সুনানে আবু দাউদে হাসান সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন:
‘মুমিন তার ভাইয়ের আয়নাস্বরূপ। আর মুমিন তো মুমিনের ভাই, যে তার অনুপস্থিতিতে তার সম্পদের হিফাজত করে এবং তার পেছন থেকে তাকে পাহারা দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯১৮)
এই হাদিসটি রাসুলুল্লাহর জাওয়ামিউল কালিমের অন্যতম দৃষ্টান্ত। অল্প শব্দে রাসুলুল্লাহ স. ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলতেন। তার একেকটি বাক্যে লুকিয়ে থাকত অসংখ্য জ্ঞান ও প্রজ্ঞা।
‘মুমিন তার ভাইয়ের জন্য আয়নাস্বরূ’ এই হাদিসটির অর্থ হলো, আয়নায় যেমন মানুষকে তার বাস্তব প্রতিচ্ছবি দেখিয়ে তাকে শুধরে দেয়, একজন মুমিনও তার ভাইয়ের দোষত্রুটি শুধরে দেয়। এই হাদিসটিতে তিনটি দিক আছে।
প্রথম দিক হলো: এখানে নসিহতকারীকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আয়না যেমন তার সামনে দাঁড়ানো লোকটির কিছুই গোপন করে না, সবকিছু নিখুঁতভাবে তুলে ধরে, নসিহতকারীকেও তেমন হতে হবে। সে তার ভাইয়ের কোনো দোষই গোপন করবে না। সবকিছু বুঝিয়ে বলবে। কারণ এই দোষগুলো দুনিয়া-আখিরাতে তার ক্ষতির কারণ হবে।
দ্বিতীয় দিক হলো: যে ভাই নসিহত শুনবে তার জন্য দিকনির্দেশনা রয়েছে। আয়নায় কেউ কোনো দোষ দেখতে পেলে, সে খুব দ্রুত সেই দোষ দূর করতে তৎপর হয়ে ওঠে। মুখে যদি কোথাও ময়লা লেগে থাকে, দ্রুত পরিষ্কার করে নেয়। মাথার চুল এলোমেলো থাকলে চিরুনি করে নেয়। অনুরূপভাবে নসিহত শ্রবণকারীকে কোনো মুমিন ভাই যখন নসিহত করে, সে তার দোষগুলো স্বীকার করে নেবে। দ্রুত সেই ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করবে। দোষগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য নসিহতকারী ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে।
তৃতীয় দিক হলো: এই হাদিসে নসিহতকারী ও নসিহত শ্রবণকারী উভয়ের জন্য কিছু আদব বলা হয়েছে। আয়না যেমন একেবারে নীরবে মানুষের দোষ ধরিয়ে দেয়, কারও দোষ নিয়ে হৈচৈ করে না। বিশ্বস্ততার সঙ্গে কেবল দোষগুলো জানিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হয়। নসিহতকারীও তার ভাইয়ের দোষ নিয়ে হৈচৈ করবে না। অন্যদেরকে তার দোষ বলে বেড়াবে না। বরং একপাশে টেনে নিয়ে তাকে অনুচ্চ শব্দে দোষগুলো জানিয়ে দেবে। কেউ যেন বুঝতেই না পারে। এটি হলো নসিহতকারীর জন্য আদব। আর নসিহত শ্রবণকারীর জন্য আদব হলো, আয়নায় নিজের দোষ দেখতে পেয়ে যেমন কেউ খেপে যায় না, রাগ করে না, আয়নাকে দোষারূপ করে না, বরং সন্তুষ্টচিত্তে দোষ মেনে নিয়ে, দোষটি দূর করতে ব্রতী হয়—তেমনিভাবে নসিহত শ্রবণকারীও তার মুমিন ভাইয়ের কথা সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেবে। শত্রুতা তো দূরের কথা, বরং তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে। তার শোকরিয়া আদায় করবে। কারণ সে দোষগুলো জানিয়ে না দিলে, তাকে হয়তো অন্য জায়গায় লজ্জিত ও অপমানিত হতে হতো।
ছোট্ট এই হাদিসে অত্যন্ত নিপুণভাবে বাস্তবসম্মত উদাহরণের মাধ্যমে নসিহতকারী ও নসিহত শ্রবণকারীকে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন।
