আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে ঈমানদারদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন, যেন এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কে শত বিপদেও ঈমান ও ঈমানের দাবীতে অটল থাকে আর কে বিপদ-আপদের সময় ঈমান হারিয়ে ফেলে, ঈমানের দাবী থেকে সরে যায়। যদি এ পরীক্ষা না হতো তাহলে সবাই নিজেকে পাক্কা ঈমানদার বলে দাবী করতো, যারা ঈমানের দাবীতে মিথ্যাবাদী তারাও আখেরাতে প্রকৃত ঈমানদারদের সমমর্যাদা লাভ করতো, কেননা যদিও আল্লাহ তায়ালা জানেন, কে দুনিয়াতে ঈমানের পরীক্ষাতে অটল থাকতে পারবে আর কে পদস্খলিত হবে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা আখেরাতে মানুষের বাহ্যিক আমল অনুযায়ীই ফায়সালা করবেন, নিজের ইলম অনুযায়ী নয়, আল্লাহ তায়ালা বলেন,
أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُتْرَكُوا أَنْ يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ (2) وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ. سورة العنكبوت: 1 – 3
মানুষ কি ধারণা করেছে যে তারা (শুধু মুখে) বলবে, আমরা ঈমান এনেছি আর (এতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে) পরীক্ষা করা হবে না। আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি। (সুতরাং তাদেরকেও পরীক্ষা করবো) এবং আল্লাহ জেনে নিবেন কারা (ঈমানের দাবীতে) সত্যবাদী এবং জেনে নিবেন কারা (তাতে) মিথ্যাবাদী। -সূরা আনকাবুত, ১-৩
আসলে এ ঈমানী পরীক্ষার জন্যই আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের উপর জিহাদ ফরয করেছেন। তো পৃথিবীতে ঈমানদারদের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হলো দাজ্জালের ফিতনা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إنه لم تكن فتنة في الأرض منذ ذرأ الله ذرية آدم، أعظم من فتنة الدجال، وإن الله لم يبعث نبيا إلا حذر أمته الدجال. سنن ابن ماجه: (4077) قال الإمام الكشميري في فيض الباري (4 : 406 ط. دار الكتب العلمية 1426 هـ: (وإسناده قوي).
বনু আদমের সৃষ্টির পর দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে ভয়াবহ ও বিপদজনক কোন ফিতনা এ পৃথিবীতে আসবে না। আল্লাহ তায়ালা যত নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন তাঁরা সকলেই নিজ নিজ উম্মাহকে দাজ্জালের ব্যাপার সতর্ক করেছেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ ৪০৭৭, আল্লামা কাশ্মিরী রহ. ফয়জুল বারীতে (৪/৪০৬) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
দাজ্জালের ফিতনা যেহেতু এতটাই ভয়াবহ তাই এ ফিতনা হতে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক হাদিসে আমাদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, এমনিতেই তো প্রত্যেক মুসলমানের এ পথ নির্দেশনা জানা থাকা প্রয়োজন, আর বর্তমানে যখন দাজ্জালের আবির্ভাবের সব আলামত একে একে প্রকাশ পেয়ে পাচ্ছে, দাজ্জালের বাহিনীও তাই পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে, তো এখন যে এ বিষয়গুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা কোন ঈমানদার –যে ঈমানের মূল্য এবং ঈমান হারানোর ভয়াবহ পরিনতি বুঝে– তার কাছে অজানা থাকার কথা নয়। তাছাড়া পরীক্ষা যত কঠিন হবে তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পুরস্কারও ততই বড় হবে। তাই এ পরীক্ষার প্রস্তুতিও তত বেশি হওয়া দরকার। তো চলুন, সংক্ষেপে জেনে নেই, দাজ্জালের ফিতনা হতে মুক্তির হাদিসে বর্ণিত আমলগুলো-
১. নামাযে দোয়ায়ে মাসূরার পরে বা দোয়ায়ে মাসূরার স্থলে এই দোয়া পড়া,
«اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ».
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, জাহান্নামের আযাব হতে, কবরের আযাব হতে, জীবদ্দশার এবং মৃত্যু (ও মৃত্যু পরবর্তী সময়ের) ফিতনা হতে এবং দাজ্জালের ফিতনা হতে।
عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا تشهد أحدكم فليستعذ بالله من أربع يقول: اللهم إني أعوذ بك من عذاب جهنم ومن عذاب القبر، ومن فتنة المحيا والممات، ومن شر فتنة المسيح الدجال صحيح مسلم: (588). وفي رواية له أخرى: إذا فرغ أحدكم من التشهد الآخر.
