বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু আস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ -
সমস্ত প্রশংসা জগত সমূহের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য। যিনি মুমিনদের জন্য অভিভাবক হিসেবে যথেষ্ট!
কিছু দিন থেকে একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো - পত্রিকায় মাঝে মাঝেই দেখা যায় - পরিচয় বিহীন গাড়ি সহ লোক এসে কাউকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে -
কাজের ধরণ লক্ষ্য করলে বুঝা যায় এই গ্রুপ টির বেশ দাপটে আছে, ধরে নেয়া যায় এদের জবাদিহিতার ব্যাপারটা অস্পষ্ট এবং এদের বড় পরিসরে ক্ষমতা দেয়া আছে। কখনো দেখা যায় এরা ৫-৬ মাস পরে গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তি কে ফেরত দিয়ে যায়, পুলিশ বা র্যা ব এর মত মেরে ফেলেনা।
আমার মুল পয়েন্ট এরা কারা সেটি না - মুল পয়েন্ট হচ্ছে এদের কাজের ধরণ/ তুলে নিয়ে যাবার ধরণ সম্পর্কে যত টুকু পত্রিকা পড়ে জানতে পারলাম তা নিয়ে কিছু কথা বলা। বেশির ভাগ সময়েই এরা পরিচয় বিহীন গাড়ি নিয়ে আসে (অধিকাংশ সময়েই মাইক্রো বা জীপ) এবং এক সাথে কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ জন এর টিম হয়।
অস্ত্রের কোন নির্দিষ্ট বর্ণনা পেপারে না আসলেও ধারনা করে নেয়া যায় কমপক্ষে তাদের কাছে অটোমেটিক পিস্তল থাকবেই।
যাই হোক - ৭ থেকে ১০ জন এর একটা টিম বনাম এক জন দীনি ভাই - বিষয় টা হিসাবে মিলেনা। কিন্তু আমাদের হিসাব আসলে- "ইন্নি তাওয়াক্কুল তু আলাল্লাহি রব্বি ওয়া রব্বিকুম" - আর আমাদের সাধ্যমত প্রস্তুতি/সতর্কতা হিসেবে কিছু পয়েন্ট শেয়ার করছি ইনশাআল্লাহ – আর কাফিরদের পরিকল্পনা আল্লাহ নস্যাত করবেনই।
১। এদের কাজ গুলো অধিকাংশ সময়ে রাতে হয়, রাত্রে শেষ ভাগে যখন মানুষ জনের উপস্থিতি সবচেয়ে কম থাকে। প্রকাশ্য দিবালোকেও হয়।
২। এদের কাজ খুব দ্রুত হয়, আর দ্রুত হবার অন্যতম একটি কারন হতে পারে এরা তাদের উপস্থিতি যত টুকু সম্ভব কম রাখতে চায়, অর্থাৎ তারা আম পাবলিকের হাউ কাউ এর মাঝে পড়তে চায়না। এখানে মনে রাখতে হবে এটি সত্য হলে এবং আমরা ধরে নিচ্ছি এটিই সত্য - তাহলে এটা তাদের একটা বড় দুর্বলতা। অর্থাৎ যে কোন শোরগলে তারা কিছুটা হলেও ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাবে। ঘরে চোর ঢুকলে হঠাত আলো জ্বলে উঠলে যেমন হয়।
৩। এরা দলগত ভাবে কাজ করে, এর মানে হচ্ছে এদের অপারেশনের একটা ফরমেশন/বিন্যাস থাকবে। সুনির্দিষ্ট না হলেও একটা ফরমেশন থাকতেই হবে। অর্থাৎ ৭ জন মানুষ হলে এই ৭ জনই গোল হয়ে টার্গেট কে ঘিরে ধরবে ব্যাপার টা এমন না। এটার দুইটা কারন - গোল বা সার্কুলার ফরমেশন এর মুভমেন্ট সহজেই চোখে ধরা পড়ে, এবং আপনি যদি লোকেশন বা গ্রাউন্ড এর কথা চিন্তা করেন তাহলে অধিকাংশ সময়ে টার্গেট কোন না কোন এক টা পাশে থাকবে। টার্গেট যদি বাম পাশে থাকে তাহলে বাম পাশ টা ব্লক করা তাদের জন্য সহজ নয়, একই ভাবে এটা ডানপাশ হতে পারে, পিছন হতে পারে, সামনে হতে পারে।
৪। এমন সারপ্রাইজ মুভমেন্ট বা কিডন্যাপ এর বেশির ভাগ সময়ে এই টিমটি পিছন থেকে আক্রমন করে, সামনের দিক টা ফাকা থাকে, বা পিছন সহ যে কোন একটা সাইড থেকে আক্রমন করে এবং যে কোন এক টা সাইড ফাকা থাকে।
