প্রশ্নঃ জিহাদ না করলে কি ক্ষতি হবে?
উত্তরঃ জিহাদ না করলে ব্যক্তিগত এবং জাতীয়ভাবে ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। এর শাস্তি ভোগ করতে হবে দুনিয়া এবং আখিরাতের উভয় জগতে।ব্যক্তিগত ক্ষতি হলো, আমরা দুনিয়ার পরবর্তী যে জীবন, সে জীবনে সকলে জান্নাত লাভের আশা করি, কিন্তু জিহাদ না করলে পরকালে জান্নাত পাওয়া যাবে না।আল্লাহ তা’আলা বলেন-
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَতোমরা কি ধারণা করেছো সোজা জান্নাতে চলে যাবে অথচ দেখে নেয়া হবে না, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী আর কে জিহাদে ধৈর্য্য ধারণকারী। ( সূরা আল ইমরান ৩ঃ১৪২)
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে মুসলমান জীবনে কোন গাজওয়া (দ্বীন প্রতিষ্টার জিহাদ) করল না কিংবা গাজওয়া করার কোন দৃঢ় সংকল্পও করল না, এ অবস্থায় মারা গেলে, সে মুনাফিক অবস্থায় মারা গেল। (সহীহ মুসলিম)আমরা সকলেই জানি যে, মুনাফিকের অবস্থান চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
অন্য একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, “যে মুসলমান তার জীবনে কখনো কোন জিহাদে অংশ নেয়নি, না কোন মুজাহিদের জন্য জিহাদের সরঞ্জাম যোগাড় করে দিয়েছে আর না কোন মুজাহিদ পরিবারে সহযোগিতা করেছে। ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে এক ভীষণ আযাবে নিপতিত করবেন।” (সুনানে আবু দাউদ)
এতো গেল ব্যক্তিগতভাবে জিহাদ না করার দুনিয়া ও আখিরাতের শাস্তির কথা। এবার দেখা যাক, জিহাদ না করলে জাতীয়ভাবে দুনিয়া ও আখিরাতে কি শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الأَرْضِ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ قَلِيلٌহে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হলো, তোমাদের যখন অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা মাটি আঁকড়ে ধর। তোমরা কি আখিরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? আখেরাতের তুলনায় পার্থিব জীবন কত নিকৃষ্ট? (সূরা তাওবাহ ৯ঃ৩৮)
এখানে ঈমানদারদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, তোমাদের যখন অভিযানে বের হতে বলা হয় অর্থাৎ অভিযান করা, জিহাদ করা তোমাদের প্রয়োজন হয়, ফরজ হয়ে যায়, তখন তোমরা কেন মাটি আঁকড়ে ধর? মাটি আঁকড়ে ধরার অর্থ হলো দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা, ঘর-বাড়ি, ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি নিয়ে ব্যস্ত থাকা, জিহাদে বের না হওয়ার পথে এগুলো বাঁধা হয়ে যাওয়া। ঈমানদাররা যদি এ উপকরণ গুলো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে তবে তার জন্য আল্লাহ শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন-
إِلاَّ تَنفِرُواْ يُعَذِّبْكُمْ عَذَاباً أَلِيماً وَيَسْتَبْدِلْ قَوْماً غَيْرَكُمْ وَلاَ تَضُرُّوهُ شَيْئاً وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌযদি তোমরা জিহাদে বের না হও তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মান্তিক শাস্তি দিবেন এবং অন্য একটি জাতিকে তোমাদের উপর চাপিয়ে দিবেন, যাদের তোমরা কোন ক্ষতি করতে পারবে না।(সূরা তাওবাহ ৯ঃ৩৯)এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, জিহাদ না করলে ঈমানদারদেরকে মর্মান্তিক শাস্তি দেবেন এবং অন্য একটি জাতিকে চাপিয়ে দেবেন। চাপিয়ে দেয়ার অর্থ হলো, তারা যেমন খুশি তেমন শাসন করবে, জুলুম-নির্যাতন চালাবে। আর তাদের কোন ক্ষতি করা যাবে না।
জিহাদ ফরজ হওয়ার পর তা আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারি। এ ইতিহাস ইমাম বুখারী (রহঃ) এর জন্মস্থান বোখারার ইতিহাস। লেলিনের নেতৃত্বে রাশিয়ায় যখন কমিউনিষ্টরা ক্ষমতায় আসে সে সময় বোখারা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র ছিল। সারা বিশ্ব থেকে ছাত্ররা সেখানে দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণের জন্য যেত। একমাত্র বোখারায় অসংখ্য এমন মাদ্রাসা ছিল, যেসব মাদ্রাসায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত ছাত্র পড়াশোনা করত। বুখারার কেন্দ্রীয় মাদরাসা এত বিশাল ছিল যে, একমাত্র সহীহ বুখারীর দারস নিত একসাথে ৪০০০ হাজার ছাত্র বসে। কমিউনিষ্টরা ক্ষমতায় গিয়ে পারস্পারিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে মধ্য এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোর দিকে নজর দেয়। তারা সামরিক হামলা করে একের পর এক ভূখন্ড দখল করে নেয়। এক পর্যায়ে তারা অবরোধ করে বোখারা।
