বিচানায় বসে কি যেন ভাবছিলাম। এক প্রর্যায় বিচানার পাশে রাখা বইগুলোর কোনো একটিতে হাত দিয়ে খুললেই একটি হাদীস চোখের সামনে ভেসে আসে। হাদীসটির বিষয়বস্তু অত্যন্ত বেদনাদায়ক ছিল। আর এমন কিছু বেদনা নিয়ে ক’দিন যাবৎ দিন পার করছিলাম। তাই আর দেরি না করে তখন শিগরিই লেখার টেবিলে খাতা কলম নিয়ে বসে যাই। হাদীসের বেদনাদায়ক বিষয়বস্তুর সাথে নিজ হৃদয়ের বেদনার দিকটিকে মিলিয়ে দু ‘চারটি কথা লিখে যাই।
হাদীস:
প্রিয়বন্ধু! যদি লক্ষ কর তা হলে বুঝতে পারবে হাদীসটিতে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণীর আলোচনা করা হয়েছে। যারা দুনিয়াতে দারিদ্রতার ধরুন কখনো সুখ দেখেনি। আবার মৃত্যু পর কোনভাবে আযাব থেকেও রেহায় পায়নি। বস্তুত এমন ব্যক্তিকে হতভাগ্য ব্যক্তি বলা ছাড়া উপায় নেই। এমন কী তখন সে ব্যক্তিকে হতভাগ্য বলা ছাড়া আর কিছুই তুমি বলতে পার না। বুঝতেই পারলে সে ব্যক্তির হতভাগ্য হওয়ার মূল কারণ কিন্তু এটিই যে, না সে দুনিয়াকে ইঞ্জয় করতে পারল। না নিজেকে পরকালের শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারল। হাদীসে উল্লিখি নির্মম এ অবস্থাটি সত্যি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। তাছাড়া হাদিসটি তোমার কাছে নির্যাতিত নিপীড়িত ও দুর্দশাগ্রস্থ শ্রেণীসমূহের একটি সাধারণ ডোকোমেন্ট তুলে ধরছে। তাই এখন যদি তুমি হাদীসটির গভীরে একটু দৃষ্টি দাও, তাহলে উক্ত শ্রেণীর অনুরূপ আরো অনেক হতভাগ্য নিপীড়িত দুর্দশাগ্রস্থ শ্রেণীসমূহের দৃশ্য তুমি দেখতে পাবে। কারণ বাক্য দ্বারা যে বাস্তবতা বুঝানো হয় সেটিই মূলত মূখ্য বিষয়। এখানে হাদীসের বাক্য দ্বারা হতভাগ্য নামক বাস্তবতাকেই বুঝানো হয়েছে। তবে এটিও নিশ্চিত যে, উল্লিখি হাদিসটির দ্বারা হতভাগ্যতার যে চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে তাও কিন্তু একটি বাস্তবিক হতভাগ্যতা।
আমার সম্মানি ভাই! তুমি মনে করতে পার, “হে গো কামই অইল আজাইরা কিস্সা টিস্সা কওন, অহন কোরআন-হাদিস থাকতে মোল্লা গো এইডা সেইডা খামোকা হুনুম ক্যয়।
প্রিয় বৎষ! এই যদি হয় তোমার উক্তি, তা হলে কিন্তু তুমি নিজেকে একটি গোলক ধাঁধায় ফেলে দিলে। তোমাকে যদি এখন একটি প্রশ্ন করি। এটি তো নিশ্চিত যে, তোমার যেমন দু’টো চোখ আছে আর সেই ছোট্টটি বাচ্চার চোখও দু’টোই। তা সত্ত্বেও তুমি যতটুক দূরে দেখতে পার, সে বাচ্চাটিও কি তোমার মত দূরের অনেক কিছু দেখতে পারে? পারে না। কারণ বাচ্চাচোখ যতটুক দেখার ক্ষমতা রাখে ততটুকুই সে দেখতে পারে, এর চেয়ে বেশি নয়। তা হলে বলো! তোমার প্রিয়নাবীর সত্যিকার সুযোগ্য উত্তরসূরী (কারণ আমি অযোগ্য কাউকে বুঝাচ্ছি না) উলামাগণের চোখের দৃষ্টিশক্তি সবচেয়ে প্রখর হবে না, না কোনো সাধারণ ব্যক্তি বিশেষের? যিনি দ্বীন ও শরীয়াতের বিজ্ঞ কোনো আলিম নন। কিংবা এমন লোক যার ব্যাপারে এটিই বলা যায় যে, আরে ভাই সে একটা কাট্টামূর্খ/মূর্খের জন্ম মূর্খ/হেতের বাপ দাদা চৌদ্দশিড়ি সবাই মূর্খ। এখন বলো এসব বাক্যের সবকটি যাদের বেলায় ব্যবহার করা দোষণীয় নয়, তার দৃষ্টিশক্তি আর তোমার নাবী তাঁর অবর্তমানে দ্বীনের দায়-দায়িত্ব যে সকল সুযোগ্য উত্তরসূরী উলামাদের হাতে দিয়ে গেছেন তাদের দৃষ্টিশক্তি কি সমান? (মনে রেখ! তোমার বিবেক বুদ্ধি সম্পর্কে একদিন তোমাকে জিজ্ঞাসীত হতে হবে) প্রতিউত্তরে এটিই বলবে ‘না, উলামাদের দৃষ্টিশক্তি তাদের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশী প্রখর। পক্ষান্তরে সে ব্যক্তির অবস্থাকে শূন্যতার সবটুক দিয়েও যদি ব্যক্ত করা হয় তবোও এর যথার্থতা আদায় হবে না। তারপরও যদি তিনি ভাবেন ‘না, তিনিও অনেক কিছু জানেন, তা হলে তো তার সে অবস্থাকে ফুঁলানো ফাঁফানো সে পিঠারই অনুরূপ ধরা যেতে পারে, যে পিঠার ভেতরাংশ একদম কাঁচা।
আমার সম্মানিত ভাই! আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে, তোমার প্রিয় নাবী হতে বর্ণিত হাদিসটি সবধরণের হতভাগ্যতাকেই অন্তর্ভূক্ত করে। যেহেতো তাই সে জন্য বলতে পারি, বর্তমান সময়ে তোমার নাবীর প্রকৃত উত্তরসূরী উলামাগণ সার্বিক ভাবে দুর্দশা ও হতভাগ্যতার শিখার। এখনে এরি একটি দিক তোমার সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করবো। (ইনশা আল্লাহ)
আমার সম্মানিত ভাই! বেশী দূর না তুমি যদি তোমার আশে পাশেই একটু লক্ষ কর। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে নিজের দিকেই একটু দৃষ্টি দিতে পার। তখন দেখবে আজ অনেক মুসলিম ভাইয়েরা নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবি করলেও তারা আজ ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর জ্ঞানার্জনের জন্যও প্রস্তুত নন। (মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট্র রাষ্ট্র প্রধানদেরকে আর কিইবা বলব। তারা তো কোনো ধর্মেরই অনুসারী নয়। যা তাদের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতা নামে পরিচিত। আসলে কি জানো? তারা সে ধর্মেরই উম্মত। তাদের কাছে ইসলাম নামক ধর্মটি অচ্ছিক। মানলে মানা যায়। না মানলেও কোনো মাথা ব্যথা নাই। ইসলাম ছেড়ে দিলেও কোনো কিছু করার নাই। কিন্তু সে নিরেপেক্ষ ধর্মটি পালন অবশ্যকীয়। সে নিরপেক্ষ ধর্মটি প্রতিষ্ঠা করা ফরজ। সে নিরপেক্ষ ধর্মের বিরুদ্ধাচারণ কুফুরি। যে ধর্ম নিজ থেকে না মানলেই ধর্ম পরিত্যাগের সর্বোচ্চ শাস্তি মূত্যুদন্ড কিংবা কারাভোগ। আন্তরিকতায় কিছুটা এদিক সেদিক হলেও শাস্তি হতে পারে বিভিন্ন মেয়াদে। আমি ওসব পাপিষ্ট মুরতাদদেরকে বলতে চাই, আমরা যে ইসলাম ধর্মের কথা বলি। যে ধর্মপ্রতিষ্ঠা আমাদের প্রিয়নেতা মুহাম্মাদুর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম এর আদর্শ বলে বিশ্বাস করি। দেখাও ইসিহাসের কোনো একটি পাতা খুলে। ইসলাম কি কোনো ভিন্ন মতালম্ভীকে বলপ্রয়োগ করে ইসলামের অনুসরণে বাধ্য করেছে কিনা? ওহে তাগুত বেইমানের দল! পারবে না। এখন তা হলে তুদের কাছে ইসলাম ধর্মের অনুসারী জনৈক মুমিনের প্রশ্ন হলো, তুরা কেন আমাদেরকে তুদের নিরপেক্ষ ধর্ম মানতে বাধ্য করিস? না মানলে ভিন্ন মতালম্ভী মুসলিমকে ফাঁসিতে জোলিয়ে কার্যত তুদের প্রভূ ইউরোপ-আমেরিকার মনতুষ্টির আশা করিস? ওহে বেইমানের দল! তুদের মুখে বিভিন্ন স্বাধীনতার বুলি মানায় না রে!! জানি তুরা স্বাধীনতা বলতে তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের বিশ্বাস, ‘তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের প্রচার-প্রশার, তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের সব সুযোগ-সুবিদাকেই তুরা বুঝিয়ে থাকিস।
হে আল্লাহ! দ্রুত তোমার দ্বীনের ঐ সেনাদলকে তুমি নিয়ে আস! যাদের হাত দ্বারা তুমি এসব পাপিষ্ট মুরতাদদেরকে শাস্তি প্রদান করবে বলে আমাদের কে ওয়াদা দিয়েছ। নিশ্চই আপনার ওয়াদা সত্য। (আমিন! আমিন!!)
