যে চোখ ক্রুসেডারদের নির্মমতা দেখতে পায় না সে চোখের কোনো মূল্য নেই
এক.
যখন সমগ্র মুসলিম উম্মাহর উপর চলছে নির্যাতনের স্টিমরোলার, তখন স্বাভাবিকভাবেই ঈমানদারদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। বিশেষত আমাদের প্রতিবেশি দেশ মায়ানমারে আমার মুসলিম ভাই বোনদের উপর যে নির্মম ও বর্বর জুলুম করা হচ্ছে, তা দেখে যে কোনো বিবেকবান মানুষের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠবে। আমরা এমন এক কঠিন ও নির্মম যুগ পার করছি, যখন গোটা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ মুক্তির জন্য হাহাকার করছে। যখন সমস্ত বাতিল শক্তি, ইসলাম বিরোধী শক্তি একজোট হয়ে উম্মাহ’র হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঝরাচ্ছে। একইসঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে, তিনি আমাদেরকে এমন এক সৌভাগ্যমন্ডিত জামাতে শামিল করেছেন; ইসলামের ইতিহাস সেসব আল্লাহওয়ালা বুজুর্গদের নামে ভরপুর; যাদের আলোচনা ঈমানদারদের হৃদয়ে প্রশান্তি ও দৃঢ়তার শক্তি যোগায়। এখনো যারা পুরো মুসলিম উম্মাহকে আখেরি জমানার ফেতনা থেকে মুক্ত করা এবং রাখার জন্য আমরণ লড়াই করে যাচ্ছেন।
ইসলামি ইতিহাসের শুরু থেকে আজ অব্দি ইহুদী-খ্রিস্টানদের চক্রান্ত খুবই বিপজ্জনক ও ভয়ংকর ছিলো। ইসলামি বিশ্বের বিরুদ্ধ সংঘটিত চক্রান্তসমূহ চূড়ান্ত পর্যায়ের ধ্বংসাত্মক ও হিংসাত্মক ছিলো। সময়ের ধাপে ধাপে, পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে, পর্দার অন্তরালে, কখনো চেহারায় কৃত্রিম নিষ্পাপ ও নিষ্কলুষ ছায়ার আবরণ লাগিয়ে এবং মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রের চাদোয়া গায়ে দিয়ে বার বার তারা আক্রমণ করেছে। তাদের ধারাবাহিক এমন আক্রমণের ফলে উম্মাহ কখনো হারিয়েছে তাদের চলার গতিপথ আবার কখনো হারিয়েছে তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। হারিয়েছে খোদার জমিনে তাদের একমাত্র সম্বল ইসলামি খেলাফতের সুন্দর ও সুনির্মল অধ্যায়। তাদের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের ব্যাপকতা এতোই বিস্তৃতি ইতিহাসের বড় বড় কিতাব ও গ্রন্থাবলি দেখে সহজেই অনুমেয় হয়ে যায়।
দুই.
এটা তো নিশ্চিত যে, ইসলামের এসব দুশমনরা বার বার বংশ পরম্পরায় চেষ্টা করে আসছে উম্মাহ ও ইসলামি বিশ্বকে দুনিয়ার বুক থেকে চিরতরে মুছে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করার দৃঢ়সংকল্পে। নিজেদের মিশন বাস্তবায়নে দিন-রাত এক করে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের এসব কর্মকান্ডের ফল তো এই যে, তাদের ইতিহাস গাদ্দারী, চুক্তিভঙ্গ, ধোঁকাবাজি ও প্রতারণায় পরিপূর্ণ। তাদের এমন ত্যাগ (!) ইহুদি সম্প্রদায়কে এই দুনিয়াতে নানান সাফল্য এনে দিলেও নেতৃত্বের দুর্বলতা, চারিত্রিক অধঃপতন এবং তাদের শয়তানি কর্মকান্ডের জন্য পুরো পৃথিবীজুড়েই তারা ঘৃণা ও অপমানে নিপতিত। অন্যদিকে রাসুলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতগণ কৃতজ্ঞতা, আমানতাদারিতা ও সত্যবাদিতা এবং মানবতার এমন নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন যে, শুধু মুসলমানদের কাছেই নয়, পুরো বিশ্বজুড়েই নন্দিত ও বরিত হয়েছে উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে। তাদের নিয়ে শুধু ঈমানদারগণই নয়, পুরো মানবজাতিই আজ গর্ব করতে পারে নির্দ্বিধায়-নির্বিঘ্নে।