বোখারা যখন অবরোদ্ধ, বোখারার মাদরাসার ছাত্ররা তখন ওস্তাদদের কাছে এ দুর্দিনে তাদের করণীয় সম্পর্কে জানতে চায়। এক শ্রেণীর ওস্তাদ সেদিন বলেছিল, দেখ লেলিন যে সাম্য প্রতিষ্ঠা করছে তাতো ইসলামেরই সাম্য, এতো ওমরেরই সাম্য। লেলিনের বিরুদ্বে আমাদের যুদ্ধ করা ঠিক হবে না। আর এক শ্রেণীর ওস্তাদ সেদিন ছাত্রদের বলেছিল লেলিনের বিশাল বাহিনী, অনেক শক্তি। তাদের সাথে যুদ্ধ করে আমরা পারব না, আমাদের কিছু নেই, প্রশিক্ষণ নেই, অস্ত্র নেই। তোমরা সবাই দোয়া কর, বিপদ-আপদ দূর করার যত দোয়া জানা আছে, সেগুলো পড়, বুখারী খতম কর, আল্লাহ এ বিপদ দূর করে দেবেন। সে সময় বোখারার হাজার হাজার আলেম ছিল, লক্ষ লক্ষ কুরআন-হাদীসের কপি ছিল। ফরজ থেকে শুরু করে অতি ক্ষুদ্র আমলগুলোও সেখানে বেশী বেশী হতো। কিন্তু মাত্র একটি আমলের অভাব ছিল সেখানে। হাজার হাজার আলেম ছিল ঠিকই কিন্তু প্রত্যেক মুসলমানের সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়া যা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন সে আমল তাদের ছিল না। আল্লাহর নির্দেশ যথা সম্ভব সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা- সেখানে বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই শত্রু যখন আক্রমণোদ্ধোত তখন তারা এ অযুহাত পেশ করেছেন যে আমাদের ট্রেনিং নেই, অস্ত্র নেই।এ গাফলতির চরম মাশুল দিতে হয়েছিল। বোখারাবাসীদের অল্পদিনেই লাল ফৌজ বোখারা দখল করে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেয়। তারা নির্বিচারে আলেমদের হত্যা করে। তাদের এই পাইকারী হত্যাকান্ড থেকে সেইসব আলেমও রেহায় পায় নি যারা বলেছিল, লেলিন ইসলামের সাম্যই প্রতিষ্ঠা করছে। বোখারার কেন্দ্রীয় মাদরাসা চত্বরে হাটু সমান রক্ত জমে গিয়েছিল। দিনব্যাপী আলেমদের পাইকারীহারে হত্যার পর বিকেল বেলা কমুনিষ্ট সৈন্যরা শহরের সাধারণ মানুষদের বোখারার বাজারে সমবেত করে। তাদের সামনে একটা লাশের খাটিয়া এনে রাখা হয়। তাতে একখন্ড কাঠ চাদর মুড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। সৈন্যরা সাধারণ মানুষদের জিজ্ঞেস করছিল, জান এখানে কার লাশ, সাধারণ মানুষ অজ্ঞতা প্রকাশ করলে তারা উপহাস করে বলছিল, এখানে তোমাদের আল্লাহ শুয়ে আছে (নাউজুবিল্লাহ) . সে আমাদের হাতে নিহত হয়েছে, তোমাদের এখন জানাজা পড়তে হবে। অসহায় মানুষগুলোকে এ কাটখন্ডের জানাজা আদায়ে বাধ্য করা হয়। অবশেষে সারা শহর ঘুরিয়ে এনে সে খাটিয়া শহরের বাইরে ফেলে দিয়ে কমিউনিষ্ট অফিসাররা দম্ভভরে ঘোষণা করে আজ থেকে বোখারা আল্লাহ মুক্ত। তাকে বোখারা থেকে বহিঃস্কার করা হল (নাউজুবিল্লাহ)।
বোখারার নির্মম নির্যাতন
এরপর বোখারার সাধারণ মুসলমানদের ওপর শুরু হয় নির্মম নির্যাতন। মসজিদ মাদরাসা তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। আযান, সলাত, সাওম, হজ্জ, যাকাত নিষিদ্ধ করা হয়। কুরআন পড়া আরবী শেখা, মুসলিম পরিচয় দেয়া, দাঁড়ি রাখা সবকিছু নিষিদ্ধ করা হয়। মুসলিম নাম পাল্টে রাশিয়ান নাম রাখা হয় কেউ মারা গেলে লাশ ইলেকট্রিক চুল্লিতে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়া হত, লাশ দাফন করার পর্যন্ত অনুমতি ছিল না। এমনি নির্যাতন চলে প্রায় ৭০ বছর। এরপর বোখারাসহ মধ্য এশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হয়ে গেলে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা সেখানে যাতায়াত শুরু করে। এসব মুসলমানদের কাছে স্থানীয়রা মাসয়ালা জিজ্ঞেস করে। তারা জিজ্ঞেস করত, ভাই মাসয়ালা জানি না, প্রস্রাব করলে অযু ভাঙ্গে কিনা, ভাই কুরআন কত খন্ডে নাযিল হয়েছে?
