বাবরী চুল
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল যেমন ছিল!
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল যেমন ছিল!
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আরব পুরুষদের রীতি ছিল লম্বা চুল রাখা। রাসুল নিজেও লম্বা চুল রাখতেন। তার চুল কখনো কানের মাঝামাঝি, কানের লতি কিংবা দুই কাঁধ পর্যন্ত লম্বা থাকতো। তার চুল কাঁধ ছাড়িয়ে আরো লম্বা হত বলে জানা যায়। [১]
কখনো এতদূর অবধি লম্বা হত যে তা বিনুনি/গুচ্ছ করে রাখতেন। তার চাচাতো বোন উম্মে হানী রা. বলেন,
"(মক্কা বিজয়ের সময়) রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন মক্কায় আগমন করলেন তখন তার চুলে চারটি গুচ্ছ বা বিনুনি ছিল" [২]
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, "তার চুল যখন লম্বা হতো তখন তিনি তা চারটি গুচ্ছে বিভক্ত রাখতেন" [৩]
*আরবীতে চুল জড়িয়ে বা বিনুনি করাকে "গাদীরাহ" বলে। হাদীসে "আরবায়ু গাদায়ের" চারটি গুচ্ছ ভাষাটি ব্যাবহার হয়েছে।
ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, "অধিকাংশ সময়ে তার চুল এরূপ কাঁধের কাছাকাছি থাকত। কখনো তা আরো লম্বা হতো এবং ঝুলন্ত গুচ্ছে পরিনত হতো। তিনি সেগুলোকে বিনুনি বানিয়ে রাখতেন" তবে কাঁধ অবধি থাকা তার স্বাভাবিকতা ছিল।[৪]
হজ্জ বা উমরা ব্যতীত তিনি কখনো মাথার চুল মুন্ডন করেছেন বলে জানা যায় না।[৫]
সেজন্যই এ নিয়ে মতভেদ আছে মুন্ডন করা যাবে কি যাবে না। কোনো কোনো ফকীহ হজ্জ উমরা ছাড়া মাথা মুন্ডন কে মাকরুহ বলেছেন। দু কারনে তাদের মতের পক্ষে এ প্রমান পেশ করেন। প্রথমত, রাসুলুল্লাহ সাঃ নিজে কখনোই হজ্জ উমরা ছাড়া মাথা মুন্ডন করেন নি। দ্বিতীয়ত - বিভিন্ন হাদীস থেকে মাথা মুন্ডন আপত্তিকর বলে জানা যায়। সাহাবীগন ছোট চুল রাখতেন। নেড়া পরিহার করতেন।
জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "হজ্জে বা উমরা ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না" (দূর্বল সনদ)[৬]
*দূর্বল হলেও বেশ কয়েক সনদে হাদীসটি উল্লেখ আছে। (তবে হাদীসের বর্ননা সূত্রের কেউ মিথ্যায় অভিযুক্ত নন)। আবু নু'আইমের বর্ণনায় হাদিসটি হলো,
"হজ্জে বা উমরা ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না। এছাড়া তা সৃষ্টি বিকৃতি করা বলে গণ্য হবে।"[৭]
অন্য হাদীসে জাবির রা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন,
"যে ব্যক্তি (মাথার চুল) মুন্ডন করে, (পোশাক পরিচ্ছদ) ছিড়ে ফেলে বা চিৎকার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সহীহ সনদ) [৮]
আবূ মূসা আশআরী (রা) থেকে একাধিক গ্রহনযোগ্য সনদে এ অর্থে আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
( তবে এ হাদীসটি মূলত বিপদ মূসিবতে অধৈর্য্য হয়ে এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে)
দুবা'য়ি নামক এক নিকৃষ্ট অপরাধী ব্যক্তিকে হযরত উমার (রা) শাস্তি প্রদান করেন এবং বলেন,
"তোমাকে যদি মাথা মুন্ডিত অবস্থায় পেতাম তবে আমি যাতে তোমার চক্ষুদ্বয় রয়েছে তা (তোমার মস্তক) তরবারীর আঘাতে কেটে ফেলতাম।" মানে শাস্তি অধিক হতো। [১০]
এ থেকেও বোঝা যায়, সাহাবীগণ মাথা মুন্ডনের অভ্যাস কে আপত্তিকর বলে মনে করতেন। ইমাম আহমাদ ইবনু হানবাল বলেন, প্রথম যুগের সালাফগন মাথা মুন্ডন করা মাকরুহ বলে মনে করতেন।[১০] যদিও তা হারাম বা গুনাহের কাজ ভাবা যাবেনা।
মোল্লা আলী কারী বলেন, "চুল দীর্ঘ হওয়া কোনো নিন্দিত বিষয় নয়। কাঁধ ছাপিয়ে পরিমাপের চেয়ে বড় হলে চুল কেটে ফেলতে হবে বলেও কোনো নির্দেশ নেই।" [১১] সুতরাং পুরুষের চুল কাঁধের নীচে চলে গেছে মানেই তিনি গুনাহ করছেন এটি দ্বীনি জ্ঞানে অজ্ঞদের ভাবনা। তবে এটি দারা অহংকার প্রকাশ যেনো না হয়।
তবে মনে রাখতে হবে- বড় চুল রাখা পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। অনেক ফকিহ দাড়ি বড় হবার আগে চুল বড় করতে বারন করেছেন (তাশাব্বুহ মায়ান নিসওয়ান)। ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। তবে মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথায় বড় কোথাও ছোট এভাবে কাটা ইসলাম সম্মত নয়।
