Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাখির মত তাওয়াক্কুল করতে হলে যা করতে হবে। সবার জন্য শিক্ষনীয় একটা লিখা।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাখির মত তাওয়াক্কুল করতে হলে যা করতে হবে। সবার জন্য শিক্ষনীয় একটা লিখা।

    রাসূল সাঃ ইরশাদ করেনঃ


    عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال: «لو أنكم كنتم توَكَّلُون على الله حق توَكُّلِهِ لرزقكم كما يرزق الطير، تَغْدُو خِمَاصَاً، وتَرُوحُ بِطَاناَ».
    [صحيح] - [رواه الترمذي وابن ماجه وأحمد]

    ‘উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ তা'আলার ওপর তাওয়াক্কুল কর তাহলে পাখিদের যেভাবে রিযিক দেন সেভাবে তোমাদেরও রিযিক দেবেন। পাখিরা সকাল বেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যা বেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে।”
    সহীহ - এটি ইবন মাজাহ বর্ণনা করেছেন।


    অনেকে মনে করে থাকেন যে,পাখির মত তাওয়াক্কুল মানে হলো ঘরে বসে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে আর আল্লাহ ঘরে রিযিক পৌছিয়ে দিবেন। হ্যাঁ আল্লাহ চাইলে কোন কষ্ট ছাড়াই রিযিক পৌছাতে পারেন।কিন্তু সাধারনত সবার ক্ষেত্রে এমন হয় না। বরং চেষ্টা প্রচেষ্টার মাঝেই মহান রব রিযিক রেখেছেন।

    এখন আমরা দেখবো কিভাবে পাখি তাওয়াক্কুল করে।
    প্রথমত তারা খুব ভোরে গুম থেকে উঠে। আপনার আমার মত নয়টা বা দশটায় ঘুম থেকে উঠে না। বরং তারা ফজরের আগেই ঘুম থেকে উঠে। তারা উঠেই রিযিকে সন্ধানে বের হয় না। কেননা খুব ভোরেতো অনেক অন্ধকার থাকে।
    তারা তখন ঘুম থেকে উঠে মহান রবকে ডাকতে থাকে। তারা ওই সময় উঠে, যে সময় মহান রব প্রথম আসমানে এসে মানুষকে ডাকেন। কিন্তু মানুষ ঘুম থেকে না উঠলেও পাখিরা ঠিকই ঘুম থেকে উঠে রবকে ডাকতে থাকে।
    মানুষতো ঠিক মত ফজরের নামাযও পড়ে না।কুরআন তেলোয়াতও করে না। কিভাবে মানুষ আল্লাহর উপর ভরসা করবে? সকাল বেলা ঘুমের মধ্যে কাটিয়ে দেয়। হাদীসে এসেছে কিয়ামতের পূর্বে সময় খুব দ্রুত যাবে।
    বর্তমানে দেখুন কোন ফাকে বছর, মাস চলে যায় মানুষ টেরও পায় না। মানুষ বলে থাকে দিন ছোট হয়ে গেছে।আসলে দিন কি ছব্বিশ ঘন্টার জায়গায় ২০ ঘন্টা হয়ে গেছে? বিষয়টা কিন্তু তা নয়। বরং সময়ের বরকত চলে গেছে। মানুষ সকাল বেলা ঘুমায়। ফলে দেখা যায় সময় আর বরকত পায় না। কিন্তু যে সকালে জাগ্রত থাকে ও ইবাদাতের মধ্য দিয়ে দিন কাটায় সে সময়ের বরকত কি জিনিস তা টের পায়। তার যেন দিন যেতেই চায় না। অনেক কাজ করার পরেও দেখা যায় এখনো নয়টা/ দশটা বাজে।

