নাহি আনিল মুনকারের ব্যাপারে অনেক অস্পষ্টতা দূরকারী একটি আলোচনা:
আত-তাশরিউল যিনায়ি ফিল ইসলাম- আব্দুল কাদির আলআওদা
التغيير باليد: والمقصود بالتغيير هو ذات المنكر؛ ككسر الملاهي، وإراقة الخمر، وخلع الحرير من رأس العاصي وعن بدنه، وإخراجه من الدار المغصوبة، وإزالة مايضعه من المواد في الطريق العام فيسده أو يضيقه، إلى غير ذلك.
والتغيير لا يكون إلا في المعاصي التي تقبل بطبيعتها التغيير المادي، أما معاصي اللسان والقلب فليس في الاستطاعة تغييرها مادياً، وكذلك كل معصية تقتصر على نفس العاصي وجوارحه الباطنة.
ويشترط في التغيير باليد أن لا يباشر دافع المنكر التغيير بيده طالما استطاع أن يحمل فاعل المنكر على التغيير، فليس له أن يجر الغاصب من الدار المغصوبة إذا كان يستطيع تكليفه الخروج منها ماشياً، وليس له أن يريق الخمر بنفسه إذا استطاع أن يكلف شاربها أو محرزها بإراقتها.
ويشترط في التغيير أيضاً أن يقتصر فيه على القدر المحتاج إليه، فليس لدافع المنكر أن يأخذ بلحية الغاصب أو رجله ليخرجه من الدار المغصوبة ما دام يستطيع أن يجذبه أو يجره إلى خارجها من يده، وليس له أن يحرق أدوات الملاهي ما دام يستطيع أن يكسرها ويعطلها عن العمل، وحد الكسر أن تتكلف من النفقات في إصلاحها ما يساوي ثمن مثلها. وليس له أن يكسر أواني الخمر إذا استطاع أن يريق الخمر دون كسر الأواني.
والأصل فيما سبق أن تغيير المنكر لا يقصد به إلا دفع المنكر ولا يقصد منه عقوبة فاعل المنكر ولا زجر غيره، والزجر إنما يكون عن المستقبل والعقوبة تكون على الماضي، والدفع على الحاضر الراهن، وليس إلى آحاد الرعية إلا الدفع وهو إعدام المنكر وإزالته، فما زاد على قدر الإعدام فهو إما عقوبة على جريمة سابقة أو زجر عن لاحق، وذلك إلى السلطات العامة وليس للأفراد.
التهديد بالضرب والقتل: وينبغي أن يسبق الضرب كلما أمكن تقديمه عليه، ويشترط في التهديد أن لا يهدد الدافع بوعيد لا يجوز له تحقيقه كقوله: لأنهبن دارك، أو لأضربن ولدك، أو لأسبين زوجتك، بل ذلك إن قاله عن عزم فهو حرام، وإن قاله عن غير عزم فهو كذب، وإنما يجوز له أن يهدد بما يجوز له تحقيقه في سبيل دفع المنكر كقوله: لأجلدنك، لأكسرن رأسك، لأضربن رقبتك، وما أشبه، وله أن يتوعده بأكثر مما في عزمه الباطن إذا علم أن ذلك يردعه عن المنكر.
الضرب والقتل: ويجوز عند الضرورة أن يباشر دافع المنكر ضرب فاعل المنكر لكفه عنه، ويشترط أن لا يندفع المنكر بغير الضرب، وأن لا يزيد الضرب عن الحاجة في الدفع، فإذا اندفع المنكر بصفعة أو ضربة فليس للدافع أن يصفع أو يضرب مرة أخرى. وإذا لم يندفع المنكر إلا بالجرح وإشهار السلاح فللدافع أن يشهر السلاح وأن يجرح، كما لو قبض فاسق على امرأة وبينه وبين الدافع نهر حائل أو جدار مانع فيأخذ بندقيته ويقول له: خل عنها أو لأرمينك، فإن لم يخل عنها فله أن يرميه، وينبغي أن لا يقصد المقتل بل الساق والفخذ وما أشبه، وله أن يسل سيفه ويقول له: اترك هذا المنكر أو لأضربنك، فكل ذلك دفع للمنكر ودفعه واجب بكل ممكن، ولا فرق في ذلك بين ما يتعلق بحدود الله كالزنا وقطع الطريق وبين ما يتعلق بحقوق الأفراد كالضرب والجرح والغضب.
