যা কিছু সিয়াম ভঙ্গ করে তা থেকে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরত থাকার নাম হল সওম, বহু বচনে সিয়াম। সিয়ামভঙ্গকারী সকল প্রকার বিষয় থেকে বিরত না থাকলে সিয়াম আদায় হবে না। যে সকল কাজ সিয়াম ভঙ্গ করে তা সাধারণত সাত প্রকার।
প্রথম : সহবাস :
সিয়াম অবস্থায় সহবাস করলে সিয়াম বাতিল হয়ে যায়। সিয়াম ফরজ হোক কিংবা নফল। সহবাসের মাধ্যমে সিয়াম বাতিল করা হলে তার কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করা জরুরি।
কীভাবে সিয়ামের কাফফারা আদায় করা যায় ?
(১) মুসলিম দাস বা দাসী মুক্ত করে দেয়া। বর্তমানে যেহেতু দাস প্রথা নেই। ইসলাম ধাপে ধাপে দাস প্রথাকে উচ্ছেদ করেছে তাই দাস মুক্ত করে কাফফারা আদায় করার সুযোগ নেই।
(২) দু মাস বিরতিহীন সিয়াম পালন করা। এ বিরতিহীন সিয়াম পালন করতে গিয়ে সংগত কারণ ব্যতীত যদি বিরতি দেয়া হয় তবে আবার নতুন করে দু মাস সিয়াম পালন করতে হবে।
(৩) যদি বিরতি হীন ভাবে দু মাস সিয়াম পালনের সামর্থ্য না রাখে তবে ষাট জন অভাবী মানুষকে খাদ্য দান করতে হবে। প্রত্যেকের খাদ্য হবে এক ফিতরার সম পরিমাণ।
দ্বিতীয় : ইচ্ছাকরে বীর্যপাত করা:
যেমন কাউকে চুমো দেয়ার মাধ্যমে বা স্পর্শ করার কারণে কিংবা হস্ত মৈথুন ইত্যাদি কারণে বীর্যপাত ঘটানো হলে। এ সকল কারণে সিয়াম বাতিল হয়ে যায়। তবে এ সকল কারণে কামভাব থাকা সত্ত্বেও যদি বীর্যপাত না হয় তবে সিয়াম বাতিল হবে না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন ও স্পর্শ করতেন। তবে তিনি নিজেকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ ছিলেন। যদি চুমো ও স্পর্শ দ্বারা বীর্যপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে এ সকল কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত জরুরি। ইসলামি শরিয়তের একটা মূলনীতি হল যা কিছু অন্যায় বা হারাম কাজের দিকে নিয়ে যায় বা তার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে তা থেকে দূরে থাকা ওয়াজিব। এ কারণে সিয়াম পালনকারীর জন্য কুলি করা নাকে পানি দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সে কুলি করার সময় গড়গড়া করবে না। স্বপ্নদোষের কারণে বীর্যপাত হলে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। কারণ এটা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হয়ে গেছে। যা কিছু অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে যায় আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন। এমনিভাবে নিদ্রা মগ্ন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়। কাজেই নিদ্রাকালে যা কিছু ঘটে তার জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। এটা আমাদের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি রহমত। কেউ কোন বিষয় কল্পনা করার ফলে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় এতে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن الله تجاوز عن أمتي ما حدثت به أنفسها ما لم تعمل أو تتكلم. متفق عيه
‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার উম্মত যা কল্পনা করে তা ক্ষমা করে দেন। যদি না সে কাজ বা কথার দ্বারা তা বাস্তবায়ন করে।’ বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম
তৃতীয় : পানাহার করা:
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :—
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ . البقرة : ১৭৮
‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কালো রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর।’ নাক দিয়ে ঔষধ সেবন করা পানাহার করার মতই সিয়াম বাতিল করে দেয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
وبالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما (رواه أبو داود)
‘তোমরা ওজুর সময় নাকে পানি দিতে একটু অতিরিক্ত করবে তবে সিয়াম অবস্থায় নয়।’ বর্ণনায় : আবু দাউদ
এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হল সিয়াম অবস্থায় নাকের ভিতরে এমনভাবে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে যাতে পানি ভিতরে চলে যায়। অতএব নাক দিয়ে কিছু ভিতরে প্রবেশ করালে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
চতুর্থ: যা কিছু পানাহারের বিকল্প, তা সিয়াম ভঙ্গ করে এটা দুভাবে হতে পারে:
(১) সিয়াম পালনকারী শরীরে রক্ত গ্রহণ করলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কারণ পানাহার দ্বারা রক্ত তৈরি হয়। তাই রক্তগ্রহণ পানাহারের একটি বিকল্প।
(২) খাবারের বিকল্প হিসেবে স্যালাইন বা ইনজেকশন গ্রহণ করা। তবে যে সকল ইনজেকশন ও স্যালাইন খাবারের বিকল্প নয় তা গ্রহণ করতে বাধা নেই।
পঞ্চম : হাজামা বা শিঙ্গা লাগানো:
যে শিঙ্গা লাগায় ও যাকে শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমন হাদিসে এসেছে—
أفطر الهاجم والمحجوم (رواه أحمد)
‘শিঙ্গা যে লাগাল ও যাকে লাগানো হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ বর্ণনায়: আহমদ
শিঙ্গা লাগালে শরীরে এর প্রভাব পড়ে। এটা রক্ত দানের মতই। তাই সিয়াম পালনকারীর জন্য শিঙ্গা ব্যবহার জায়েজ নয়। তবে প্রয়োজন হলে সিয়াম ভঙ্গ করে শিঙ্গা ব্যবহার করবে পরে সিয়াম কাজা করবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে কিংবা দাঁত ওঠালে অথবা আহত হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
ষষ্ঠ : ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা:
যদি কেউ ইচ্ছা করে বমি করে তবে তার সিয়াম পালন বাতিল হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:—
من ذرعه القيء فليس عليه شيء ومن استقاء عمدا فليقض. رواه مسلم
‘যার বমি হল তার কোন ক্ষতি নেই। আর যে নিজের ইচ্ছায় বমি করল সে সিয়াম কাজা করবে।’ বর্ণনায় : মুসলিম
তবে বমি আসলে তা আটকে রাখার চেষ্টা করবে না।
সপ্তম : মহিলাদের মাসিক ও প্রসূতিবস্থা আরম্ভ হলে:
যদি সিয়াম অবস্থায় মাসিকের রক্ত দেখা দেয় তবে সিয়াম ভেঙে যাবে। এমনিভাবে প্রসবজনিত রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
যে সকল বিষয় সিয়াম ভঙ্গ করে না ঃ
সুরমা ব্যবহার, চোখে বা কানে ঔষধ ব্যবহার করলে সিয়াম নষ্ট হয় না, যদিও তার স্বাদ অনুভূত হয়। কোন কিছুর স্বাদ অনুভূত হলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। সিয়াম ভঙ্গ হওয়ার সম্পর্ক হল পানাহারের সাথে। কোন কিছুর স্বাদ পরীক্ষা করার কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয় না যদি না তা গিলে ফেলে। কোন কিছুর ঘ্রাণ নিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। তবে ধুম জাতীয় ঘ্রাণ সিয়াম অবস্থায় গ্রহণ করবে না। যেমন আগরবাতি বা চন্দন কাঠের ধুয়া কিংবা ধুপ গ্রহণ করবে না। কুলি করলে বা নাকে পানি দিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না তবে গড়গড়া করবে না বা নাকের খুব ভিতরে পানি দেবে না, বা নাকে পানি দিয়ে উপরে টান দেবে না। মেসওয়াক বা ব্রাশ করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না। সিয়াম অবস্থায় দিনের যে কোন সময় মেসওয়াক কিংবা ব্রাশ করতে দোষ নেই। এমনি ভাবে দাঁতের মাজন বা টুথপেস্ট ব্যবহার করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না তবে তা যেন গলার ভিতরে প্রবেশ না করে তার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সিয়াম অবস্থায় দুপুরের পর মেসওয়াক করা উচিত নয় বলে যে কথা প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নেই। গরম থেকে বাঁচতে পানি গায়ে দেয়া বা ভিজা কাপড় গায়ে জড়াতে কোন দোষ নেই। এত সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
প্রথম : সহবাস :
সিয়াম অবস্থায় সহবাস করলে সিয়াম বাতিল হয়ে যায়। সিয়াম ফরজ হোক কিংবা নফল। সহবাসের মাধ্যমে সিয়াম বাতিল করা হলে তার কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করা জরুরি।
কীভাবে সিয়ামের কাফফারা আদায় করা যায় ?
