★ অাত-তারীখ লীশ শুহাদা★
বি'ইসমিহী তা'আলা...
মাহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন খাঁটি মু'মিনগণের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
و اذا تليت عليهم آياته زادتهم ايماناً.(سوره انفال)
যখন তাহাদিগকে আল্লাহর নিদর্শন শুনান হয় তখন তাহাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। (সূরা আনফাল)
আল্লাহর অসংখ নিদর্শনের মধ্য থেকে শহীদগণের জীবিত থাকার নিদর্শনটা অন্যতম। তাই এই পর্বে তাঁহাদেরই কিছু আলোচনা করব ইনশাঅাল্লাহ্।
এই ঘটনাটি অামি শুনেছি এক ভাইয়ের থেকে। আর তিনি শুনেছেন এক বাংলদেশ থেকে আফগান জিহাদে যাওয়া এক মুজাহিদ থেকে। তিনি বলেন:
আফগানে আমি একদিন আমার অস্রের বুলেট কিনতে (মুজাহিদদের সাপোর্টারের) এক দোকানে গেলম। দোকানদার বৃদ্ধ ছিলেন। তার কাছে যাবার পর তিনি আমাকে আমার পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তারপর আমি তাঁকে আমার পরিচয় ও আফগানে আসার কাহিনী শুনালাম। এবার বৃদ্ধ লোকটি বললেন "আমার বাড়ির পাশের এক পরিবারও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য তাঁহাদের সব ত্যাগ করেছেন। আমি তাঁকে ঘটনাটি বিস্তারীত বলতে অনুরোধ করলাম। এবার তিনি সেই ঘটনাটি আমাকে বিস্তারীত বলতে শুরু করলেন।
একটি পরিবার। যাদের বিবাহ হয়েছে এসমস্ত যুদ্ধ বিগ্রহের মাঝে। শামী একজন মুজাহিদ ছিলেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে এই পরিবারে জন্ম নিল চার ভাই। ছোট ভাইটির নাম ছিল আব্দুল্লাহ।
বাবা দিনের অধিাংশ সময় জিহাদের ময়দানে কাটাতেন। বড় তিন ভাই মাদ্রাসায় পড়তেন। এক দিন বাবা শাহাদাত নামের সেই অমিয় সুধা পান করলেন।
এবার থেকে পরিবারের খরচ বহন করছিলেন বড় ভাই। তাহাদের বাবা যেই ফ্রন্টে ছিলেন সেই ফ্রন্টের আমীর জানতেন যে, তাঁর চার ছেলে আছে। তাই একদিন আমীর সাহেব তাঁহাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হলেন। এবং তার মা কে সান্তনা দিলেন এবং চার সন্তান থেকে আল্লাহর রাস্তায় তার বাবার স্থানে একজন ছেলে চাইলেন। চাওয়ার সাথেসাথেই মা বড় ছেলেকে সাজিয়ে গুছিয়ে আমীরের কাছে পাঠালেন এবং বললেন কমান্ডার সাহেব আমাকে মাফ করবেন আপনার বলবার অাগেই আমার ছেলেকে পাঠানো উচিৎ ছিল।
এবার পরিবারের ভার বহন করলেন মেঝো ছেলে।