    এরপর পাখিরা সারাদিন রিযিক খুঁজে বেড়ায়। সামনে যেই রিযিক পায় সেটাই গ্রহন করে। এমন চিন্তা করে না যে,এই রিযিক খুব কম, এটা খেলে আমার পেট ভরবে না,অনেক রিযিক একসাথে পেলে সেটা গ্রহন করবো।
    অপরদিকে আমাদের চিন্তা এমনিই৷ আমদের সামনে রিযিকের অনেক দরজা খোলা থাকলেও তা গ্রহন করি না। আমরা সেটা ছোট মনে করি। তুচ্ছ মনে করি। বড় কোন রুযি রোযগারের সন্ধান করি। এমন অনেক ছেলে আছে যারা বাবার জমিতে চাষবাস করে অনেক টাকা কামাতে পারে,এতে তাদের টাকাও আয় হয় আবার শরীরটাও ঠিক থাকে । কিন্তু তারা তা করে না, বরং বিদেশ গিয়ে রোযগারের চিন্তা করে। অপরদিকে বিয়ে করার কয়দিন পর তার বউটা আরেক জনের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। রাস্তার পাশে একটা ঘর করে সেখানে বউকে রেখে বিদেশ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। অপরদিকে বউটা নিজের স্বামীর কষ্টের টাকা খায় আর যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত থাকে।
    এরপর দেখুন পাখিরা সারাদিন শুধু রুযিই করে না পাশাপাশি আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। তারা খাবার খাওয়ার সময়টাতেও যিকির করে। অপরদিকে আমরা যিকির করিই না। এটাকে অনেকে তুচ্ছ ভাবে দেখি। অথচ সকল ইবাদাতের একটা নির্ধারিত সময় ও পরিমাপ আছে এবং বিভিন্ন শর্ত আছে। যেমন নামায দিনের যে কোন সময় পড়া যায় না। আবার একদিনে ছয়ওয়াক্তও পড়া যায় না। রোযা বছরে একমাস রাখতে হয়। হজ্ব বছরে একবার তাও আবার টাকাপয়সা থাকতে হয়। কিন্তু যিকির এমন এক ইবাদাত যার কোন পরিমান বা নির্ধারিত সময় নেই, বরং সর্বদা যিকির করতে পারে এবং পবিত্র কুরআনে বেশি বেশি যিকির করতে বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ

    ﴿وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴾ [الجمعة: ١٠]

    “আল্লাহকে অধিক-রূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা জুমআ ১০ আয়াত)

    তিনি অন্যত্র বলেন,

    ﴿وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُنْ مِنَ الْغَافِلِينَ﴾ [الاعراف: ٢٠٥]

    “তোমার প্রতিপালককে মনে মনে সবিনয় ও সশঙ্কচিত্তে অনুচ্চস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ কর এবং তুমি উদাসীনদের দলভুক্ত হয়ো না।” (সূরা আ’রাফ ২০৫ আয়াত)

    যিকির সম্পর্কে বলা হয়েছে, সর্বদা যিকির করার জন্য। সবচেয়ে বড় কথা হলো পাখির মত তাওয়াক্কুল করতে হলে পাখির মত স্বচ্ছ কলব প্রয়োজন। কিন্তু যিকির না করলে কিভাবে কলব স্বচ্ছ হবে?
    হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি : ৬৪০৭, মুসলিম : ৭৭৯)।

    হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, প্রত্যেক বস্তু পরিষ্কার করার উপকরণ আছে। আর অন্তরের ময়লা পরিষ্কার করার উপকরণ হলো আল্লাহর জিকির। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব : ২/৩২৭)।

    যিকিরের কত বিশাল ফজিলত অথচ আমরা তা সম্পর্কে গাফেল। যিকির এমন এক ইবাদাত যা সকল পশু পাখি করে।

    আপনি একটু গভীরভাবে খেয়াল করলে দেখবেন,পাখিরা সারাদিন খুব আনন্দে কাটায়। তারা এমন ভাবে উড়ে, কিচিরমিচির করে যেন তাদের দুঃখ কষ্ট নেই। আসলে তারাতো সারাদিন যিকিরে দিন কাটায় আর যিকির অন্তর কে প্রশান্ত করে।
    এরপরে পাখিরা সারাদিন পেটপুরে খেয়ে সন্ধ্যায় বাসায় চলে যায় । তারা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যায়। তারা আমাদের মত রাতের পর রাত জাগ্রত থাকে না৷ তারা খুব দ্রুত ঘুমায় অপরদিকে আমরা গভীর রাতে ঘুমাতে যায়। অথচ আমরা সকাল সকাল জাগ্রত হতে চাই।আপনি সকাল সকাল উঠতে হলে পাখির মত দ্রুত ঘুমিয়ে যেতে হবে।
    পাখিরা আগামি দিনের জন্য খাবার জমা করে না। তারা প্রতিদিন পিউর খাবার খায়। ফলে তাদের রোগব্যাধীও কম হয়।

    এভাবেই পাখিরা রবের উপর তাওয়াক্কুল করে।



  • #2
    মাশা-আল্লাহ।খুব সুন্দর লিখা। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক।

    Comment


    • #3
      উত্তম নাসিহাহ,, জাঝাকাল্লাহ খায়রান ভাইসাব।
      আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তৌফিক দান করুন।
      সর্বোত্তম আমল হলো
      আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং মহান মহীয়ান
      আল্লাহর পথে জিহাদ করা।নাসায়ী,শরীফ

      Comment

      Working...
      X