وإذا كان فاعل المنكر لا يمتنع عن المنكر إلا بقتال قد يؤدي إلى قتله كان على دافع المنكر أن يقاتله ولو كان المنكر الذي يراد منعه أقل درجة من القتل، فلو قصد إنسان أن يقطع طرف نفسه وكان لا يمتنع عن ذلك إلا بقتال ربما أدى لقتله وجب منعه عن القطع وقتاله عليه؛ لأن الغرض ليس حفظ نفسه وطرفه بل الغرض حسم سبيل المنكر والمعصية، وقتله في دفع المنكر ليس معصية وقطع طرف نفسه معصية، وذلك مثل دفع الصائل على المال بما يقتله فإنه جائز لا على معنى افتداء درهم من المال بروح شخص وإنما هو جائز بقصد دفع المعاصي، وقصد الصائل لأخذ المال معصية وقتله دفعاً للمعصية ليس في ذاته معصية
“হাত দ্বারা পরিবর্তন করা: পরিবর্তন করা দ্বারা উদ্দেশ হল মূল মন্দ বস্তুটি পরিবর্তন করা। যেমন খেলনা বা বাজনাগুলো ভেঙ্গে ফেলা, মদ ঢেলে দেওয়া, গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির মাথা ও শরীর থেকে রেশমের কাপড় খুলে নেওয়া, তাকে জবরদখলকৃত বাড়ি থেকে বহিস্কার করা, সে জনসাধারণের পথ বন্ধ করা বা সংকীর্ণ করার জন্য রাস্তায় যে বস্তু ফেলে রেখেছে, তা দূর করা ইত্যাদি।
পরিবর্তন এমন গুনাহের বিষয়ের মধ্যেই করা যায়, যা স্বভাববত: আক্ষরিক পরিবর্তন গ্রহণ করে। পক্ষান্তরে যবানের বা অন্তরের গুনাহের আক্ষরিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। এমনিভাবে এমন যেকোন গুনাহ, যা গুনাহকারীর সত্তা ও তার আভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
হাত দ্বারা বাঁধা দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হল, অন্যায়ে বাঁধা দানকারী ততক্ষণ পর্যন্ত হাত দ্বারা বাঁধা দিবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং অন্যায়কারীকে উদ্ধুদ্ধু করার মাধ্যমে অন্যায় বন্ধ করা যায়। সুতরাং সে ততক্ষণ পর্যন্ত বাড়ি জবরদখলকারীকে বাড়ি থেকে টেনে হেচরে বের করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত জবরদখলকারীকে নিজ পায়ে হেটে যেতে বাধ্য করতে সক্ষম হয়। এমনিভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত মদ ঢেলে দেওয়া জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং মদ পানকারীকে বা তার সংরক্ষণকারীকে তা ঢেলে দিতে বাধ্য করা যায়।
বাঁধা দেওয়ার ক্ষেত্রে এটাও শর্ত যে, প্রয়োজন পরিমাণের উপর ক্ষ্যান্ত থাকবে। সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত জবরদখলকারীকে টেনে বাড়ির বাহিরে বের করা সম্ভব হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে বের করার জন্য তার দাড়িতে ধরা বা পায়ে ধরা জায়েয নেই। ততক্ষণ পর্যন্ত বাদ্যযন্ত্র জালিয়ে দেওয়া জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত তা ভেঙ্গে দেওয়া বা অকেজো করে দেওয়া সম্ভব হয়। আর ভাঙ্গার শাস্তি হল, সে তা মেরামতের জন্য তার অনুরূপ বাদ্য যন্ত্রের সমমূল্যের ব্যায়ভার বহন করবে। ততক্ষণ পর্যন্ত মদের পাত্র ভাঙ্গা জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত পাত্র ভাঙ্গা ব্যতিত মদ ঢেলে দেওয়া সম্ভব হয়।
উল্লেখিত কাজগুলোর মধ্যে মূলনীতি হল, অন্যায়ে বাঁধা দেওয়া দ্বারা শুধু অন্যায়টিকে প্রতিহত করা বা ঠেকানোই উদ্দেশ্য হবে। অন্যায়কারীকে কৃত অন্যায়ের শাস্তি দেওয়া বা পরবর্তী সময়ের জন্য সতর্ক করা উদ্দেশ্য হবে না।