কয়েক দিন পরে হটাৎ ঘরের উঠানে চলে এল একটি শহীদের দেহ। এবার জিহাদে গেলেন মেঝো ছেলে। আল্লাহ তা'লা কিছু দিনের মধ্যেই মেঝো ছেলেকে তার সান্যিদ্ধে নিয়ে নিলেন। জানাজা হবার পর মা লাশবাহী মুজাহিদদের জন্য চা নাস্তার ব্যবস্থা করলেন। এবং তৎখনাত তার সেঝো ছেলেকে মুজাহিদদের হাতে দিয়ে দিলেন। এবার মুজাহিদরা দেখলেন যে, সেঝো ছেলের বয়স হল মাত্র সতের। আর এদিকে ছোট ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স হল বার। একে নিয়ে গেলে আব্দুল্লাহতো তার মাকে চালাতে পারবেনা। তাই মুজাহিদরা বললেন যে, আপনার ছেলেকে আপনি রেখেদেন। কিন্তু তার মা তাকে রাখতে রাজি হলেন না। অবশেষে তার মায়ের অনেক অনুরোধে তার সেঝো ছেলেকেও তাহাদের সাথে নিয়ে চললেন। এবার মা তার ছেলেকে বলছেন: বাছা হে! তোমাকে আমি দীর্ঘ দশ মাস দশ দিন আমার পেটে ধারণ করেছি তোমার জন্য কত কষ্ট সহ্য করেছি কেন জান? অামি সুধু একারণেই তোমাকে অামার বুকের দুধ পান করিয়েছি যাতে করে তুমি আল্লাহর শত্রুদের সাথে বিরত্বের সাথে লড়াই করে তাহাদেরকে পরাজিত করে মাজলুম মুসলিমদের সাহায্য করতে পার। হে আমার অাদরের সন্তান! তুমি শহীদ হবার আগ পর্যন্ত এবাড়িতে পা রাখবেনা। তেমার সাথে আমার দেখা হবে জান্নাতে ইনশাআল্লাহ। এই বলে তিনি তার ছেলেকে বিদায় দিলেন। ছোট্ট ভাই আব্দুল্লাহ পাশে দাঁড়িয়ে মায়ের সব কথা গুলো মনযোগ দিয়ে শুনলেন।
দু- তিন বছরের পরে আল্লাহ এই ভাগ্যবতী মায়ের তৃতীয় সন্তানকেও আল্লাগ কবুল করলেন। এবার আসল ছোট ভাইটির পালা। যেদিন তার ভাইয়ের দেহটি তাদের বাড়িতে আসল সেদিন অাব্দুল্লাহ অাগে থেকেই সেজে- গুজে প্রস্তুত হয়েছিল জিহাদে যাবার জন্য। কিন্তু এবার আর তাকে নেয়া হলনা।
সে বাড়িতেই মায়ের খেদমতে রইল। আব্দুল্লাহ একটা কাজ করত। সেই কাজ দ্বারাই সংসার চলত। কিন্তু একদিন তার সেই কাজটি ছুটে যায়। এবার সে বেকার বসে আছে। আর মনে মনে ভাবছে "একটু সুযোগ পেলেই চলে যাবে সেই রাস্তার পথিক হতে যেই রস্তা পাড়ি দিয়েছেন তার পিতা ও তিন ভাই।
এক দিনের ঘটনা। ঘরে দু-দিন ধরে কিছু নেই। সে ও তার মা না খেয়ে আছে। খুধার যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে তার মা তাকে নিজের গলা থেকে বিবাহের হারটা খুলে দিয়ে বললেন যাও এটা বিক্রি করে সামান্য টাকার কিছু খাবার নিয়ে এস। তার মা একথা বলছিল আর তার চোখ দিয়েও পানি ঝরছিল। অাব্দুল্লাহ হাড় নিয়ে বাজারে গেল এবং বেশ চড়া দামেই বিক্রি করল। এবার সে খাবার কিনার উদ্দশ্যে রাস্তা পাড়ি দিচ্ছিল। ঠিক তখনই সে তার শহীদ হওয়া তিন ভাইয়ের আওয়াজ সুনতে পেল। তারা তাকে বলছে " ভাই অাব্দুল্লাহ! তুই নামান্য দু-দিন না খেতে পেয়েই হয়রান হয়ে গেছেস। ভাই! এই খানাকে ছাড়। ময়দানে এখনও অনেক জরুরত আছে। তুই এই টাকা দিয়ে অস্র কিন।" (আল্লাহু আকবার!!!)