৫। টার্গেট এর সামনে এবং পিছন মিলিয়ে যদি ৩৬০ ডিগ্রি হয় তাহলে পিছনের ১৮০ ডিগ্রি বাদ দিলে সামনে বা পাশ থেকে আরো হয়তো ৯০ ডিগ্রি বা এর কিছু বেশি একটা জায়গা ফাকা থাকতে পারে।
৬। আমি নিজে কখনো এমন কাপুরুষতা! দেখিনি, তবে বাস্তবে একটা টার্গেট এর উপরে এক সাথে ৩ জনের বেশি মানুষ হুমড়ি খেয়ে বা জাপটে ধরতে পারেনা, কারন ৩ জন মানুষ আসলে একজন মানুষের পুরা টা কাভার করে ফেলে।
৭। টার্গেট কে ধরার পর সম্ভবত তাদের সর্ব প্রথম লক্ষ্য থাকে টার্গেট কে ফেলে দেয়া এবং হাতকড়া পরানো।
৮। টার্গেট কে যদি হাতকড়া পরানোর উদ্দেশ্যে ফেলা হয় তাহলে তাকে সামনের দিকে ফেলতে হবে যেন, হাত পিছনের দিকে ফ্রি থাকে। তাহলে ধরে নিতে হবে টার্গেট সামনের দিকে উপুড় হয়ে পড়ে যাবে।
এবার দেখা যাক আমাদের করনিয় কি হতে পারে -
সবার আগে -
সকাল সন্ধ্যার আজকার, এবং ঢেকে রাখার দুয়া গুলো আমল করেন
প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে নিরাশ্রয় ভিখারীর মত আশ্রয় এবং সাহায্য ভিক্ষা চাইতে থাকেন -
এরপর -
১। যে সময়ে সাধারন মানুষ কম চলে সে সময়ে চলাচল, মিটিং, যাত্রা শেষ করা বা শুরু করা যাবেনা।
২। একাকী চলাচলের সময়ে ফাকা জায়গা, মোড়, আইল্যান্ড, জাংশান এগুলো পার হবার সময় সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে এই ওপেন প্লেস গুলো অ্যাভয়েড করতে হবে। চোখের ব্যাবহার বাড়ানো, যথাসম্ভব প্রতিটি অবজেক্ট গাড়ি, সিএনজি ট্রাফিক সিগন্যাল – এগুলো কে চোখ দিয়ে স্ক্যান করা।
৩। এই টিম গুলো গাড়ি ছাড়া চলেনা, মনে রাখতে হবে তার গাড়ি আশে পাশেই কোথাও থাকবে। আরো মনে রাখতে হবে তাদেরে এই আক্রমন টা কোন স্পটে তারা করবে এটা অনেকটা পুর্বনির্ধারিত। অর্থাৎ টার্গেট কে আক্রমন করার জন্য তাদের মাইন্ড সেটআপ আগে থেকেই থাকবে।কাজ দ্রুত সারতে হলে স্পট থেকে গাড়ির দূরত্ব খুবই কম হতে হবে। সুতরাং লক্ষ্য রাখতে হবে ১০০-৩০০ মিটার এর মধ্যে কোন অলস গাড়ি/মাইক্রো/জিপ বসে আছে কিনা। ২০০-৩০০ মিটার আগে থেকে যদি অলস গাড়ী লোকেট করা যায়, আল্লাহ চাইলে তাদের অ্যাভয়েড করা যাবে ইনশাআল্লাহ।
৪। এই ধরনের আক্রমনের মুল প্রতিরক্ষা শত্রু কে আগে লোকেট করতে পারা। গাড়ি রাস্তার এপাশ ওপাশ যে কোন পাশেই হতে পারে - তাই দুই দিকেই খেয়াল রাখা দরকার।
৫। রাস্তার মোড়, যেমন বামে রাস্তা গেছে বা ডানে গেছে এমন ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা কারন সেক্ষেত্রে গাড়ি বাঁকের আড়ালে থাকবে।
৬। দিনের বেলায় হলে গাড়ি লোকেট করা কঠিন হবে। তখন খেয়াল রাখতে হবে সম্ভাব্য কোন কোন জায়গা গুলো তে ৭-১০ জনের একটা টিম মিশে থাকতে পারে। প্রত্যেক টা অপারেশন এর জন্য একটা লাঞ্চিং প্যাড লাগে। আপনাকে ভেবে দেখতে হবে আমার চলাচলের রুটে ৫ -১০ জনের একটা টিম এবং গাড়ী সহ একটা লাঞ্চিং প্যাড কোন কোন পয়েন্ট গুলো হতে পারে। এবং সেই পয়েন্ট গুলোকে রুটিন চলাচলের সময়ে নজরে রাখা। এর ফলে কোন একদিনের সুক্ষ পরিবর্তন বা অ্যাবনর্মাল উপস্থিতি দ্রুত ধরা যাবে ইনশাআল্লাহ। অ্যাবনর্মাল উপস্থিতি বলতে কি বুঝাচ্ছি সেটা যদি আমি একটু খুলে বলি তা