عن ابن عباس، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يعلمهم هذا الدعاء كما يعلمهم السورة من القرآن يقول قولوا: «اللهم إنا نعوذ بك من عذاب جهنم، وأعوذ بك من عذاب القبر، وأعوذ بك من فتنة المسيح الدجال، وأعوذ بك من فتنة المحيا والممات قال مسلم بن الحجاج: بلغني أن طاوسا قال لابنه: أدعوت بها في صلاتك؟ فقال: لا، قال: أعد صلاتك، لأن طاوسا رواه عن ثلاثة أو أربعة، أو كما قال. صحيح مسلم: (588).
قال الحافظ في «فتح الباري» (11 : 176 ط. دار الفكر) : (قوله: من فتنة المحيا أي زمن الحياة، «الممات» أي من الموت من أول النزع، وهلم جرا).
عن ابن عباس، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يعلمهم هذا الدعاء كما يعلمهم السورة من القرآن يقول قولوا: «اللهم إنا نعوذ بك من عذاب جهنم، وأعوذ بك من عذاب القبر، وأعوذ بك من فتنة المسيح الدجال، وأعوذ بك من فتنة المحيا والممات قال مسلم بن الحجاج: بلغني أن طاوسا قال لابنه: أدعوت بها في صلاتك؟ فقال: لا، قال: أعد صلاتك، لأن طاوسا رواه عن ثلاثة أو أربعة، أو كما قال. صحيح مسلم: (588).
قال الحافظ في «فتح الباري» (11 : 176 ط. دار الفكر) : (قوله: من فتنة المحيا أي زمن الحياة، «الممات» أي من الموت من أول النزع، وهلم جرا).
আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পরে চারটা বিষয় হতে আশ্রয় প্রার্থনা করবে, তোমরা বলবে, হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, জাহান্নামের আযাব হতে, কবরের আযাব হতে, জীবদ্দশার ও মৃত্যুর সময়ের ফেতনা হতে এবং দাজ্জালের ফিতনা হতে। -সহিহ মুসলিম, ৫৮৮
ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের এই দোয়াটি (এতটা গুরুত্ব সহকারে) শিখাতেন যেমনিভাবে তাদেরকে কুরআনের সূরা শিখাতেন। ইমাম মুসলিম বলেন, (তাবেয়ী) তাউস রহ. তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি নামাযে এই দোয়া পড়েছো, ছেলে বলল, না। তাউস বললেন, তুমি পুনরায় নামায পড়ো। -সহিহ মুসলিম, ৫৮৮
উল্লেখ্য, এই দোয়া সুন্নত ও নফল নামাযে তো পড়া যাবেই, একাকী ফরয নামায পড়লে কিংবা জামাতে পড়ার সময় সুযোগ পেলেও পড়া যাবে।
২- দাজ্জালের আবির্ভাব হলে পাহাড়, বন ও এধরণের দূর্গম অঞ্চলে চলে যাওয়া, দাজ্জালের আগমণের সংবাদ শোনা গেলে তার থেকে দূরে চলে যাওয়া। দাজ্জালকে হত্যার দ্বায়িত্ব যেহেতু ইসা আলাইহিস সালামের তাই দাজ্জালের মোকাবেলার চেষ্টা না করে তার থেকে পালিয়ে বাঁচাই কর্তব্য।
عن عمران بن حصين الخزاعي رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من سمع منكم بخروج الدجال فلينأ عنه، فإن الرجل يأتيه فيحسب أنه مؤمن، فيتبعه مما يبعث به من الشبهات -أو لما يبعث به من الشبهات-" هكذا قال». أخرجه أبو داود: (4319) وابن أبي شيبة في المصنف: (38614) والحاكم في المستدرك: (8615) وقال الشيخ شعيب في تعليقه على سنن أبي داود: إسناده صحيح ... وقد جوّد إسناده الحافظ ابن كثير في النهاية 1/163. وقال الشيخ عوامة في تعليقه على مصنف ابن أبي شيبة: (إسناد المصنف صحيح، وقد رواه أبو داود .... والحاكم وصححه على شرط مسلم، وسكت عنه الذهبي).
