আসসালামু আলাইকুম অয়া রাহমাতুল্লাহি অয়া বারকাতুহ,
সমস্থ প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে এবং দরুদ ও সালাম আমাদের ইমাম খাতামুন নাবিয়্যিন মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার এবং সাহাবী আযমাঈনগনের প্রতি।
প্রিয় ভাইয়েরা, এ ব্যপারে হয়ত আমরা কেউই দ্বিমত করব না যে মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ জুটি যদি হিসেব করা হয় তাহলে সেটা হলঃ আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এবং উমার বিন খাত্তাব (রা.)। মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এ ব্যপারে উনাদের চেয়ে অগ্রগামী কেউ আছেন বলে অন্তত আমার মনে হয় না। ত উম্মাহর এই শ্রেষ্ঠ জুটি কেমন ছিল?? কাজেকর্মে, দৃষ্টিভঙ্গিতে উনাদের ধরণ কেমন ছিল?? উনারা কি আমরা যেটাকে বলি মানিক জোর টাইপের ছিলেন যেখানে একজন কিছু একটা বললে আরেকজন বিনা বাক্যব্যয়ে তা মেনে নিতেন। হুমম উনাদের অবস্থা ছিল ঠিক মানিকজোড়ের একেবারেই বিপরীত। কিছু উদাহরণ দেখা যাকঃ
১)নফল ইবাদতঃ
- আবু বকর (রা.) তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন একেবারে নিচু কণ্ঠে যেমনটি একজন মেহবুব তাঁর মেহবুবার সাথে করে থাকেন।
- উমার (রা.) তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন উচ্চ স্বরে যা অনেক দূর থেকেও শোনা যেত।
উভয়ের যুক্তি শুনে রাসূল (স.) উভয়কেই মোবারকবাদ দিয়েছেন। কিন্তু উনারা নিজেরা এ ব্যপারে একজন আরেকজনকে কি বলেছেন?
আবু বকর (রা.)- আপনি কি নামায একটু আস্তে পড়তে পারেন না।
উমার (রা.)- এই কথা শুনে বললেন, 'আপনি কি আর একটু উচ্চস্বরে পড়তে পারেন না।
অর্থাৎ কেউ নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন নি।
২) বদর যুদ্ধের বন্দী মুশরিকদের বিষয় আমরা সবাই জানি আলহামদুলিল্লাহ্*।
৩) সিরিয়ায় মুজাহিদ বাহিনীর কমান্ডারঃ
আবু বকর (রা.) এর পছন্দ ছিল খালিদ বিন অয়ালিদ (রা.) কিন্তু উমার (রা.) এর পছন্দ ছিল আবু উবাইদা (রা.)
এরকম বিষয় যদি লিস্ট করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে উনাদের জীবদ্দশায় খুব কম ইস্যু ছিল যেখানে উনারা একমত পোষণ করেছেন। এমনকি আবু বকর (রা.) ও বলেই বসেছিলেন যে কি উমার! তুমি কি আমার বিরোধিতা না করে থাকতে পার না?
কিন্তু উনাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কেমন ছিল? বা লোকজনের সামনে পরস্পরকে কিভাবে উপস্থাপন করতেচন??
