।
আকেরটি দলীল তাদের কাফের হওয়ার ব্যাপারে।সুরা মুনাফিকের১ নং আয়াত
এখানে বলা হয়েছে "যখন মুনাফিকরা আপনার কাছে আসে তখন তারা
বলে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি অবশ্যইআল্লাহর রাসুল। আল্লাহ ও জানেন
আপনি নিশ্চয়ই তার রাসুল আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন নিশ্চয়ই মুনাফিকরা
মিথ্যাবাদী।এখানে আল্লাহ মুনাফিকদের এ কথা আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি
এ ব্যাপারেতাদেরকে মিথ্যাবাদী ঘোষনা করেছেনএটা সবাইই জানে যে,
আল্লাহর রাসুলকে রাসুল বলে স্বীকার না করলে সে মুমিন নয়।
এখানে তাদের সাক্ষীর ক্ষেত্রে তাদেরকে মিথ্যাবাদী ঘোষনাকরেছেন আল্লাহ
তায়ালা।সুতরাং এ সাক্ষ্য বাতিল ও তারা মুহাম্মদ সাঃ কে রাসুল
সাক্ষী না দেওয়ার কারনে কাফের।
এ সুরারই ৩ নং আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে"এটা এ কারনে যে,তারা ইমান আনার পরে কুফরী করেছে তাই তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেওয়া হয়েছে"।
সুরা মুনাফিকুন ৩ নং আয়াত।এ আয়াত থেকে স্পষ্টই বুঝা যায় আব্দুল্লাহ বিন উবাই
ও তার সহচররা কাফের ছিল।
সুতরাং আমরা কাফেরদের ও মুর্তাদদের সাথেই যুদ্ধ করছি মুসলিমদের সাথে
বা আমলগত মুনাফিকদের সাথে নয়।
দ্বিতীয়ত:মুনাফিকের সংঙ্গায় লিখা আছে যারা বাহ্যিকভাবে ইমান প্রকাশ করে
কিন্তু আমাদের শাসকদের অবস্থা তাদের থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন।তারা প্রকাশ্যে কুফরীতে লিপ্ত।
যেমন আল্লাহর শরীয়তকে বাতিল করে নিজেরা শরীয়ত প্রনয়ন করে
নিজেদেরকে আল্লাহর আসনে বসানো।
এটা স্পষ্ট কুফরী।সুরা তাওবার ৩১ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় তিরমিজি শরীফে
হাসান সনদে বর্নিত হাদিসটি দেখে নিলেই এ বিষয়টা যে কুফরী তা স্পষ্টভাবে
বুঝে আসে।আর যে শাসক থেকে স্পষ্ট কুফরীপাওয়া যায় তার সাথে
যুদ্ধ করা ফরজ রাসুলের সুন্নাহ অনুযায়ী।ওবাদা ইবনে সামিত রাযি থেকে
বর্নিত তবে তোমরা শাসকদের থেকে স্পষ্ট কুফরীপেলে যে কুফরীর ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে দলীল রয়েছে যুদ্ধ করবে (হাদিসের শেষাংশ)
বুখারীশরীফ হাদিস নং ৬৭৭৯।
সুতরাং আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল আছে তাদের মাঝে এমন স্পষ্ট কুফর (নিজের
হাতে আইন রচনা করা আল্লাহরটাকে বর্বর আইন বলা ইত্যাদি) পাওয়ার কারনেই যুদ্ধ করছি।
মুসলিমদের সাথে নয়।
তৃতীয়ত:তাদের এটা বুঝা উচিত যে রাসুলের সিআইডি
হোযায়ফা রাযি থেকে বর্নিত আছে,
তিনি বলেছেন,নেফাক ছিল রাসুলের যুগে
আর বর্তমানে তা হলো ইমান আনার পরে
কুফরী। বুখারী শরীফ ৬৮৩১ নং হাদিস।
সুতরাং বর্তমানে মুনাফিক নাই হয়তো মুমিন
নয়তো কাফের।
এটির কারন হিসেবে তার থেকে বর্নিত আরেকটি হাদিস"আজকের যমানার মুনাফিকরা নবীজীর জমানার মুনাফিকদের থেকে জঘন্য।তারা ঐসময় গোপন করতো(কুফরী) আর বর্তমানে তারা প্রকাশ্যে
(কুফরী) করছে।
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় কুফরী প্রকাশ
না করে গোপন করলে তা হলো নেফাক।
আর ঐ সময় তার সাথে যুদ্ধ করাও সম্ভব নয়।কারন তার অন্তর কেটে এটা দেখার জন্য আমরা দায়বদ্ধ নয় যে,তার অন্তরে সে কুফরী গোপন রেখেছে।