কাতাদাহ (রা) থেকে বর্নিত - তাঁর কাধ ছাপিয়ে বিশাল চুল নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের কাছে জিজ্ঞাসা করলে রাসূল সা.তাঁকে একদিন পর একদিন চুল আঁচড়াতে এবং পরিপাটি করে রাখতে নির্দেশ দেন। [১২]
চুলে তেল দেয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিথি করাও সুন্নাহ।[১৩]
সুতরাং যাদের দারা সম্ভব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের দায়েমী এ চুলের সুন্নাতের আমল করতে পারি। কেউ বড় চুল রাখলে, কানের লতি ছাপিয়ে নীচে গেলেই না বুঝে আপত্তিকর বাজে মন্তব্য না করি। আল্লাহ আমাদের বুঝ দান করুন।
আরো বিস্তারিত জানতে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহি রচিত "ইসলামে পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা" বইটি পড়ে নিতে পারেন।
রেফারেন্স:
১-তিরমিযী, আশ শামাইল আল মুহাম্মাদিয়া/৪৭-৫০, আবু দাউদ, আস সুনান ৪/৮১,
আলবানী মুখতাসারুশ শামাইল/ ৩৪-৩৬
২-তিরমিযী, আস সুনান ৪/২৪৬, আবু দাউদ, আস সুনান ৪/৮৩, ইবনু মাজাহ, আস সুনান ২/১১৯৯, ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৫৭২, ১০/৩৬০, আলবানী, মুখাতাসারুশ শামাইল/৩৫
৩-ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৭০
৪-ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ১০/৩৬০
৫-ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৬৭, শামী সীরাহ শামিয়াহ ৭/৩৪৯-৩৫০
৬- তাবারানী, আল মু'জামুল আউসাত ৯/১৮০
৭-আবু নু'আইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৮/১৩৯
৮-বুখারী,আস সহীহ ৬/২৭৪৮
৯-ইবনু কুদামা, আল মুগনী ১/৬৫
১০-মোল্লা আলী কারী, মিরকাত ৮/২৪০
১১-মিরকাত ৮/২৪০
১২-নাসায়ী - ৮/১৮৪।
১৩- মুয়াত্তা মালিক- ২/৯৪৯।
*************
প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় দু’টি ফতোয়া সংযুক্ত করে দেয়া হলো।
(১)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদাই বাবরী রেখেছেন। তাই বাবরী রাখা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত।
বাবরী তিনি কিভাবে রাখতেন?
এ বিষয়ে তিন ধরণের বর্ণনা এসেছে। যথা-
১
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল।
২
লিম্মা তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর বড় রাখা।
৩
জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত আলম্বিত চুল।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4185)
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৫}
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوْقَ الْوَفْرَةِ، وَدُونَالْجُمَّةِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث–
4187)
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল ঘাড়ের উপর এবং কানের নীচ পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৭}
عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ: «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ: «لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4183)
হযরত বারা বিন আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে কান পর্যন্ত বাবরীধারী, লাল ইয়ামেনী চাদরের আবরণে রাসূল সাঃ থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ রহঃ অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন যে, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩}
হজ্ব শেষে চুল কামানো, আর অন্য সময় উপরোক্ত তিন পদ্ধতির বাবরি রাখাই রাসূল সাঃ থেকে প্রমাণিত। আর কোন পদ্ধতির চুল রাখার কোন বর্ণনা রাসূল সাঃ থেকে প্রমানিত নয়।
তাই বাবরি রাখাই রাসূল সাঃ থেকে প্রমাণিত সুন্নত। অন্য কোন পদ্ধতি রাসূল সাঃ থেকে প্রমাণিত সুন্নত বলা যাবে না।
হ্যাঁ, হযরত আলী রাঃ সহ আরো কিছু সাহাবী থেকে চুল কামিয়ে ফেলা প্রমাণিত। যা চুল কামানোকে জায়েজ প্রমাণিত করে। কিন্তু এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত বলা যাবে না। সাহাবায়ে কেরামের সুন্নত বলা যাবে।