অতচ ইসলামে মৌলিক বিষয়ের জ্ঞানার্জন শুধু বিশেষ কোনো গোত্র বা গোষ্ঠীর দায়-দায়িত্ব নয়। বরং এ দায়িত্ব পুরো উম্মাহর কাঁধেই অর্পিত। কিন্তু কত পার্সেন মুসলিম আজ এ নৈতিক দায়িত্বে রত। কিংবা এ জন্যে নিজ পরিসরে স্বচেষ্ট? উল্লেখ যোগ্য কোনো পার্সেনই নয়। তারপরও নিজ উদ্যোগে উৎসাহিত কোনো একটি শ্রেণী যখন নিজ কর্তব্য পালনার্থে, দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতার চূড়ান্ত সীমায় উপনীত মুসলিম জাতির ধর্মীয় প্রয়োজনটুকু সুচারূভাবে পরিচলনার তাগাদায় নিজেদেরকে ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করে। তখন আমরা তাদেরকে সেই মহৎকাজটির জন্যে নৈতিক সমর্থনটুকোও দিতে কিপ্টেমি করি। কার্পন্য করি। মনে রেখ, এ তো তোমার নৈতিকতারই অংশ। কারণ দুনিয়ার সকল ভালো কাজগুলোর বেলায় তোমার ইতিবাচক সমর্থনটিই হলো তোমার নৈতিকতা। তোমার মানবীয় মূল্যবোধের দাবী। কিন্তু কার্পন্য কেন? তখন তো তুমি তোমার নৈতিক সমর্থনের নীতিতেই দায়বদ্ধ। যা কিনা নড়বড়ে হলেও ইমানের সর্বনিন্ম খুটি। পক্ষান্তরে কোনো একটি অনৈতিক কাজ। সামাজিক ভাবে তা যতক্ষুদ্রই হোক না কেন? সেখানে তোমার সমর্থন সর্বাগ্রে বিদ্যুৎবেগে। সে অন্যায় কাজটির জন্য তোমাদের সাহায্য সহমর্মিতা সর্বোচ্চ আঙ্গিকে। যাক আমার যা কিছু বলার তা যদি না তোমাতে নৈতিকতা ও মানবীয় মূল্যবোধ না মরে জিন্দাহ থাকে তখনই। তবেই তোমার কাছে আমার এ প্রত্যাশা।
শোনো মৃত হৃদয় কি কোনো কিছু শুনতে পায়? কোনো কিছুর ব্যাপারে নৈতিক সমর্থন কি তার থেকে আশা করা যায়? এ দাবী পাগলের পলাপ মাত্র। কেউ করবে না এমন দাবী। এ জন্যই তো আজ দেখবে! যখন কাউকে কোনো একজন আলিম দ্বীনের গুরূত্বপূর্ণ কোনো একটি হাদিস বা সাহাবাদের ‘আছার (হাদিস শাস্রে আছার বলা হয় সাহাবাদের জীবনের শিক্ষণীয় কোন দিক বা বিষয়কে। এটিও শরিয়ার দলিল) তার সামনে তুলে ধরেন। তখন সে হুট করেই বলে উঠে ‘না, এগুলো তো সহিহ হাদিস নয়। অতচ এ শ্রেণীটির বিরাট একটি অংশই তোতা পাখির ন্যায় নির্দিষ্ট কিছু বুলি আওড়াই। তখন আলিম সাহেব বেচেইন হয়ে যান। কষ্টে হয়তো তার হৃদয়টি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। আচ্ছা বলো তো, কান্ডটি যদি তোমার সাথে হতো তখন তোমার কেমন করত? সত্য বিশ্বাস কর তখনও কিন্তু বিষয়টি এমনই। তাছাড়া মাওলানা সাহেবের হৃদয়টি যদি ধৈর্য্যরে প্রাচীরে শক্ত ভাবে পরিবেষ্ঠীত না হত। তবে হয়তো তুমি নিজ কানেই শুনতে পেতে কীভাবে যে তাঁর হৃদয়টি ভেঙে ক্ষাণ ক্ষাণ হয়েছিল। কেমন হৃদয়গাহী চিৎকারই না তখন সে হৃদয় দিয়ে ছিল।
হে প্রিয় বন্ধু! এ প্রবন্ধের শুরু থেকে এতক্ষণ যা কিছু বলা হল (ধর্মীয় জ্ঞান যে আজ তোমায় শূন্যের কুটায়) তারই অষ্টোপাস দিয়ে যদি মাপা হয়, তবে তুমি নিজেই বলবে। ভাই! এ ব্যাপারে আমি তেমন কিছুই জানি না। আসলে তুমি তোমার ছেলে বেলায় “খেলি খাই” অনীতির উপর আমল করেছ। দ্বীন শিখার কোনো গুরূত্বই তখন দাওনি। দিতে পারনি। মাতা-পিতার খুব আদরের সন্তানই হয়ত ছিলে। সকালে গ্রামের মক্তবটি যখন কিছুটা অনাদরী ছেলে-মেয়েদের দোমদাম কোরআন পড়ায় গুমগুম করত তখন মা তোমায় কোট-ট্রাই পরিয়ে, সাজিয়ে-গুছিয়ে বাপরে বাপ! দিয়ে আসতো কিন্টারগার্ডেনে। আশার অন্ত নাই। ছেলে নাকি মোর কি জানি কি হয়ে যায়। যাক তখন তো আর তোমার কোন বোধ-সোধ ছিল না। কিন্তু আবেগী মায়ের ভুল সিদ্ধান্তে আজ সাফাই গেয়ো না। ভুল কে ভুলই বলতে হবে। সত্যকেই বুকে লালন করতে হবে। যদিও তা কষ্টদায়ক। কিন্তু সে সব অনাদরীদের অনেকেই আজ আদরী। সমাজে। মানুষের অন্তরে। জানো! কেন? তারা ঐ যে তখন কুরআনকে খানিকটা মূল্যায়ন করেছিল। কোরআন দিয়েই শিক্ষাজীবন শুরু করেছিল। যাক, খানিকটা অনাদরীদের অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু তুমি অতিআদরীর ভাগ্যে কিছুই জুটেনি। ধর্মীয় খুটিনাটিক বিষয়ের জ্ঞানটুকুও আত্ত্বস্থ করতে পারনি।
তাছাড়াও কেউ যদি ধর্মীয় কোনো একটি বিষয়ে মুখস্থ কিছু কথা অনর্গল বলতে পারে। তাহলেও বলা হবে এ জন্যে তিনি কোনো ধর্মীয় কোনো মহাপন্ডিত বনে যাননি। কারণ তিনি যা অনর্গল বলছেন সেটুকুর পুরোটাই শুধু শুনে শুনে। আর এটি শতসিদ্ধ কথা যে ‘শুনে শুনে’ যদিও কিছু বিষয়ের অভগতি লাভ করা যায় কিন্তু ‘শুনে শুনে’ কোনো বিষয়ের জ্ঞানার্জন করা যায় না। জ্ঞানী হওয়া যায় না। কারণ জ্ঞানার্জন তখনই হয় যখন এ জন্য হাত ও কলম ব্যবহৃত হয়। যা কখনো ফুঁলানো ফাঁপানো হয় না। যার ভেতরাংশ একটুও কাঁচা রয় না।
হে প্রিয় বন্ধু! আমি এ যাবৎ তোমাকে যা কিছু বললাম। এর অর্থ কিন্তু কবোও এটি নয় যে, তুমি ধর্মীয়জ্ঞান অর্জন করনি বলে যখন যা কিছু ধর্মের নামে পাবে সবই নিজ বাহনে তুলে নিবে। ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। যাকে অন্ধবিশ্বাস নাকি বলা হয়। বরং তোমার কাজ হলো দ্বীন সম্পর্কে জানতে দ্বীনের উপর আমল করতে যথা সম্ভব তুমি নিজ সীমারেখাটির প্রতি লক্ষ রাখবে। নিজ সীমারেখার ভেতরই নিজেকে বেধে রাখবে। এখন একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি তোমাকে বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করব। আশা করি বিষয়টি তুমি বুঝতে চেষ্টা করবে। দেখ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য অনেক হাদিস বলে গিয়েছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো তুমি একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসাবে কি করবে? তুমি কি হাদিস সম্পর্কে পাজ্ঞ-বিজ্ঞ উলামাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত সহিস হাদিসগুলোর উপর আমল করবে? ‘না, নতুন করে কোনো এক বা একাধিক হাদিসমূহেকে সহিহ-জয়িফ প্রমাণিত করতে নিজেকে ব্যবহার করবে? তোমার থেকে যদি দ্বিতীয় কাজটি কোনো ভাবে প্রকাশ পায় কিংবা নিজেকে যদি তুমি দ্বিতীয় কাজের জন্যেই খুব যোগ্য মনে কর। তখন মনে করবে তুমি কিন্তু আর তোমার সেই সীমারেখাটি ধরে রাখতে পারনি। নিজ সীমারেখা ঠিক রাখতে পারনি। যা ছিল তোমার প্রধানত দায়িত্ব ও কর্তব্যে। যা অতিক্রম করাই কিনা তোমার মস্তোবড় পদস্খলন। কারণ তোমার কাজ তো ছিল এটিই যে, তুমি হাদিস জাছাই-বাছায়ে পারদর্শি বিজ্ঞ উলামাদের অনুসরণ করবে। ফুকাহা-মুহাদ্দিসগণদের নিকট স্বীকৃত সহিহ হাদিসগুলোর উপর আমল করবে। তাঁদের গবেষণায় যেগুলো আগ হতেই সহিহ হওয়ার স্বীকৃতি লাভ করে আসছে। তা নয় যে, হাদিস বিষয়ে গবেষণার কাজটি তো দেখা যাই এখনও কোনো মনুষী শুরু করেন নি। তো এখন এ গুরুভার দায়িত্বটি আমারই আঞ্জাম দেওয়া দরকার। আর তখন থেকেই হাদিস সহিহ-জয়িফ প্রমাণিত করার কাজটি খুব গুরুত্বের সাথেই আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছ। অতচ তোমার অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এখনও হয়তো ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কোনো একটি হাদিসের উপর আমল শুরু করনি। যাক তবোও যেহেতো সহিহ-জয়িফের কাজটি করে যাচ্ছ। এখন দেখা গেল কি তুমি এ বিষয়ে পারদর্শি পাজ্ঞ বিজ্ঞ আলিমকেও অকপটে বলে ফেল, আপনার হাদিসটি সহিহ নয়। যা দেখে মনে হয়, জয়িফ হাদিসসমূহ থেকে যাচাই বাছাই করে সহিহ হাদিসের উপর আলম করা মূলত তোমার উদ্দেশ্য নয়। বরং কেমন যেন হাদিস যাচাই সক্ষম নতুন কোনো ইমাম বনে গেছ! নিজ দল ও মতের বিরুদ্ধে গেলেই হলো, ‘আপনারটি হাদিসই না, ‘ওমোকের’ ‘তমোকের’ উক্তি মাত্র’ কিংবা সহিহ নয়। “দেখুন! ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: রচিত “সিলসিলাতু আহাদিসিস সাহিহাহ” লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ।
যাক তোমাকে এখানে তেমন কিছু বলতে আমি আর ইচ্ছুক নয়। শুধু একটি কথায়, গেও-গ্রামে বহুল প্রচলিত সে প্রবাদটি কি তুমি শুননি? “ভুত তাড়ানোর জন্যেই যেই সরিষা, তাতেই যদি থাকে ভুতের বাসা? হাদিস জাছায়ের মূলনীতি কি তুমি জানো? শোনো মুমিন বলে তোমাকে সম্মানের সাথেই সামনের কথাটি বলছি। খাটু করার উদ্দেশ্যে নয়। কবোও নয়। বরং তোমাকে আমি ভালোবাসি। সত্য হৃদয় থেকেই। মুমিন বলেই। আল্লাহর জন্যই। ভুল-ভ্রান্তির ভেড়াজাল থেকে মুক্ত করতেই। তোমাকে লজ্জ্বা দেওয়া। জনসম্মুখে বিদগুটে বিশ্রী ভাবে উপস্থাপন করা কিংবা কোনো অশ্লীল ভাষায় গালি দেওয়া কোনোটিই কিন্তু আমার জন্য উচিত নয়। হ্যাঁ, আমার বেলায় তোমারও। যেহেতু আমরা সবাই মুমিন। আমাদের সকলের পরিচয় একটিই। আমরা মুসলিম। আমরা সবাই ভাই ভাই। তাওহিদের তরে হাতে হাত রেখে সত্যের জয়গানই মোরা গায়। তবে এবার “সামনের কথাটি” শোন! হাদিস যাচাই-বাচাইয়ে কোনো একজন মনুষীর অবস্থান যদি চূড়ান্ত সীমায়ও পৌছে যায়। তবোও সে মনষীর গবেষণাকে অপরাপর সকল গবেষকদের গবেষণার উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। তখনও বরং সে গবেষকের গবেষণাকে তার পূর্ববর্তী ও সমকালীন অন্যান্য গবেষকদের সিদ্ধান্তের সাথে মিলিয়ে দেখতে হয় যদিও সে গবেষকের গবেষণা সঠিক। তারপর কোনো একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়।
এখন আসো! ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: এর বিষয়টি নিয়ে তোমার সাথে একটু আলোচনা করি। তাঁর ব্যাপারে প্রথম ও প্রধানত আমি যে বিষয়টি বলব, তা হলো তিনি অত্যন্ত বিদজ্ঞ একজন আলিম ছিলেন। যার জীবনের পুরো সময়টুকুই তিনি হাদিসের খেদমতে কাটিয়েছেন। হাদিসের সহিহ জয়িফ যাচাই-বাচাই করেছেন। মাশাল্লাহ অনেক হাদিসকেই তিনি সহিহ বলেছেন। অর্থাৎ তাঁর গবেষণা লব্ধ সহিহ হাদিসগুলোর সবগুলোই সহিহ। কিংবা সহিহর স্বীকৃতি প্রাপ্ত। তা সত্ত্বেও অনেক সহিহ হাদিসের ব্যাপারে তাঁর একক সিদ্ধান্তু হলো সেগুলো জয়িফ। তাঁর সে একক সিদ্ধান্তের আওতায় একাধিক সহিহ হাদিসও পড়ে যায়। যেগুলো যোগ যোগ ধরে অপরাপর একাধিক হাদিস বিশারদের সিদ্ধান্তে সহিহ হাদিসেরই অন্তর্ভূক্ত। যেগুলোর কোনোটি তো এমন হাদিস যার ব্যাপারে পূর্ববর্তী ও তাঁর সমকালীন হাদিস বিশারদদেরও কোনো দ্বিমত নেই। তাঁর এ সব গবেষণাগত বিচ্যুতির উপর তাঁর সমকালীন বহু উলামাগণ কলম ধরেছেন। তাঁর গবেষণাগত ভুল-বিচ্যুতির উপর তারা স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছেন। এখন যদি তুমি তোমার হাদিস যাচাই-বাচাই পর্বে শুধু ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: কেই শুধু অনুসরণ কর। যা কিনা বাস্তবতার আলোকে “ভুত তাড়ানোর জন্যই যেই সরিষা, তাতেই কিনা ভুতের বাসা” নামক সেই গল্প।
আমার সম্মানিত ভাই! এমনটি করবেন না। হাদিস সহিহ-সাকিম করার কাজ কিছুতেই আপনার সীমারেখায় পরে না। কোন হাদিসটি সহিস কোন হাদিসটি জয়িফ তা কিন্তু আপনার কাজ নয়। তা করবেন হাদিস বিষয়ে বিজ্ঞ উলামাগণ। শুধু শুধুই আলোচনা দীর্ঘ করার প্রয়োজন নেই। তোমার প্রতি আন্তরিকতার ধরুন খুব বিনয়ের সাথে বলছি। শত কষ্ট হলেও লিখছি। কোন একটি হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করা, কিংবা কোনটিকে জয়িফ প্রমাণিত করা কিছুতেই তোমার কাজ না। হ্যাঁ বিশুদ্ধ গ্রহনযোগ্য মূলনীতি সমর্থিত সহিহ হাদিসগুলোর উপর আমল করার পূর্বে দু’ঠুটের মাঝে রেখে শুধু সহিহ সহিহ বলে আওড়াতে পারবেন। (ক্ষেত্র বিশেষ তা প্রশংসারও যোগ্য) কিংবা আপনার আমলে যাতে টেস্ট্রি আসে সে জন্য সহিহ সহিহ জপতে পারবেন। কাউর সাথে তর্কে-বিতর্কে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য নয়। শোনো! হাদিস বিষয়ে সুযোগ্য আলিম যখন আলোচনা করবেন তখন তার আলোচ্য হাদিসটি সহিহ কি সহিহ নয়। তাঁকে তোমার সে বিষয়ের জ্ঞান দিতে হবে না। এছাড়া তিনি যদি হাদিস বলতে পারেন, হাদিসের উপর আমল করতে পারেন, অধিকন্ত তখন এটিই স্বাভাবিক যে, আলোচ্য হাদিসটি সহিহ কি সহিহ নয়, আমলযোগ্য কি আমলযোগ্য নয়, তা তোমার থেকে তিনিই ভালো জানবেন। এ কথাটি তখনও এভাবেই বলা যাবে, যদি না আপনি বোখারী শরীফের কোনো একটি হাদিস নিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশীই লাফালাফি করবেন। খোদ ইমাম বোখারিই যা পছন্দ করেননি।
আমার সম্মানিত ভাই! হাদিসের আলোকে বর্তমান সময়ের ব্যাপারে বলা চলে, এটি কিয়ামতের একেবারেই পূর্ব মূহুর্ত। যে সময়ে ফিৎনার কোনো শেষ নেই। ঈমানের উপর বয়ে চলা ঝড়-ঝাপটার কোনো অন্ত নেই। ইমান ও কুফুরের সীমারেখা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। ইসলামের প্রাতৃকি ও নির্দেশনাবলীর কোনো সংরক্ষণ নেই। আল্লাহ, আল্লাহ রাসূলের ইজ্জত সম্মান রক্ষা করার কোনো গরজ নেই। মুমিনের রক্তের কোনো মূল্য নেই। সর্বাগ্রাসী কুফুরি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবার কোনো প্রস্তুতি নেই। যতসব আলতু পালতু কর্মকান্ড নিয়ে আমরা ব্যস্ত। মনে মনে ভাবছি পরকালের হিসাব-নিকাসের কাঁঠগড়া আমাদের জন্যে নয়। সেখানে তো শুধু মূসা নাবীর উম্মত বনী ইসরায়েলকেই দাঁড়াতে হবে। আর আমরা সেদিন মঞ্চে ঘুরে ঘুরে শুধু উকালতি করব। মনে রেখ! বাহাত্তর দলে বিভক্ত জাতিকে যদি হিসাব-নিকাসের জন্য আল্লাহর কাঁঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। তবে তেহাত্তর দলে বিভক্ত জাতির কি দশা! (আফসোস কাকে কি বলব!!)
