গত দুই পর্বে আমরা আলোচনা করেছি যে, যতক্ষণ পৃথিবীতে কুফরের দাপট থাকবে ততক্ষণ জিহাদ ফরয। কুফরের প্রতাপ চূর্ণ করে সারা বিশ্বে তাওহিদের পতাকা উড্ডীন করা পর্যন্ত এ ফরয থেকে যাবে। সহজে বলতে গেলে বর্তমান পৃথিবীতে যতগুলো কুফরি ও তাগুতি রাষ্ট্র আছে সবগুলোকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে খেলাফতে ইসলামিয়া কায়েম করা পর্যন্ত জিহাদ ফরয।
যদি আমরা হিন্দুস্তান নিয়ে কথা বলি আমাদের সামনে মুরতাদ রাষ্ট্র আছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ। কাফের রাষ্ট্র আছে ভারত, নেপাল, বার্মা, ভুটান, শ্রীলংকা। এ সবগুলো বিজয় হয়ে ইসলামী খেলাফত কায়েম হতে হবে। যদি আরও একটু আগে বাড়ি তাহলে আছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ফিলিপাইন। আছে চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, কোরিয়া ইত্যাদি। এগুলো বিজয় হয়ে ইসলামি খেলাফত কায়েম হতে হবে। এভাবে মাশরিক থেকে মাগরিব, শিমাল থেকে জুনুব পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে আল্লাহর দ্বীন কায়েম হতে হবে। প্রচলিত ভাষায় বললে তালেবানি শাসন কায়েম হতে হবে। এর আগ পর্যন্ত জিহাদ ফরয।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
হাঁ, এটাও সম্ভব। আল্লাহর শক্তির সামনে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সুসংবাদই উম্মতকে দিয়ে গেছেন।
ইরশাদ করেন,
আরও ইরশাদ করেন,
অন্য হাদিসে এসেছে,
এখন তাহলে প্রশ্ন, আমরা এ টার্গেটে কিভাবে পৌঁছতে পারি? আমরা তো দুর্বল।
এ প্রশ্নের জওয়াবই মূলত আজকের পর্বের উদ্দেশ্য।
মূলনীতি: ফরযের পূর্বশর্তগুলোও ফরয
উসূলে ফিকহের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, যে কাজ ফরয তার পূর্বশর্তগুলোও ফরয।
ইমাম সারাখসি রহ. (৪৯০হি.) বলেন,
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
যেমন,
# নামায ফরয। তাহারাত ও সতর ঢাকা ছাড়া নামায হয় না। তাই তাহারাত অর্জন করা এবং সতর ঢাকার ব্যবস্থা করাও ফরয।
# ঋণ আদায় করা ফরয। অর্থ কড়ি না থাকলে ঋণ আদায়ের জন্য কামাই করা ফরয।
# বিবি বাচ্চার নাফাকা তথা ভরণ পোষণ ফরয। ব্যবস্থা না থাকলে কামাই করা ফরয।
# আত্মহত্যা হারাম। তাই জীবন বাঁচে পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ ফরয। ব্যবস্থা না থাকলে কামাই করা ফরয।
এসব মাসআলা শরীয়তের স্বীকৃত মাসআলা। তাই কিতাবাদি ও আইম্মায়ে কেরামের উদ্ধৃতি দিতে যাচ্ছি না। তবে এ ব্যাপারে আপনারা চাইলে ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর ‘কিতাবুল কাসব’ দেখতে পারেন। ইমাম সারাখসির শরাহসহ মাবসূতের ত্রিশ নং খণ্ডের শেষের দিকে তা সংযুক্ত আছে। শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ রহ. এর তাহকিকে তা আলাদাভাবেও ছেপেছে।