সতর্ক করা হয়ে থাকে ভবিষ্যতের ব্যাপারে আর শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে পূর্বের কৃতকর্মের জন্য। আর প্রতিহত করা বা ঠেকানো হয়ে থাকে চলমান ঘটনার ক্ষেত্রে। সাধারণ প্রজাদের জন্য শুধু প্রতিহত করাই বৈধ। তা হল অন্যায়টিকে দূর করা বা বন্ধ করা। প্রতিহত করা থেকে অতিরিক্ত যা হবে, তা হবে হয়ত পূর্বের অপরাধের শাস্তি অথবা সামনের জন্য ধমকি ও সতর্ক করা। আর এটা শাসকের কাজ; সাধারণ জনগণের কাজ নয়।
প্রহার বা হত্যার হুমকি দেওয়া: উচিত হল সম্ভব হলে প্রথমে মারের ধমকি দিবে, (হত্যার নয়)। হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হল প্রতিহতকারী এমন শাস্তির হুমকি দিবে না, যেটা বাস্তবায়ন করা তার জন্য জায়েয নেই। যেমন বলল: তোমার বাড়ি লুট করবো, তোমার সন্তানকে মারবো, তোমার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাবে; বরং যদি মন থেকেই এগুলো বলে, তাহলে তা হারাম হবে। আর যদি মন থেকে না বলে তাহলে মিথ্যা হবে।
তার এমন বিষয়ের হুমকি দেওয়াই বৈধ, যেটা অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে তার জন্য বাস্তবায়ন করা জায়েয আছে। যেমন বলল: তোমাকে দুররা মারবো, তোমার মাথা কেটে ফেলবো, তোমার ঘাড় উড়িয়ে দিব ও এজাতীয় কথাবার্তা। আর তার জন্য তার মনে যা আছে, তার চেয়ে অধিক ধমিক দেওয়াও জায়েয হবে, যখন সে মনে করে, এটা তাকে অন্যায় থেকে ফিরাবে।
প্রহার করা ও হত্যা করা: অন্যায় প্রতিহতকারী অনন্যোপায় হলে অন্যায় প্রতিহত করার জন্য অন্যায়কারীকে মারতে পারবে। তবে শর্ত হল এমন হতে পারবে না যে, মার ছাড়াই অন্যায় বন্ধ হয়ে যেত পারত। আর প্রয়োজনের চেয়ে অধিক মারাও জায়েয নেই। সুতরাং যদি এক থাপ্পর বা একটি আঘাতের দ্বারা অন্যায় বন্ধ হয়ে যায়, তবে আরেকটি থাপ্পর দেওয়া বা আরেকটি আঘাত করা জায়েয নেই।
যখন আঘাত করা ব্যতিত বা তরবারী উত্তোলন করা ব্যতিত অন্যায় বন্ধ হয় না, তখন তরবারী উত্তোলন করা ও আঘাত করাও জায়েয আছে। যেমন যদি কোন পাপাচারি কোন মহিলাকে ধরল, আর তার মাঝে ও বাঁধা দানকারীর মাঝে একটি নদী বা একটি দেয়াল বাঁধা হয়ে আছে, তখন সে একটি বন্দুক নিয়ে বলল: হয়ত তাকে ছেড়ে দাও, নয়ত স্যুট করবো। এমতাবস্থায় যদি সে না ছাড়ে, তাহলে তার জন্য স্যুট করা জায়েয আছে। আর তার উচিত হবে, হত্যার স্থান লক্ষ্য করবে না, বরং পায়ের নলী, রান বা এধরণের স্থান লক্ষ্য করে মারবে।
তার জন্য এটাও জায়েয আছে যে, তরবারী কোষমুক্ত করে অন্যায়কারীকে বলবে: এই অন্যায়টি ছেড়ে দাও, নয়ত তোমাকে মার দিবে। এ সবগুলোই অন্যায়কে প্রতিহত করার অন্তর্ভূক্ত।
আর যেকোন পন্থায় অন্যায় প্রতিহত করা ফরজ। এক্ষেত্রে কোনগুলো আল্লাহর হকের সাথে সম্পর্ক রাখে- যেমন যিনা বা ডাকাতি, আর কোনগুলো ব্যক্তির হকের সাথে সম্পর্ক রাখে, যেমন মার দেওয়া, জখম করা বা ছিনতাই করা, এর মাঝে কোন পার্থক্য নেই।
যখন অন্যায়কারী যুদ্ধ ছাড়া অন্যায় থেকে বিরত হয় না, যে যুদ্ধে তাকে হত্যা করতে হয়, তখন প্রতিহতকারীর উপর তার সাথে যুদ্ধ করাই আবশ্যক। যদিও যে অন্যায়টি থেকে বাঁধা দেওয়া উদ্দেশ্য, সেটা হত্যার চেয়ে নিম্নস্তরের অন্যায়।