এখন আমাদের জন্য উচিত কিয়ামতের পূর্বেকার সময়ের ব্যাপারে সহিহ হাদিসে যা যা বলা হয়েছে সেগুলোর উপর আমল করা। হাদিসে তো এটিই বলা হয়েছে যে, ফিৎনার সময়ে আপনি যদি বসা থাকেন, তাহলে যেন সেভাবেই বসে থাকেন। অতিরিক্ত উঠা বসা হাটা চলার কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ফিৎনার সময়ে দ্বীনের সাধারণ বিষয়সমূহ যেমন: ‘আমিন জোড়ে বলবে না আস্তে’ ‘রফয়েইদাইন করতে হবে কি হবে না’ ‘ঈদ এক দিনেই করতে হবে কিনা’ ওসব নিয়ে এত বেশি বাড়াবাড়ি না করা। কিন্তু এগুলোকেই আমরা আজ এত বেশি আলোচনার বিষয়ে পরিণত করেছি যে, যদ্দরুন ইমান ও কুফুরের সীমারেখা নিয়ে আলোচনার পর্বটি আমাদের মাথা ছাড়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্রি প্রর্যায় কুফুর শিরক প্রবেশ করে প্রতিনিয়তই আমাদের ঈমানকে খুয়ে খুয়ে খাচ্ছে। কিন্তু তারপরও হাতের তালুতে ধারণ করা জলজ্বলে উজ্জ্বল হিরে টুকরোর ন্যায় বাস্তবতাকেও আমরা অস্বীকার করছি। আমরা জানি যে, রাষ্ট্রিয় প্রর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত ছোট বড় কুফুর শিরকের ভয়বহতা ব্যক্তি পর্যায় আশ্রয় নেয়া কুফুর-শিরকের ভয়াবহার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি ক্ষতিকারক। একটি সমাজ যখন কুফুরের পথে পা বাড়ায়। এর কু-প্রভাব প্রতিটি ব্যক্তিকেই ছুঁয়ে যায়। তাই তো কোনো ইসালামী সমাজ দারুল হরব (শত্র কবলিত) হওয়া না হওয়ার মাপকাটি একক ব্যক্তির কোনো কুফুরি কর্মকাণ্ডের উপর ন্যস্ত নয়। বরং ব্যক্তি প্রর্যায়ে সকল ব্যক্তিই যদি খুব খোদাভিরু আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যায় তা সত্ত্বেও যদি সে সমাজে রাষ্ট্রিয়ভাবে কোনো একটি কুফুরি বিধানও প্রতিষ্ঠিত থাকে, তাহলে সে রাষ্ট্র আর ইসলামি রাষ্ট্র হিসাবে বলবৎ থাকে না। বরং তা দারুল হরব বা কুফুরি রাষ্ট্র বলেই ধর্তব্য। যে রাষ্ট্রের রিরুদ্ধাচারণ না করে চুপ করে বসে থাকা, কুফুরের প্রতি চুপ থাকার নীতিতে সন্তুষ্টিুরই নামান্তর। (প্রিয় ভাই! আল্লাহ তোমাকে বিষয়টি বুঝার তাওফিক দান করুন!) তাছাড়াও দ্বীনের এসব মতবিরুদ্ধ বিষয়গুলোকে নিয়ে আমাদের বাড়াবাড়ির ধরুন মুসলিম উম্মার মধ্যে না জানি কোনো বিভক্তির ফিৎনা ছড়িয়ে পড়ে!! সাবধান হোন! সাবধান হোন!! নিজেকে নিজের ধর্মীয় সীমারেখার ভিতরেরই বেধে রাখুন! আর আপনি এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন, দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ হওয়ায় আল্লাহ হয়তো আপনার আমলের অনেক ভুল বিচ্যুতিসমূহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কিন্তু আপনার থেকে কোনো ফিৎনা যদি মুসলিম উম্মাহয় ছড়ায় তাহলে অবিশ্যই আপনি ধরা খাবেন। পাকড়াও হবেন। ইসলামের এই ক্লান্তিকালে বরং আপনি একটি কাজ করতে পারেন। কোরআন আপনাকে যে পাথেয় গ্রহণ করতে বলে তা ধারণ করুন। দ্বীন সম্পর্কে বিজ্ঞ একাধিক আলিমের কাছে জিজ্ঞাসা করে করে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করুন। আপনার নাবীর সুযোগ্য উত্তরসূরি উলামাদের অনুসরণ করুন। কারণ আপনার নাবী আপনাকে তাই করতে বলে গিয়েছেন। হাদিস দ্বারা চিন্হিত উলামায়ে ‘ছু, (ইমান বিক্রিকারী আলিম) থেকে যথা সম্ভব নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান গ্রহন করুন। তাছাড়া উলামায়ে দরবারিদের (প্রশাসনের সাথে মিলজোল রেখে চলে এমন আলিম) কাছ থেকে এখনই পলায়ন করুন!
হে আমার প্রিয় বন্ধু! এটিই তোমার প্রতি আমার ওছিয়ত-নছিয়ত। হৃদয়ের এলবামে গেঁথে রেখো। শোনো! বর্তমান সময়ের শত প্রতিকূলতা এমনিই আমাদেরকে হতবাগ্য বানিয়ে দিয়েছে। আমাদের চার হাত পায়েই শৃকল পরিয়ে দিয়েছে। এ দুনিয়ার স্বচ্ছ হাওয়া আমাদের জন্যে দুর্বিষহ করে দিয়েছে। যদ্দোরুন এটিই মনে হয়। আলিম হলেও হয়তো পরকালে ছাড়া পাব না। প্রিয় নাবীর শাফায়াত হয়তো ভাগে পাব না। তবে আশা তো অংশ ঈমানেরই। তাই শুধু বুক ভরা আশা রাখি। দেখেন ভাই! আমাদের দায়িত্ববোধই আজ আমাদের উপর চড়াও হয়ে আছে। বার বার আমাদেরকে ব্যর্থ বলে দিক্কার দিচ্ছে। তুমি কিন্তু আবার আমাদের উপর চড়তে যেয়ো না। দ্বীনের নামে ভুল ভুল কথাগুলো বলতে যেয়ো না। এমনিই আমরা আজ হতবাগা। সবকিছু হারিয়ে একেবারে সহায় সম্ভল হারা। (আফসোস!) দ্বীনের তরে এখনো কেন মোরা, হয়নি সবটুকু সহায় সম্ভল হারা? অতচ দ্বীন যায়, আর নাহি রয় দিশেহারা!