উম্মাহর অতন্দ্র প্রহরী এই মুজাহিদগণ উত্তম চরিত্রমাধুর্য, ঈর্ষা জাগানিয়া নববী আদর্শ ও আখলাক, মানব ও মানবতার এমন সফলতা তাদের জীবনকে করেছে অত্যন্ত আলোকিত ও সুশোভিত। প্রকৃত মুমিনগন তাদের এই সুরভিত সৌরভে আমোদিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন। হৃদয়ের সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে তারা তা অনুভব করছে এই সফলতার চির সুন্দর সবুজাভ চারিধার। দীনে হানিফের অতন্দ্র প্রহরী এরাই। এদের মাধ্যমেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীজুড়ে দীনে ইসলামকে আপন অবস্থায় স্বমহিমায় টিকিয়ে রাখবেন। আর এদের মাধ্যমেই দীনে হানিফের উপর আপতিত ধুলো-বালি পরিষ্কার রেখে পৃথিবীব্যাপী চমকিত করার ব্যবস্থা করেছেন। শির্ক-বেদাত, এবং কুপ্রথা-কুসংস্কার থেকে পবিত্র রেখে সেই প্রকৃত অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন, যে ব্যবস্থাপনার উপর রেখে গেছে নবীয়ে আখিরুয্* যামান রাসুলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
তিন.
ইহুদি ও কুফরিশক্তি যতোই ষড়যন্ত্র করুক এবং উম্মাহর উপর পীড়নের স্টিম-রোলার পরিচালিত করুক না কেন, তারা তাদের কাজে কখনোই পরিপূর্ণভাবে সফলতা লাভ করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ [٦١:٨]
তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তার আলোকে পূর্ণ বিকশিত করবেন; যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। (সুরা আস-সাফ:০৮)
এই আয়াতে শুধু মক্কার মুশরিকদের কথাই বলা হয়নি। বরং যুগে যুগে যেসব ইসলাম বিরোধী শক্তি ইসলাম ও মুসলমানদের পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দিয়ে নিজেদের ভ্রষ্ট ও নষ্ট রাজত্ব কায়েমের জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে; সবাই এই আয়াতের উদ্দিষ্ট। তাদের সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে এই আয়াতের মর্মবাণী। বর্তমানে যারা শুধু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই নয়, নানান ক্ষেত্রে নানাভাবে, নানা উদ্যোগে উম্মাহকে নিশ্চিহ্ন পাঁয়তারা করছে; সবাই এর আওতাভুক্ত।
চার.
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا [٤:٧٥]
আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই করছ না সেইসব দুর্বল নারী-পুরুষ ও ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান করুন! এখানকার অধিবাসীরা যে জালিম! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একজন অভিভাবক নির্ধারণ করে দাও। তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একজন সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও। (সুরা নিসা: ৭৫)
আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ ۚ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ ۚ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ [٩:٣٨]
হে মুমিনগণ! তোমাদের কি হলো? যখন তোমাদেরকে বলা হয়, তোমরা আল্লাহর রাহে জিহাদের জন্য বেরিয়ে পড়, তখন তোমরা মাটিতে লুটিয়ে পড়। তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার এ জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট? মনে রেখো! পরকালীন চিরস্থায়ী জিন্দেগীর তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপভোগ অতি সামান্য মাত্র।
বর্তমান যুগে মুসলিম উম্মাহর উপর যে নিপীড়ন চলছে, তা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ ও পন্থা হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।
পাঁচ.