একটি সুন্দর উদাহরণ
ইমাম নাসাফি রহ. (৭১০হি.) তার ‘মানার’ কিতাবের শরাহ ‘কাশফুল আসরার’-এ (খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১১১) এর একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন। মুনীব তার গোলামকে কোনো কাজে ছাদে উঠতে বলল। ছাদে তো মই ছাড়া উঠা সম্ভব না। মই লাগানো থাকলে তো ভাল, অন্যথায় মই লাগানো গোলামের দায়িত্ব। আগে মই লাগাবে তারপর ছাদে উঠবে।
জিহাদের জন্য ই’দাদ
যখন আমরা বুঝতে পারলাম যে, জিহাদ একটি ফরয দায়িত্ব, যতদিন কুফর থাকবে ততদিন জিহাদ করতে থাকতে হবে: তখন আর এই উজরের কোনো হেতু নেই যে, আমরা দুর্বল। জিহাদ যখন ফরয তখন শক্তি অর্জনও ফরয। শক্তি ছাড়া তো আর জিহাদ করা যায় না। অতএব, উপরোক্ত মূলনীতি অনুযায়ী জিহাদের জন্য ই’দাদ করে শক্তি অর্জন করা ফরয। আল্লাহ তাআলা যে শব্দে নামায ফরয করেছেন একই শব্দে জিহাদ ফরয করেছেন। নামাযের জন্য যখন তাহারাত হাসিল করা ফরয, তখন জিহাদের জন্যও ই’দাদ করাও ফরয। অতএব, দুর্বলতার উজর গ্রহণযোগ্য নয়।
যাহোক, এ হলো মূলনীতির দাবি। বুঝানোর স্বার্থে এভাবে আলোচনায় আনা হল। নয়তো ই’দাদের আদেশ তো আল্লাহ তাআলা স্বতন্ত্রভাবে কুরআনে কারীমে দিয়েই রেখেছেন। এরপর আর দুর্বলতার বাহানা ধরে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তবে দুর্বলতার কারণে এতটুকু ছাড় পাওয়া যাবে যে, যতদিন প্রয়োজনীয় শক্তি হাসিল হচ্ছে না যুদ্ধ বিলম্ব করা যাবে। এ ব্যাপারে আমরা ইনশাআল্লাহ সামনের পর্বে আলোচনা করবো।
যদি আমরা হিন্দুস্তান নিয়ে কথা বলি আমাদের সামনে মুরতাদ রাষ্ট্র আছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ। কাফের রাষ্ট্র আছে ভারত, নেপাল, বার্মা, ভুটান, শ্রীলংকা। এ সবগুলো বিজয় হয়ে ইসলামী খেলাফত কায়েম হতে হবে। যদি আরও একটু আগে বাড়ি তাহলে আছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ফিলিপাইন। আছে চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, কোরিয়া ইত্যাদি। এগুলো বিজয় হয়ে ইসলামি খেলাফত কায়েম হতে হবে। এভাবে মাশরিক থেকে মাগরিব, শিমাল থেকে জুনুব পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে আল্লাহর দ্বীন কায়েম হতে হবে। প্রচলিত ভাষায় বললে তালেবানি শাসন কায়েম হতে হবে। এর আগ পর্যন্ত জিহাদ ফরয।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ.