সুতরাং যদি কোন ব্যক্তি তার একটি অঙ্গ কাটতে উদ্যত হয়, আর সে তার সাথে যুদ্ধ করা ব্যতিত তার থেকে বিরত হয় না, আর যুদ্ধে তাকে হত্যাও করা লাগতে পারে, তখন তার উপর তাকে অঙ্গ কাটা থেকে বাঁধা দেওয়া এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরজ। কেননা এখানে তার জান বাঁচানো বা অঙ্গ হেফাজত করা উদ্দেশ্য নয়; বরং অন্যায় ও অবাধ্যতার পথ বন্ধ করা উদ্দেশ্য। আর অন্যায়কে বাঁধা দিতে গিয়ে তাকে হত্যা করা গুনাহ নয়; কিন্তু ঐ ব্যক্তি কর্তৃক তার অঙ্গ কাটা গুনাহ।
এটা হল মাল গ্রাসকারীকে প্রতিহত করতে গিয়ে হত্যা করার মত। নিশ্চয়ই এটা জায়েয আছে। আর তা এক দিরহাম মালের বদলা এক ব্যক্তির প্রাণ দ্বারা আদায় করার হিসাবে নয়; বরং অন্যায়কারীকে প্রতিহত করার জন্য। এক্ষেত্রে মাল গ্রাসকারীর সংকল্পটি গুনাহ; অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে তাকে হত্যা করা সত্তাগতভাবে গুনাহ নয়।
আলমাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়েতিয়্যাহ:
قال الغزالي : اعلم أنّ كلّ قاعد في بيته أينما كان فليس خالياً في هذا الزّمان عن منكر ، من حيث التّقاعد عن إرشاد النّاس وتعليمهم وحملهم على المعروف ، وكل من رأى منكراً من مناكير الشّرع على الدّوام ، أي من تيقّن أنّ في السوق منكراً ، أو في وقتٍ بعينه، وهو قادر على تغييره باليد أو باللّسان فلا يجوز له أن يسقط ذلك عن نفسه بالقعود في البيت ، بل يلزمه الخروج
…ولا يشترط في النّهي عن المنكر إذن الإمام ولا عدالة الآمر أو النّاهي على المشهور
“ইমাম গাযালী রহ: বলেন: জেনে রাখ, এই যামানায় যে ই নিজ ঘরে বসে থাকে, চাই তা যেখানেই হোক না কেন, কেউই গুনাহ থেকে মুক্ত নয়। কেননা সে মানুষকে দিকনির্দেশনা দেওয়া, শিক্ষা দেওয়া এবং সৎকাজে উদ্ধুদ্ধ করা থেকে বসে আছে। যে ই কোন শরয়ী অন্যায় কাজ সর্বদা চলতে দেখে, অর্থাৎ যে নিশ্চিতভাবে জানে যে, বাজারে অন্যায় বস্তু আছে, আর সে তা হাত দ্বারা বা যবান দ্বারা বাঁধা দিতে সক্ষম, তার জন্য ঘরে বসে থেকে নিজের থেকে এই দায়িত্ব রহিত করে দেওয়া জায়েয নেই। বরং তার জন্য বের হওয়া আবশ্যক।
...নাহি আনিল মুনকারের জন্য শাসকের অনুমতি নেওয়া বা আদেশ-নিষেধকারীর ন্যায়পরায়ন হওয়া শর্ত নয়।”
আল-ইমামাহ:
قالوا : فإنكار المنكر واجب على كل مسلم سواء صدر هذا المنكر من أمير أو حقير ، أو شريف أو وضيع ، ولم يرد في الآيات والأحاديث الآمرة بذلك استثناء للأمراء ، فدل على وجوب إنكار المنكر عليهم ، وإزالته ولو بالقوة عند الاستطاعة .
উলামাগণ বলেন: তাই অন্যায় কাজে বাঁধা দেওয়া প্রতিটি মুসলিমের উপর উরজ। চাই এ অন্যায় নেতা থেকে প্রকাশিত হোক অথবা সাধারণ লোক থেকে প্রকাশিত হোক, সম্মানিতদের থেকে প্রকাশিত হোক বা নিম্নদের থেকে প্রকাশিত হোক।
এ ব্যাপারে আদেশ দানকারী আয়াত ও হাদিসসমূহে শাসকদের ব্যাপারে কোন ভিন্নতা নেই। তাই এটা প্রমাণ করে যে, তাদের অন্যায়েরও প্রতিবাদ করা ও তা বন্ধ করা ফরজ, এমনকি সামর্থ্য থাকলে শক্তি দিয়ে হলেও।
আত-তাশরিউল যিনায়ি ফিল ইসলাম- আব্দুল কাদির আলআওদা
التغيير باليد: والمقصود بالتغيير هو ذات المنكر؛ ككسر الملاهي، وإراقة الخمر، وخلع الحرير من رأس العاصي وعن بدنه، وإخراجه من الدار المغصوبة، وإزالة مايضعه من المواد في الطريق العام فيسده أو يضيقه، إلى غير ذلك.