(১) মুসলিম দাস বা দাসী মুক্ত করে দেয়া। বর্তমানে যেহেতু দাস প্রথা নেই। ইসলাম ধাপে ধাপে দাস প্রথাকে উচ্ছেদ করেছে তাই দাস মুক্ত করে কাফফারা আদায় করার সুযোগ নেই।
(২) দু মাস বিরতিহীন সিয়াম পালন করা। এ বিরতিহীন সিয়াম পালন করতে গিয়ে সংগত কারণ ব্যতীত যদি বিরতি দেয়া হয় তবে আবার নতুন করে দু মাস সিয়াম পালন করতে হবে।
(৩) যদি বিরতি হীন ভাবে দু মাস সিয়াম পালনের সামর্থ্য না রাখে তবে ষাট জন অভাবী মানুষকে খাদ্য দান করতে হবে। প্রত্যেকের খাদ্য হবে এক ফিতরার সম পরিমাণ।
দ্বিতীয় : ইচ্ছাকরে বীর্যপাত করা:
যেমন কাউকে চুমো দেয়ার মাধ্যমে বা স্পর্শ করার কারণে কিংবা হস্ত মৈথুন ইত্যাদি কারণে বীর্যপাত ঘটানো হলে। এ সকল কারণে সিয়াম বাতিল হয়ে যায়। তবে এ সকল কারণে কামভাব থাকা সত্ত্বেও যদি বীর্যপাত না হয় তবে সিয়াম বাতিল হবে না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন ও স্পর্শ করতেন। তবে তিনি নিজেকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ ছিলেন। যদি চুমো ও স্পর্শ দ্বারা বীর্যপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে এ সকল কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত জরুরি। ইসলামি শরিয়তের একটা মূলনীতি হল যা কিছু অন্যায় বা হারাম কাজের দিকে নিয়ে যায় বা তার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে তা থেকে দূরে থাকা ওয়াজিব। এ কারণে সিয়াম পালনকারীর জন্য কুলি করা নাকে পানি দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সে কুলি করার সময় গড়গড়া করবে না। স্বপ্নদোষের কারণে বীর্যপাত হলে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। কারণ এটা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হয়ে গেছে। যা কিছু অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে যায় আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন। এমনিভাবে নিদ্রা মগ্ন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়। কাজেই নিদ্রাকালে যা কিছু ঘটে তার জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। এটা আমাদের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি রহমত। কেউ কোন বিষয় কল্পনা করার ফলে যদি বীর্যপাত হয়ে যায় এতে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن الله تجاوز عن أمتي ما حدثت به أنفسها ما لم تعمل أو تتكلم. متفق عيه
‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার উম্মত যা কল্পনা করে তা ক্ষমা করে দেন। যদি না সে কাজ বা কথার দ্বারা তা বাস্তবায়ন করে।’ বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম
তৃতীয় : পানাহার করা:
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :—
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ . البقرة : ১৭৮
‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কালো রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর।’ নাক দিয়ে ঔষধ সেবন করা পানাহার করার মতই সিয়াম বাতিল করে দেয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
وبالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما (رواه أبو داود)
‘তোমরা ওজুর সময় নাকে পানি দিতে একটু অতিরিক্ত করবে তবে সিয়াম অবস্থায় নয়।’ বর্ণনায় : আবু দাউদ
এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হল সিয়াম অবস্থায় নাকের ভিতরে এমনভাবে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে যাতে পানি ভিতরে চলে যায়। অতএব নাক দিয়ে কিছু ভিতরে প্রবেশ করালে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