হচ্ছে - ধরেন রাস্তার ধারে একটা সিএনজি স্ট্যান্ড, সেখানে সকাল ৮ তা থেকে ১০ টা পর্যন্ত প্রায় ৪-৫ টা সিএনজি থাকে। এই বিষয় টা আপনি কিছু দূর থেকেই লক্ষ্য করতে পারবেন আশা করা যায়। একদিন দেখলেন কোন সিএনজি নাই উলটা সেখানে একটা গাড়ী আছে - লক্ষ্য করেন কিভাবে স্বাভাবিক উপস্থিতিও অস্বাভাবিক হয়। একটা গাড়ি এসে দাড়ালে খুব সম্ভব সিএনজি গুলোকে সরিয়ে দিবে কারন গাড়ি টান দেয়ার সময় আগে পিছে কোন সিএনজি থাকুক সেটা কাম্য না। সুতরাং এটা হচ্ছে একটা প্যাটার্ন যা চাইলেও তারা হাইড করতে পারবেনা। এজন্য এধরনের পয়েন্ট গুলো আগে থেকে নোটে এনে সেগুলোকে ভালো ভাবে লক্ষ্য করা।
৭। আল্লাহ না করুন যদি আক্রমন হয়েই যায় তবে সবার আগে সমস্ত শক্তি দিয়ে তাকবির দেয়া, আল্লাহ চাইলে এক তাকবিরেই তারা জায়গায় জমে যাবে ইনশাআল্লাহ। যদি তারা আপনাকে ধরেই ফেলে আর মাটিতে ফেলে দেয়ার আগ পর্যন্ত কোন সুযোগ না পান তাহলে চেস্টা করা হাত এবং দুই হাটু যেন বুকের নিচে থাকে, তাহলে মাটির পড়ার সাথে সাথেই আপনার হাত এবং পা ফ্রি থাকবে এবং খুব সম্ভব একটা ধাক্কা দিয়ে আপনি গা ঝাড়া দিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। সম্ভব হলে মাটিতে পড়ার সাথে সাথেই এক দিকে গড়ান দেন, এরপর উঠে সব টুকু শক্তি দিয়ে দৌড় দেন।
৮। যদি ধস্তাধস্তি শুরু হয় মনে রাখবেন, আপনার জন্য সুযোগ প্রথম ৫ সেকেন্ড, কারন তারা আপনার থেকে মারাত্মক কোন প্রতিরোধ আশা করবেনা। ৩ জন বনাম একজনের ক্ষেত্রে ৩ জনের দল মানসিক ভাবে কিছুটা রিল্যাক্স থাকে (অবচেতন ভাবে হলেও) সেটাই আমাদের জন্য সুযোগ। পিছন থেকে যদি আক্রমন হয়, নিজেকে সামনের দিকে গুটিয়ে নেন, এতে পিছন থেকে আক্রমন কারী সামনের দিকে ঝুকে পড়বে এবং কিছুটা হলেও ব্যালান্স হারাবে, আর যদি সামনে থেকে আক্রমন বুঝতে পারেন, নিজেকে যে কোন এক সাইডে কিংবা পিছন দিকে ফেলে দেন, তাহলে সামনের আক্রমনকারী কিছুটা ব্যালান্স হারাবে। আক্রমন এর প্রথম ৫ সেকেন্ড এর মধ্যে নিজেকে যদি গুটিয়ে ছোট করে নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য একটা ছোট ফোকর তৈরি হবে যেটা আপনি পরবর্তী ঝটকায় কাজে লাগাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
৯। আক্রমন এর দিক যেদিকে আপনার ফোকর তৈরি হবার সুযোগ সেই দিকে, পিছন থেকে সামনের দিকে ধাক্কা আসলে আপনি সামনের দিকেই সেই চান্স টা পাবেন ইনশাআল্লাহ, আর সামনে থেকে পিছন দিকে হলে
সেটা পিছনেই পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
১০। যদি এমন হয় যে আপনি আসলে ৪-৫ জনের মাঝে পড়ে গেছেন, বাকি সব দিক বন্ধ, নিজেকে নিচের দিকে গুটিয়ে নিতে হবে, মনে রাখবেন দুই পায়ের মাঝে যথেষ্ট ফাক থাকে।
১১। আঘাত হানা, আঘাত হানবেন আঙ্গুল দিয়ে চোখে, কনুই দিয়ে বুকের নিচে বা গলায়, পা দিয়ে নাভির নিচে। কয়েকজনের মাঝে পড়ে গেলে দুই কনুই ব্যাবহার করে নিচের দিকে বসে পড়ার চেস্টা করেন, তবে সাথে সাথেই পায়ের ফাক দিয়ে বের হয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হএ ধস্তাধস্তির প্রতি সেকেন্ডের সাথে আপনি শক্তি হারাবেন তাই একটা আঘাত ও বিক্ষিপ্ত হওয়া যাবেনা।