আব্দুল্লাহ বারবার এই বাক্যগুলো সুনতে পাচ্ছিল।
কিন্তু সে আশে-পাশে কোথাও কাওকে দেখতে পেলনা। অবশেষে সে তার মায়ের হার বিক্রির টাকা দিয়ে একটি অস্র কিনল। এর পর সামান্য কিছু টাকা বাকি রইল। সে সেই টাকা দিয়ে নিজের ও মায়ের জন্য সামান্য কিছু খাবার বাড়িতে নিয়ে গেল।
বাড়িতে এসে সে তার মাকে সব খুলে বলল। মা তার সব কথা সুনে তাকে এবার জিহাদে পাঠানোর জন্য তৈরী হয়ে গেলেন। এবং পরের দিন তাকে পাঠিয়ে দিলেন। এবার মা একা। তার ভরসা কেবল আল্লাহর উপর।
বেশ কিছু দিন জিহাদ করার পর এক দিন আব্দুল্লাহ শাহাদাত বরণ করলেন। শাহাদাতের সময় তার হাতে ছিল সেই অস্রটি। যুদ্ধ শেষে সাথিরা সবাই শহীদদেরকে নিজেদের ক্যম্পে নিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দেখতে দেখতে চলে এল অাব্দুল্লাহর পালা। কিন্তু অবাক ও অাশ্চর্জের বিষয় হল কেহই তার হাত থেকে সেই অস্রটা নিতে পারলনা। অবশেষে মুজাহিদরা তার হাতে অস্র রেখেই তাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসল। এবার তার মা তার কাছে গিয়ে অনেক কিছু বললেন কিন্তু কিছুতেই সে ওই অস্রটিকে ছারছিলনা। এরকম মনে হচ্ছিল যে, সে এই অস্র নিয়েই অাল্লাহর দরবারে হাজির হতে চায়।
অাব্দুল্লাহর এই খবরটি অাস্তে অাস্তে চলে গেল তার ক্যম্পের প্রধান আমীরের কাছে। এই ঘটনা সুনে আমীন তার বাড়িতে আসলেন। এবং তার পাশে বশে বললেন :
" শোন আব্দুল্লাহ! অামি জানি তুমি কেন এই সিলাহটি ছাড়তে চাইছনা। তুমি এটি নিয়েই আল্লাহর দরবারে হাজির হতে চাইচ। কিন্তু আব্দুল্লাহ তুমি একটু লক্ষ কর! তুমি থাকতেইত কত মুজাহিদকে দেখেছিলে যাহারা অস্রের অভাবে যুদ্ধ করতে পারছেনা। তুমি যদি অস্রটি নিয়ে যাও তবে সেটা মাটিতে নাষ্ট হয়ে যাবে। অার যদি রেখে যাও তবে এটা দ্বারা মুজাহিদগণ জিহাদ করবেন। তুমি ও তোমার পরিবার সওয়াব পেতে থাকবে। এবার তুমিই ভেবে দেখ অস্রটি রাখবে না দ্বীনের সাহায্যের
জন্য রেখে যাবে।"
একথা শেষ হওয়া মাত্রই আল্লাহ এই শহীদ আব্দুল্লাহ রহ. এর মাধ্যমে আল্লাহ তার নিদর্শন দেখালেন। শহীদগণ কোন দিন মরে না সেই বিষয়টিও প্রমান হল।
আব্দুল্লাহ তাঁর নিজ হাতে অস্রটি কমান্ডারের হাতের সামনেই তুলে ধরলেন। এবার কমান্ডার তার হাত থেকে অস্রটি নিতে সক্ষম হলেন। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত মুজাহিদগণ তাকবীরের ধনিতে সমস্ত ঘর প্রকম্পিত করলেন।
সম্মানিত ভাইরা এই রকম আরো অনেক ঘটানা অাছে যেগুলো আল্লাহর বাণীকেই প্রমানিত করে।
আল্লাহ বলেন:
ولا تحسبن الذين قتلوا في سبيل الله امواتاً.
بل أحياء عند ربهم يُرزقون.
অর্থ:
যাহারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছে তাহাদেরকে তোমরা মৃত ভেবনা। বরংচ তাঁহারা জীবিত এবং তাঁহারা তাঁহাদের রবের পক্ষ থেকে রিজিক প্রাপ্ত হয়।
আল্লাহ আমাদের সকলকে এসকল নিদর্শন দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি করার এবং আমাদেরকেও এই চির প্রতিক্ষিত শাহাদাতের অমিয় শুধা পান করার তাওফিক দান করুণ । আমীন.
{বি.দ্র. বর্ণনার ক্ষেত্রে হয়ত কিছ কিছু স্থানে কম-বেশ হতে পারে, যদি এমন হয় তবে ভাইদের কাছে অাবেদন যে, আপনারা আমাদেরকে ঠিক করে দিবেন}
বি'ইসমিহী তা'আলা...
মাহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন খাঁটি মু'মিনগণের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
و اذا تليت عليهم آياته زادتهم ايماناً.(سوره انفال)
যখন তাহাদিগকে আল্লাহর নিদর্শন শুনান হয় তখন তাহাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। (সূরা আনফাল)
আল্লাহর অসংখ নিদর্শনের মধ্য থেকে শহীদগণের জীবিত থাকার নিদর্শনটা অন্যতম। তাই এই পর্বে তাঁহাদেরই কিছু আলোচনা করব ইনশাঅাল্লাহ্।
এই ঘটনাটি অামি শুনেছি এক ভাইয়ের থেকে। আর তিনি শুনেছেন এক বাংলদেশ থেকে আফগান জিহাদে যাওয়া এক মুজাহিদ থেকে। তিনি বলেন:
আফগানে আমি একদিন আমার অস্রের বুলেট কিনতে (মুজাহিদদের সাপোর্টারের) এক দোকানে গেলম। দোকানদার বৃদ্ধ ছিলেন। তার কাছে যাবার পর তিনি আমাকে আমার পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তারপর আমি তাঁকে আমার পরিচয় ও আফগানে আসার কাহিনী শুনালাম। এবার বৃদ্ধ লোকটি বললেন "আমার বাড়ির পাশের এক পরিবারও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য তাঁহাদের সব ত্যাগ করেছেন। আমি তাঁকে ঘটনাটি বিস্তারীত বলতে অনুরোধ করলাম। এবার তিনি সেই ঘটনাটি আমাকে বিস্তারীত বলতে শুরু করলেন।
একটি পরিবার। যাদের বিবাহ হয়েছে এসমস্ত যুদ্ধ বিগ্রহের মাঝে। শামী একজন মুজাহিদ ছিলেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে এই পরিবারে জন্ম নিল চার ভাই। ছোট ভাইটির নাম ছিল আব্দুল্লাহ।
বাবা দিনের অধিাংশ সময় জিহাদের ময়দানে কাটাতেন। বড় তিন ভাই মাদ্রাসায় পড়তেন। এক দিন বাবা শাহাদাত নামের সেই অমিয় সুধা পান করলেন।
এবার থেকে পরিবারের খরচ বহন করছিলেন বড় ভাই। তাহাদের বাবা যেই ফ্রন্টে ছিলেন সেই ফ্রন্টের আমীর জানতেন যে, তাঁর চার ছেলে আছে। তাই একদিন আমীর সাহেব তাঁহাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হলেন। এবং তার মা কে সান্তনা দিলেন এবং চার সন্তান থেকে আল্লাহর রাস্তায় তার বাবার স্থানে একজন ছেলে চাইলেন। চাওয়ার সাথেসাথেই মা বড় ছেলেকে সাজিয়ে গুছিয়ে আমীরের কাছে পাঠালেন এবং বললেন কমান্ডার সাহেব আমাকে মাফ করবেন আপনার বলবার অাগেই আমার ছেলেকে পাঠানো উচিৎ ছিল।
এবার পরিবারের ভার বহন করলেন মেঝো ছেলে।