যুগে যুগে বাতিলের বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই করা হকের পতাকাবাহী, দীনের অতন্ত্র প্রহরী মুজাহিদদের তালিকা অতি দীর্ঘ। উম্মাহর আলোকদীপ্ত সন্তানদের নামের তালিকাও বিস্মৃত হয়নি। সাহাবী যুগ থেকে আজো উম্মাহর দরদী ও ত্যাগী মুজাহিদদের এই কাফেলা চলমান, চলবে কেয়ামত অবধি। খেলাফতকে নবুওয়তি পন্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য হযরত হুসাইন রা.-এর কুরবানি, খলকে কুরআনের ফেতনার বিরুদ্ধে হযরত আহমাদ ইবনে হাম্মবল রহ., ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে নূরুদ্দীন ঝনকী রহ. ও সালাহুদ্দীন আইউবী রহ. এবং তাতারীদের ফেতনা থেকে মুক্ত রাখার জন্য শায়খুর ইসলাম ইমাম তাইমিয়া রহ.-এর ত্যাগ ও কুরবানি এবং হকের জন্য কারান্তরীণ হওয়া এবং জেলে থাকাবস্থায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে চলে যাওয়া ইমাম আবু হানিফা রহ. ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ., অত্যাচারী শাসক রাজা দাহিরের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ ইবনে কাসেম রহ., আকবরী ধর্মের বিরুদ্ধে মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহ., উপমহাদেশের প্রখ্যাত শায়খুল হাদিস শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি রহ. হিন্দুস্তানে জিহাদ ও কিতালের ভিত্তি-স্থপতি সাইয়্যেদ আহমাদ বেরেলভি রহ., শামেলীর ময়দানে শক্তিধর দুশমনদের প্রতিরোধকারী মাওলানা কাসেম নানুতুভি রহ. শিয়া মতবাদে সুক্ষ্ম ও সুপ্ত কুফরি মতবাদের উন্মুক্তকারী মাওলানা শাহ নাওয়ায ঝংগভী (যখন শিয়া মতবাদ আহলে সুন্নাত ওয়ালা জামাতের দোরগোরায় সফল আঘাত হানতে সামর্থ্য হয়েছিলো), খিলাফত মিন হাযিহিন নবুওয়াহ তথা কুরআন-সুন্নাহর প্রকৃত আদলে ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠাকারী আমিরুল মুমিনিন মোল্লাহ মুহাম্মদ ওমর রহ. এবং আখেরি জমানার মহাশক্তিধর ক্ষমতার দাবিদার (এমনকি নিজেকে প্রভু’র সমপর্যায়) ঘোষণাকারী আমেরিকার দম্ভ ও অহংকার চূর্ণ করে দেওয়া মুজাহিদে উম্মত, উম্মাহর দরদী রাহবর শায়খ উসামা বিন লাদেন রহ. এবং সমকালীন ইমাম গাজী আব্দুর রশিদ শহিদ রহ-এর যোগ্য উত্তরসূরি পৃথিবীময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে মুজাহিদগণ সেইসব মোবারকময় কাফেলার সদস্য, যারা দীনে হানিফের উপর আপতিত সমস্ত ধূলিকণা ও জঞ্জাল পরিষ্কার করার জন্য আমৃত্যু নিজেদেরকে উৎসর্গীত করে থাকেন। সৌভাগ্যের প্রতীক তো তারাই, যারা হক ও বাতিল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর হকপন্থীদের সঙ্গী হয়ে যায়। আর বাতিলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং জিহাদ করে।
ছয়.
আজ সারা পৃথিবীজুড়েই চলছে মুসলিম নিধন। আরাকানে চলছে মিয়ানামারের সামরিক জান্তার শোষণ-পীড়ণ। কাশ্মীরে চলছে সাম্রাজ্যবাদী দিল্লীর সন্ত্রাস। ইরাক-আফগানে আমেরিকার দানবেরা চালাচ্ছে শতাব্দীর বর্বরতম ধ্বংষযজ্ঞ। কীভাবে ভুলে যাই দজলাপারের সেইসব দৃশ্য! আজানের ধ্বনিতে গম গম করে উঠা মসজিদের মিনার ধ্বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেজদায় ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’ পড়া অবস্থায় মসজিদের মুসল্লিদের শহিদ করে দেওয়া হয়েছে। বাগদাদে নামাজরত অবস্থায় নির্মমভাবে গুলি করে শহীদ করা হয়েছে দেড়শত মুসল্লিদের। কুফা ও বসরার লজ্জাশীলা মায়েরা মৃত্যু