ইমাম বোখারীর দেশের মানুষ জিজ্ঞেস করছিল, প্রসাব করলে অযু ভাঙ্গে কিনা! কুরআন কত খন্ড! একদা যেখানে লক্ষ লক্ষ কুরআন হাদীসের কপি ছিল তারাই এমন প্রশ্ন করত। বোখারার ইতিহাস পড়ে যানা যায়, লাল ফৌজ পরবর্তী ছয় মাস বোখারার যেসব ঘরে বসাবস করত সেই সব ঘরের কোণের চুল্লিতে শুধু কোরআন হাদীস জালিয়ে ঘর গরম করে রেখেছিল।
আফগানিস্তানে রাশিয়ান আগ্রাসন শুরুতে রাশিয়া মধ্য এশিয়ার মুসলিম সৈন্যদের প্রেরণ করেছিল। আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমণ করেছে তা প্রতিহত করতে যুদ্ধ করতে হবে বলে তাদের প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখল এই হামলা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে, মনে মনে তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে, অতীত ইতিহাস তাদের স্মরণ হয়ে যায়। তার গোপনে বিভিন্ন মুজাহিদ গ্রুপের সাথে আতাত গড়ে তোলে। তারা মুজাহিদদের কাছে এই প্রস্তাব পাঠায় যে, তোমরা আমাদের মূল্যবান অস্ত্রগুলো নিয়ে নাও, বিনিময়ে একটা মাত্র জিনিস চাই, তা হলো একখন্ড কুরআন মাজীদ। জীবনে এই জিনিস আমরা চোখে দেখিনি।
মুজাহিদরা যখন তাদের হাতে একখন্ড কুরআন মাজীদ তোলে দিত তারা তা নিয়ে বুক চাপড়াত আর কেঁদে কেঁদে বলত, এই সেই কুরআন মাজীদ যা আমাদের জীবনে চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি!! ইমাম বুখারীর দেশের মানুষ চোখের পানি ফেলে বুক চাপড়ে কাঁদছেন, জীবনে কুরআন মাজীদ দেখার সৌভাগ্য হয়নি বলে। তাদের ইসলাম থেকে দীর্ঘ সত্তর বছর আগে এই বোখরার চিত্র কি ছিল? আলেম ওলামা, কুরআন, হাদীস, মসজিদ, মাদ্রাসায় ভরপুর ছিল এই ঐতিহাসিক নগরী। শুধু একটি ফরয, (শত্রুর বিরুদ্ধে যখন যুদ্ধ করা দরকার) তারা আমল করেনি বলে আল্লাহ তাদের মর্মান্তিক শাস্তি প্রদান করেন। এমন শাস্তি প্রদান করেন যে, একটি সমৃদ্ধ মুসলিম জাতি মুসলিম নামটি পর্যন্ত রাখার অধিকার পায়নি। আল্লাহ রাশিয়ানদের তাদের উপর এমনভাবে চাপিয়ে দেন, তারা মধ্য এশিয়ার মুসলমানদের সত্তর বছর যেমন খুশি সেভাবে জুলুম নির্যাতনের শিকারে পরিণত করে। এই ছিল পূর্বে উল্লেখিত সূরা তাওবার ৩৯ নং আয়াতের বাস্তব উদাহরণ।
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
إِذَا تَرَكْتُمُ الجِهَادُ فَسَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا
যখন তোমরা জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দেবেন। (আবু দউদ, বায়হাকি, তাবরানী)এই হলো জিহাদ ত্যাগ করার জাতীয় ক্ষতি।
প্রশ্নঃ সবচেয়ে বড় আমল কোনটি?
উত্তরঃ সবচেয়ে বড় আমল সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেবনা যা তোমাদেরকে মর্মান্তিক আযাব থেকে রক্ষা করবে? তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং আল্লাহর রাস্তায় নিজের জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করা। ইহাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে। (সূরা সফ ৬১ঃ১০-১১)
অর্থাৎ ঈমান আনার পর উত্তম আমল হলো, আল্লাহর রাস্তায় জান-মাল দিয়ে জিহাদ করা। সাহাবীরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন, সবচেয়ে উত্তম আমল কোনটি? উত্তরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও বলেছিলেন- سُأِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَيُّ الْاَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ الْإِيمَانُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ الْجِهَاد
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল কোন আমলটি উত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনা। তারপর সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী)এ উত্তম আমল সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন-
وَلَئِن قُتِلْتُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ أَوْ مُتُّمْ لَمَغْفِرَةٌ مِّنَ اللّهِ وَرَحْمَةٌ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَঅর্থঃ যদি তোমরা আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণ কর কিংবা মরে যাও, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য থাকবে অজস্র ক্ষমা ও রহমত। লোকেরা যা কিছু সঞ্চয় করে তার থেকে এটি অধিকতর উত্তম। (সূরা আলে ইমরান ৩ঃ১৫৭)