কয়েক দিন পরে হটাৎ ঘরের উঠানে চলে এল একটি শহীদের দেহ। এবার জিহাদে গেলেন মেঝো ছেলে। আল্লাহ তা'লা কিছু দিনের মধ্যেই মেঝো ছেলেকে তার সান্যিদ্ধে নিয়ে নিলেন। জানাজা হবার পর মা লাশবাহী মুজাহিদদের জন্য চা নাস্তার ব্যবস্থা করলেন। এবং তৎখনাত তার সেঝো ছেলেকে মুজাহিদদের হাতে দিয়ে দিলেন। এবার মুজাহিদরা দেখলেন যে, সেঝো ছেলের বয়স হল মাত্র সতের। আর এদিকে ছোট ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স হল বার। একে নিয়ে গেলে আব্দুল্লাহতো তার মাকে চালাতে পারবেনা। তাই মুজাহিদরা বললেন যে, আপনার ছেলেকে আপনি রেখেদেন। কিন্তু তার মা তাকে রাখতে রাজি হলেন না। অবশেষে তার মায়ের অনেক অনুরোধে তার সেঝো ছেলেকেও তাহাদের সাথে নিয়ে চললেন। এবার মা তার ছেলেকে বলছেন: বাছা হে! তোমাকে আমি দীর্ঘ দশ মাস দশ দিন আমার পেটে ধারণ করেছি তোমার জন্য কত কষ্ট সহ্য করেছি কেন জান? অামি সুধু একারণেই তোমাকে অামার বুকের দুধ পান করিয়েছি যাতে করে তুমি আল্লাহর শত্রুদের সাথে বিরত্বের সাথে লড়াই করে তাহাদেরকে পরাজিত করে মাজলুম মুসলিমদের সাহায্য করতে পার। হে আমার অাদরের সন্তান! তুমি শহীদ হবার আগ পর্যন্ত এবাড়িতে পা রাখবেনা। তেমার সাথে আমার দেখা হবে জান্নাতে ইনশাআল্লাহ। এই বলে তিনি তার ছেলেকে বিদায় দিলেন। ছোট্ট ভাই আব্দুল্লাহ পাশে দাঁড়িয়ে মায়ের সব কথা গুলো মনযোগ দিয়ে শুনলেন।
দু- তিন বছরের পরে আল্লাহ এই ভাগ্যবতী মায়ের তৃতীয় সন্তানকেও আল্লাগ কবুল করলেন। এবার আসল ছোট ভাইটির পালা। যেদিন তার ভাইয়ের দেহটি তাদের বাড়িতে আসল সেদিন অাব্দুল্লাহ অাগে থেকেই সেজে- গুজে প্রস্তুত হয়েছিল জিহাদে যাবার জন্য। কিন্তু এবার আর তাকে নেয়া হলনা।
সে বাড়িতেই মায়ের খেদমতে রইল। আব্দুল্লাহ একটা কাজ করত। সেই কাজ দ্বারাই সংসার চলত। কিন্তু একদিন তার সেই কাজটি ছুটে যায়। এবার সে বেকার বসে আছে। আর মনে মনে ভাবছে "একটু সুযোগ পেলেই চলে যাবে সেই রাস্তার পথিক হতে যেই রস্তা পাড়ি দিয়েছেন তার পিতা ও তিন ভাই।
এক দিনের ঘটনা। ঘরে দু-দিন ধরে কিছু নেই। সে ও তার মা না খেয়ে আছে। খুধার যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে তার মা তাকে নিজের গলা থেকে বিবাহের হারটা খুলে দিয়ে বললেন যাও এটা বিক্রি করে সামান্য টাকার কিছু খাবার নিয়ে এস। তার মা একথা বলছিল আর তার চোখ দিয়েও পানি ঝরছিল। অাব্দুল্লাহ হাড় নিয়ে বাজারে গেল এবং বেশ চড়া দামেই বিক্রি করল। এবার সে খাবার কিনার উদ্দশ্যে রাস্তা পাড়ি দিচ্ছিল। ঠিক তখনই সে তার শহীদ হওয়া তিন ভাইয়ের আওয়াজ সুনতে পেল। তারা তাকে বলছে " ভাই অাব্দুল্লাহ! তুই নামান্য দু-দিন না খেতে পেয়েই হয়রান হয়ে গেছেস। ভাই! এই খানাকে ছাড়। ময়দানে এখনও অনেক জরুরত আছে। তুই এই টাকা দিয়ে অস্র কিন।" (আল্লাহু আকবার!!!)