الْمُؤْمِنُ مِرْآةُ أَخِيهِ، وَالْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ، يَكُفُّ عَلَيْهِ ضَيْعَتَهُ، وَيَحُوطُهُ مِنْ وَرَائِهِ
‘মুমিন তার ভাইয়ের আয়নাস্বরূপ। আর মুমিন তো মুমিনের ভাই, যে তার অনুপস্থিতিতে তার সম্পদের হিফাজত করে এবং তার পেছন থেকে তাকে পাহারা দেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯১৮)
এই হাদিসটি রাসুলুল্লাহর জাওয়ামিউল কালিমের অন্যতম দৃষ্টান্ত। অল্প শব্দে রাসুলুল্লাহ স. ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলতেন। তার একেকটি বাক্যে লুকিয়ে থাকত অসংখ্য জ্ঞান ও প্রজ্ঞা।
‘মুমিন তার ভাইয়ের জন্য আয়নাস্বরূ’ এই হাদিসটির অর্থ হলো, আয়নায় যেমন মানুষকে তার বাস্তব প্রতিচ্ছবি দেখিয়ে তাকে শুধরে দেয়, একজন মুমিনও তার ভাইয়ের দোষত্রুটি শুধরে দেয়। এই হাদিসটিতে তিনটি দিক আছে।
প্রথম দিক হলো: এখানে নসিহতকারীকে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আয়না যেমন তার সামনে দাঁড়ানো লোকটির কিছুই গোপন করে না, সবকিছু নিখুঁতভাবে তুলে ধরে, নসিহতকারীকেও তেমন হতে হবে। সে তার ভাইয়ের কোনো দোষই গোপন করবে না। সবকিছু বুঝিয়ে বলবে। কারণ এই দোষগুলো দুনিয়া-আখিরাতে তার ক্ষতির কারণ হবে।
দ্বিতীয় দিক হলো: যে ভাই নসিহত শুনবে তার জন্য দিকনির্দেশনা রয়েছে। আয়নায় কেউ কোনো দোষ দেখতে পেলে, সে খুব দ্রুত সেই দোষ দূর করতে তৎপর হয়ে ওঠে। মুখে যদি কোথাও ময়লা লেগে থাকে, দ্রুত পরিষ্কার করে নেয়। মাথার চুল এলোমেলো থাকলে চিরুনি করে নেয়। অনুরূপভাবে নসিহত শ্রবণকারীকে কোনো মুমিন ভাই যখন নসিহত করে, সে তার দোষগুলো স্বীকার করে নেবে। দ্রুত সেই ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করবে। দোষগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য নসিহতকারী ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে।
তৃতীয় দিক হলো: এই হাদিসে নসিহতকারী ও নসিহত শ্রবণকারী উভয়ের জন্য কিছু আদব বলা হয়েছে। আয়না যেমন একেবারে নীরবে মানুষের দোষ ধরিয়ে দেয়, কারও দোষ নিয়ে হৈচৈ করে না। বিশ্বস্ততার সঙ্গে কেবল দোষগুলো জানিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হয়। নসিহতকারীও তার ভাইয়ের দোষ নিয়ে হৈচৈ করবে না। অন্যদেরকে তার দোষ বলে বেড়াবে না। বরং একপাশে টেনে নিয়ে তাকে অনুচ্চ শব্দে দোষগুলো জানিয়ে দেবে। কেউ যেন বুঝতেই না পারে। এটি হলো নসিহতকারীর জন্য আদব। আর নসিহত শ্রবণকারীর জন্য আদব হলো, আয়নায় নিজের দোষ দেখতে পেয়ে যেমন কেউ খেপে যায় না, রাগ করে না, আয়নাকে দোষারূপ করে না, বরং সন্তুষ্টচিত্তে দোষ মেনে নিয়ে, দোষটি দূর করতে ব্রতী হয়—তেমনিভাবে নসিহত শ্রবণকারীও তার মুমিন ভাইয়ের কথা সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেবে। শত্রুতা তো দূরের কথা, বরং তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে। তার শোকরিয়া আদায় করবে। কারণ সে দোষগুলো জানিয়ে না দিলে, তাকে হয়তো অন্য জায়গায় লজ্জিত ও অপমানিত হতে হতো।
ছোট্ট এই হাদিসে অত্যন্ত নিপুণভাবে বাস্তবসম্মত উদাহরণের মাধ্যমে নসিহতকারী ও নসিহত শ্রবণকারীকে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন।
Comment