হাদীস:
عن أبي سعيد الخدري قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "أشقى الأشقياء من اجتمع عليه فقر الدنيا وعذاب الآخرة"رواه الطبراني في الأوسط بإسنادين في أحدهما خالد بن يزيد بن عبد الرحمن بن أبي مالك وقد وثقه أبو زرعة وضعفه الجمهور، وبقية رجاله ثقات، وفي الأخرى أحمد بن طاهر بن حرملة وهو كذاب. وقال الحاكم: صحيح الإسناد، ووافقه الذهبى
দুনিয়ায় বিচরণশীল মানুষদের মধ্যে সব চেয়ে হতভাগ্য ব্যক্তি সেই, যার ভাগ্যে দুনিয়ার দারিদ্রতা ও পরকালের শাস্তি সমন্নিত হয়েছে। উক্ত হাদীসটি যা পরিস্কার বুঝাচ্ছে তা হলো, যে ব্যক্তি দরিদ্র হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর পর আযাবেরও উপযুক্ত সে অত্যন্ত হতভাগ্য। প্রিয়বন্ধু! যদি লক্ষ কর তা হলে বুঝতে পারবে হাদীসটিতে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণীর আলোচনা করা হয়েছে। যারা দুনিয়াতে দারিদ্রতার ধরুন কখনো সুখ দেখেনি। আবার মৃত্যু পর কোনভাবে আযাব থেকেও রেহায় পায়নি। বস্তুত এমন ব্যক্তিকে হতভাগ্য ব্যক্তি বলা ছাড়া উপায় নেই। এমন কী তখন সে ব্যক্তিকে হতভাগ্য বলা ছাড়া আর কিছুই তুমি বলতে পার না। বুঝতেই পারলে সে ব্যক্তির হতভাগ্য হওয়ার মূল কারণ কিন্তু এটিই যে, না সে দুনিয়াকে ইঞ্জয় করতে পারল। না নিজেকে পরকালের শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারল। হাদীসে উল্লিখি নির্মম এ অবস্থাটি সত্যি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। তাছাড়া হাদিসটি তোমার কাছে নির্যাতিত নিপীড়িত ও দুর্দশাগ্রস্থ শ্রেণীসমূহের একটি সাধারণ ডোকোমেন্ট তুলে ধরছে। তাই এখন যদি তুমি হাদীসটির গভীরে একটু দৃষ্টি দাও, তাহলে উক্ত শ্রেণীর অনুরূপ আরো অনেক হতভাগ্য নিপীড়িত দুর্দশাগ্রস্থ শ্রেণীসমূহের দৃশ্য তুমি দেখতে পাবে। কারণ বাক্য দ্বারা যে বাস্তবতা বুঝানো হয় সেটিই মূলত মূখ্য বিষয়। এখানে হাদীসের বাক্য দ্বারা হতভাগ্য নামক বাস্তবতাকেই বুঝানো হয়েছে। তবে এটিও নিশ্চিত যে, উল্লিখি হাদিসটির দ্বারা হতভাগ্যতার যে চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে তাও কিন্তু একটি বাস্তবিক হতভাগ্যতা।
আমার সম্মানি ভাই! তুমি মনে করতে পার, “হে গো কামই অইল আজাইরা কিস্সা টিস্সা কওন, অহন কোরআন-হাদিস থাকতে মোল্লা গো এইডা সেইডা খামোকা হুনুম ক্যয়।
প্রিয় বৎষ! এই যদি হয় তোমার উক্তি, তা হলে কিন্তু তুমি নিজেকে একটি গোলক ধাঁধায় ফেলে দিলে। তোমাকে যদি এখন একটি প্রশ্ন করি। এটি তো নিশ্চিত যে, তোমার যেমন দু’টো চোখ আছে আর সেই ছোট্টটি বাচ্চার চোখও দু’টোই। তা সত্ত্বেও তুমি যতটুক দূরে দেখতে পার, সে বাচ্চাটিও কি তোমার মত দূরের অনেক কিছু দেখতে পারে? পারে না। কারণ বাচ্চাচোখ যতটুক দেখার ক্ষমতা রাখে ততটুকুই সে দেখতে পারে, এর চেয়ে বেশি নয়। তা হলে বলো! তোমার প্রিয়নাবীর সত্যিকার সুযোগ্য উত্তরসূরী (কারণ আমি অযোগ্য কাউকে বুঝাচ্ছি না) উলামাগণের চোখের দৃষ্টিশক্তি সবচেয়ে প্রখর হবে না, না কোনো সাধারণ ব্যক্তি বিশেষের? যিনি দ্বীন ও শরীয়াতের বিজ্ঞ কোনো আলিম নন। কিংবা এমন লোক যার ব্যাপারে এটিই বলা যায় যে, আরে ভাই সে একটা কাট্টামূর্খ/মূর্খের জন্ম মূর্খ/হেতের বাপ দাদা চৌদ্দশিড়ি সবাই মূর্খ। এখন বলো এসব বাক্যের সবকটি যাদের বেলায় ব্যবহার করা দোষণীয় নয়, তার দৃষ্টিশক্তি আর তোমার নাবী তাঁর অবর্তমানে দ্বীনের দায়-দায়িত্ব যে সকল সুযোগ্য উত্তরসূরী উলামাদের হাতে দিয়ে গেছেন তাদের দৃষ্টিশক্তি কি সমান? (মনে রেখ! তোমার বিবেক বুদ্ধি সম্পর্কে একদিন তোমাকে জিজ্ঞাসীত হতে হবে) প্রতিউত্তরে এটিই বলবে ‘না, উলামাদের দৃষ্টিশক্তি তাদের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশী প্রখর। পক্ষান্তরে সে ব্যক্তির অবস্থাকে শূন্যতার সবটুক দিয়েও যদি ব্যক্ত করা হয় তবোও এর যথার্থতা আদায় হবে না। তারপরও যদি তিনি ভাবেন ‘না, তিনিও অনেক কিছু জানেন, তা হলে তো তার সে অবস্থাকে ফুঁলানো ফাঁফানো সে পিঠারই অনুরূপ ধরা যেতে পারে, যে পিঠার ভেতরাংশ একদম কাঁচা।
আমার সম্মানিত ভাই! আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে, তোমার প্রিয় নাবী হতে বর্ণিত হাদিসটি সবধরণের হতভাগ্যতাকেই অন্তর্ভূক্ত করে। যেহেতো তাই সে জন্য বলতে পারি, বর্তমান সময়ে তোমার নাবীর প্রকৃত উত্তরসূরী উলামাগণ সার্বিক ভাবে দুর্দশা ও হতভাগ্যতার শিখার। এখনে এরি একটি দিক তোমার সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করবো। (ইনশা আল্লাহ)
আমার সম্মানিত ভাই! বেশী দূর না তুমি যদি তোমার আশে পাশেই একটু লক্ষ কর। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে নিজের দিকেই একটু দৃষ্টি দিতে পার। তখন দেখবে আজ অনেক মুসলিম ভাইয়েরা নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবি করলেও তারা আজ ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর জ্ঞানার্জনের জন্যও প্রস্তুত নন। (মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট্র রাষ্ট্র প্রধানদেরকে আর কিইবা বলব। তারা তো কোনো ধর্মেরই অনুসারী নয়। যা তাদের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতা নামে পরিচিত। আসলে কি জানো? তারা সে ধর্মেরই উম্মত। তাদের কাছে ইসলাম নামক ধর্মটি অচ্ছিক। মানলে মানা যায়। না মানলেও কোনো মাথা ব্যথা নাই। ইসলাম ছেড়ে দিলেও কোনো কিছু করার নাই। কিন্তু সে নিরেপেক্ষ ধর্মটি পালন অবশ্যকীয়। সে নিরপেক্ষ ধর্মটি প্রতিষ্ঠা করা ফরজ। সে নিরপেক্ষ ধর্মের বিরুদ্ধাচারণ কুফুরি। যে ধর্ম নিজ থেকে না মানলেই ধর্ম পরিত্যাগের সর্বোচ্চ শাস্তি মূত্যুদন্ড কিংবা কারাভোগ। আন্তরিকতায় কিছুটা এদিক সেদিক হলেও শাস্তি হতে পারে বিভিন্ন মেয়াদে। আমি ওসব পাপিষ্ট মুরতাদদেরকে বলতে চাই, আমরা যে ইসলাম ধর্মের কথা বলি। যে ধর্মপ্রতিষ্ঠা আমাদের প্রিয়নেতা মুহাম্মাদুর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম এর আদর্শ বলে বিশ্বাস করি। দেখাও ইসিহাসের কোনো একটি পাতা খুলে। ইসলাম কি কোনো ভিন্ন মতালম্ভীকে বলপ্রয়োগ করে ইসলামের অনুসরণে বাধ্য করেছে কিনা? ওহে তাগুত বেইমানের দল! পারবে না। এখন তা হলে তুদের কাছে ইসলাম ধর্মের অনুসারী জনৈক মুমিনের প্রশ্ন হলো, তুরা কেন আমাদেরকে তুদের নিরপেক্ষ ধর্ম মানতে বাধ্য করিস? না মানলে ভিন্ন মতালম্ভী মুসলিমকে ফাঁসিতে জোলিয়ে কার্যত তুদের প্রভূ ইউরোপ-আমেরিকার মনতুষ্টির আশা করিস? ওহে বেইমানের দল! তুদের মুখে বিভিন্ন স্বাধীনতার বুলি মানায় না রে!! জানি তুরা স্বাধীনতা বলতে তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের বিশ্বাস, ‘তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের প্রচার-প্রশার, তুদের নিরপেক্ষ ধর্মের সব সুযোগ-সুবিদাকেই তুরা বুঝিয়ে থাকিস।
হে আল্লাহ! দ্রুত তোমার দ্বীনের ঐ সেনাদলকে তুমি নিয়ে আস! যাদের হাত দ্বারা তুমি এসব পাপিষ্ট মুরতাদদেরকে শাস্তি প্রদান করবে বলে আমাদের কে ওয়াদা দিয়েছ। নিশ্চই আপনার ওয়াদা সত্য। (আমিন! আমিন!!)
