Announcement

Collapse
No announcement yet.

দ্যা আর্ট অফ ওয়ার‬: তৃতীয় অধ্যায় ‬(আক্রমণ কৌশল)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দ্যা আর্ট অফ ওয়ার‬: তৃতীয় অধ্যায় ‬(আক্রমণ কৌশল)

    (চীনা এই মিলিটারি ক্লাসিকটি অতি সংক্ষেপে সহজ ভাষায় অনুবাদ করা হল। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে)

    ‪#‎এক‬) ব্যবহারিক যুদ্ধবিদ্যায় সবচাইতে সেরা কাজটি হচ্ছে আস্ত, অক্ষত অবস্থায় শত্রুর দেশ দখল করে নেয়া, সেটাকে ধ্বংস করা খুব একটা কাজের না। শত্রুর সেনাদলকে ধ্বংস না করে ওটাকে আস্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার করাটা উত্তম।

    (এর ফলে শত্রুর মনোবল ভেঙে যায়, ধৃত শত্রুদের “বারগেইনিং চিপ” হিসেবে ব্যবহার করা যায়। একাত্তরে তিরানব্বই হাজার শত্রুসেনাকে পাকিস্তানে আটকে পরা লক্ষাধিক বাঙালিদের ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করা হয়েছিল)

    ‪#‎দুই‬) যুদ্ধ করে সব লড়াই জেতাটা নেতৃত্বের সর্বোচ্চ প্রদর্শন নয়, যুদ্ধ না করেই শত্রুর প্রতিরোধ ধ্বংস করাটা হচ্ছে আসল বাহাদুরি।

    ‪#‎তিন‬) সেরা কৌশল হচ্ছে শত্রুর পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়া, তার ঠিক পরে শত্রুকে তার মিত্রদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা, তারও পরে শত্রুকে মাঠে আক্রমণ করা। সবচেয়ে বাজে কৌশল হচ্ছে নগর অবরোধ করা।

    ‪#‎চার‬) নিয়ম হচ্ছে, যদি সম্ভব হয় নগর অবরোধ না করা। ওতে বহু সরঞ্জাম লাগে, প্রচুর প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়।

    ‪#‎পাঁচ‬) বেশিরভাগ সময়ে অবরোধকারী জেনারেল রাগের মাথায় একসাথে সারিবদ্ধ পিঁপড়ার মত শত শত সৈন্য আক্রমণে পাঠিয়ে দেন, যাদের এক তৃতীয়াংশ সঙ্গে সঙ্গে মারা পড়ে শহর দখল না করেই। নগর অবরোধের ফল এমনই ভয়াবহ।

    ‪#‎ছয়‬) দক্ষ নেতা তাই বিনাযুদ্ধে শত্রুসেনা দমন করেন, অবরোধ না করেই শহর দখল করেন, দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ ছাড়াই শত্রুর গণেশ উল্টে দেন।

    ( জেনারেল স্যাম মানেকশ এটা জানতেন। তাই তিনি ঢাকা অবরোধ করেননি, মিত্রসেনাকে ছোট ছোট দলে ভাগ করে বড় প্রতিরোধ এড়িয়ে ঢাকার ভেতরে পৌঁছে যান। বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পন করাতে পাকসেনাদের মুক্তিবাহিনীর ভয় দেখানো হয়, “আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ না করলে তোদের মুক্তিবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেয়া হবে, যারা জেনেভা কনভেনশন মানতে বাধ্য না”। নিয়াজি পারত আরো ছয় মাস যুদ্ধ চালাতে, কিন্তু লোকক্ষয়ের ভয়ে সে আত্মসমর্পণ করে। এটা আর্ট অফ ওয়ার প্রয়োগের ক্লাসিক উদাহরণ। )

    ‪#‎সাত‬) এভাবে নিজের সেনা অক্ষত রেখে দক্ষ সেনাপতি যুদ্ধজয় করেন। এই হচ্ছে যুদ্ধের মূল কৌশল।