চুল রাখার ক্ষেত্রে একটি নিষিদ্ধ পদ্ধতি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। সেটি হল, মাথার এক পাশের চুল কামিয়ে ফেলা, আরেকদিকের চুলকে রেখে দেয়া। এ পদ্ধতি নিষিদ্ধ তথা হারাম। তাই এ পদ্ধতিতে চুল রাখা জায়েজ নয়।
আর কোন পদ্ধতির জায়েজ বা নাজায়েজের কোন কথা পরিস্কার ভাষায় হাদীসে বর্ণিত হয়নি। বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়। তাই উপরোক্ত নিষিদ্ধ পদ্ধতি বাদ দিয়ে যেকোন পদ্ধতিতে চুল রাখা জায়েজ। যেমন সমস্ত মাথার চুল সমান করে কাটা। বা সামনে খানিক বড় পিছনে ছোট। বা একদিকে বড় আরেক দিকে ছোট ইত্যাদি পদ্ধতি যতক্ষণ না কোন বিধর্মীর অনুসরণে করা না হবে ততক্ষণ তা নাজায়েজ বলার কোন সুযোগ নেই।
তবে এক্ষেত্রে অন্য সকল বিষয়ের মত চুল রাখার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, তা হল, চুলের কাটিং যেন কোন ফাসিক বা কাফির তথা বিধর্মী কোন ব্যক্তি বা দলের সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ না হয়। যদি কোন কাফের বা ফাসিকের সাথে সাদৃশ্য রেখে চুল রাখা হয় তাহলে তা জায়েজ হবে না।
যেমন কোন বিধর্মী খেলোয়ারের হেয়ার স্টাইল নকল করে তার মত চুলে স্টাইল করা ইত্যাদি।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ القَزَعِ»، وَالْقَزَعُ: أَنْ يُحْلَقَ رَأْسُ الصَّبِيِّ فَيُتْرَكَ بَعْضُ شَعْرِهِ (سنن ابى داود، رقم الحديث-4193)
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুযা করতে নিষেধ করেছেন। “কুযা” বলা হয়, বাচ্চার মাথার একাংশ কামিয়ে ফেলা, আরেকাংশের চুল না কামানো। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৩}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَتْ لِي ذُؤَابَةٌ، فَقَالَتْ لِي أُمِّي: لَا أَجُزُّهَا، «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمُدُّهَا، وَيَأْخُذُ بِهَا» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4197)
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মাথায় চুলের খোঁপা ছিল। আমার মা বলেন, আমি তা কাটবো না। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ধরে লম্বা করতেন এবং কাছে টেনে নিতেন। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৭}
***********
(২)
পুরুষদের জন্য বাবরী চুল রাখা সুন্নাত। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাধারণ অভ্যাস ছিল বাবরী চুল রাখা। তা তিন পদ্ধতিতে হতে পারে। এক. উভয় কাঁধ বরাবর। দুই. ঘাড়ের মাঝামাঝি। তিন. উভয় কানের লতি পর্যন্ত। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩-৪১৮৭)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মুণ্ডাতেন। এছাড়া তিনি কখনো মাথা মুণ্ডাননি। এ সময় তিনি মাথা মুণ্ডানোকে চুল ছোট করে রাখার উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। এজন্য ইমাম তাহতাবী (রহ.) বলেন, মাথা ন্যাড়া করাও সুন্নাত । আর কিছু অংশ মুণ্ডানো ও কিছু রেখে দেয়া নিষেধ। মুণ্ডাতে ইচ্ছে না করলে চুল ছোট রাখা যেতে পারে।
আলেমগণ তিন তরিকায় বাবরী রাখাকে সুন্নাত আর মাথার চুল ছোট করে রাখা বা মুণ্ডানোকে জায়েয বলেন। এছাড়া সামনে বা পেছনে লম্বা রাখা অথবা ডানপাশে বা বামপাশে ছোট-বড় করে রাখাকে জায়েয মনে করেন না। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল, চুলের যে কাটিং ভিন্ন কোন জাতি সত্তার অনুকরণে হবে, তাই নাজায়েযের মধ্যে শামিল হবে। (মাহমুদিয়া – ২৭/৪৬০, মিশকাত- ৩৮১, ২৩২, ৩৮০)
মেয়েদের জন্য চুল মুণ্ডন করা বা কেটে ছেলেদের মতো করে ফেলা নিষেধ। আবার এতো বড় রাখা উচিত নয় যে, গোছলের সময় পানি পৌঁছানো কষ্টকর হয়। বরং পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখা ভালো। সেমতে কোমরের নিচের অংশ কেটে ফেলা জায়েয হবে। অবশ্য না কাটলেও কোনো সমস্যা নেই।
(তিরমিজি শরিফ ১/১৮২, মুসলিম শরিফ ১/১৪৮)
************
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন
Collected
Comment