১২। ধস্তাধস্তির সময়ে নিজেকে যে কোন একজনের শরিরের সাথে মিশিয়ে দেন, তাহলে অন্তত একজন কে অক্ষম করতে পারবেন, আপনি যার শরিরের সাথে মিশে যাবেন তার খুব বেশি কিছু করার থাকবেনা।
১৩। অবিরাম প্র্যাক্টিস করেন, আমরা সবাই যে কোন একদিকে শক্তিশালী, হয় ডান দিকে অথবা বাম দিকে, আপনি খুজে দেখেন আপনি কোন দিকে শক্তিশালী, কোন চিন্তা করা ছাড়াই যে কোন এক সাইডে লাফ দেয়ার চিন্তা করেন, কিংবা বুড়া আঙ্গুল কে উপরে রেখে দুই হাতের আঙ্গুল গুলো কে একটার ভিতরে আরেকটা ঢুকিয়ে মুঠি বন্ধ করেন। এবার দেখেন কোন হাতের বুড়া আঙ্গুল উপরে? ডান হাতের হলে আপনি বাম দিকে দুর্বল আর বাম হাতের হলে আপনি ডান দিকে দুর্বল। পালানর সময় দুর্বল দিক পরিহার করেন, এতে আপনার শক্তি এবং সময় নষ্ট হবে।
১৪। পুশআপ, দৌড়, ধাক্কা দেয়া প্রাক্টিস করেন। ধাক্কা দিবেন কাছ, থেকে দূর থেকে নয়। ৩ জন কে বলেন ১০ সেকেন্ড এর মধ্যে আপনাকে মাটিতে পেড়ে ফেলতে, আর আপনি ৫ সেকেন্ডের মধ্যে ছুটার চেস্টা করেন।
১৫। আছাড় মারার টেকনিক গুলো শিখে নেন, কিছু ডেডলি শট শিখে নেন। হিউম্যান বডির কিছু নার্ভ পয়েন্ট আছে, সেগুলো তে হিট করা শিখেন।
১৬। রাস্তায় হাটার সময় খেয়াল রাখেন কোন সাইড টা আপনি কম তাকান, এটা হতে পারে, ডান বাম, উপর নিচ - যে দিকে আপনি কম তাকান সেই দিকে তাকানোর অভ্যাস করেন।
১৭। মাইন্ড সেট আপ - অপ্রতিকুল কোন অবস্থায় কি করনীয় এ ব্যাপারে চিন্তা করার জন্য যেন আপনাকে খুব বেশি সময় ব্যয় না করতে হয়। এজন্য নিজেকে বলে রাখেন আমি আক্রান্ত হলে কোন চিন্তা ছাড়াই আগে শত্রুর চোখে আঘাত করবো, কিংবা গলায় আগাহত করবো - মনে রাখবেন স্বাভাবিক ভাবে আমাদের মধ্যে এক ধরনের জড়তা কাজ করে। আপনাকে একটি রাইফেল দিয়ে দিলেই আপনি গুলি করতে পারবেন না। কারন আপনার ব্রেন এবং শরীর এই কাজের সাথে পরিচিত না। এজন্য দেখা যাবে দরকারের মুহূর্তে আপনি হয়ত ১ সেকেন্ড বা ২ সেকেন্ড দেরি করে ফেলবেন, বা দ্বিধায় ভুগবেন। একই ভাবে আপনাকে যদি বক্সিং এর রিং এ উঠিয়ে দেয়া হয় আপনি একটা ঘুষি মারার আগে চিন্তা শুরু করবেন - কোথায় মারবো? আমাকে যদি আগে মেরে দেয়? এগুলো হচ্ছে জড়তা। এই জড়তা দূর করার জন্য দকরকার অবিরাম অভ্যাস, প্র্যাকটিস।
তাই আগেই নিজের মাইন্ড সেটআপ এবং করনীয় গুলো অভ্যাস করতে থাকেন।
একটা সাদা কাগজে দুইটা গোল বৃত্ত একে চোখের মত করে দেয়ালে লাগিয়ে দেন- স্বাভাবিক মানুষের চোখের উচ্চতায়। যখনই এটা চোখে পড়বে ঐ চোখ দুটিতে আঘাত করেন। এটি শুধু একটি উদাহরণ আপনি নিজে নিজের প্র্যাক্টিস করার তরিকা সেট করে নেন।
যুদ্ধের অন্যতম কৌশল হচ্ছে প্রতিরক্ষা, আমাদের সাধ্যমত নিজেদের প্রতিরক্ষা কৌশল সাজানো এবং চর্চা করা দরকার। এই কৌশল কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নাই, এবং এই কৌশল এর কোন শেষ নাই, প্রতিনিয়ত আমাদের এই কৌশল খুজতেই থাকতে হবে এবং চর্চা করতে হবে, (যতটুকু সম্ভব)। ফাইট ব্যাতিত কোন কথা নয়! আর আল্লাহ আমাদের ব্যাপারে যথেষ্ট ।
সব শেষে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, মানুষ এবং জিন শয়তান থেকে, আল্লাহ ব্যাতিত কোন কুউওয়াত নাই, আর আমাদের দুশমন রা আমদের ভিতরে হিংস্রতা ছাড়া যেন অন্য কিছু না দেখে!