    ‪#‎আট‬) যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী, আপনার সৈন্যসংখ্যা শত্রুর দশগুণ হলে তাকে ঘেরাও করুন, পাঁচগুণ হলে তাকে আক্রমণ করুন, দ্বিগুণ হলে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই দিক দিয়ে আক্রমণ করুন।

    ( একাত্তরে পাক ভারত বেলিজারেন্ট রেশিও ছিল 1: 1.5 এরও কম। মুক্তিবাহিনীর বীরত্বে এই রেশিও নিয়েও ভারতীয় বাহিনী পাকবাহিনীকে আক্রমণ করে।)

    ‪#‎নয়‬) শত্রু আর নিজ সেনা সমান হলে যুদ্ধ করা যায়, সেক্ষেত্রে যে সেনাপতি দক্ষ সে জিতবে।

    যদি নিজ সেনা কম থাকে, শত্রুকে এড়ানোই ভাল। আর শত্রু যদি সব দিকে এগিয়ে থাকে তাহলে দ্রুত তার থেকে পালিয়ে যেতে হবে।

    (খেয়াল করুন, পলানোটাও কিন্তু যুদ্ধের কৌশল। ওতে নাক সিঁটকানোর কিছু নেই)

    ‪#‎দশ‬) ক্ষুদ্র সেনাদল দারুণ লড়াই করলেও দিনশেষে বড় দলই জেতে, যদি তারা ঠিকঠাক যুদ্ধকৌশল মেনে চলে।

    ‪#‎এগার‬) যুদ্ধরত রাষ্ট্রের সেনানায়ক হচ্ছেন মূল খুঁটি। এই খুঁটি সব দিক দিয়ে সবল হলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হবে, আর না হলে রাষ্ট্র হবে দুর্বল।

    ‪#‎বার‬) শাসককেরা মোট তিন উপায়ে দেশের সেনাদলের বারোটা বাজাতে পারেন। এই উপায়গুলো হচ্ছে:

    ‪#‎তের‬) সেনাদলকে এমন পরিস্থিতিতে আক্রমণ/পিছু হঠতে নির্দেশ দিয়ে যখন পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে তারা ওটা পারবেনা।

    ‪#‎চোদ্দ‬) বেসামরিক প্রশাসন যেভাবে চালানো হয় ঠিক একইভাবে সেনা প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করে।

    ( এর উল্টোটাও সমানভাবে সত্য। বাংলাদেশের অবৈধ সামরিক শাসকেরা মিলিটারি কায়দায় সিভিল প্রশাসন চালাতে গিয়ে মোটামুটি ল্যাজে গোবরে করে ছেড়ে দিয়েছেন। )

    ‪#‎পনের‬) ঠিক জায়গায় ঠিক লোককে নিয়োগ না করে। যে ক্যাপ্টেন হবার যোগ্য না তাকে ব্রিগেডিয়ার বানালে সেই আর্মির বারোটা বাজবেই।

    ‪#‎ষোল‬) একটা দেশের সেনাবাহিনী যখন অশান্ত আর আস্থাহীন, সেই দেশের উপর অন্য দেশ নিশ্চিতভাবে কুনজর দেবে।

    ‪#‎সতের‬) যুদ্ধজয়ের নীতি মোট পাঁচটা:

    এক- কখন যুদ্ধ করতে হবে আর কখন না করতে হবে সেটা জানা।

    দুই- নিজের চেয়ে বড় এবং ছোট দুই ধরণের শত্রুসেনাদলকেই সামলাতে জানা।

    তিন- যার সেনাদলের সৈনিক থেকে জেনারেল সবার মধ্যে একই মনোবল কাজ করছে।

    চার- যে নিজে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে শত্রুকে অপ্রস্তুত অবস্থায় পাবে।

