মানুষের ঈমানের পরিক্ষা হয় দুঃখ-কষ্ট ও মুসিবতের সময়। তখন সে নিজে যেমন নিজের অবস্থাটা উপলব্ধি করতে পারে। তেমনি অপরেও আন্দাজ করতে পারে যে,এই পথে সে কতখানি অবিচল থাকতে সমক্ষ। স্বাভাবিক অবস্থায় বহু লোক সম্পর্কেই এটা অবুমান করা যায় না যে, উদ্দেশ্যের প্রতি স্বাভাবিক ভালোবাসা ও জীবন পণ করার সংকল্পে তারা বাস্তবিকই কতোটা প্রস্তুত, বরং কখনো কখনো তারা নিজেরাই নিজেদের সম্পর্কে একটা ধোঁকায় পড়ে থাকে।কিন্তু যখন কোনো সংকটকাল আসে, তখন আসল ও মেকীর পার্থক্যটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। খন্দক যুদ্ধ এই কাজটিই করেছে। মদিনার মুসলমানদের দলে এক বিরাট সংখ্যক মুনাফিক ও মেকী ঈমানদার ঢুকে পড়েছিল। তাদের সত্যিকার পরিচয়টা সাধারণ মুসলমানদের সামনে উদ্ধাটন করার প্রয়োজন ছিল। তাই সংকটের মধ্যেমে তাদের মুখোশটি খসে পড়লো।ক্রমাগত পরিখা খনন করা, খানা-পিনা ও আরাম আয়েশ ত্যাগ করে রাত দিন একাকার করে দেয়া একটি বিরাট বাহিনীর মোকাবেলার জন্য জীবন হাতে নিয়ে তৈরী থাকা, সর্বোপরি বিশ-বাইশ দিন পর্যন্ত ক্রমাগত ভীত ও শংকার মধ্যে রাতের ঘুম ও দিনের বিশ্রাম হারাম করে দেয়া কোনো সহজ কাজ ছিলো না। যাদের দিলে সাচ্চা ঈমানের অভাব ছিলো,তারা এই সংকটের মোকাবেলা করতে পারলো না। তাদের অনেকেই বরং বলতে লাগলোঃ- রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বিজয় ও সাহায্যের ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু এখন তো দেখছি হাওয়া ঘুরে যাচ্ছে। আমরা বুঝতে পেরেছি। আল্লাহ ও রাসূল আমাদের কাছে যে ওয়াদা করিছিলেন তা নিছক একটি ধোঁকা মাত্র। ( আহযাব- ১৩) কিছু লোক আবার নানারকম বাহানা তামাশা করে ফিরছিলো। তারা আপন ঘর-বাড়ি হেফাজতের বাহানায় ময়দান থেকে সরে পড়লো। পক্ষান্তরে আল্লাহ যে সব বান্দাহ সাচ্চা ঈমানের অধিকারী ছিলো, তারা এ অবস্থায় সতন্ত্রঃভূমিকা গ্রহন করলো।তারা শত্রু সৈন্যদেরকে এগিয়ে আসত দেখেই বলতে লাগলোঃ ঠিক ঠিক এমনি অবস্থার কথাই আল্লাহ এবং রাসূল আমাদেরকে আগেই জানিয়ে ছিলেন, আল্লাহ ও রাসূল তো এরই ওয়াদা করেছিলেন আমাদের কাছে। আল্লাহ ও রাসূল তো সত্য কথায় বলেছেন।এই অবস্থায় তাদের ভেতর ঈমানের শক্তি আরো বৃদ্ধি পেলো এবং তারা অধিকতর আনুগত্য ও ফর্মাবরদারির জন্য প্রস্তুত হলো ( আহযাব)
📕 রাসূল সাঃ এর বিপ্লবী জীবন
Comment