চতুর্থ: যা কিছু পানাহারের বিকল্প, তা সিয়াম ভঙ্গ করে এটা দুভাবে হতে পারে:
(১) সিয়াম পালনকারী শরীরে রক্ত গ্রহণ করলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কারণ পানাহার দ্বারা রক্ত তৈরি হয়। তাই রক্তগ্রহণ পানাহারের একটি বিকল্প।
(২) খাবারের বিকল্প হিসেবে স্যালাইন বা ইনজেকশন গ্রহণ করা। তবে যে সকল ইনজেকশন ও স্যালাইন খাবারের বিকল্প নয় তা গ্রহণ করতে বাধা নেই।
পঞ্চম : হাজামা বা শিঙ্গা লাগানো:
যে শিঙ্গা লাগায় ও যাকে শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমন হাদিসে এসেছে—
أفطر الهاجم والمحجوم (رواه أحمد)
‘শিঙ্গা যে লাগাল ও যাকে লাগানো হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ বর্ণনায়: আহমদ
শিঙ্গা লাগালে শরীরে এর প্রভাব পড়ে। এটা রক্ত দানের মতই। তাই সিয়াম পালনকারীর জন্য শিঙ্গা ব্যবহার জায়েজ নয়। তবে প্রয়োজন হলে সিয়াম ভঙ্গ করে শিঙ্গা ব্যবহার করবে পরে সিয়াম কাজা করবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে কিংবা দাঁত ওঠালে অথবা আহত হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
ষষ্ঠ : ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা:
যদি কেউ ইচ্ছা করে বমি করে তবে তার সিয়াম পালন বাতিল হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:—
من ذرعه القيء فليس عليه شيء ومن استقاء عمدا فليقض. رواه مسلم
‘যার বমি হল তার কোন ক্ষতি নেই। আর যে নিজের ইচ্ছায় বমি করল সে সিয়াম কাজা করবে।’ বর্ণনায় : মুসলিম
তবে বমি আসলে তা আটকে রাখার চেষ্টা করবে না।
সপ্তম : মহিলাদের মাসিক ও প্রসূতিবস্থা আরম্ভ হলে:
যদি সিয়াম অবস্থায় মাসিকের রক্ত দেখা দেয় তবে সিয়াম ভেঙে যাবে। এমনিভাবে প্রসবজনিত রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
যে সকল বিষয় সিয়াম ভঙ্গ করে না ঃ
সুরমা ব্যবহার, চোখে বা কানে ঔষধ ব্যবহার করলে সিয়াম নষ্ট হয় না, যদিও তার স্বাদ অনুভূত হয়। কোন কিছুর স্বাদ অনুভূত হলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। সিয়াম ভঙ্গ হওয়ার সম্পর্ক হল পানাহারের সাথে। কোন কিছুর স্বাদ পরীক্ষা করার কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয় না যদি না তা গিলে ফেলে। কোন কিছুর ঘ্রাণ নিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। তবে ধুম জাতীয় ঘ্রাণ সিয়াম অবস্থায় গ্রহণ করবে না। যেমন আগরবাতি বা চন্দন কাঠের ধুয়া কিংবা ধুপ গ্রহণ করবে না। কুলি করলে বা নাকে পানি দিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না তবে গড়গড়া করবে না বা নাকের খুব ভিতরে পানি দেবে না, বা নাকে পানি দিয়ে উপরে টান দেবে না। মেসওয়াক বা ব্রাশ করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না। সিয়াম অবস্থায় দিনের যে কোন সময় মেসওয়াক কিংবা ব্রাশ করতে দোষ নেই। এমনি ভাবে দাঁতের মাজন বা টুথপেস্ট ব্যবহার করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না তবে তা যেন গলার ভিতরে প্রবেশ না করে তার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সিয়াম অবস্থায় দুপুরের পর মেসওয়াক করা উচিত নয় বলে যে কথা প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নেই। গরম থেকে বাঁচতে পানি গায়ে দেয়া বা ভিজা কাপড় গায়ে জড়াতে কোন দোষ নেই। এত সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
Comment