Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নাসিহা মিডিয়া lশিশুদের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নাসিহা মিডিয়া lশিশুদের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে



    শিশুদের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে

    °
    শিশুরা মানব-বাগানের ফুল। আদর-মমতায় তাকে সঠিক প্রক্রিয়ায় গড়ে তুলতে পারলে তারা আলোকিত মানুষ হবে, সমাজকেও আলোকিত করবে। তাই নবীজি (সা.) শিশুদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করতেন।

    সামগ্রিকভাবে শিশুদের সঙ্গে নবীজি (সা.)-এর ওঠাবসা কেমন ছিল; তার চিত্র সামনে রাখলে আমরা সহজেই বুঝতে পারব আমাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত।


    ❏ —আদর-স্নেহ করাঃ

    শিশুদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর আচরণ ছিল মার্জিত। নিজে তাদেরকে ভালোবাসতেন ও স্নেহ করতেন। এমনকি অন্যদেরও শিশুদের সঙ্গে কোমল আচরণের নির্দেশ দিতেন। তিনি বলেন, ❛যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং আমাদের বড়দের অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।❜
    __________(আবু দাউদ : ৪৯৪৩)

    ❏ —কোলে নেওয়াঃ

    নবী (সা.) ছিলেন পরম মমতার অধিকারী। শিশুদের ক্ষেত্রে তাঁর মমতা ছিল প্রবাদতুল্য। তিনি বিনাদ্বিধায় তাদেরকে কোলে নিতেন ও স্নেহভরা চুমু খেতেন। হযরত ইয়ালা ইবনে মুররা (রা.) বলেন, ❛কিছু সাহাবি নবী (সা.)-এর সঙ্গে দাওয়াত খেতে বের হলেন। হঠাৎ দেখা গেল হুসাইন (রা.) রাস্তায় খেলা করছে। নবী (সা.) সবার সামনে এগিয়ে গেলেন এবং তাকে কোলে নেওয়ার জন্য উভয় হাত তার দিকে প্রসারিত করলেন। এ দেখে হুসাইন এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করল। তখন নবীজি তাকে (ধরার জন্য নানা কিছু বলে) হাসাচ্ছিলেন। অবশেষে তাকে ধরে ফেললেন। এরপর তিনি এক হাত তার থুঁতনির নিচে রাখলেন, আরেক হাত মাথার পেছনে রাখলেন। তারপর তাঁর মাথাকে নিচু করে তার মুখে মুখ রেখে চুমু খেলেন এবং বললেন, হুসাইন আমার হতে, আমি হুসাইন হতে।❜
    __________(ইবনে মাজা : ১৪৪)


    ❏ —খেলার সুযোগ দেওয়াঃ

    শিশুদেরকে সঠিক প্রক্রিয়ায় গড়ে তুলতে প্রয়োজনমতো খেলাধুলার সুযোগ দেওয়া। হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ❛আমি নবী (সা.)-এর ঘরে পুতুল নিয়ে খেলা করতাম। আমার কয়েকজন বান্ধবী আমার সঙ্গে খেলত। নবীজি ঘরে এলে তারা লজ্জায় লুকিয়ে যেত। তখন তিনি একজন একজন করে তাদেরকে আমার কাছে পাঠাতেন। তারা আবার আমার সঙ্গে খেলতে শুরু করত।❜
    __________(বুখারি : ৬১৩০)



    ❏ —আনন্দদানের জন্য কাঁধে উঠানোঃ

    নবী (সা.) শিশুদেরকে আনন্দ দিতে কখনও কখনও কাঁধে চড়িয়েছেন। আবু কাতাদা (রা.) বলেন, ❛একদিন আমরা মসজিদে বসা। নবীজী তাঁর কন্যা যায়নাব (রা.)-এর মেয়ে উমামাকে কাঁধে করে আমাদের সামনে এলেন। এরপর নামাজের ইমামতি শুরু করলেন। উমামা তখনও নবীজীর কাঁধে। রুকু করার সময় তাকে নামিয়ে রাখেন। সিজদা থেকে উঠে আবার উঠিয়ে নেন। পুরো নামাজ তিনি এভাবেই আদায় করলেন।❜
    __________(বুখারি : ৫৯৯৬)

    অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়, হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ❛এক সফরে নবী (সা.) মক্কায় আগমন করলে আব্দুল মুত্তালিব গোত্রের শিশুরা নবীজীকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে এলো। তখন তিনি আব্বাসের দুই ছেলে কুসাম ও ফজলকে তাঁর সঙ্গে বাহনে উঠিয়ে নিলেন। একজনকে বসালেন তাঁর সামনে, অন্যজনকে পেছনে।❜
    ___________(বুখারি : ১৭৯৮)