অতচ ইসলামে মৌলিক বিষয়ের জ্ঞানার্জন শুধু বিশেষ কোনো গোত্র বা গোষ্ঠীর দায়-দায়িত্ব নয়। বরং এ দায়িত্ব পুরো উম্মাহর কাঁধেই অর্পিত। কিন্তু কত পার্সেন মুসলিম আজ এ নৈতিক দায়িত্বে রত। কিংবা এ জন্যে নিজ পরিসরে স্বচেষ্ট? উল্লেখ যোগ্য কোনো পার্সেনই নয়। তারপরও নিজ উদ্যোগে উৎসাহিত কোনো একটি শ্রেণী যখন নিজ কর্তব্য পালনার্থে, দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতার চূড়ান্ত সীমায় উপনীত মুসলিম জাতির ধর্মীয় প্রয়োজনটুকু সুচারূভাবে পরিচলনার তাগাদায় নিজেদেরকে ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করে। তখন আমরা তাদেরকে সেই মহৎকাজটির জন্যে নৈতিক সমর্থনটুকোও দিতে কিপ্টেমি করি। কার্পন্য করি। মনে রেখ, এ তো তোমার নৈতিকতারই অংশ। কারণ দুনিয়ার সকল ভালো কাজগুলোর বেলায় তোমার ইতিবাচক সমর্থনটিই হলো তোমার নৈতিকতা। তোমার মানবীয় মূল্যবোধের দাবী। কিন্তু কার্পন্য কেন? তখন তো তুমি তোমার নৈতিক সমর্থনের নীতিতেই দায়বদ্ধ। যা কিনা নড়বড়ে হলেও ইমানের সর্বনিন্ম খুটি। পক্ষান্তরে কোনো একটি অনৈতিক কাজ। সামাজিক ভাবে তা যতক্ষুদ্রই হোক না কেন? সেখানে তোমার সমর্থন সর্বাগ্রে বিদ্যুৎবেগে। সে অন্যায় কাজটির জন্য তোমাদের সাহায্য সহমর্মিতা সর্বোচ্চ আঙ্গিকে। যাক আমার যা কিছু বলার তা যদি না তোমাতে নৈতিকতা ও মানবীয় মূল্যবোধ না মরে জিন্দাহ থাকে তখনই। তবেই তোমার কাছে আমার এ প্রত্যাশা।
শোনো মৃত হৃদয় কি কোনো কিছু শুনতে পায়? কোনো কিছুর ব্যাপারে নৈতিক সমর্থন কি তার থেকে আশা করা যায়? এ দাবী পাগলের পলাপ মাত্র। কেউ করবে না এমন দাবী। এ জন্যই তো আজ দেখবে! যখন কাউকে কোনো একজন আলিম দ্বীনের গুরূত্বপূর্ণ কোনো একটি হাদিস বা সাহাবাদের ‘আছার (হাদিস শাস্রে আছার বলা হয় সাহাবাদের জীবনের শিক্ষণীয় কোন দিক বা বিষয়কে। এটিও শরিয়ার দলিল) তার সামনে তুলে ধরেন। তখন সে হুট করেই বলে উঠে ‘না, এগুলো তো সহিহ হাদিস নয়। অতচ এ শ্রেণীটির বিরাট একটি অংশই তোতা পাখির ন্যায় নির্দিষ্ট কিছু বুলি আওড়াই। তখন আলিম সাহেব বেচেইন হয়ে যান। কষ্টে হয়তো তার হৃদয়টি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। আচ্ছা বলো তো, কান্ডটি যদি তোমার সাথে হতো তখন তোমার কেমন করত? সত্য বিশ্বাস কর তখনও কিন্তু বিষয়টি এমনই। তাছাড়া মাওলানা সাহেবের হৃদয়টি যদি ধৈর্য্যরে প্রাচীরে শক্ত ভাবে পরিবেষ্ঠীত না হত। তবে হয়তো তুমি নিজ কানেই শুনতে পেতে কীভাবে যে তাঁর হৃদয়টি ভেঙে ক্ষাণ ক্ষাণ হয়েছিল। কেমন হৃদয়গাহী চিৎকারই না তখন সে হৃদয় দিয়ে ছিল।
হে প্রিয় বন্ধু! এ প্রবন্ধের শুরু থেকে এতক্ষণ যা কিছু বলা হল (ধর্মীয় জ্ঞান যে আজ তোমায় শূন্যের কুটায়) তারই অষ্টোপাস দিয়ে যদি মাপা হয়, তবে তুমি নিজেই বলবে। ভাই! এ ব্যাপারে আমি তেমন কিছুই জানি না। আসলে তুমি তোমার ছেলে বেলায় “খেলি খাই” অনীতির উপর আমল করেছ। দ্বীন শিখার কোনো গুরূত্বই তখন দাওনি। দিতে পারনি। মাতা-পিতার খুব আদরের সন্তানই হয়ত ছিলে। সকালে গ্রামের মক্তবটি যখন কিছুটা অনাদরী ছেলে-মেয়েদের দোমদাম কোরআন পড়ায় গুমগুম করত তখন মা তোমায় কোট-ট্রাই পরিয়ে, সাজিয়ে-গুছিয়ে বাপরে বাপ! দিয়ে আসতো কিন্টারগার্ডেনে। আশার অন্ত নাই। ছেলে নাকি মোর কি জানি কি হয়ে যায়। যাক তখন তো আর তোমার কোন বোধ-সোধ ছিল না। কিন্তু আবেগী মায়ের ভুল সিদ্ধান্তে আজ সাফাই গেয়ো না। ভুল কে ভুলই বলতে হবে। সত্যকেই বুকে লালন করতে হবে। যদিও তা কষ্টদায়ক। কিন্তু সে সব অনাদরীদের অনেকেই আজ আদরী। সমাজে। মানুষের অন্তরে। জানো! কেন? তারা ঐ যে তখন কুরআনকে খানিকটা মূল্যায়ন করেছিল। কোরআন দিয়েই শিক্ষাজীবন শুরু করেছিল। যাক, খানিকটা অনাদরীদের অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু তুমি অতিআদরীর ভাগ্যে কিছুই জুটেনি। ধর্মীয় খুটিনাটিক বিষয়ের জ্ঞানটুকুও আত্ত্বস্থ করতে পারনি।
তাছাড়াও কেউ যদি ধর্মীয় কোনো একটি বিষয়ে মুখস্থ কিছু কথা অনর্গল বলতে পারে। তাহলেও বলা হবে এ জন্যে তিনি কোনো ধর্মীয় কোনো মহাপন্ডিত বনে যাননি। কারণ তিনি যা অনর্গল বলছেন সেটুকুর পুরোটাই শুধু শুনে শুনে। আর এটি শতসিদ্ধ কথা যে ‘শুনে শুনে’ যদিও কিছু বিষয়ের অভগতি লাভ করা যায় কিন্তু ‘শুনে শুনে’ কোনো বিষয়ের জ্ঞানার্জন করা যায় না। জ্ঞানী হওয়া যায় না। কারণ জ্ঞানার্জন তখনই হয় যখন এ জন্য হাত ও কলম ব্যবহৃত হয়। যা কখনো ফুঁলানো ফাঁপানো হয় না। যার ভেতরাংশ একটুও কাঁচা রয় না।
হে প্রিয় বন্ধু! আমি এ যাবৎ তোমাকে যা কিছু বললাম। এর অর্থ কিন্তু কবোও এটি নয় যে, তুমি ধর্মীয়জ্ঞান অর্জন করনি বলে যখন যা কিছু ধর্মের নামে পাবে সবই নিজ বাহনে তুলে নিবে। ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। যাকে অন্ধবিশ্বাস নাকি বলা হয়। বরং তোমার কাজ হলো দ্বীন সম্পর্কে জানতে দ্বীনের উপর আমল করতে যথা সম্ভব তুমি নিজ সীমারেখাটির প্রতি লক্ষ রাখবে। নিজ সীমারেখার ভেতরই নিজেকে বেধে রাখবে। এখন একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি তোমাকে বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করব। আশা করি বিষয়টি তুমি বুঝতে চেষ্টা করবে। দেখ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য অনেক হাদিস বলে গিয়েছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো তুমি একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসাবে কি করবে? তুমি কি হাদিস সম্পর্কে পাজ্ঞ-বিজ্ঞ উলামাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত সহিস হাদিসগুলোর উপর আমল করবে? ‘না, নতুন করে কোনো এক বা একাধিক হাদিসমূহেকে সহিহ-জয়িফ প্রমাণিত করতে নিজেকে ব্যবহার করবে? তোমার থেকে যদি দ্বিতীয় কাজটি কোনো ভাবে প্রকাশ পায় কিংবা নিজেকে যদি তুমি দ্বিতীয় কাজের জন্যেই খুব যোগ্য মনে কর। তখন মনে করবে তুমি কিন্তু আর তোমার সেই সীমারেখাটি ধরে রাখতে পারনি। নিজ সীমারেখা ঠিক রাখতে পারনি। যা ছিল তোমার প্রধানত দায়িত্ব ও কর্তব্যে। যা অতিক্রম করাই কিনা তোমার মস্তোবড় পদস্খলন। কারণ তোমার কাজ তো ছিল এটিই যে, তুমি হাদিস জাছাই-বাছায়ে পারদর্শি বিজ্ঞ উলামাদের অনুসরণ করবে। ফুকাহা-মুহাদ্দিসগণদের নিকট স্বীকৃত সহিহ হাদিসগুলোর উপর আমল করবে। তাঁদের গবেষণায় যেগুলো আগ হতেই সহিহ হওয়ার স্বীকৃতি লাভ করে আসছে। তা নয় যে, হাদিস বিষয়ে গবেষণার কাজটি তো দেখা যাই এখনও কোনো মনুষী শুরু করেন নি। তো এখন এ গুরুভার দায়িত্বটি আমারই আঞ্জাম দেওয়া দরকার। আর তখন থেকেই হাদিস সহিহ-জয়িফ প্রমাণিত করার কাজটি খুব গুরুত্বের সাথেই আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছ। অতচ তোমার অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এখনও হয়তো ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কোনো একটি হাদিসের উপর আমল শুরু করনি। যাক তবোও যেহেতো সহিহ-জয়িফের কাজটি করে যাচ্ছ। এখন দেখা গেল কি তুমি এ বিষয়ে পারদর্শি পাজ্ঞ বিজ্ঞ আলিমকেও অকপটে বলে ফেল, আপনার হাদিসটি সহিহ নয়। যা দেখে মনে হয়, জয়িফ হাদিসসমূহ থেকে যাচাই বাছাই করে সহিহ হাদিসের উপর আলম করা মূলত তোমার উদ্দেশ্য নয়। বরং কেমন যেন হাদিস যাচাই সক্ষম নতুন কোনো ইমাম বনে গেছ! নিজ দল ও মতের বিরুদ্ধে গেলেই হলো, ‘আপনারটি হাদিসই না, ‘ওমোকের’ ‘তমোকের’ উক্তি মাত্র’ কিংবা সহিহ নয়। “দেখুন! ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: রচিত “সিলসিলাতু আহাদিসিস সাহিহাহ” লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ।
যাক তোমাকে এখানে তেমন কিছু বলতে আমি আর ইচ্ছুক নয়। শুধু একটি কথায়, গেও-গ্রামে বহুল প্রচলিত সে প্রবাদটি কি তুমি শুননি? “ভুত তাড়ানোর জন্যেই যেই সরিষা, তাতেই যদি থাকে ভুতের বাসা? হাদিস জাছায়ের মূলনীতি কি তুমি জানো? শোনো মুমিন বলে তোমাকে সম্মানের সাথেই সামনের কথাটি বলছি। খাটু করার উদ্দেশ্যে নয়। কবোও নয়। বরং তোমাকে আমি ভালোবাসি। সত্য হৃদয় থেকেই। মুমিন বলেই। আল্লাহর জন্যই। ভুল-ভ্রান্তির ভেড়াজাল থেকে মুক্ত করতেই। তোমাকে লজ্জ্বা দেওয়া। জনসম্মুখে বিদগুটে বিশ্রী ভাবে উপস্থাপন করা কিংবা কোনো অশ্লীল ভাষায় গালি দেওয়া কোনোটিই কিন্তু আমার জন্য উচিত নয়। হ্যাঁ, আমার বেলায় তোমারও। যেহেতু আমরা সবাই মুমিন। আমাদের সকলের পরিচয় একটিই। আমরা মুসলিম। আমরা সবাই ভাই ভাই। তাওহিদের তরে হাতে হাত রেখে সত্যের জয়গানই মোরা গায়। তবে এবার “সামনের কথাটি” শোন! হাদিস যাচাই-বাচাইয়ে কোনো একজন মনুষীর অবস্থান যদি চূড়ান্ত সীমায়ও পৌছে যায়। তবোও সে মনষীর গবেষণাকে অপরাপর সকল গবেষকদের গবেষণার উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। তখনও বরং সে গবেষকের গবেষণাকে তার পূর্ববর্তী ও সমকালীন অন্যান্য গবেষকদের সিদ্ধান্তের সাথে মিলিয়ে দেখতে হয় যদিও সে গবেষকের গবেষণা সঠিক। তারপর কোনো একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়।
এখন আসো! ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: এর বিষয়টি নিয়ে তোমার সাথে একটু আলোচনা করি। তাঁর ব্যাপারে প্রথম ও প্রধানত আমি যে বিষয়টি বলব, তা হলো তিনি অত্যন্ত বিদজ্ঞ একজন আলিম ছিলেন। যার জীবনের পুরো সময়টুকুই তিনি হাদিসের খেদমতে কাটিয়েছেন। হাদিসের সহিহ জয়িফ যাচাই-বাচাই করেছেন। মাশাল্লাহ অনেক হাদিসকেই তিনি সহিহ বলেছেন। অর্থাৎ তাঁর গবেষণা লব্ধ সহিহ হাদিসগুলোর সবগুলোই সহিহ। কিংবা সহিহর স্বীকৃতি প্রাপ্ত। তা সত্ত্বেও অনেক সহিহ হাদিসের ব্যাপারে তাঁর একক সিদ্ধান্তু হলো সেগুলো জয়িফ। তাঁর সে একক সিদ্ধান্তের আওতায় একাধিক সহিহ হাদিসও পড়ে যায়। যেগুলো যোগ যোগ ধরে অপরাপর একাধিক হাদিস বিশারদের সিদ্ধান্তে সহিহ হাদিসেরই অন্তর্ভূক্ত। যেগুলোর কোনোটি তো এমন হাদিস যার ব্যাপারে পূর্ববর্তী ও তাঁর সমকালীন হাদিস বিশারদদেরও কোনো দ্বিমত নেই। তাঁর এ সব গবেষণাগত বিচ্যুতির উপর তাঁর সমকালীন বহু উলামাগণ কলম ধরেছেন। তাঁর গবেষণাগত ভুল-বিচ্যুতির উপর তারা স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছেন। এখন যদি তুমি তোমার হাদিস যাচাই-বাচাই পর্বে শুধু ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রহ: কেই শুধু অনুসরণ কর। যা কিনা বাস্তবতার আলোকে “ভুত তাড়ানোর জন্যই যেই সরিষা, তাতেই কিনা ভুতের বাসা” নামক সেই গল্প।
আমার সম্মানিত ভাই! এমনটি করবেন না। হাদিস সহিহ-সাকিম করার কাজ কিছুতেই আপনার সীমারেখায় পরে না। কোন হাদিসটি সহিস কোন হাদিসটি জয়িফ তা কিন্তু আপনার কাজ নয়। তা করবেন হাদিস বিষয়ে বিজ্ঞ উলামাগণ। শুধু শুধুই আলোচনা দীর্ঘ করার প্রয়োজন নেই। তোমার প্রতি আন্তরিকতার ধরুন খুব বিনয়ের সাথে বলছি। শত কষ্ট হলেও লিখছি। কোন একটি হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করা, কিংবা কোনটিকে জয়িফ প্রমাণিত করা কিছুতেই তোমার কাজ না। হ্যাঁ বিশুদ্ধ গ্রহনযোগ্য মূলনীতি সমর্থিত সহিহ হাদিসগুলোর উপর আমল করার পূর্বে দু’ঠুটের মাঝে রেখে শুধু সহিহ সহিহ বলে আওড়াতে পারবেন। (ক্ষেত্র বিশেষ তা প্রশংসারও যোগ্য) কিংবা আপনার আমলে যাতে টেস্ট্রি আসে সে জন্য সহিহ সহিহ জপতে পারবেন। কাউর সাথে তর্কে-বিতর্কে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য নয়। শোনো! হাদিস বিষয়ে সুযোগ্য আলিম যখন আলোচনা করবেন তখন তার আলোচ্য হাদিসটি সহিহ কি সহিহ নয়। তাঁকে তোমার সে বিষয়ের জ্ঞান দিতে হবে না। এছাড়া তিনি যদি হাদিস বলতে পারেন, হাদিসের উপর আমল করতে পারেন, অধিকন্ত তখন এটিই স্বাভাবিক যে, আলোচ্য হাদিসটি সহিহ কি সহিহ নয়, আমলযোগ্য কি আমলযোগ্য নয়, তা তোমার থেকে তিনিই ভালো জানবেন। এ কথাটি তখনও এভাবেই বলা যাবে, যদি না আপনি বোখারী শরীফের কোনো একটি হাদিস নিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশীই লাফালাফি করবেন। খোদ ইমাম বোখারিই যা পছন্দ করেননি।
আমার সম্মানিত ভাই! হাদিসের আলোকে বর্তমান সময়ের ব্যাপারে বলা চলে, এটি কিয়ামতের একেবারেই পূর্ব মূহুর্ত। যে সময়ে ফিৎনার কোনো শেষ নেই। ঈমানের উপর বয়ে চলা ঝড়-ঝাপটার কোনো অন্ত নেই। ইমান ও কুফুরের সীমারেখা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। ইসলামের প্রাতৃকি ও নির্দেশনাবলীর কোনো সংরক্ষণ নেই। আল্লাহ, আল্লাহ রাসূলের ইজ্জত সম্মান রক্ষা করার কোনো গরজ নেই। মুমিনের রক্তের কোনো মূল্য নেই। সর্বাগ্রাসী কুফুরি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবার কোনো প্রস্তুতি নেই। যতসব আলতু পালতু কর্মকান্ড নিয়ে আমরা ব্যস্ত। মনে মনে ভাবছি পরকালের হিসাব-নিকাসের কাঁঠগড়া আমাদের জন্যে নয়। সেখানে তো শুধু মূসা নাবীর উম্মত বনী ইসরায়েলকেই দাঁড়াতে হবে। আর আমরা সেদিন মঞ্চে ঘুরে ঘুরে শুধু উকালতি করব। মনে রেখ! বাহাত্তর দলে বিভক্ত জাতিকে যদি হিসাব-নিকাসের জন্য আল্লাহর কাঁঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। তবে তেহাত্তর দলে বিভক্ত জাতির কি দশা! (আফসোস কাকে কি বলব!!)