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি সকল দ্বীনের উপর তা বিজয়ী করে দেন; যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। -সফ: ৯
হয়তো আপনার মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে, এটাও কি সম্ভব? পৃথিবীর প্রতিটি পরাশক্তি, প্রতিটি সুপার পাওয়ার, প্রতিটি ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যাদের দম্ভে আজ দুনিয়া কম্পমান- এরা সবাই মুসলিমদের হাতে পরাজিত হবে? সবার শক্তি-দাপট চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে ইসলামী খেলাফত কায়েম হবে? এটাও কি সম্ভব? তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যেন তিনি সকল দ্বীনের উপর তা বিজয়ী করে দেন; যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। -সফ: ৯
হাঁ, এটাও সম্ভব। আল্লাহর শক্তির সামনে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সুসংবাদই উম্মতকে দিয়ে গেছেন।
ইরশাদ করেন,
لَا يَبْقَى عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ بَيْتُ مَدَرٍ، وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ كَلِمَةَ الْإِسْلَامِ، بِعِزِّ عَزِيزٍ أَوْ ذُلِّ ذَلِيلٍ، إِمَّا يُعِزُّهُمُ اللهُ فَيَجْعَلُهُمْ مِنْ أَهْلِهَا، أَوْ يُذِلُّهُمْ فَيَدِينُونَ لَهَا. -مسند أحمد: 23814، قال المحققون: إسناده صحيح. اهـ
দুনিয়ার বুকে প্রতিটি জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে আল্লাহ তাআলা ইসলামের কালিমা প্রবেশ করাবেন। যাকে চান ইজ্জতের সাথে, যাকে চান লাঞ্ছিত করে। হয়তো ইসলামের অনুসারি বানিয়ে তাদের সম্মানীত করবেন; নয়তো (হত্যা, বন্দী ও জিযিয়ার মাধ্যমে) অপদস্ত করবেন, ফলে তারা ইসলামের (শাসনের) অধীনস্ততা গ্রহণে বাধ্য হবে। -মুসনাদে আহমাদ: ২৩৮১৪
দুনিয়ার বুকে প্রতিটি জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে আল্লাহ তাআলা ইসলামের কালিমা প্রবেশ করাবেন। যাকে চান ইজ্জতের সাথে, যাকে চান লাঞ্ছিত করে। হয়তো ইসলামের অনুসারি বানিয়ে তাদের সম্মানীত করবেন; নয়তো (হত্যা, বন্দী ও জিযিয়ার মাধ্যমে) অপদস্ত করবেন, ফলে তারা ইসলামের (শাসনের) অধীনস্ততা গ্রহণে বাধ্য হবে। -মুসনাদে আহমাদ: ২৩৮১৪
আরও ইরশাদ করেন,
لَيَبْلُغَنَّ هَذَا الْأَمْرُ مَا بَلَغَ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ، وَلَا يَتْرُكُ اللهُ بَيْتَ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ هَذَا الدِّينَ، بِعِزِّ عَزِيزٍ أَوْ بِذُلِّ ذَلِيلٍ، عِزًّا يُعِزُّ اللهُ بِهِ الْإِسْلَامَ، وَذُلًّا يُذِلُّ اللهُ بِهِ الْكُفْرَ. -مسند أحمد: 16957، قال المحققون: إسناده صحيح على شرط مسلم. اهـ
যতখানে রাত্র দিন আসে, এ দ্বীন অবশ্যই অবশ্যই সেখানে পৌঁছবে। প্রতিটি জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে আল্লাহ তাআলা এ দ্বীন প্রবেশ করাবেন। যাকে চান ইজ্জতের সাথে, যাকে চান লাঞ্ছিত করে। যে ইজ্জতের মাধ্যমে তিনি ইসলামকে সম্মানীত করবে। যে লাঞ্ছনার মাধ্যমে তিনি কুফরকে অপদস্ত করবেন। -মুসনাদে আহমাদ: ১৬৯৫৭