কিন্তু যখন প্রকাশ্যে কুফরী করবে তখন তার সাথে যুদ্ধ করতে হবে।তখন তার
আর কাফেরের মাঝে কোন তফাৎ থাকবেনা
তবে এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে,কুফরী স্পষ্ট হওয়ার পরেও তাকে মুনাফিক বলা যাবে।
আর কুরআনে যতস্থানে মুনাফিক আছে
এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আক্বীদাগত মুনাফিক।কিন্তু তারা কাফের। কাফের আর তাদের মাঝে তফাৎ নাই।সুরা মুনাফিকের ১ নং আয়াতের প্রতি মনোযোগ দিন সহজেই
বুঝবেন যে,আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক বলেছেন আবার তাদের ব্যাপারে বলেছেন
রাসুলকে রাসুল বলে তারা যে সাক্ষ্য দিচ্ছে
এটা মিথ্যা(আর এ কারনে কাফের যেহেতু রাসুলকে রাসুল বলে বিশ্বাস না কররলে কাফের)সুতরাং একই আয়াতে আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক ও বলেছেন আর তাদের কাফের হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
চতুর্থত :তাহলে মুনাফিকদের সাথে জিহাদ করার অর্থ কি?আর কেন রাসুল সাঃ
তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন না?
আয়াতটিতে আল্লাহ কাফের ও মুনাফিক ২ গ্রুপের বিরুদ্ধেই যুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন।
আর এখানে মুনাফিক দ্বারা উদ্দেশ্য
আক্বীদাগত মুনাফিক ও তাদের সাথেও তরবারী দ্বারাই জিহাদ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন আসে তাহলে আল্লাহ কেন
এখানে মুনাফিকদের কথাও আনলেন শুধু
কাফেরদের কথা আনলেই তো পারতেন।যেহেতু তারাও কাফেরদের একটা অংশ।
এর উত্তর হলো মুনাফিক কাফেরই কিন্তু
সে যেহেতু আগে তার কুফরীটা গোপন করেছে তাই আসল কাফের ও তার মাঝে
একটু প্রার্থক্য হয়ে গেছে সে কুফরী গোপন রাখার কারনে (যদিও পরে প্রকাশ হয়ে গেছে)আর আসল কাফের শুরুতেই প্রকাশ্যে কুফরী করে আসছে।এতটুকু প্রার্থক্যের জন্য আল্লাহ ২ গ্রুপের কথাই স্পষ্ট করে বলেছেন।
এখন বাকি রইল,কেন রাসুল (সাঃ)তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন না।
এটি রাসুলের হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্ট।
রাসুল উমরকে বলেছেন যখন তিনি আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে হত্যা করার অনুমতি চেয়েছেন তাকে ছেড়ে দাও যেন কাফেররা একথা বলতে না পারে মুহাম্মদ
সাঃ তার সাথীদেরকে হত্যা করেছেন।(দীর্ঘ
হাদিসের শেষাংষ)।বুখারী শরীফ হাদিস নং
৪৭১৬,৪৭১৮
হাদিসের অনেক কিতাবে ও বুখারীতে ও আরো কয়েক জায়গায় হাদিসটা আছে।
সুতরাং রাসুল সাঃ তাদেরকে হত্যা না করার
একটা কারন উল্লেখ করেছেন।এ কারনে নিষেধ করেননি যে,তাদেরকে হত্যা করা জায়েয নাই।এমন হলে নবীজী উমরকে বলতেন,তাকে তুমি কিভাবে হত্যা করবে এটা তো হারাম যেমনিভাবে তিনি খালেদ ও ওসামকে তিরষ্কার করেছিলেন।কারন এটা কোন নববীর জন্যই সম্ভব নয় তার সামনে তার সঙ্গীরা খারাপ কাজ করতে ইচ্ছা করবে আর তিনি তা স্পষ্ট করে নিষেধ করবেন না।
সুতরাং এ থেকেই বুঝা যায় তাদের হত্যা করা যাবে কিন্তু রাসুল একটা কারনে হত্যা করেননি।আর বর্তমানে এ আশংকা নেই
তাই তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
আর আমরা তাদেরকে মুনাফিক বলে যুদ্ধ করিনা মুর্তাদ বলে যুদ্ধ করি এটিই মূল।
Comment