এখন আমাদের জন্য উচিত কিয়ামতের পূর্বেকার সময়ের ব্যাপারে সহিহ হাদিসে যা যা বলা হয়েছে সেগুলোর উপর আমল করা। হাদিসে তো এটিই বলা হয়েছে যে, ফিৎনার সময়ে আপনি যদি বসা থাকেন, তাহলে যেন সেভাবেই বসে থাকেন। অতিরিক্ত উঠা বসা হাটা চলার কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ফিৎনার সময়ে দ্বীনের সাধারণ বিষয়সমূহ যেমন: ‘আমিন জোড়ে বলবে না আস্তে’ ‘রফয়েইদাইন করতে হবে কি হবে না’ ‘ঈদ এক দিনেই করতে হবে কিনা’ ওসব নিয়ে এত বেশি বাড়াবাড়ি না করা। কিন্তু এগুলোকেই আমরা আজ এত বেশি আলোচনার বিষয়ে পরিণত করেছি যে, যদ্দরুন ইমান ও কুফুরের সীমারেখা নিয়ে আলোচনার পর্বটি আমাদের মাথা ছাড়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্রি প্রর্যায় কুফুর শিরক প্রবেশ করে প্রতিনিয়তই আমাদের ঈমানকে খুয়ে খুয়ে খাচ্ছে। কিন্তু তারপরও হাতের তালুতে ধারণ করা জলজ্বলে উজ্জ্বল হিরে টুকরোর ন্যায় বাস্তবতাকেও আমরা অস্বীকার করছি। আমরা জানি যে, রাষ্ট্রিয় প্রর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত ছোট বড় কুফুর শিরকের ভয়বহতা ব্যক্তি পর্যায় আশ্রয় নেয়া কুফুর-শিরকের ভয়াবহার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি ক্ষতিকারক। একটি সমাজ যখন কুফুরের পথে পা বাড়ায়। এর কু-প্রভাব প্রতিটি ব্যক্তিকেই ছুঁয়ে যায়। তাই তো কোনো ইসালামী সমাজ দারুল হরব (শত্র কবলিত) হওয়া না হওয়ার মাপকাটি একক ব্যক্তির কোনো কুফুরি কর্মকাণ্ডের উপর ন্যস্ত নয়। বরং ব্যক্তি প্রর্যায়ে সকল ব্যক্তিই যদি খুব খোদাভিরু আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যায় তা সত্ত্বেও যদি সে সমাজে রাষ্ট্রিয়ভাবে কোনো একটি কুফুরি বিধানও প্রতিষ্ঠিত থাকে, তাহলে সে রাষ্ট্র আর ইসলামি রাষ্ট্র হিসাবে বলবৎ থাকে না। বরং তা দারুল হরব বা কুফুরি রাষ্ট্র বলেই ধর্তব্য। যে রাষ্ট্রের রিরুদ্ধাচারণ না করে চুপ করে বসে থাকা, কুফুরের প্রতি চুপ থাকার নীতিতে সন্তুষ্টিুরই নামান্তর। (প্রিয় ভাই! আল্লাহ তোমাকে বিষয়টি বুঝার তাওফিক দান করুন!) তাছাড়াও দ্বীনের এসব মতবিরুদ্ধ বিষয়গুলোকে নিয়ে আমাদের বাড়াবাড়ির ধরুন মুসলিম উম্মার মধ্যে না জানি কোনো বিভক্তির ফিৎনা ছড়িয়ে পড়ে!! সাবধান হোন! সাবধান হোন!! নিজেকে নিজের ধর্মীয় সীমারেখার ভিতরেরই বেধে রাখুন! আর আপনি এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকুন, দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ হওয়ায় আল্লাহ হয়তো আপনার আমলের অনেক ভুল বিচ্যুতিসমূহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কিন্তু আপনার থেকে কোনো ফিৎনা যদি মুসলিম উম্মাহয় ছড়ায় তাহলে অবিশ্যই আপনি ধরা খাবেন। পাকড়াও হবেন। ইসলামের এই ক্লান্তিকালে বরং আপনি একটি কাজ করতে পারেন। কোরআন আপনাকে যে পাথেয় গ্রহণ করতে বলে তা ধারণ করুন। দ্বীন সম্পর্কে বিজ্ঞ একাধিক আলিমের কাছে জিজ্ঞাসা করে করে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করুন। আপনার নাবীর সুযোগ্য উত্তরসূরি উলামাদের অনুসরণ করুন। কারণ আপনার নাবী আপনাকে তাই করতে বলে গিয়েছেন। হাদিস দ্বারা চিন্হিত উলামায়ে ‘ছু, (ইমান বিক্রিকারী আলিম) থেকে যথা সম্ভব নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান গ্রহন করুন। তাছাড়া উলামায়ে দরবারিদের (প্রশাসনের সাথে মিলজোল রেখে চলে এমন আলিম) কাছ থেকে এখনই পলায়ন করুন!
হে আমার প্রিয় বন্ধু! এটিই তোমার প্রতি আমার ওছিয়ত-নছিয়ত। হৃদয়ের এলবামে গেঁথে রেখো। শোনো! বর্তমান সময়ের শত প্রতিকূলতা এমনিই আমাদেরকে হতবাগ্য বানিয়ে দিয়েছে। আমাদের চার হাত পায়েই শৃকল পরিয়ে দিয়েছে। এ দুনিয়ার স্বচ্ছ হাওয়া আমাদের জন্যে দুর্বিষহ করে দিয়েছে। যদ্দোরুন এটিই মনে হয়। আলিম হলেও হয়তো পরকালে ছাড়া পাব না। প্রিয় নাবীর শাফায়াত হয়তো ভাগে পাব না। তবে আশা তো অংশ ঈমানেরই। তাই শুধু বুক ভরা আশা রাখি। দেখেন ভাই! আমাদের দায়িত্ববোধই আজ আমাদের উপর চড়াও হয়ে আছে। বার বার আমাদেরকে ব্যর্থ বলে দিক্কার দিচ্ছে। তুমি কিন্তু আবার আমাদের উপর চড়তে যেয়ো না। দ্বীনের নামে ভুল ভুল কথাগুলো বলতে যেয়ো না। এমনিই আমরা আজ হতবাগা। সবকিছু হারিয়ে একেবারে সহায় সম্ভল হারা। (আফসোস!) দ্বীনের তরে এখনো কেন মোরা, হয়নি সবটুকু সহায় সম্ভল হারা? অতচ দ্বীন যায়, আর নাহি রয় দিশেহারা!
Comment