যতখানে রাত্র দিন আসে, এ দ্বীন অবশ্যই অবশ্যই সেখানে পৌঁছবে। প্রতিটি জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে আল্লাহ তাআলা এ দ্বীন প্রবেশ করাবেন। যাকে চান ইজ্জতের সাথে, যাকে চান লাঞ্ছিত করে। যে ইজ্জতের মাধ্যমে তিনি ইসলামকে সম্মানীত করবে। যে লাঞ্ছনার মাধ্যমে তিনি কুফরকে অপদস্ত করবেন। -মুসনাদে আহমাদ: ১৬৯৫৭
অন্য হাদিসে এসেছে,
عن أبي هريرة، أن النبيَّ -صلَّى الله عليه وسلم- قال: ليس بيني وبينه نبيٌّ -يعني عيسى ابن مريم- وإنه نازلٌ ... فيُقاتِلُ الناسَ على الإِسلامِ، فيدُقُ الصَّلِيبَ، ويقتُلُ الخِنزيرَ، ويضَعُ الجزيةَ، ويُهلِكُ اللهُ في زمانه المِلل كلَّها إلا الإِسلامَ. -مسند أحمد: 9270، سنن أبي داود: 4324، قال المحققون: حديث صحيح. اهـ
হযরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার এবং তাঁর – অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারয়াম আলাইহিস সালামের- মাঝখানে কোনো নবী নেই। আর অচিরেই তিনি যমিনে অবতরণ করবেন। ... অবতরণ করে ইসলাম গ্রহণের জন্য সকলের বিরুদ্ধে কিতাল করবেন। ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন। শুকর হত্যা করে ফেলবেন। জিযিয়ার বিধান উঠিয়ে দেবেন (ফলে মুসলমান না হলে হত্যা ব্যতীত দ্বিতীয় কোনো রাস্তা থাকবে না)। তার যামানায় আল্লাহ তাআলা একমাত্র ইসলাম ব্যতীত সকল ধর্ম নিঃশেষ করে দেবেন। -মুসনাদে আহমাদ: ৯২৭০, সুনানে আবু দাউদ: ৪৩২৪
অতএব, প্রতিটি সুপার পাওয়ারের দম্ভ চূর্ণ করে ইসলামের কালিমা উড্ডীন করা আপনি আমার ফরয দায়িত্ব। এ টার্গেটে পৌঁছা পর্যন্ত উম্মাহর কোনো মুক্তি নেই। হযরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার এবং তাঁর – অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারয়াম আলাইহিস সালামের- মাঝখানে কোনো নবী নেই। আর অচিরেই তিনি যমিনে অবতরণ করবেন। ... অবতরণ করে ইসলাম গ্রহণের জন্য সকলের বিরুদ্ধে কিতাল করবেন। ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন। শুকর হত্যা করে ফেলবেন। জিযিয়ার বিধান উঠিয়ে দেবেন (ফলে মুসলমান না হলে হত্যা ব্যতীত দ্বিতীয় কোনো রাস্তা থাকবে না)। তার যামানায় আল্লাহ তাআলা একমাত্র ইসলাম ব্যতীত সকল ধর্ম নিঃশেষ করে দেবেন। -মুসনাদে আহমাদ: ৯২৭০, সুনানে আবু দাউদ: ৪৩২৪
***
এখন তাহলে প্রশ্ন, আমরা এ টার্গেটে কিভাবে পৌঁছতে পারি? আমরা তো দুর্বল।
এ প্রশ্নের জওয়াবই মূলত আজকের পর্বের উদ্দেশ্য।
***
মূলনীতি: ফরযের পূর্বশর্তগুলোও ফরয
উসূলে ফিকহের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, যে কাজ ফরয তার পূর্বশর্তগুলোও ফরয।
ইমাম সারাখসি রহ. (৪৯০হি.) বলেন,
ما لا يتأتى إقامة الفرض إلا به يكون فرضا في نفسه. المبسوط للسرخسي (30/ 245)
যে জিনিস ছাড়া ফরয আদায় সম্ভব নয় সেটিও স্বয়ং ফরয। -মাবসূত: ৩০/২৪৫
যে জিনিস ছাড়া ফরয আদায় সম্ভব নয় সেটিও স্বয়ং ফরয। -মাবসূত: ৩০/২৪৫
ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮হি.) বলেন,