সবশেষে -
বালিল্লাহি মাওলাকুম ওয়া হুয়া খাইরুন নাসিরিন
সমস্ত প্রশংসা জগত সমূহের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য। যিনি মুমিনদের জন্য অভিভাবক হিসেবে যথেষ্ট!
কিছু দিন থেকে একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো - পত্রিকায় মাঝে মাঝেই দেখা যায় - পরিচয় বিহীন গাড়ি সহ লোক এসে কাউকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে -
কাজের ধরণ লক্ষ্য করলে বুঝা যায় এই গ্রুপ টির বেশ দাপটে আছে, ধরে নেয়া যায় এদের জবাদিহিতার ব্যাপারটা অস্পষ্ট এবং এদের বড় পরিসরে ক্ষমতা দেয়া আছে। কখনো দেখা যায় এরা ৫-৬ মাস পরে গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তি কে ফেরত দিয়ে যায়, পুলিশ বা র্যা ব এর মত মেরে ফেলেনা।
আমার মুল পয়েন্ট এরা কারা সেটি না - মুল পয়েন্ট হচ্ছে এদের কাজের ধরণ/ তুলে নিয়ে যাবার ধরণ সম্পর্কে যত টুকু পত্রিকা পড়ে জানতে পারলাম তা নিয়ে কিছু কথা বলা। বেশির ভাগ সময়েই এরা পরিচয় বিহীন গাড়ি নিয়ে আসে (অধিকাংশ সময়েই মাইক্রো বা জীপ) এবং এক সাথে কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ জন এর টিম হয়।
অস্ত্রের কোন নির্দিষ্ট বর্ণনা পেপারে না আসলেও ধারনা করে নেয়া যায় কমপক্ষে তাদের কাছে অটোমেটিক পিস্তল থাকবেই।
যাই হোক - ৭ থেকে ১০ জন এর একটা টিম বনাম এক জন দীনি ভাই - বিষয় টা হিসাবে মিলেনা। কিন্তু আমাদের হিসাব আসলে- "ইন্নি তাওয়াক্কুল তু আলাল্লাহি রব্বি ওয়া রব্বিকুম" - আর আমাদের সাধ্যমত প্রস্তুতি/সতর্কতা হিসেবে কিছু পয়েন্ট শেয়ার করছি ইনশাআল্লাহ – আর কাফিরদের পরিকল্পনা আল্লাহ নস্যাত করবেনই।
১। এদের কাজ গুলো অধিকাংশ সময়ে রাতে হয়, রাত্রে শেষ ভাগে যখন মানুষ জনের উপস্থিতি সবচেয়ে কম থাকে। প্রকাশ্য দিবালোকেও হয়।
২। এদের কাজ খুব দ্রুত হয়, আর দ্রুত হবার অন্যতম একটি কারন হতে পারে এরা তাদের উপস্থিতি যত টুকু সম্ভব কম রাখতে চায়, অর্থাৎ তারা আম পাবলিকের হাউ কাউ এর মাঝে পড়তে চায়না। এখানে মনে রাখতে হবে এটি সত্য হলে এবং আমরা ধরে নিচ্ছি এটিই সত্য - তাহলে এটা তাদের একটা বড় দুর্বলতা। অর্থাৎ যে কোন শোরগলে তারা কিছুটা হলেও ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাবে। ঘরে চোর ঢুকলে হঠাত আলো জ্বলে উঠলে যেমন হয়।
৩। এরা দলগত ভাবে কাজ করে, এর মানে হচ্ছে এদের অপারেশনের একটা ফরমেশন/বিন্যাস থাকবে। সুনির্দিষ্ট না হলেও একটা ফরমেশন থাকতেই হবে। অর্থাৎ ৭ জন মানুষ হলে এই ৭ জনই গোল হয়ে টার্গেট কে ঘিরে ধরবে ব্যাপার টা এমন না। এটার দুইটা কারন - গোল বা সার্কুলার ফরমেশন এর মুভমেন্ট সহজেই চোখে ধরা পড়ে, এবং আপনি যদি লোকেশন বা গ্রাউন্ড এর কথা চিন্তা করেন তাহলে অধিকাংশ সময়ে টার্গেট কোন না কোন এক টা পাশে থাকবে। টার্গেট যদি বাম পাশে থাকে তাহলে বাম পাশ টা ব্লক করা তাদের জন্য সহজ নয়, একই ভাবে এটা ডানপাশ হতে পারে, পিছন হতে পারে, সামনে হতে পারে।
৪। এমন সারপ্রাইজ মুভমেন্ট বা কিডন্যাপ এর বেশির ভাগ সময়ে এই টিমটি পিছন থেকে আক্রমন করে, সামনের দিক টা ফাকা থাকে, বা পিছন সহ যে কোন একটা সাইড থেকে আক্রমন করে এবং যে কোন এক টা সাইড ফাকা থাকে।