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে গিয়ে যারা শহীদ হবে তাদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيْكَرَبَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلْى اللهُ عَلَيهِ وَسَلَّم لِلشَّهِيْدِ عِنْدَ اللهِ سِتّ خِصَالٍ يُغْفَرُلَه‘ فِيْ اَوَّلِ دَفْعَةٍ وَ يُرى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَ يُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ يُأمَنُ مِنَ الْفَزَعِ الْاَكْبَرِ وَ يُوْضَعُ عَلى رَاْسِهِ تَـاجُ الْوَقَارِ الْيَاقُوْتَةٌ مِنْهَا خَيْرٌ مِّنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَ يُزَوَّجُ اِثـْنَتـَيْنِ وَ سَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِنَ الْحُوْرِالْعِيْنِ وَ يُشَفَّعُ فِى سَبْعِيْنَ مِنْ اَقَارِبِهِ
আল্লাহর নিকট শহীদের জন্য ছয়টি বিশেষ পুরস্কার রয়েছে।
১. শরীরের প্রথম ফোটা রক্ত জমিনে পড়ার আগে তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। প্রাণ বের হয়ে যাওয়ার আগেই জান্নাতে তার অবস্থান দেখিয়ে দেয়া হয়।
২. কবরের আযাব থেকে তাকে হেফাযত করা হয়।
৩. কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা থেকে তাকে হেফাজতে রাখা হয়।
৪. তার মাথার উপর সম্মান ও মর্যাদার মূকুট পরানো হবে। উহার খন্ডিত একটি ইয়াকুত দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সেসব থেকে উত্তম।
৫. তার বিবাহ হবে সুন্দর চক্ষু বিশিষ্ট বাহাত্তর জন হুরের সাথে।
৬. তার নিকটতম ৭০ জন আত্মীয়ের জন্য (যারা জাহান্নামী সাব্যস্ত হয়েছে) সুপারিশ কবুল করা হবে। (তিরমিযি ১ম খন্ড)
সুবহানাল্লাহ! এমন মর্যাদা আর কোন আমলে পাওয়া যাবে। মূলত জিহাদের আমলে যত কষ্ট যত ত্যাগ আর যত বিপদ-আপদের মোকাবেলা করতে হয় অন্য কোন আমলে করতে হয় না, তাই জিহাদের আমলের মর্যাদা-পুরস্কারও সবচেয়ে বেশী। অল্প সময় জিহাদের আমল করে যে সাওয়াব পাওয়া যায় অন্য কোন আমলে পাওয়া যায় না। জিহাদের আমলের বিনিময়ে নাজাত ও জান্নাত লাভের সুসংবাদ ও নিশ্চয়তা ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু অন্য কোন আমলে জান্নাত ও মুক্তি লাভের এমন কোন নিশ্চয়তা ঘোষিত হয়নি। বরং আল্লাহ ঘোষনা করেছেন-
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَـهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّـبِرِينَ
তোমারা কি ধারণা করেছ জান্নাতে চলে যাবে, অথচ দেখে নেয়া হবেনা, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছো আর কে ধৈর্যশীল (জিহাদের পথে) ছিলে। (সূরা আলে ইমরান ৩ঃ১৪২)
অর্থাৎ জান্নাতে যাবার আগে আল্লাহ দেখে নেবেন কে কে জিহাদ করেছে। অন্যান্য আমল করলেও জিহাদ না করলে জান্নাত পাওয়ার আশা করা যায় না। আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন-
وَمَن يُقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللّهِ فَيُقْتَلْ أَو يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْراً عَظِيماًযে সকল লোক আল্লাহর পথে লড়াই করে নিহত বা বিজয়ী হবে, তাদেরকে আমি বড় পুরস্কার দেব। (সূরা নিসা ৪ঃ৭৪)
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
إِنَّ الْجَنَّةِ تَحْتَ ظِلَالِ السُّيُوفِ
নিশ্চয়ই জান্নাত তরবারীর ছায়ার তলে। (সহীহ বুখারী ১ম খন্ড)
মায়াজ বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে আছে যে, ‘যে সামান্য সময়ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে তার জন্য জান্নাত অবধারিত।’ (আবু দাউদ ১ম খন্ড)
ভিন্ন এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, ‘আল্লাহর রাস্তায় এক রাত্রি পাহারা দেয়া, ঘরে বসে এক হাজার রাত্রি সাওম রাখা ও সলাত আদায় থেকে উত্তম। যার এক বছর হলো ৩৬০ দিনে আর একদিন হলো ১০০০ বছরের সমান । (ইবনে মাজাহ ২য় খন্ড)
আল্লাহর রাস্তায় এক রাত্রি পাহাড়া দেয়া, দুনিয়া ও দুনিয়ায় যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)
ঐ চোখকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহাড়া দিয়েছে। (সুনানে তিরমিযি)
যার দু’টি পা আল্লাহর রাস্তায় ধূলায় ধুসরিত হয়েছে, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। (সহীহ বুখারী)
