দিনটি ছিলো ১৯৮৩ সালের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি। আসামের একটি ছোট শহর নেলি।ভারত সরকারের সহযোগীতায় দা,বর্শা,বল্লম,বন্দুক,তির-ধনুক,লাঠি,মশাল,তলোয়ার নিয়ে এখানকার বাংগালী মুসলমানদের ১৬ টি গ্রাম পরিকল্পিতভাবে ঘিরে ফেলে অসমিয়রা। তারপর শুরু হয় ইতিহাসের জঘন্যতম, নারকীয়,ভয়ংকর মুসলিম গণহত্যা। ৬ ঘন্টা যাবৎ বর্বরতায় হত্যা করা হয় তিন হাজারেরও বেশি মুসলিমকে, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের। উদ্দেশ্য মুসলমানদের আগামী প্রজন্ম ধ্বংস ও রুদ্ধ করা। হাজার হাজার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করে এই জানোয়রেরা।মাঠের মধ্যে পড়ে থাকা হাজার হাজার ছোট শিশুদের লাশের স্তুপ দেখে নেলির আকাশ বাতাশ হয়েছিলো প্রকম্পিত। এই নরপশুরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় মুসলিমদের ১৬ টি গ্রাম।পুলিশ এবং প্রশাসনের সামনেই ঘটে এসব।পুলিশ থেকে শুরু করে সরকারি দলের নেতা ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পর্যন্ত আগেই জানতে পেরেছিল এই গণহত্যার খবর।ঘটনার তিনদিন আগে কাছের থানা থেকে মেসেজ উপর মহলে যায়,”One thousand Assamese villagers are getting ready to attack with deadly weapons.” কিন্তু এই আগাম মেসেজ পেয়েও পুলিশ,প্রশাসন,সরকারি দলের নেতা কোনপ্রকার পদক্ষেপ না নিয়ে, ছিল নির্বিকার।এমনকি বিভৎস এই গণহত্যা চলাকালীন সময়েও তারা কোনপ্রকার বাধাই দেয়নি।আজ পর্যন্ত এই নৃশংস গণহত্যার বিচার বা শাস্তি দেওয়া দূরে থাক, কাউকে দোষী সাব্যস্ত পর্যন্ত করা হয়নি। নারকীয় এই গণহত্যার পর ৬৮৮ মামলা করা হলেও তা আর চলতে দেয়া হয়নি। এতো সবকিছুর প্রধান কারণ এই যে, এই মুসলিম গণহত্যার পিছনে ভারত সরকারও জড়িত ছিল। এই গণহত্যার কারণ ছিলো এই যে,শতাব্দী কাল ধরে যে সব বাংগালী আসামে বসবাস করে আসছে,যারা জঙ্গলাবৃত আসামের জংগল পরিষ্কার করে বাসযোগ্য করেছিল, করেছিল চাষাবাদের ব্যবস্থা এবং তা করতে গিয়ে হাজারে হাজার প্রাণ হারিয়েছিল হিংস্র জন্তুর আক্রমণে এবং মশার কামড়ে,যাদের কঠোর পরিশ্রমে আসাম পরিষ্কার হয়ে উদ্বৃত্ত এলাকা হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে এবং পরিণত হয় শস্য ভাণ্ডারে,পরবর্তীতে তাদেরকেই বিদেশী তকমা দিয়ে এসব মুসলিমকে আসাম থেকে বিতাড়িত করতে আন্দোলন চলতে থাকে যার নাম”মুসলিম খেদাও”। কুখ্যাত নেলির মত মুসলিমরা আর কত গণহত্যার বলি হবে???
[ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]
[ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহীত]
Comment