والتغيير لا يكون إلا في المعاصي التي تقبل بطبيعتها التغيير المادي، أما معاصي اللسان والقلب فليس في الاستطاعة تغييرها مادياً، وكذلك كل معصية تقتصر على نفس العاصي وجوارحه الباطنة.
ويشترط في التغيير باليد أن لا يباشر دافع المنكر التغيير بيده طالما استطاع أن يحمل فاعل المنكر على التغيير، فليس له أن يجر الغاصب من الدار المغصوبة إذا كان يستطيع تكليفه الخروج منها ماشياً، وليس له أن يريق الخمر بنفسه إذا استطاع أن يكلف شاربها أو محرزها بإراقتها.
ويشترط في التغيير أيضاً أن يقتصر فيه على القدر المحتاج إليه، فليس لدافع المنكر أن يأخذ بلحية الغاصب أو رجله ليخرجه من الدار المغصوبة ما دام يستطيع أن يجذبه أو يجره إلى خارجها من يده، وليس له أن يحرق أدوات الملاهي ما دام يستطيع أن يكسرها ويعطلها عن العمل، وحد الكسر أن تتكلف من النفقات في إصلاحها ما يساوي ثمن مثلها. وليس له أن يكسر أواني الخمر إذا استطاع أن يريق الخمر دون كسر الأواني.
والأصل فيما سبق أن تغيير المنكر لا يقصد به إلا دفع المنكر ولا يقصد منه عقوبة فاعل المنكر ولا زجر غيره، والزجر إنما يكون عن المستقبل والعقوبة تكون على الماضي، والدفع على الحاضر الراهن، وليس إلى آحاد الرعية إلا الدفع وهو إعدام المنكر وإزالته، فما زاد على قدر الإعدام فهو إما عقوبة على جريمة سابقة أو زجر عن لاحق، وذلك إلى السلطات العامة وليس للأفراد.
التهديد بالضرب والقتل: وينبغي أن يسبق الضرب كلما أمكن تقديمه عليه، ويشترط في التهديد أن لا يهدد الدافع بوعيد لا يجوز له تحقيقه كقوله: لأنهبن دارك، أو لأضربن ولدك، أو لأسبين زوجتك، بل ذلك إن قاله عن عزم فهو حرام، وإن قاله عن غير عزم فهو كذب، وإنما يجوز له أن يهدد بما يجوز له تحقيقه في سبيل دفع المنكر كقوله: لأجلدنك، لأكسرن رأسك، لأضربن رقبتك، وما أشبه، وله أن يتوعده بأكثر مما في عزمه الباطن إذا علم أن ذلك يردعه عن المنكر.
الضرب والقتل: ويجوز عند الضرورة أن يباشر دافع المنكر ضرب فاعل المنكر لكفه عنه، ويشترط أن لا يندفع المنكر بغير الضرب، وأن لا يزيد الضرب عن الحاجة في الدفع، فإذا اندفع المنكر بصفعة أو ضربة فليس للدافع أن يصفع أو يضرب مرة أخرى. وإذا لم يندفع المنكر إلا بالجرح وإشهار السلاح فللدافع أن يشهر السلاح وأن يجرح، كما لو قبض فاسق على امرأة وبينه وبين الدافع نهر حائل أو جدار مانع فيأخذ بندقيته ويقول له: خل عنها أو لأرمينك، فإن لم يخل عنها فله أن يرميه، وينبغي أن لا يقصد المقتل بل الساق والفخذ وما أشبه، وله أن يسل سيفه ويقول له: اترك هذا المنكر أو لأضربنك، فكل ذلك دفع للمنكر ودفعه واجب بكل ممكن، ولا فرق في ذلك بين ما يتعلق بحدود الله كالزنا وقطع الطريق وبين ما يتعلق بحقوق الأفراد كالضرب والجرح والغضب.