জিহাদরত অবস্থায় অন্যান্য আমলের ফযিলতও বেড়ে যায়। যেমন বলা হয়েছে- যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় গিয়ে একদিন সাওম রাখবে, আল্লাহ তার চেহারাকে জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের দূরত্ব করে দিবেন। (সহীহ বুখারী ১ম খন্ড)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حَدَّثَهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يَعْدِلُ الْجِهَادَ قَالَ لَا أَجِدُهُউত্তম আমল সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে। জনৈক ব্যক্তি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন, যা জিহাদের সমান মর্যাদা রাখে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, জিহাদের সমান মর্যাদার কোন আমল আমি খুঁজে পাচ্ছি না। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল জিহাদ)
উত্তরঃ জিহাদ না করলে ব্যক্তিগত এবং জাতীয়ভাবে ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। এর শাস্তি ভোগ করতে হবে দুনিয়া এবং আখিরাতের উভয় জগতে।ব্যক্তিগত ক্ষতি হলো, আমরা দুনিয়ার পরবর্তী যে জীবন, সে জীবনে সকলে জান্নাত লাভের আশা করি, কিন্তু জিহাদ না করলে পরকালে জান্নাত পাওয়া যাবে না।আল্লাহ তা’আলা বলেন-
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَতোমরা কি ধারণা করেছো সোজা জান্নাতে চলে যাবে অথচ দেখে নেয়া হবে না, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী আর কে জিহাদে ধৈর্য্য ধারণকারী। ( সূরা আল ইমরান ৩ঃ১৪২)
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে মুসলমান জীবনে কোন গাজওয়া (দ্বীন প্রতিষ্টার জিহাদ) করল না কিংবা গাজওয়া করার কোন দৃঢ় সংকল্পও করল না, এ অবস্থায় মারা গেলে, সে মুনাফিক অবস্থায় মারা গেল। (সহীহ মুসলিম)আমরা সকলেই জানি যে, মুনাফিকের অবস্থান চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
অন্য একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, “যে মুসলমান তার জীবনে কখনো কোন জিহাদে অংশ নেয়নি, না কোন মুজাহিদের জন্য জিহাদের সরঞ্জাম যোগাড় করে দিয়েছে আর না কোন মুজাহিদ পরিবারে সহযোগিতা করেছে। ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে এক ভীষণ আযাবে নিপতিত করবেন।” (সুনানে আবু দাউদ)
এতো গেল ব্যক্তিগতভাবে জিহাদ না করার দুনিয়া ও আখিরাতের শাস্তির কথা। এবার দেখা যাক, জিহাদ না করলে জাতীয়ভাবে দুনিয়া ও আখিরাতে কি শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الأَرْضِ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ قَلِيلٌহে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হলো, তোমাদের যখন অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা মাটি আঁকড়ে ধর। তোমরা কি আখিরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? আখেরাতের তুলনায় পার্থিব জীবন কত নিকৃষ্ট? (সূরা তাওবাহ ৯ঃ৩৮)
এখানে ঈমানদারদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, তোমাদের যখন অভিযানে বের হতে বলা হয় অর্থাৎ অভিযান করা, জিহাদ করা তোমাদের প্রয়োজন হয়, ফরজ হয়ে যায়, তখন তোমরা কেন মাটি আঁকড়ে ধর? মাটি আঁকড়ে ধরার অর্থ হলো দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা, ঘর-বাড়ি, ধন-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি নিয়ে ব্যস্ত থাকা, জিহাদে বের না হওয়ার পথে এগুলো বাঁধা হয়ে যাওয়া। ঈমানদাররা যদি এ উপকরণ গুলো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে তবে তার জন্য আল্লাহ শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন-
إِلاَّ تَنفِرُواْ يُعَذِّبْكُمْ عَذَاباً أَلِيماً وَيَسْتَبْدِلْ قَوْماً غَيْرَكُمْ وَلاَ تَضُرُّوهُ شَيْئاً وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌযদি তোমরা জিহাদে বের না হও তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মান্তিক শাস্তি দিবেন এবং অন্য একটি জাতিকে তোমাদের উপর চাপিয়ে দিবেন, যাদের তোমরা কোন ক্ষতি করতে পারবে না।(সূরা তাওবাহ ৯ঃ৩৯)এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, জিহাদ না করলে ঈমানদারদেরকে মর্মান্তিক শাস্তি দেবেন এবং অন্য একটি জাতিকে চাপিয়ে দেবেন। চাপিয়ে দেয়ার অর্থ হলো, তারা যেমন খুশি তেমন শাসন করবে, জুলুম-নির্যাতন চালাবে। আর তাদের কোন ক্ষতি করা যাবে না।