ইমরান বিন হাসীন রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন দাজ্জালের আবির্ভাবের সংবাদ শুনে সে যেন তার হতে যথাসম্ভব দূরে সরে যায়, কেননা কেউ কেউ তার নিকট আসবে এবং মনে করবে আমি তো মুমিন, (কিন্তু) সে দাজ্জালের সৃষ্ট সংশয়ে পড়ে তার অনুসারী হয়ে যাবে। -সুনানে আবু দাউদ, ৪৩১৯ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ৩৮৬১৪ মুস্তাদরাকে হাকেম, ৮৬১৫। হাকেম আবু আব্দুল্লাহ, ইমাম ইবনে কাসীর, শায়েখ আওয়ামা, শায়েখ শুয়াইব আরনাউত সবাই হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
৩- দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য সূরা কাহাফের বিশেষ ফযিলত রয়েছে, দাজ্জালের ফিতনার মোকাবেলার জন্য সূরা কাহাফের বিভিন্ন আমল রয়েছে, যথা:
ক. সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করা।
খ. দাজ্জালের সম্মুখীন হয়ে গেলে সূরা কাহফের প্রথমদিকের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা।
গ. জুমার দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা
عن أبي الدرداء، أن النبي صلى الله عليه وسلم، قال: «من حفظ عشر آيات من أول سورة الكهف عصم من الدجال». صحيح مسلم: (809)
আবুদ দারদা রাযি হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি পাবে। -সহিহ মুসলিম, ৮০৯
عن النواس بن سمعان الكلابي في حديث طويل عن الدجال: قال النبي صلى الله عليه وسلم فيه: من أدركه منكم، فليقرأ عليه فواتح سورة الكهف. صحيح مسلم: (2937)
নাওয়াস বিন সামআন রাযিআল্লাহু আনহুর সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ দাজ্জালের সম্মুখীন হলে সে যেন সূরা কাহফের প্রথমদিকের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে। -সহিহ মুসলিম, ২৯৩৭
عن علي، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من قرأ سورة الكهف يوم الجمعة، فهو معصوم إلى ثمانية أيام من كل فتنة، وإن خرج الدجال عصم منه. الأحاديث المختارة: (430) وقد اشترط في هذا الكتاب أن يخرخ الأحاديث الجياد المختارة مما ليس في الصحيحين أو أحدهما، وقد شهد له العلماء بوفاء هذا الشرط، فالحديث صحيح على شرطه، راجع المدخل إلى علوم الحديث للشيخ عبد المالك حفظه الله ص: 102 والرسالة المستطرفة للكتاني: ص: 24 ط. دار البشائر الإسلامية :1421هـ(
আলি রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে সে আটদিন পর্যন্ত সবধরণের ফেতনা হতে নিরাপদ থাকবে, যদি এ সময়ের মাঝে দাজ্জালের আবির্ভাবে ঘটে তাহলে সে দাজ্জালের ফেতনা হতেও মুক্তি পাবে। - আলআহাদিসুল মুখতারাহ, ইমাম যিয়াউদ্দীন মাকদিসী, হাদিস নং৪৩০ তিনি এই কিতাবে শুধু সহিহ হাদিস আনার শর্ত করেছেন এবং পরবর্তী মুহাদ্দিসগণ তার এই শর্ত পূরণের স্বীকৃতি দিয়েছেন। সে হিসেবে হাদিসটি (কমপক্ষে তার নিকটে) সহিহ। দেখুন, আলমাদখাল, মাওলানা আব্দুল মালেক, পৃ: ১০২ আল রিসালাতুল মুসতাতরফাহ, শায়েখ জাফর আলকাত্তানী, পৃ: ২৪
৪ - দাজ্জালের আলামত ও দাজ্জালের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদী সম্পর্কে নিজে জানা, অন্যকে জানানো, এসব বিষয় নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা করা, মূলত দাজ্জাল সম্পর্কে পূর্ব অবগতি না থাকা দাজ্জালের ফিতনার শিকার হওয়ার একটা বড় কারণ হবে, এজন্যই হাদিসে এসেছে, দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে মহিলারা। কেননা পুরুষদের তুলনায় তাদের ইলম-আকল ও জ্ঞান-বুদ্ধি কম। তাই বিশেষ করে ঘরের মা-বোনদের এসব বিষয়ে জানানো দরকার।
عن جابر رضي الله عنه، عن النبي صلى الله عليه وسلم، قال: يخرج الدجال في خفة من الدين، وإدبار من العلم، .... أخرجه أحمد : (14954) والحاكم : (8613) وقال الحاكم: «هذا حديث صحيح الإسناد، ولم يخرجاه». وقال الذهبي في التلخيص: على شرط مسلم. وقال الهيثمي في مجمع الزوائد: (رقم: 12525) : رواه أحمد بإسنادين، رجال أحدهما رجال الصحيح.
জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দাজ্জাল বের হবে যখন মানুষের মাঝে দ্বীনদারী কমে যাবে, শরয়ী ইলম-জ্ঞান চর্চা কমে যাবে। -মুসনাদে আহমদ, ১৪৯৫৪ মুস্তাদরাকে হাকেম, ৮৬১৩ মাযমাউয যাওয়ায়েদ, ১২৫২৫। হাকেম আবু আব্দুল্লাহ, হাফেয যাহাবী ও হাইছামী রহ. হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
حذيفة بن أسيد قال: إن الدجال لو خرج في زمانكم لرمته الصبيان بالخذف، ولكنه يخرج في نقص من الناس، وخفة من الدين، وسوء ذات بين ... رواه معمر بن راشد في جامعه: (20827) وعبد الله بن أحمد في السنة (995) والحاكم في المستدرك (8612)، وقال الحاكم: هذا حديث صحيح الإسناد، ولم يخرجاه. وقال الذهبي في التلخيص: على شرط البخاري ومسلم.
হুযাইফা বিন আসিদ রাযি. বলেন, দাজ্জাল যদি এ যমানায় বের হতো তাহলে বাচ্চারাও তাকে দেখে ঢিল ছুড়তো, কিন্তু সে তখন বের হবে যখন মানুষের দ্বীনদারী কমে যাবে … । জামে’ মা’মার বিন রাশেদ, ২০৮২৭ আসসুন্নাহ, ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমদ, ৯৯৫ মুস্তাদরাকে হাকেম, ৮৬১২। হাকেম আবু আব্দুল্লাহ ও হাফেয যাহাবী রহ. হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
অর্থাৎ দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় মানুষ ইলম ও আমল থেকে দূরে সরে যাবে, তাদের মাঝে দাজ্জালের ফিতনা মোকাবেলার জন্য যে পরিমান ঈমানী শক্তি থাকা প্রয়োজন এবং দাজ্জাল সম্পর্কে যতটুকু জানাশোনা থাকা দরকার তার কিছুই থাকবে না, তাই তারা ব্যাপকভাবে দাজ্জালের ফিতনার শিকার হবে। পক্ষান্তরে খাইরুল কুরুন-ইসলামের স্বর্ণযুগের বাচ্চারাও দাজ্জাল সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিল, তাদের ঈমানী অবস্থাও ছিল আমাদের চেয়ে অনেক উচ্চস্তরের, তাই তারা দাজ্জালকে খোদা বলে মানা তো দূরের কথা, দাজ্জালের খোদা হওয়ার দাবী শুনলে তারা তাকে উপহাস করে ঢিল ছুড়তো এবং বলতো, তুই যদি খোদা হয়ে থাকিস তাহলে নিজের চোখদুটি আগে ঠিক কর, যে নিজের শারীরিক ক্রটিই দূর করতে পারে না সে আবার খোদা হয় কি করে?
عن ابن عمر، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ينزل الدجال في هذه السبخة، بمر قناة، فيكون أكثر من يخرج إليه النساء، حتى إن الرجل ليرجع إلى حميمه، وإلى أمه، وابنته، وأخته، وعمته، فيوثقها رباطا، مخافة أن تخرج إليه . مسند أحمد: (5353) وقال الشيخ أحمد شاكر في تعليقه على مسند أحمد: إسناده صحيح ... والحديث في مجمع الزوائد، وذكر أن بعضه في الصحيح، وقال: رواه أحمد والطبراني في الأوسط، وفيه ابن إسحق، وهو مدلس.
ইবনে উমর রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দাজ্জাল মদিনার নিকটবর্তী এই উষর ভূমিতে অবতরণ করবে, (ফেরেশতাদের প্রহরার কারণে সে মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না) তখন তার কাছে যারা গমণ করবে তাদের অধিকাংশই হবে নারী, এমনকি পুরুষরা তাদের মা-বোন, কন্যা-স্ত্রী এদেরকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখবে, যেন তারা দাজ্জালের কাছে যেতে না পারে। -মুসনাদে আহমাদ, ৫৩৫৩। শায়েখ আহমদ শাকের হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
Comment