কামনা করে বেঁচে আছে প্রতিনিয়ত। নাকি হায় মুতাসিম বলে, না কোন মুহাম্মদ বিন কাসিমের প্রত্যাশায় বেঁচে আরব-কাশ্মীর কন্যারা! শহর, নগর, পাড়া-মহল্লাকে ঘেরাও করে মহিলাদের উঠিয়ে নিয়ে যায় দস্যু-দুশমনরা। সাদা দাড়িওয়ালাদের রাস্তায় হেঁচড়ানো হয়। যুবকদের লাইনে দাঁড় করিয়ে বন্দুকের গুলির নিশানা প্রাক্টিস করা হয়। মুসলমানদের এসব হত্যাকারী কারা? ডুকরে কেঁদে ওঠা আহ! আহ! কাতরানো চিৎকার ধ্বনি কাদের বেঁচে থাকার শেষ সম্বল? সেসব বোনদের আর্তচিৎকার তো আমার মতো দুর্বল চিত্তের অধিকারীর জন্য সহ্য করার মতো নয়। তবুও আখেরি জমানার মুহাম্মদ ইবনে কাসিম ‘আবু মুসআব যারকাভি’ রহ. লাব্বাইক বলেছিলেন। কিন্তু আরাকানে? কাশ্মীরে? বসনিয়ায়? সেসব এলাকায় তো হাসি-আনন্দের গ্রামগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ফুলের মতো নিষ্পাপ বাচ্চাদের হত্যা করা হচ্ছে নির্মম-নৃশংস পদ্ধতিতে। নির্মমভাবে কেড়ে নেয়া হচ্ছে তাদের সুন্দরতম ফুলের পাপড়ির মতো নির্মল ছেলেবেলা। মা-বোনদের ইজ্জত-আব্রু ভূলুণ্ঠিত। কন্যা-জায়াদের জীবন্ত পুড়ে মারা হচ্ছে। বৃদ্ধ বাবার সামনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হচ্ছে। ভাই ও স্বামীর সামনে ফেঁড়ে ফেলা হচ্ছে। পাহাড় ও জমিন ধ্বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শহর ও গ্রামগুলোকে রক্তের হোলিখেলা চলছে। মানুষের মাথার খুলি ধুলি ও তুলোর মতো উড়ছে! মানুষের শরীর থেকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন টুকরো টুকরো গোস্ত দিগ্বিদিক পড়ে আছে।
এমন কঠিন পরিস্থিতি দেখেও যাদের হৃদয় ব্যথিত হয় না, তাদের ঈমান নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। যারা গুটিকয়েক প্লট, বহির্বিশ্ব সফর, আমৃত্যু সরকারী ভাতা এবং সরকারী ডিনারের বিনিময়ে জিহাদের বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজি করে, নিঃসন্দেহে তারা মুসলিম উম্মাহর বন্ধু নয়; বরং আমেরিকা ও তার দোসরদের মতোই প্রকাশ্য শত্রু। উম্মাহ ও মুজাহিদদের বুকে ছুরিকাঘাত করার জন্য এসব মুনাফিকরাই যথেষ্ট। ক্রুসেডারদের এমন ভয়াবহ নির্মমতা সে চোখ দেখতে পায় না সে চোখের কোনো মূল্য নেই। যারা বলে, ইমাম মাহদী আসলে জিহাদ করা হবে, এখন জিহাদের সময় নয়; আল্লাহর কসম! ইমাম মাহদী আসার পরও তারা জিহাদের বিরুদ্ধেই ফতোয়াবাজি করবে। জিহাদের ময়দানে লড়াই করবার মতো সৌভাগ্য তাদের কখনোই হবে না। তারা সত্যিকার অর্থেই ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর শত্রু।
الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا [٤:٧٦]
“যারা মুমিন, তারা আল্লাহর পথে কিতাল করে। আর যারা কুফরি করে, তারা তাগুতের পক্ষে লড়াই করে। সুতরাং তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। নিশ্চয়ই শয়তানের চক্রান্ত্র খুবই দুর্বল। (সুরা নিসা: ৭৬)
সুতরাং হে ঈমানদারগণ! এখনই প্রস্তুতি নিন। জিহাদ ও কিতালের পথে আসুন। পরিশ্রমী হোন। আল্লাহওয়ালাদের পথের মুসাফির হয়ে যান। জিহাদ ও কিতালের পথে আসুন। পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করুন। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা সর্বাবস্থায় তাদের সঙ্গী হোন। দাজ্জালী শক্তির মিথ্যাচার থেকে আল্লাহ সবাইকে হেফাজতে রেখে হকপন্থীদের সঙ্গে কাজ করার তৌফিকদান করুন। তাদের সাহায্যকারী বানিয়ে দিন এবং শাহাদাতের মৃত্যু নসিব করুন। আমিন!!
Comment