জিহাদ ফরজ হওয়ার পর তা আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারি। এ ইতিহাস ইমাম বুখারী (রহঃ) এর জন্মস্থান বোখারার ইতিহাস। লেলিনের নেতৃত্বে রাশিয়ায় যখন কমিউনিষ্টরা ক্ষমতায় আসে সে সময় বোখারা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র ছিল। সারা বিশ্ব থেকে ছাত্ররা সেখানে দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণের জন্য যেত। একমাত্র বোখারায় অসংখ্য এমন মাদ্রাসা ছিল, যেসব মাদ্রাসায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত ছাত্র পড়াশোনা করত। বুখারার কেন্দ্রীয় মাদরাসা এত বিশাল ছিল যে, একমাত্র সহীহ বুখারীর দারস নিত একসাথে ৪০০০ হাজার ছাত্র বসে। কমিউনিষ্টরা ক্ষমতায় গিয়ে পারস্পারিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে মধ্য এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোর দিকে নজর দেয়। তারা সামরিক হামলা করে একের পর এক ভূখন্ড দখল করে নেয়। এক পর্যায়ে তারা অবরোধ করে বোখারা।
বোখারা যখন অবরোদ্ধ, বোখারার মাদরাসার ছাত্ররা তখন ওস্তাদদের কাছে এ দুর্দিনে তাদের করণীয় সম্পর্কে জানতে চায়। এক শ্রেণীর ওস্তাদ সেদিন বলেছিল, দেখ লেলিন যে সাম্য প্রতিষ্ঠা করছে তাতো ইসলামেরই সাম্য, এতো ওমরেরই সাম্য। লেলিনের বিরুদ্বে আমাদের যুদ্ধ করা ঠিক হবে না। আর এক শ্রেণীর ওস্তাদ সেদিন ছাত্রদের বলেছিল লেলিনের বিশাল বাহিনী, অনেক শক্তি। তাদের সাথে যুদ্ধ করে আমরা পারব না, আমাদের কিছু নেই, প্রশিক্ষণ নেই, অস্ত্র নেই। তোমরা সবাই দোয়া কর, বিপদ-আপদ দূর করার যত দোয়া জানা আছে, সেগুলো পড়, বুখারী খতম কর, আল্লাহ এ বিপদ দূর করে দেবেন। সে সময় বোখারার হাজার হাজার আলেম ছিল, লক্ষ লক্ষ কুরআন-হাদীসের কপি ছিল। ফরজ থেকে শুরু করে অতি ক্ষুদ্র আমলগুলোও সেখানে বেশী বেশী হতো। কিন্তু মাত্র একটি আমলের অভাব ছিল সেখানে। হাজার হাজার আলেম ছিল ঠিকই কিন্তু প্রত্যেক মুসলমানের সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়া যা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন সে আমল তাদের ছিল না। আল্লাহর নির্দেশ যথা সম্ভব সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা- সেখানে বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই শত্রু যখন আক্রমণোদ্ধোত তখন তারা এ অযুহাত পেশ করেছেন যে আমাদের ট্রেনিং নেই, অস্ত্র নেই।এ গাফলতির চরম মাশুল দিতে হয়েছিল। বোখারাবাসীদের অল্পদিনেই লাল ফৌজ বোখারা দখল করে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেয়। তারা নির্বিচারে আলেমদের হত্যা করে। তাদের এই পাইকারী হত্যাকান্ড থেকে সেইসব আলেমও রেহায় পায় নি যারা বলেছিল, লেলিন ইসলামের সাম্যই প্রতিষ্ঠা করছে। বোখারার কেন্দ্রীয় মাদরাসা চত্বরে হাটু সমান রক্ত জমে গিয়েছিল। দিনব্যাপী আলেমদের পাইকারীহারে হত্যার পর বিকেল বেলা কমুনিষ্ট সৈন্যরা শহরের সাধারণ মানুষদের বোখারার বাজারে সমবেত করে। তাদের সামনে একটা লাশের খাটিয়া এনে রাখা হয়। তাতে একখন্ড কাঠ চাদর মুড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। সৈন্যরা সাধারণ মানুষদের জিজ্ঞেস করছিল, জান এখানে কার লাশ, সাধারণ মানুষ অজ্ঞতা প্রকাশ করলে তারা উপহাস করে বলছিল, এখানে তোমাদের আল্লাহ শুয়ে আছে (নাউজুবিল্লাহ) . সে আমাদের হাতে নিহত হয়েছে, তোমাদের এখন জানাজা পড়তে হবে। অসহায় মানুষগুলোকে এ কাটখন্ডের জানাজা আদায়ে বাধ্য করা হয়। অবশেষে সারা শহর ঘুরিয়ে এনে সে খাটিয়া শহরের বাইরে ফেলে দিয়ে কমিউনিষ্ট অফিসাররা দম্ভভরে ঘোষণা করে আজ থেকে বোখারা আল্লাহ মুক্ত। তাকে বোখারা থেকে বহিঃস্কার করা হল (নাউজুবিল্লাহ)।
বোখারার নির্মম নির্যাতন
এরপর বোখারার সাধারণ মুসলমানদের ওপর শুরু হয় নির্মম নির্যাতন। মসজিদ মাদরাসা তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। আযান, সলাত, সাওম, হজ্জ, যাকাত নিষিদ্ধ করা হয়। কুরআন পড়া আরবী শেখা, মুসলিম পরিচয় দেয়া, দাঁড়ি রাখা সবকিছু নিষিদ্ধ করা হয়। মুসলিম নাম পাল্টে রাশিয়ান নাম রাখা হয় কেউ মারা গেলে লাশ ইলেকট্রিক চুল্লিতে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়া হত, লাশ দাফন করার পর্যন্ত অনুমতি ছিল না। এমনি নির্যাতন চলে প্রায় ৭০ বছর। এরপর বোখারাসহ মধ্য এশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হয়ে গেলে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা সেখানে যাতায়াত শুরু করে। এসব মুসলমানদের কাছে স্থানীয়রা মাসয়ালা জিজ্ঞেস করে। তারা জিজ্ঞেস করত, ভাই মাসয়ালা জানি না, প্রস্রাব করলে অযু ভাঙ্গে কিনা, ভাই কুরআন কত খন্ডে নাযিল হয়েছে?