وإذا كان فاعل المنكر لا يمتنع عن المنكر إلا بقتال قد يؤدي إلى قتله كان على دافع المنكر أن يقاتله ولو كان المنكر الذي يراد منعه أقل درجة من القتل، فلو قصد إنسان أن يقطع طرف نفسه وكان لا يمتنع عن ذلك إلا بقتال ربما أدى لقتله وجب منعه عن القطع وقتاله عليه؛ لأن الغرض ليس حفظ نفسه وطرفه بل الغرض حسم سبيل المنكر والمعصية، وقتله في دفع المنكر ليس معصية وقطع طرف نفسه معصية، وذلك مثل دفع الصائل على المال بما يقتله فإنه جائز لا على معنى افتداء درهم من المال بروح شخص وإنما هو جائز بقصد دفع المعاصي، وقصد الصائل لأخذ المال معصية وقتله دفعاً للمعصية ليس في ذاته معصية
“হাত দ্বারা পরিবর্তন করা: পরিবর্তন করা দ্বারা উদ্দেশ হল মূল মন্দ বস্তুটি পরিবর্তন করা। যেমন খেলনা বা বাজনাগুলো ভেঙ্গে ফেলা, মদ ঢেলে দেওয়া, গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির মাথা ও শরীর থেকে রেশমের কাপড় খুলে নেওয়া, তাকে জবরদখলকৃত বাড়ি থেকে বহিস্কার করা, সে জনসাধারণের পথ বন্ধ করা বা সংকীর্ণ করার জন্য রাস্তায় যে বস্তু ফেলে রেখেছে, তা দূর করা ইত্যাদি।
পরিবর্তন এমন গুনাহের বিষয়ের মধ্যেই করা যায়, যা স্বভাববত: আক্ষরিক পরিবর্তন গ্রহণ করে। পক্ষান্তরে যবানের বা অন্তরের গুনাহের আক্ষরিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। এমনিভাবে এমন যেকোন গুনাহ, যা গুনাহকারীর সত্তা ও তার আভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
হাত দ্বারা বাঁধা দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হল, অন্যায়ে বাঁধা দানকারী ততক্ষণ পর্যন্ত হাত দ্বারা বাঁধা দিবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং অন্যায়কারীকে উদ্ধুদ্ধু করার মাধ্যমে অন্যায় বন্ধ করা যায়। সুতরাং সে ততক্ষণ পর্যন্ত বাড়ি জবরদখলকারীকে বাড়ি থেকে টেনে হেচরে বের করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত জবরদখলকারীকে নিজ পায়ে হেটে যেতে বাধ্য করতে সক্ষম হয়। এমনিভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত মদ ঢেলে দেওয়া জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বয়ং মদ পানকারীকে বা তার সংরক্ষণকারীকে তা ঢেলে দিতে বাধ্য করা যায়।
বাঁধা দেওয়ার ক্ষেত্রে এটাও শর্ত যে, প্রয়োজন পরিমাণের উপর ক্ষ্যান্ত থাকবে। সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত জবরদখলকারীকে টেনে বাড়ির বাহিরে বের করা সম্ভব হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে বের করার জন্য তার দাড়িতে ধরা বা পায়ে ধরা জায়েয নেই। ততক্ষণ পর্যন্ত বাদ্যযন্ত্র জালিয়ে দেওয়া জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত তা ভেঙ্গে দেওয়া বা অকেজো করে দেওয়া সম্ভব হয়। আর ভাঙ্গার শাস্তি হল, সে তা মেরামতের জন্য তার অনুরূপ বাদ্য যন্ত্রের সমমূল্যের ব্যায়ভার বহন করবে। ততক্ষণ পর্যন্ত মদের পাত্র ভাঙ্গা জায়েয নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত পাত্র ভাঙ্গা ব্যতিত মদ ঢেলে দেওয়া সম্ভব হয়।