আব্দুল্লাহ বারবার এই বাক্যগুলো সুনতে পাচ্ছিল।
কিন্তু সে আশে-পাশে কোথাও কাওকে দেখতে পেলনা। অবশেষে সে তার মায়ের হার বিক্রির টাকা দিয়ে একটি অস্র কিনল। এর পর সামান্য কিছু টাকা বাকি রইল। সে সেই টাকা দিয়ে নিজের ও মায়ের জন্য সামান্য কিছু খাবার বাড়িতে নিয়ে গেল।
বাড়িতে এসে সে তার মাকে সব খুলে বলল। মা তার সব কথা সুনে তাকে এবার জিহাদে পাঠানোর জন্য তৈরী হয়ে গেলেন। এবং পরের দিন তাকে পাঠিয়ে দিলেন। এবার মা একা। তার ভরসা কেবল আল্লাহর উপর।
বেশ কিছু দিন জিহাদ করার পর এক দিন আব্দুল্লাহ শাহাদাত বরণ করলেন। শাহাদাতের সময় তার হাতে ছিল সেই অস্রটি। যুদ্ধ শেষে সাথিরা সবাই শহীদদেরকে নিজেদের ক্যম্পে নিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দেখতে দেখতে চলে এল অাব্দুল্লাহর পালা। কিন্তু অবাক ও অাশ্চর্জের বিষয় হল কেহই তার হাত থেকে সেই অস্রটা নিতে পারলনা। অবশেষে মুজাহিদরা তার হাতে অস্র রেখেই তাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসল। এবার তার মা তার কাছে গিয়ে অনেক কিছু বললেন কিন্তু কিছুতেই সে ওই অস্রটিকে ছারছিলনা। এরকম মনে হচ্ছিল যে, সে এই অস্র নিয়েই অাল্লাহর দরবারে হাজির হতে চায়।
অাব্দুল্লাহর এই খবরটি অাস্তে অাস্তে চলে গেল তার ক্যম্পের প্রধান আমীরের কাছে। এই ঘটনা সুনে আমীন তার বাড়িতে আসলেন। এবং তার পাশে বশে বললেন :
" শোন আব্দুল্লাহ! অামি জানি তুমি কেন এই সিলাহটি ছাড়তে চাইছনা। তুমি এটি নিয়েই আল্লাহর দরবারে হাজির হতে চাইচ। কিন্তু আব্দুল্লাহ তুমি একটু লক্ষ কর! তুমি থাকতেইত কত মুজাহিদকে দেখেছিলে যাহারা অস্রের অভাবে যুদ্ধ করতে পারছেনা। তুমি যদি অস্রটি নিয়ে যাও তবে সেটা মাটিতে নাষ্ট হয়ে যাবে। অার যদি রেখে যাও তবে এটা দ্বারা মুজাহিদগণ জিহাদ করবেন। তুমি ও তোমার পরিবার সওয়াব পেতে থাকবে। এবার তুমিই ভেবে দেখ অস্রটি রাখবে না দ্বীনের সাহায্যের
জন্য রেখে যাবে।"
একথা শেষ হওয়া মাত্রই আল্লাহ এই শহীদ আব্দুল্লাহ রহ. এর মাধ্যমে আল্লাহ তার নিদর্শন দেখালেন। শহীদগণ কোন দিন মরে না সেই বিষয়টিও প্রমান হল।
আব্দুল্লাহ তাঁর নিজ হাতে অস্রটি কমান্ডারের হাতের সামনেই তুলে ধরলেন। এবার কমান্ডার তার হাত থেকে অস্রটি নিতে সক্ষম হলেন। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত মুজাহিদগণ তাকবীরের ধনিতে সমস্ত ঘর প্রকম্পিত করলেন।
সম্মানিত ভাইরা এই রকম আরো অনেক ঘটানা অাছে যেগুলো আল্লাহর বাণীকেই প্রমানিত করে।
আল্লাহ বলেন:
ولا تحسبن الذين قتلوا في سبيل الله امواتاً.
بل أحياء عند ربهم يُرزقون.
অর্থ:
যাহারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছে তাহাদেরকে তোমরা মৃত ভেবনা। বরংচ তাঁহারা জীবিত এবং তাঁহারা তাঁহাদের রবের পক্ষ থেকে রিজিক প্রাপ্ত হয়।
আল্লাহ আমাদের সকলকে এসকল নিদর্শন দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি করার এবং আমাদেরকেও এই চির প্রতিক্ষিত শাহাদাতের অমিয় শুধা পান করার তাওফিক দান করুণ । আমীন.
{বি.দ্র. বর্ণনার ক্ষেত্রে হয়ত কিছ কিছু স্থানে কম-বেশ হতে পারে, যদি এমন হয় তবে ভাইদের কাছে অাবেদন যে, আপনারা আমাদেরকে ঠিক করে দিবেন}
Comment