আবু বকর (রা.) উমার (রা.) কি পরিমাণ পছন্দ করতেন দ্বীনের খাতিরে তা পরিষ্কার হয়ে যায় যখন তিনি উনার পরে খলিফা হিসেবে উমার (রা.) কে বাছাই করেন এবং কিছু সাহাবী এ ব্যপারটি পছন্দ না করলে তাদেরকে এটাই বলেন যে, 'তোমরা উমারকে যতটুকু বাইরে থেকে দেখ ভিতরের উমার তারচেয়েও অনেক ভাল'
আর উমার (রা.) কেমন শ্রদ্ধা করতেন আবু বকর (রা.) কে?? এটার জানার জন্য আমাদের সেই ঘটনা স্মরণ করতে হবে যখন উমার (রা.) এর খেলাফতের সময় কতিপয় ব্যক্তি এটা নিয়ে পর্যালোচনা করছিলেন যে কার খিলাফা/কে বেশি উত্তম এটা নিয়ে এবং উমার (রা.) পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে এটা শুনে ফেলেছিলেন। তিনি তাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে শুধু এটুকু বলেন, 'তোমারা শুনে রাখ হিজরতের সময় রাসূল (স.) এর সাথে আবু বকরের কাটানো একটা রাত উমারের সমস্ত জীবনের চেয়ে উত্তম' ব্যস এর পরে আর কে উত্তম এবং কার খিলাফা উত্তম এটা নিয়ে আর আলোচনার কোন অবকাশই রাখলেন না।
এই হল উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ জুটির উপাখ্যান। যারা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে চিন্তা করলে মনে হয় যেন উনারা পরস্পরের শত্রু। কিন্তু পরেস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। সুবহানআল্লাহ!! এমন শ্রদ্ধাবোধের নজীর উম্মাহর কোথাও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শিক্ষাঃ ভাই আমরা যারা পরস্পরের ভাই তারা একেকজন একেক জায়গা থেকে এসেছি। একেক পরিবেশ, একেক ধরণের পারিবারিক শিক্ষা, একেক ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, একেক বয়সের একেক ধরণের অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকবে এবং এটা হওয়াই সবচেয়ে স্বাভাবিক। আবার আমাদের কেউ হয়ত দেখবেন খুব সহজে একটা জিনিস বুঝবে এবং সেটা আঁকড়ে ধরার প্রাণপণ চেষ্টা করবে। আবার অনেককে দেখবেন বুঝিয়ে একেবারে নিজের জীবন ওষ্ঠাগত করে ফেলবেন কিন্তু তেমন একটা ফায়দা হবে না। আল্লাহ্* সুবহানুতাআলা মানব প্রকৃতিকে এমনই বিচিত্র করে তৈরি করেছেন যাতে আমাদের ভিতর একঘেয়েমি না আসে আমরা যেন সব জায়গায় নতুনত্বের স্বাদ পাই। তাই ভাইয়েরা দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের ক্ষেত্রে আমরা যেন সৌজন্য হারিয়ে না ফেলি। এটা দ্বীন ইসলামের দাবী। এখানে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর সুযোগ নাই। আপনি যেমনি হন না কেন আপনার ভাইয়ের প্রতি সহনশীল এবং শ্রদ্ধাশীল হন।
আল্লাহ্* আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন।
আলহামদুলিল্লাহ্* অয়াসাল্লাল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লাম।।
সমস্থ প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে এবং দরুদ ও সালাম আমাদের ইমাম খাতামুন নাবিয়্যিন মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার এবং সাহাবী আযমাঈনগনের প্রতি।
প্রিয় ভাইয়েরা, এ ব্যপারে হয়ত আমরা কেউই দ্বিমত করব না যে মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠ জুটি যদি হিসেব করা হয় তাহলে সেটা হলঃ আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এবং উমার বিন খাত্তাব (রা.)। মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এ ব্যপারে উনাদের চেয়ে অগ্রগামী কেউ আছেন বলে অন্তত আমার মনে হয় না। ত উম্মাহর এই শ্রেষ্ঠ জুটি কেমন ছিল?? কাজেকর্মে, দৃষ্টিভঙ্গিতে উনাদের ধরণ কেমন ছিল?? উনারা কি আমরা যেটাকে বলি মানিক জোর টাইপের ছিলেন যেখানে একজন কিছু একটা বললে আরেকজন বিনা বাক্যব্যয়ে তা মেনে নিতেন। হুমম উনাদের অবস্থা ছিল ঠিক মানিকজোড়ের একেবারেই বিপরীত। কিছু উদাহরণ দেখা যাকঃ
১)নফল ইবাদতঃ
- আবু বকর (রা.) তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন একেবারে নিচু কণ্ঠে যেমনটি একজন মেহবুব তাঁর মেহবুবার সাথে করে থাকেন।
- উমার (রা.) তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন উচ্চ স্বরে যা অনেক দূর থেকেও শোনা যেত।
উভয়ের যুক্তি শুনে রাসূল (স.) উভয়কেই মোবারকবাদ দিয়েছেন। কিন্তু উনারা নিজেরা এ ব্যপারে একজন আরেকজনকে কি বলেছেন?