الأمر بالشيء أمر بلوازمه وما لا يتم الواجب إلا به فهو واجب. مجموع الفتاوى: 10/ 531
কোনো কাজের আদেশ দেয়া হলে তা সম্পাদনের জন্য আবশ্যকীয় বিষয়গুলোরও আদেশ দেয়া হয়। আর যে জিনিস ব্যতীত ফরয আদায় সম্ভব নয় তাও ফরয। -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১০/৫৩১
কোনো কাজের আদেশ দেয়া হলে তা সম্পাদনের জন্য আবশ্যকীয় বিষয়গুলোরও আদেশ দেয়া হয়। আর যে জিনিস ব্যতীত ফরয আদায় সম্ভব নয় তাও ফরয। -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১০/৫৩১
যেমন,
# নামায ফরয। তাহারাত ও সতর ঢাকা ছাড়া নামায হয় না। তাই তাহারাত অর্জন করা এবং সতর ঢাকার ব্যবস্থা করাও ফরয।
# ঋণ আদায় করা ফরয। অর্থ কড়ি না থাকলে ঋণ আদায়ের জন্য কামাই করা ফরয।
# বিবি বাচ্চার নাফাকা তথা ভরণ পোষণ ফরয। ব্যবস্থা না থাকলে কামাই করা ফরয।
# আত্মহত্যা হারাম। তাই জীবন বাঁচে পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ ফরয। ব্যবস্থা না থাকলে কামাই করা ফরয।
এসব মাসআলা শরীয়তের স্বীকৃত মাসআলা। তাই কিতাবাদি ও আইম্মায়ে কেরামের উদ্ধৃতি দিতে যাচ্ছি না। তবে এ ব্যাপারে আপনারা চাইলে ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর ‘কিতাবুল কাসব’ দেখতে পারেন। ইমাম সারাখসির শরাহসহ মাবসূতের ত্রিশ নং খণ্ডের শেষের দিকে তা সংযুক্ত আছে। শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ রহ. এর তাহকিকে তা আলাদাভাবেও ছেপেছে।
একটি সুন্দর উদাহরণ
ইমাম নাসাফি রহ. (৭১০হি.) তার ‘মানার’ কিতাবের শরাহ ‘কাশফুল আসরার’-এ (খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১১১) এর একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন। মুনীব তার গোলামকে কোনো কাজে ছাদে উঠতে বলল। ছাদে তো মই ছাড়া উঠা সম্ভব না। মই লাগানো থাকলে তো ভাল, অন্যথায় মই লাগানো গোলামের দায়িত্ব। আগে মই লাগাবে তারপর ছাদে উঠবে।
জিহাদের জন্য ই’দাদ
যখন আমরা বুঝতে পারলাম যে, জিহাদ একটি ফরয দায়িত্ব, যতদিন কুফর থাকবে ততদিন জিহাদ করতে থাকতে হবে: তখন আর এই উজরের কোনো হেতু নেই যে, আমরা দুর্বল। জিহাদ যখন ফরয তখন শক্তি অর্জনও ফরয। শক্তি ছাড়া তো আর জিহাদ করা যায় না। অতএব, উপরোক্ত মূলনীতি অনুযায়ী জিহাদের জন্য ই’দাদ করে শক্তি অর্জন করা ফরয। আল্লাহ তাআলা যে শব্দে নামায ফরয করেছেন একই শব্দে জিহাদ ফরয করেছেন। নামাযের জন্য যখন তাহারাত হাসিল করা ফরয, তখন জিহাদের জন্যও ই’দাদ করাও ফরয। অতএব, দুর্বলতার উজর গ্রহণযোগ্য নয়।
যাহোক, এ হলো মূলনীতির দাবি। বুঝানোর স্বার্থে এভাবে আলোচনায় আনা হল। নয়তো ই’দাদের আদেশ তো আল্লাহ তাআলা স্বতন্ত্রভাবে কুরআনে কারীমে দিয়েই রেখেছেন। এরপর আর দুর্বলতার বাহানা ধরে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তবে দুর্বলতার কারণে এতটুকু ছাড় পাওয়া যাবে যে, যতদিন প্রয়োজনীয় শক্তি হাসিল হচ্ছে না যুদ্ধ বিলম্ব করা যাবে। এ ব্যাপারে আমরা ইনশাআল্লাহ সামনের পর্বে আলোচনা করবো।
Comment