ইমাম বোখারীর দেশের মানুষ জিজ্ঞেস করছিল, প্রসাব করলে অযু ভাঙ্গে কিনা! কুরআন কত খন্ড! একদা যেখানে লক্ষ লক্ষ কুরআন হাদীসের কপি ছিল তারাই এমন প্রশ্ন করত। বোখারার ইতিহাস পড়ে যানা যায়, লাল ফৌজ পরবর্তী ছয় মাস বোখারার যেসব ঘরে বসাবস করত সেই সব ঘরের কোণের চুল্লিতে শুধু কোরআন হাদীস জালিয়ে ঘর গরম করে রেখেছিল।
আফগানিস্তানে রাশিয়ান আগ্রাসন শুরুতে রাশিয়া মধ্য এশিয়ার মুসলিম সৈন্যদের প্রেরণ করেছিল। আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমণ করেছে তা প্রতিহত করতে যুদ্ধ করতে হবে বলে তাদের প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখল এই হামলা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে, মনে মনে তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে, অতীত ইতিহাস তাদের স্মরণ হয়ে যায়। তার গোপনে বিভিন্ন মুজাহিদ গ্রুপের সাথে আতাত গড়ে তোলে। তারা মুজাহিদদের কাছে এই প্রস্তাব পাঠায় যে, তোমরা আমাদের মূল্যবান অস্ত্রগুলো নিয়ে নাও, বিনিময়ে একটা মাত্র জিনিস চাই, তা হলো একখন্ড কুরআন মাজীদ। জীবনে এই জিনিস আমরা চোখে দেখিনি।
মুজাহিদরা যখন তাদের হাতে একখন্ড কুরআন মাজীদ তোলে দিত তারা তা নিয়ে বুক চাপড়াত আর কেঁদে কেঁদে বলত, এই সেই কুরআন মাজীদ যা আমাদের জীবনে চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি!! ইমাম বুখারীর দেশের মানুষ চোখের পানি ফেলে বুক চাপড়ে কাঁদছেন, জীবনে কুরআন মাজীদ দেখার সৌভাগ্য হয়নি বলে। তাদের ইসলাম থেকে দীর্ঘ সত্তর বছর আগে এই বোখরার চিত্র কি ছিল? আলেম ওলামা, কুরআন, হাদীস, মসজিদ, মাদ্রাসায় ভরপুর ছিল এই ঐতিহাসিক নগরী। শুধু একটি ফরয, (শত্রুর বিরুদ্ধে যখন যুদ্ধ করা দরকার) তারা আমল করেনি বলে আল্লাহ তাদের মর্মান্তিক শাস্তি প্রদান করেন। এমন শাস্তি প্রদান করেন যে, একটি সমৃদ্ধ মুসলিম জাতি মুসলিম নামটি পর্যন্ত রাখার অধিকার পায়নি। আল্লাহ রাশিয়ানদের তাদের উপর এমনভাবে চাপিয়ে দেন, তারা মধ্য এশিয়ার মুসলমানদের সত্তর বছর যেমন খুশি সেভাবে জুলুম নির্যাতনের শিকারে পরিণত করে। এই ছিল পূর্বে উল্লেখিত সূরা তাওবার ৩৯ নং আয়াতের বাস্তব উদাহরণ।
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
إِذَا تَرَكْتُمُ الجِهَادُ فَسَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا
যখন তোমরা জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দেবেন। (আবু দউদ, বায়হাকি, তাবরানী)এই হলো জিহাদ ত্যাগ করার জাতীয় ক্ষতি।
প্রশ্নঃ সবচেয়ে বড় আমল কোনটি?
উত্তরঃ সবচেয়ে বড় আমল সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেবনা যা তোমাদেরকে মর্মান্তিক আযাব থেকে রক্ষা করবে? তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং আল্লাহর রাস্তায় নিজের জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করা। ইহাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে। (সূরা সফ ৬১ঃ১০-১১)
অর্থাৎ ঈমান আনার পর উত্তম আমল হলো, আল্লাহর রাস্তায় জান-মাল দিয়ে জিহাদ করা। সাহাবীরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলেন, সবচেয়ে উত্তম আমল কোনটি? উত্তরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও বলেছিলেন- سُأِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَيُّ الْاَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ الْإِيمَانُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ الْجِهَاد
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল কোন আমলটি উত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনা। তারপর সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। (সহীহ বুখারী)এ উত্তম আমল সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন-
وَلَئِن قُتِلْتُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ أَوْ مُتُّمْ لَمَغْفِرَةٌ مِّنَ اللّهِ وَرَحْمَةٌ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَঅর্থঃ যদি তোমরা আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণ কর কিংবা মরে যাও, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য থাকবে অজস্র ক্ষমা ও রহমত। লোকেরা যা কিছু সঞ্চয় করে তার থেকে এটি অধিকতর উত্তম। (সূরা আলে ইমরান ৩ঃ১৫৭)