    ❏ —ভুলভ্রান্তিতে বিরক্ত না হওয়াঃ

    আনাস (রা.) বলেন, ❛আমি ১০ বছর নবী (সা.)-এর খেদমত করেছি। তিনি কোনো নির্দেশ দিলে যদি অবহেলা করতাম বা জিনিসটা নষ্ট করে ফেলতাম তা হলে তিনি আমাকে তিরস্কার করতেন না। তার পরিবারের কেউ কিছু বললে তিনি বলতেন, তাকে কিছু বলো না; তাকদিরে যা আছে তা ঘটবেই।❜
    __________(মুসনাদে আহমাদ : ১৩৪১৮)

    ❏ —নির্দেশ পালনে চাপ না দেওয়াঃ

    নবী (সা.) শিশুদের কোনো নির্দেশ পালনে চাপাচাপি করতেন না। আনাস (রা.) বলেন, ❛রাসুল (সা.) ছিলেন অতি উত্তম আখলাকের অধিকারী। তিনি বলেন, একদিন তিনি আমাকে কোনো জরুরি কাজে এক জায়গায় পাঠাতে চাইলেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি যাব না; কিন্তু মনে মনে যাওয়ার নিয়ত ছিল। তো সেখানে যাওয়ার জন্য আমি রওনা হলাম। বাজারে শিশুরা খেলাধুলা করছিল। (আমি খেলা দেখতে লেগে গেলাম) হঠাৎ রাসুল (সা.) পেছন থেকে আমার ঘাড় ধরলেন! আমি তাঁর দিকে তাকালাম। দেখি তিনি হাসছেন! বললেন, প্রিয় আনাস! তুমি কি সেখানে গিয়েছিলে? বললাম, জি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এক্ষুনি আমি সেখানে যাচ্ছি।❜
    __________(মুসলিম : ২৩১০)



    ❏ —আতঙ্কিত না করাঃ

    শিশুদের মাধ্যমে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে তাদেরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা এবং তাদেরকে আতঙ্কিত না করা। হযরত আবু লায়লা (রা.) বলেন, ❛আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। হাসান বা হুসাইন নবীজির বুকে বসা। হঠাৎ দেখি সে ফিনকি দিয়ে প্রস্রাব করছে। (তাকে সরানোর জন্য) আমরা উঠলাম। তিনি বললেন, আমার ছেলেকে (নাতিকে) প্রস্রাব শেষ করতে দাও। তাকে আতঙ্কিত করো না; প্রস্রাব শেষ করতে দাও।❜
    __________(মুসনাদে আহমাদ: ১৯০৫৯)

    অন্যত্র বর্ণিত হয়, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, ❛নবী (সা.)-এর কাছে শিশুদের নিয়ে আসা হতো। তিনি তাদের জন্য বরকতের দোয়া করতেন এবং তাহনিক করতেন। (খেজুর ইত্যাদি ভালো করে চিবিয়ে শিশুর মুখে সামান্য একটু দিতেন)। একদিন এক শিশুকে তাহনিক করার জন্য তাঁর কাছে আনা হলো। তিনি শিশুটিকে কোলে বসালেন। শিশুটি তাঁর কোলে প্রস্রাব করে দিল। তখন নবীজি পানি আনিয়ে কাপড়ে পানি ঢেলে দিলেন।❜
    ___________(বুখারি : ২২২)



    ❏ —উত্তম দোয়া করাঃ

    শিশুদের জন্য নবীজি (সা.) সদাকল্যাণ কামনা করতেন। তাদের জন্য নেক দোয়া করতেন। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, ❛রাসুল (সা.)-এর কাছে মদিনার শিশুদেরকে নিয়ে আসা হতো। তিনি তাদের জন্য বরকতের দোয়া করতেন।❜
    __________(বুখারি : ৬৩৫৫)

    অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ❛তোমরা নিজেদের জন্য বদ দোয়া করো না। সন্তানদের জন্য বদ দোয়া করো না। সম্পদের ওপর বদ দোয়া করো না। কারণ এমন হতে পারে যে, আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল হওয়ার সময় তোমরা বদ দোয়া করলে আর আল্লাহ তা কবুল করে নিলেন।❜
    __________(মুসলিম : ৩০০৯)

    ➤ — আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রাসুল (সা.)-এর আখলাক গ্রহণের তাওফিক দান করুন।
    🕌দ্বীনি মজলিস🕋

  • #2
    মাশাআল্লাহ উত্তম নাসিহাহ। আল্লাহ ভাইকে জাযা খাইর দান করুন আমীন।
    আহ্ কতইনা উত্তম আদর্শ ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইসিওয়াসাল্লাম।
    আল্লাহ আমাদের সকলকে প্রিয় নবীজির আদর্শে গডে উঠার তাওফিক দান করুন আমীন।
    মুসলিম হয়ে জন্মেছি আমি ইসলাম আমার ধর্ম
    লড়বো আমি খোদার পথে এটাই আমার গর্ব।

    Comment

    Working...
    X