৫। টার্গেট এর সামনে এবং পিছন মিলিয়ে যদি ৩৬০ ডিগ্রি হয় তাহলে পিছনের ১৮০ ডিগ্রি বাদ দিলে সামনে বা পাশ থেকে আরো হয়তো ৯০ ডিগ্রি বা এর কিছু বেশি একটা জায়গা ফাকা থাকতে পারে।
৬। আমি নিজে কখনো এমন কাপুরুষতা! দেখিনি, তবে বাস্তবে একটা টার্গেট এর উপরে এক সাথে ৩ জনের বেশি মানুষ হুমড়ি খেয়ে বা জাপটে ধরতে পারেনা, কারন ৩ জন মানুষ আসলে একজন মানুষের পুরা টা কাভার করে ফেলে।
৭। টার্গেট কে ধরার পর সম্ভবত তাদের সর্ব প্রথম লক্ষ্য থাকে টার্গেট কে ফেলে দেয়া এবং হাতকড়া পরানো।
৮। টার্গেট কে যদি হাতকড়া পরানোর উদ্দেশ্যে ফেলা হয় তাহলে তাকে সামনের দিকে ফেলতে হবে যেন, হাত পিছনের দিকে ফ্রি থাকে। তাহলে ধরে নিতে হবে টার্গেট সামনের দিকে উপুড় হয়ে পড়ে যাবে।
এবার দেখা যাক আমাদের করনিয় কি হতে পারে -
সবার আগে -
সকাল সন্ধ্যার আজকার, এবং ঢেকে রাখার দুয়া গুলো আমল করেন
প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে নিরাশ্রয় ভিখারীর মত আশ্রয় এবং সাহায্য ভিক্ষা চাইতে থাকেন -
এরপর -
১। যে সময়ে সাধারন মানুষ কম চলে সে সময়ে চলাচল, মিটিং, যাত্রা শেষ করা বা শুরু করা যাবেনা।
২। একাকী চলাচলের সময়ে ফাকা জায়গা, মোড়, আইল্যান্ড, জাংশান এগুলো পার হবার সময় সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে এই ওপেন প্লেস গুলো অ্যাভয়েড করতে হবে। চোখের ব্যাবহার বাড়ানো, যথাসম্ভব প্রতিটি অবজেক্ট গাড়ি, সিএনজি ট্রাফিক সিগন্যাল – এগুলো কে চোখ দিয়ে স্ক্যান করা।
৩। এই টিম গুলো গাড়ি ছাড়া চলেনা, মনে রাখতে হবে তার গাড়ি আশে পাশেই কোথাও থাকবে। আরো মনে রাখতে হবে তাদেরে এই আক্রমন টা কোন স্পটে তারা করবে এটা অনেকটা পুর্বনির্ধারিত। অর্থাৎ টার্গেট কে আক্রমন করার জন্য তাদের মাইন্ড সেটআপ আগে থেকেই থাকবে।কাজ দ্রুত সারতে হলে স্পট থেকে গাড়ির দূরত্ব খুবই কম হতে হবে। সুতরাং লক্ষ্য রাখতে হবে ১০০-৩০০ মিটার এর মধ্যে কোন অলস গাড়ি/মাইক্রো/জিপ বসে আছে কিনা। ২০০-৩০০ মিটার আগে থেকে যদি অলস গাড়ী লোকেট করা যায়, আল্লাহ চাইলে তাদের অ্যাভয়েড করা যাবে ইনশাআল্লাহ।
৪। এই ধরনের আক্রমনের মুল প্রতিরক্ষা শত্রু কে আগে লোকেট করতে পারা। গাড়ি রাস্তার এপাশ ওপাশ যে কোন পাশেই হতে পারে - তাই দুই দিকেই খেয়াল রাখা দরকার।
৫। রাস্তার মোড়, যেমন বামে রাস্তা গেছে বা ডানে গেছে এমন ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা কারন সেক্ষেত্রে গাড়ি বাঁকের আড়ালে থাকবে।
৬। দিনের বেলায় হলে গাড়ি লোকেট করা কঠিন হবে। তখন খেয়াল রাখতে হবে সম্ভাব্য কোন কোন জায়গা গুলো তে ৭-১০ জনের একটা টিম মিশে থাকতে পারে। প্রত্যেক টা অপারেশন এর জন্য একটা লাঞ্চিং প্যাড লাগে। আপনাকে ভেবে দেখতে হবে আমার চলাচলের রুটে ৫ -১০ জনের একটা টিম এবং গাড়ী সহ একটা লাঞ্চিং প্যাড কোন কোন পয়েন্ট গুলো হতে পারে। এবং সেই পয়েন্ট গুলোকে রুটিন চলাচলের সময়ে নজরে রাখা। এর ফলে কোন একদিনের সুক্ষ পরিবর্তন বা অ্যাবনর্মাল উপস্থিতি দ্রুত ধরা যাবে ইনশাআল্লাহ। অ্যাবনর্মাল উপস্থিতি বলতে কি বুঝাচ্ছি সেটা যদি আমি একটু খুলে বলি তা হচ্ছে - ধরেন রাস্তার ধারে একটা সিএনজি স্ট্যান্ড, সেখানে সকাল ৮ তা থেকে ১০ টা পর্যন্ত প্রায় ৪-৫ টা সিএনজি থাকে। এই বিষয় টা আপনি কিছু দূর থেকেই লক্ষ্য করতে পারবেন আশা করা যায়। একদিন দেখলেন কোন সিএনজি নাই উলটা সেখানে একটা গাড়ী আছে - লক্ষ্য করেন কিভাবে স্বাভাবিক উপস্থিতিও অস্বাভাবিক হয়। একটা গাড়ি এসে দাড়ালে খুব সম্ভব সিএনজি গুলোকে সরিয়ে দিবে কারন গাড়ি টান দেয়ার সময় আগে পিছে কোন সিএনজি থাকুক সেটা কাম্য না। সুতরাং এটা হচ্ছে একটা প্যাটার্ন যা চাইলেও তারা হাইড করতে পারবেনা। এজন্য এধরনের পয়েন্ট গুলো আগে থেকে নোটে এনে সেগুলোকে ভালো ভাবে লক্ষ্য করা।
৭। আল্লাহ না করুন যদি আক্রমন হয়েই যায় তবে সবার আগে সমস্ত শক্তি দিয়ে তাকবির দেয়া, আল্লাহ চাইলে এক তাকবিরেই তারা জায়গায় জমে যাবে ইনশাআল্লাহ। যদি তারা আপনাকে ধরেই ফেলে আর মাটিতে ফেলে দেয়ার আগ পর্যন্ত কোন সুযোগ না পান তাহলে চেস্টা করা হাত এবং দুই হাটু যেন বুকের নিচে থাকে, তাহলে মাটির পড়ার সাথে সাথেই আপনার হাত এবং পা ফ্রি থাকবে এবং খুব সম্ভব একটা ধাক্কা দিয়ে আপনি গা ঝাড়া দিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। সম্ভব হলে মাটিতে পড়ার সাথে সাথেই এক দিকে গড়ান দেন, এরপর উঠে সব টুকু শক্তি দিয়ে দৌড় দেন।
৮। যদি ধস্তাধস্তি শুরু হয় মনে রাখবেন, আপনার জন্য সুযোগ প্রথম ৫ সেকেন্ড, কারন তারা আপনার থেকে মারাত্মক কোন প্রতিরোধ আশা করবেনা। ৩ জন বনাম একজনের ক্ষেত্রে ৩ জনের দল মানসিক ভাবে কিছুটা রিল্যাক্স থাকে (অবচেতন ভাবে হলেও) সেটাই আমাদের জন্য সুযোগ। পিছন থেকে যদি আক্রমন হয়, নিজেকে সামনের দিকে গুটিয়ে নেন, এতে পিছন থেকে আক্রমন কারী সামনের দিকে ঝুকে পড়বে এবং কিছুটা হলেও ব্যালান্স হারাবে, আর যদি সামনে থেকে আক্রমন বুঝতে পারেন, নিজেকে যে কোন এক সাইডে কিংবা পিছন দিকে ফেলে দেন, তাহলে সামনের আক্রমনকারী কিছুটা ব্যালান্স হারাবে। আক্রমন এর প্রথম ৫ সেকেন্ড এর মধ্যে নিজেকে যদি গুটিয়ে ছোট করে নিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য একটা ছোট ফোকর তৈরি হবে যেটা আপনি পরবর্তী ঝটকায় কাজে লাগাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
৯। আক্রমন এর দিক যেদিকে আপনার ফোকর তৈরি হবার সুযোগ সেই দিকে, পিছন থেকে সামনের দিকে ধাক্কা আসলে আপনি সামনের দিকেই সেই চান্স টা পাবেন ইনশাআল্লাহ, আর সামনে থেকে পিছন দিকে হলে
সেটা পিছনেই পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
১০। যদি এমন হয় যে আপনি আসলে ৪-৫ জনের মাঝে পড়ে গেছেন, বাকি সব দিক বন্ধ, নিজেকে নিচের দিকে গুটিয়ে নিতে হবে, মনে রাখবেন দুই পায়ের মাঝে যথেষ্ট ফাক থাকে।
১১। আঘাত হানা, আঘাত হানবেন আঙ্গুল দিয়ে চোখে, কনুই দিয়ে বুকের নিচে বা গলায়, পা দিয়ে নাভির নিচে। কয়েকজনের মাঝে পড়ে গেলে দুই কনুই ব্যাবহার করে নিচের দিকে বসে পড়ার চেস্টা করেন, তবে সাথে সাথেই পায়ের ফাক দিয়ে বের হয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হএ ধস্তাধস্তির প্রতি সেকেন্ডের সাথে আপনি শক্তি হারাবেন তাই একটা আঘাত ও বিক্ষিপ্ত হওয়া যাবেনা।
১২। ধস্তাধস্তির সময়ে নিজেকে যে কোন একজনের শরিরের সাথে মিশিয়ে দেন, তাহলে অন্তত একজন কে অক্ষম করতে পারবেন, আপনি যার শরিরের সাথে মিশে যাবেন তার খুব বেশি কিছু করার থাকবেনা।