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে গিয়ে যারা শহীদ হবে তাদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيْكَرَبَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلْى اللهُ عَلَيهِ وَسَلَّم لِلشَّهِيْدِ عِنْدَ اللهِ سِتّ خِصَالٍ يُغْفَرُلَه‘ فِيْ اَوَّلِ دَفْعَةٍ وَ يُرى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَ يُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ يُأمَنُ مِنَ الْفَزَعِ الْاَكْبَرِ وَ يُوْضَعُ عَلى رَاْسِهِ تَـاجُ الْوَقَارِ الْيَاقُوْتَةٌ مِنْهَا خَيْرٌ مِّنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَ يُزَوَّجُ اِثـْنَتـَيْنِ وَ سَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِنَ الْحُوْرِالْعِيْنِ وَ يُشَفَّعُ فِى سَبْعِيْنَ مِنْ اَقَارِبِهِ
আল্লাহর নিকট শহীদের জন্য ছয়টি বিশেষ পুরস্কার রয়েছে।
১. শরীরের প্রথম ফোটা রক্ত জমিনে পড়ার আগে তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। প্রাণ বের হয়ে যাওয়ার আগেই জান্নাতে তার অবস্থান দেখিয়ে দেয়া হয়।
২. কবরের আযাব থেকে তাকে হেফাযত করা হয়।
৩. কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা থেকে তাকে হেফাজতে রাখা হয়।
৪. তার মাথার উপর সম্মান ও মর্যাদার মূকুট পরানো হবে। উহার খন্ডিত একটি ইয়াকুত দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সেসব থেকে উত্তম।
৫. তার বিবাহ হবে সুন্দর চক্ষু বিশিষ্ট বাহাত্তর জন হুরের সাথে।
৬. তার নিকটতম ৭০ জন আত্মীয়ের জন্য (যারা জাহান্নামী সাব্যস্ত হয়েছে) সুপারিশ কবুল করা হবে। (তিরমিযি ১ম খন্ড)
সুবহানাল্লাহ! এমন মর্যাদা আর কোন আমলে পাওয়া যাবে। মূলত জিহাদের আমলে যত কষ্ট যত ত্যাগ আর যত বিপদ-আপদের মোকাবেলা করতে হয় অন্য কোন আমলে করতে হয় না, তাই জিহাদের আমলের মর্যাদা-পুরস্কারও সবচেয়ে বেশী। অল্প সময় জিহাদের আমল করে যে সাওয়াব পাওয়া যায় অন্য কোন আমলে পাওয়া যায় না। জিহাদের আমলের বিনিময়ে নাজাত ও জান্নাত লাভের সুসংবাদ ও নিশ্চয়তা ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু অন্য কোন আমলে জান্নাত ও মুক্তি লাভের এমন কোন নিশ্চয়তা ঘোষিত হয়নি। বরং আল্লাহ ঘোষনা করেছেন-
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَـهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّـبِرِينَ
তোমারা কি ধারণা করেছ জান্নাতে চলে যাবে, অথচ দেখে নেয়া হবেনা, তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছো আর কে ধৈর্যশীল (জিহাদের পথে) ছিলে। (সূরা আলে ইমরান ৩ঃ১৪২)
অর্থাৎ জান্নাতে যাবার আগে আল্লাহ দেখে নেবেন কে কে জিহাদ করেছে। অন্যান্য আমল করলেও জিহাদ না করলে জান্নাত পাওয়ার আশা করা যায় না। আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন-
وَمَن يُقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللّهِ فَيُقْتَلْ أَو يَغْلِبْ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْراً عَظِيماًযে সকল লোক আল্লাহর পথে লড়াই করে নিহত বা বিজয়ী হবে, তাদেরকে আমি বড় পুরস্কার দেব। (সূরা নিসা ৪ঃ৭৪)
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
إِنَّ الْجَنَّةِ تَحْتَ ظِلَالِ السُّيُوفِ
নিশ্চয়ই জান্নাত তরবারীর ছায়ার তলে। (সহীহ বুখারী ১ম খন্ড)
মায়াজ বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে আছে যে, ‘যে সামান্য সময়ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে তার জন্য জান্নাত অবধারিত।’ (আবু দাউদ ১ম খন্ড)
ভিন্ন এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, ‘আল্লাহর রাস্তায় এক রাত্রি পাহারা দেয়া, ঘরে বসে এক হাজার রাত্রি সাওম রাখা ও সলাত আদায় থেকে উত্তম। যার এক বছর হলো ৩৬০ দিনে আর একদিন হলো ১০০০ বছরের সমান । (ইবনে মাজাহ ২য় খন্ড)
আল্লাহর রাস্তায় এক রাত্রি পাহাড়া দেয়া, দুনিয়া ও দুনিয়ায় যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)
ঐ চোখকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহাড়া দিয়েছে। (সুনানে তিরমিযি)
যার দু’টি পা আল্লাহর রাস্তায় ধূলায় ধুসরিত হয়েছে, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। (সহীহ বুখারী)
জিহাদরত অবস্থায় অন্যান্য আমলের ফযিলতও বেড়ে যায়। যেমন বলা হয়েছে- যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় গিয়ে একদিন সাওম রাখবে, আল্লাহ তার চেহারাকে জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের দূরত্ব করে দিবেন। (সহীহ বুখারী ১ম খন্ড)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حَدَّثَهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يَعْدِلُ الْجِهَادَ قَالَ لَا أَجِدُهُউত্তম আমল সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে। জনৈক ব্যক্তি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন, যা জিহাদের সমান মর্যাদা রাখে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, জিহাদের সমান মর্যাদার কোন আমল আমি খুঁজে পাচ্ছি না। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল জিহাদ)
Comment