উল্লেখিত কাজগুলোর মধ্যে মূলনীতি হল, অন্যায়ে বাঁধা দেওয়া দ্বারা শুধু অন্যায়টিকে প্রতিহত করা বা ঠেকানোই উদ্দেশ্য হবে। অন্যায়কারীকে কৃত অন্যায়ের শাস্তি দেওয়া বা পরবর্তী সময়ের জন্য সতর্ক করা উদ্দেশ্য হবে না।
সতর্ক করা হয়ে থাকে ভবিষ্যতের ব্যাপারে আর শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে পূর্বের কৃতকর্মের জন্য। আর প্রতিহত করা বা ঠেকানো হয়ে থাকে চলমান ঘটনার ক্ষেত্রে। সাধারণ প্রজাদের জন্য শুধু প্রতিহত করাই বৈধ। তা হল অন্যায়টিকে দূর করা বা বন্ধ করা। প্রতিহত করা থেকে অতিরিক্ত যা হবে, তা হবে হয়ত পূর্বের অপরাধের শাস্তি অথবা সামনের জন্য ধমকি ও সতর্ক করা। আর এটা শাসকের কাজ; সাধারণ জনগণের কাজ নয়।
প্রহার বা হত্যার হুমকি দেওয়া: উচিত হল সম্ভব হলে প্রথমে মারের ধমকি দিবে, (হত্যার নয়)। হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হল প্রতিহতকারী এমন শাস্তির হুমকি দিবে না, যেটা বাস্তবায়ন করা তার জন্য জায়েয নেই। যেমন বলল: তোমার বাড়ি লুট করবো, তোমার সন্তানকে মারবো, তোমার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাবে; বরং যদি মন থেকেই এগুলো বলে, তাহলে তা হারাম হবে। আর যদি মন থেকে না বলে তাহলে মিথ্যা হবে।
তার এমন বিষয়ের হুমকি দেওয়াই বৈধ, যেটা অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে তার জন্য বাস্তবায়ন করা জায়েয আছে। যেমন বলল: তোমাকে দুররা মারবো, তোমার মাথা কেটে ফেলবো, তোমার ঘাড় উড়িয়ে দিব ও এজাতীয় কথাবার্তা। আর তার জন্য তার মনে যা আছে, তার চেয়ে অধিক ধমিক দেওয়াও জায়েয হবে, যখন সে মনে করে, এটা তাকে অন্যায় থেকে ফিরাবে।
প্রহার করা ও হত্যা করা: অন্যায় প্রতিহতকারী অনন্যোপায় হলে অন্যায় প্রতিহত করার জন্য অন্যায়কারীকে মারতে পারবে। তবে শর্ত হল এমন হতে পারবে না যে, মার ছাড়াই অন্যায় বন্ধ হয়ে যেত পারত। আর প্রয়োজনের চেয়ে অধিক মারাও জায়েয নেই। সুতরাং যদি এক থাপ্পর বা একটি আঘাতের দ্বারা অন্যায় বন্ধ হয়ে যায়, তবে আরেকটি থাপ্পর দেওয়া বা আরেকটি আঘাত করা জায়েয নেই।
যখন আঘাত করা ব্যতিত বা তরবারী উত্তোলন করা ব্যতিত অন্যায় বন্ধ হয় না, তখন তরবারী উত্তোলন করা ও আঘাত করাও জায়েয আছে। যেমন যদি কোন পাপাচারি কোন মহিলাকে ধরল, আর তার মাঝে ও বাঁধা দানকারীর মাঝে একটি নদী বা একটি দেয়াল বাঁধা হয়ে আছে, তখন সে একটি বন্দুক নিয়ে বলল: হয়ত তাকে ছেড়ে দাও, নয়ত স্যুট করবো। এমতাবস্থায় যদি সে না ছাড়ে, তাহলে তার জন্য স্যুট করা জায়েয আছে। আর তার উচিত হবে, হত্যার স্থান লক্ষ্য করবে না, বরং পায়ের নলী, রান বা এধরণের স্থান লক্ষ্য করে মারবে।
তার জন্য এটাও জায়েয আছে যে, তরবারী কোষমুক্ত করে অন্যায়কারীকে বলবে: এই অন্যায়টি ছেড়ে দাও, নয়ত তোমাকে মার দিবে। এ সবগুলোই অন্যায়কে প্রতিহত করার অন্তর্ভূক্ত।
আর যেকোন পন্থায় অন্যায় প্রতিহত করা ফরজ। এক্ষেত্রে কোনগুলো আল্লাহর হকের সাথে সম্পর্ক রাখে- যেমন যিনা বা ডাকাতি, আর কোনগুলো ব্যক্তির হকের সাথে সম্পর্ক রাখে, যেমন মার দেওয়া, জখম করা বা ছিনতাই করা, এর মাঝে কোন পার্থক্য নেই।