আবু বকর (রা.)- আপনি কি নামায একটু আস্তে পড়তে পারেন না।
উমার (রা.)- এই কথা শুনে বললেন, 'আপনি কি আর একটু উচ্চস্বরে পড়তে পারেন না।
অর্থাৎ কেউ নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন নি।
২) বদর যুদ্ধের বন্দী মুশরিকদের বিষয় আমরা সবাই জানি আলহামদুলিল্লাহ্*।
৩) সিরিয়ায় মুজাহিদ বাহিনীর কমান্ডারঃ
আবু বকর (রা.) এর পছন্দ ছিল খালিদ বিন অয়ালিদ (রা.) কিন্তু উমার (রা.) এর পছন্দ ছিল আবু উবাইদা (রা.)
এরকম বিষয় যদি লিস্ট করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে উনাদের জীবদ্দশায় খুব কম ইস্যু ছিল যেখানে উনারা একমত পোষণ করেছেন। এমনকি আবু বকর (রা.) ও বলেই বসেছিলেন যে কি উমার! তুমি কি আমার বিরোধিতা না করে থাকতে পার না?
কিন্তু উনাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কেমন ছিল? বা লোকজনের সামনে পরস্পরকে কিভাবে উপস্থাপন করতেচন??
আবু বকর (রা.) উমার (রা.) কি পরিমাণ পছন্দ করতেন দ্বীনের খাতিরে তা পরিষ্কার হয়ে যায় যখন তিনি উনার পরে খলিফা হিসেবে উমার (রা.) কে বাছাই করেন এবং কিছু সাহাবী এ ব্যপারটি পছন্দ না করলে তাদেরকে এটাই বলেন যে, 'তোমরা উমারকে যতটুকু বাইরে থেকে দেখ ভিতরের উমার তারচেয়েও অনেক ভাল'
আর উমার (রা.) কেমন শ্রদ্ধা করতেন আবু বকর (রা.) কে?? এটার জানার জন্য আমাদের সেই ঘটনা স্মরণ করতে হবে যখন উমার (রা.) এর খেলাফতের সময় কতিপয় ব্যক্তি এটা নিয়ে পর্যালোচনা করছিলেন যে কার খিলাফা/কে বেশি উত্তম এটা নিয়ে এবং উমার (রা.) পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে এটা শুনে ফেলেছিলেন। তিনি তাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে শুধু এটুকু বলেন, 'তোমারা শুনে রাখ হিজরতের সময় রাসূল (স.) এর সাথে আবু বকরের কাটানো একটা রাত উমারের সমস্ত জীবনের চেয়ে উত্তম' ব্যস এর পরে আর কে উত্তম এবং কার খিলাফা উত্তম এটা নিয়ে আর আলোচনার কোন অবকাশই রাখলেন না।
এই হল উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ জুটির উপাখ্যান। যারা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে চিন্তা করলে মনে হয় যেন উনারা পরস্পরের শত্রু। কিন্তু পরেস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। সুবহানআল্লাহ!! এমন শ্রদ্ধাবোধের নজীর উম্মাহর কোথাও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শিক্ষাঃ ভাই আমরা যারা পরস্পরের ভাই তারা একেকজন একেক জায়গা থেকে এসেছি। একেক পরিবেশ, একেক ধরণের পারিবারিক শিক্ষা, একেক ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, একেক বয়সের একেক ধরণের অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকবে এবং এটা হওয়াই সবচেয়ে স্বাভাবিক। আবার আমাদের কেউ হয়ত দেখবেন খুব সহজে একটা জিনিস বুঝবে এবং সেটা আঁকড়ে ধরার প্রাণপণ চেষ্টা করবে। আবার অনেককে দেখবেন বুঝিয়ে একেবারে নিজের জীবন ওষ্ঠাগত করে ফেলবেন কিন্তু তেমন একটা ফায়দা হবে না। আল্লাহ্* সুবহানুতাআলা মানব প্রকৃতিকে এমনই বিচিত্র করে তৈরি করেছেন যাতে আমাদের ভিতর একঘেয়েমি না আসে আমরা যেন সব জায়গায় নতুনত্বের স্বাদ পাই। তাই ভাইয়েরা দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের ক্ষেত্রে আমরা যেন সৌজন্য হারিয়ে না ফেলি। এটা দ্বীন ইসলামের দাবী। এখানে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর সুযোগ নাই। আপনি যেমনি হন না কেন আপনার ভাইয়ের প্রতি সহনশীল এবং শ্রদ্ধাশীল হন।
আল্লাহ্* আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন।
আলহামদুলিল্লাহ্* অয়াসাল্লাল্লাহু আলাইহি অয়া সাল্লাম।।
Comment