    এবং

    পাঁচ-যার সেনাদলের ভেতর রাজনীতিবিদরা নাক গলায়না।

    এই পাঁচটা বিষয় যুদ্ধ জিততে হলে মাথায় রাখতে হবে।

    ‪#‎আঠার‬) আপনি যদি নিজেকে জানেন এবং সেই সাথে শত্রুকেও জানেন, একশ যুদ্ধে আপনি জয়ী হবেন। যদি শুধু নিজেকে জানেন, তাহলে প্রতিটা যুদ্ধের জয়ের পর একটা হার আপনার সইতে হবে। আর দুটোর কোনটাই না জানলে সব কটা যুদ্ধে হেরে ভূত হবেন।

    ‪#‎অনুবাদকে_কথা‬

    এই অধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইচ্ছে করেই মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের উদাহরণ ব্যবহার করেছি যাতে আপনারা সহজে বুঝতে পারেন। আশা করি এটা আপনাদের কাজে লাগবে।

    প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব ফোরামে দেয়া আছে।
    al-aqsa

  • #2
    যদি নিজ সেনা কম থাকে, শত্রুকে এড়ানোই ভাল। আর শত্রু যদি সব দিকে এগিয়ে থাকে তাহলে দ্রুত তার থেকে পালিয়ে যেতে হবে।
    .
    .
    জ্বী না আপনার এ কথাগুলো মানতে পারলাম না।

    Comment


    • #3
      Originally posted by রক্ত ভেজা পথ View Post
      যদি নিজ সেনা কম থাকে, শত্রুকে এড়ানোই ভাল। আর শত্রু যদি সব দিকে এগিয়ে থাকে তাহলে দ্রুত তার থেকে পালিয়ে যেতে হবে।
      .
      .
      জ্বী না আপনার এ কথাগুলো মানতে পারলাম না।
      ভাই এটা লেখকের কথা না। এটা আর্ট ওফ ওয়ার এর নীতি। আর আপনি এর বাস্তব উদাহরন পাবেন মুসলমানদের পক্ষে খালিদ রাজিঃ এর প্রথম যুদ্ধের ঘটনায়। যদিও আমরা সেটাকে পলায়ন বলতে পারি না, তবে সেটি ছিল নিজের বাহিনীর বেশি ক্ষতি এড়ানোর জন্য পিছনে চলে আসা। আর উপোরক্ত এই নীতিটি হয়তো শব্দ চয়নের পার্থক্যের কারনে আপনি মানতে পারেন নি।
      "হক হকের জায়গায়
      সম্মান সম্মানের জায়গায়
      আমরা বেছে নিয়েছি আল্লাহর দলকেই"

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ্ আখি।এটাকে পালায়ন বলে না এটাও একটা কৌশল।তবে মুসলিমদের যুদ্ধ আর কাফিরের যুদ্ধ অনেক ভিন্ন।কারন মুসলিমরা যুদ্ধে জিতে শুধু আল্লাহ্র সাহায্যে।

        ভাই বইটা কিন্তু কাফিররা লিখছে এটা মনে রাখতে হবে। আমরা শুধু বইটা থেকে কিছু স্ট্রটেজি শিখবো।
        al-aqsa

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ্
          al-aqsa

          Comment


          • #6
            jazakumullah.
            মাশাআল্লাহ।

            Comment


            • #7
              মাথা থাকলে ব্যথা,
              و شكيتى فقد السقام فانه كان لما كان لى أعضاء
              যুদ্ধে থাওকলে পালানো আর্ট হতে পাড়ে, কিন্তু যে কাপুরুষ যুদ্ধে নেই তার আবার আর্ট!?

              Comment


              • #8
                এখান থেকে যা ভাল তা গ্রহন করা যায় ইং

                Comment


                • #9
                  মাশাঅাল্লাহ, খুব সুন্দর হয়েছে।

                  Comment


                  • #10
                    মাশাঅাল্লাহ, জাযাকাল্লাহ।

                    Comment

                    Working...
                    X