যখন অন্যায়কারী যুদ্ধ ছাড়া অন্যায় থেকে বিরত হয় না, যে যুদ্ধে তাকে হত্যা করতে হয়, তখন প্রতিহতকারীর উপর তার সাথে যুদ্ধ করাই আবশ্যক। যদিও যে অন্যায়টি থেকে বাঁধা দেওয়া উদ্দেশ্য, সেটা হত্যার চেয়ে নিম্নস্তরের অন্যায়।
সুতরাং যদি কোন ব্যক্তি তার একটি অঙ্গ কাটতে উদ্যত হয়, আর সে তার সাথে যুদ্ধ করা ব্যতিত তার থেকে বিরত হয় না, আর যুদ্ধে তাকে হত্যাও করা লাগতে পারে, তখন তার উপর তাকে অঙ্গ কাটা থেকে বাঁধা দেওয়া এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরজ। কেননা এখানে তার জান বাঁচানো বা অঙ্গ হেফাজত করা উদ্দেশ্য নয়; বরং অন্যায় ও অবাধ্যতার পথ বন্ধ করা উদ্দেশ্য। আর অন্যায়কে বাঁধা দিতে গিয়ে তাকে হত্যা করা গুনাহ নয়; কিন্তু ঐ ব্যক্তি কর্তৃক তার অঙ্গ কাটা গুনাহ।
এটা হল মাল গ্রাসকারীকে প্রতিহত করতে গিয়ে হত্যা করার মত। নিশ্চয়ই এটা জায়েয আছে। আর তা এক দিরহাম মালের বদলা এক ব্যক্তির প্রাণ দ্বারা আদায় করার হিসাবে নয়; বরং অন্যায়কারীকে প্রতিহত করার জন্য। এক্ষেত্রে মাল গ্রাসকারীর সংকল্পটি গুনাহ; অন্যায় প্রতিহত করতে গিয়ে তাকে হত্যা করা সত্তাগতভাবে গুনাহ নয়।
আলমাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়েতিয়্যাহ:
قال الغزالي : اعلم أنّ كلّ قاعد في بيته أينما كان فليس خالياً في هذا الزّمان عن منكر ، من حيث التّقاعد عن إرشاد النّاس وتعليمهم وحملهم على المعروف ، وكل من رأى منكراً من مناكير الشّرع على الدّوام ، أي من تيقّن أنّ في السوق منكراً ، أو في وقتٍ بعينه، وهو قادر على تغييره باليد أو باللّسان فلا يجوز له أن يسقط ذلك عن نفسه بالقعود في البيت ، بل يلزمه الخروج
…ولا يشترط في النّهي عن المنكر إذن الإمام ولا عدالة الآمر أو النّاهي على المشهور
“ইমাম গাযালী রহ: বলেন: জেনে রাখ, এই যামানায় যে ই নিজ ঘরে বসে থাকে, চাই তা যেখানেই হোক না কেন, কেউই গুনাহ থেকে মুক্ত নয়। কেননা সে মানুষকে দিকনির্দেশনা দেওয়া, শিক্ষা দেওয়া এবং সৎকাজে উদ্ধুদ্ধ করা থেকে বসে আছে। যে ই কোন শরয়ী অন্যায় কাজ সর্বদা চলতে দেখে, অর্থাৎ যে নিশ্চিতভাবে জানে যে, বাজারে অন্যায় বস্তু আছে, আর সে তা হাত দ্বারা বা যবান দ্বারা বাঁধা দিতে সক্ষম, তার জন্য ঘরে বসে থেকে নিজের থেকে এই দায়িত্ব রহিত করে দেওয়া জায়েয নেই। বরং তার জন্য বের হওয়া আবশ্যক।
...নাহি আনিল মুনকারের জন্য শাসকের অনুমতি নেওয়া বা আদেশ-নিষেধকারীর ন্যায়পরায়ন হওয়া শর্ত নয়।”
আল-ইমামাহ:
قالوا : فإنكار المنكر واجب على كل مسلم سواء صدر هذا المنكر من أمير أو حقير ، أو شريف أو وضيع ، ولم يرد في الآيات والأحاديث الآمرة بذلك استثناء للأمراء ، فدل على وجوب إنكار المنكر عليهم ، وإزالته ولو بالقوة عند الاستطاعة .
উলামাগণ বলেন: তাই অন্যায় কাজে বাঁধা দেওয়া প্রতিটি মুসলিমের উপর উরজ। চাই এ অন্যায় নেতা থেকে প্রকাশিত হোক অথবা সাধারণ লোক থেকে প্রকাশিত হোক, সম্মানিতদের থেকে প্রকাশিত হোক বা নিম্নদের থেকে প্রকাশিত হোক।
এ ব্যাপারে আদেশ দানকারী আয়াত ও হাদিসসমূহে শাসকদের ব্যাপারে কোন ভিন্নতা নেই। তাই এটা প্রমাণ করে যে, তাদের অন্যায়েরও প্রতিবাদ করা ও তা বন্ধ করা ফরজ, এমনকি সামর্থ্য থাকলে শক্তি দিয়ে হলেও।
প্রবন্ধটি সমাপ্ত হল
Comment