১৩। অবিরাম প্র্যাক্টিস করেন, আমরা সবাই যে কোন একদিকে শক্তিশালী, হয় ডান দিকে অথবা বাম দিকে, আপনি খুজে দেখেন আপনি কোন দিকে শক্তিশালী, কোন চিন্তা করা ছাড়াই যে কোন এক সাইডে লাফ দেয়ার চিন্তা করেন, কিংবা বুড়া আঙ্গুল কে উপরে রেখে দুই হাতের আঙ্গুল গুলো কে একটার ভিতরে আরেকটা ঢুকিয়ে মুঠি বন্ধ করেন। এবার দেখেন কোন হাতের বুড়া আঙ্গুল উপরে? ডান হাতের হলে আপনি বাম দিকে দুর্বল আর বাম হাতের হলে আপনি ডান দিকে দুর্বল। পালানর সময় দুর্বল দিক পরিহার করেন, এতে আপনার শক্তি এবং সময় নষ্ট হবে।
১৪। পুশআপ, দৌড়, ধাক্কা দেয়া প্রাক্টিস করেন। ধাক্কা দিবেন কাছ, থেকে দূর থেকে নয়। ৩ জন কে বলেন ১০ সেকেন্ড এর মধ্যে আপনাকে মাটিতে পেড়ে ফেলতে, আর আপনি ৫ সেকেন্ডের মধ্যে ছুটার চেস্টা করেন।
১৫। আছাড় মারার টেকনিক গুলো শিখে নেন, কিছু ডেডলি শট শিখে নেন। হিউম্যান বডির কিছু নার্ভ পয়েন্ট আছে, সেগুলো তে হিট করা শিখেন।
১৬। রাস্তায় হাটার সময় খেয়াল রাখেন কোন সাইড টা আপনি কম তাকান, এটা হতে পারে, ডান বাম, উপর নিচ - যে দিকে আপনি কম তাকান সেই দিকে তাকানোর অভ্যাস করেন।
১৭। মাইন্ড সেট আপ - অপ্রতিকুল কোন অবস্থায় কি করনীয় এ ব্যাপারে চিন্তা করার জন্য যেন আপনাকে খুব বেশি সময় ব্যয় না করতে হয়। এজন্য নিজেকে বলে রাখেন আমি আক্রান্ত হলে কোন চিন্তা ছাড়াই আগে শত্রুর চোখে আঘাত করবো, কিংবা গলায় আগাহত করবো - মনে রাখবেন স্বাভাবিক ভাবে আমাদের মধ্যে এক ধরনের জড়তা কাজ করে। আপনাকে একটি রাইফেল দিয়ে দিলেই আপনি গুলি করতে পারবেন না। কারন আপনার ব্রেন এবং শরীর এই কাজের সাথে পরিচিত না। এজন্য দেখা যাবে দরকারের মুহূর্তে আপনি হয়ত ১ সেকেন্ড বা ২ সেকেন্ড দেরি করে ফেলবেন, বা দ্বিধায় ভুগবেন। একই ভাবে আপনাকে যদি বক্সিং এর রিং এ উঠিয়ে দেয়া হয় আপনি একটা ঘুষি মারার আগে চিন্তা শুরু করবেন - কোথায় মারবো? আমাকে যদি আগে মেরে দেয়? এগুলো হচ্ছে জড়তা। এই জড়তা দূর করার জন্য দকরকার অবিরাম অভ্যাস, প্র্যাকটিস।
তাই আগেই নিজের মাইন্ড সেটআপ এবং করনীয় গুলো অভ্যাস করতে থাকেন।
একটা সাদা কাগজে দুইটা গোল বৃত্ত একে চোখের মত করে দেয়ালে লাগিয়ে দেন- স্বাভাবিক মানুষের চোখের উচ্চতায়। যখনই এটা চোখে পড়বে ঐ চোখ দুটিতে আঘাত করেন। এটি শুধু একটি উদাহরণ আপনি নিজে নিজের প্র্যাক্টিস করার তরিকা সেট করে নেন।
যুদ্ধের অন্যতম কৌশল হচ্ছে প্রতিরক্ষা, আমাদের সাধ্যমত নিজেদের প্রতিরক্ষা কৌশল সাজানো এবং চর্চা করা দরকার। এই কৌশল কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নাই, এবং এই কৌশল এর কোন শেষ নাই, প্রতিনিয়ত আমাদের এই কৌশল খুজতেই থাকতে হবে এবং চর্চা করতে হবে, (যতটুকু সম্ভব)। ফাইট ব্যাতিত কোন কথা নয়! আর আল্লাহ আমাদের ব্যাপারে যথেষ্ট ।
সব শেষে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, মানুষ এবং জিন শয়তান থেকে, আল্লাহ ব্যাতিত কোন কুউওয়াত নাই, আর আমাদের দুশমন রা আমদের ভিতরে হিংস্রতা ছাড়া যেন অন্য কিছু না দেখে!
সবশেষে -
বালিল্লাহি মাওলাকুম ওয়া হুয়া খাইরুন নাসিরিন
Comment