إن الحمد لله , نحمده و نستعينه و نستغفره , و نعوذ بالله من شرور أنفسنا و من سيأت أعمالنا . من يهده الله فلا مضل له . و بعد
আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, আমাদের ভাইয়েরা বিভিন্ন বই অনুবাদ/পিডিএফ থেকে টেক্সট বের করে বিভিন্ন সাইটে পাবলিশ করে থাকেন, কিন্তু বড় হওয়ার কারণে হয়তো অনেকের জন্যই সেগুলো পড়া সম্ভব হয় না। তাই আমরা এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে একটি বই থেকে কিছু কিছু করে পোস্ট করবো ইনশা আল্লাহ। যাতে করে আমাদের সবার জন্য পড়া সহজ হয়ে যায়।
তো প্রথমেই আমরা দারুল ইরফান থেকে প্রকাশিত শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা বিন লাদেন রহ. এর বই “কা’ব বিন মালেক রাযিঃ এর ঘটনা থেকে শিক্ষা” থেকে পোস্ট করা শুরু করবো ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই উদ্যোগকে সফল করুন এবং আমাদের সকলকে এর থেকে উপকৃত হওয়ার তাউফীক দান করুন, আমীন।
হযরত কা‘ব ইবনে মালিক রাযি. বর্ণিত হাদীসের শিক্ষা
পর্ব-০১
পর্ব-০১
সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলারই জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি কেবল তাঁরই কাছে সাহায্য চাই এবং তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমরা নিজেদের নফসের যাবতীয় অনিষ্ট এবং নিজেদের আমলসমূহের সকল খারাবী থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করি। যাকে আল্লাহ হেদায়েত দেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারেনা এবং যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন পথ প্রদর্শনকারী থাকে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা এবং রাসূল।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلا تَمُوتُنَّ إِلا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ
‘হে মুমিন গণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণ কারী না হয়ে কোন অবস্থায় মৃত্যু বরণ কর না’ [1]
উম্মাহর বর্তমান বেদনাময় চিত্র
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে - মুসলিম উম্মাহর বর্তমান দুরবস্থা। সকলেই জানেন যে, কাফেরদের আগ্রাসন, তাগুতের কর্তৃত্ব এবং পবিত্র ভূমিগুলোর উপর তাদের দখলদারিত্বের ফলে এ উম্মাহ আজ বিপদগ্রস্ত। ফিলিস্তিনের উপর নাসারা তারপর ইহুদীদের দখলদারিত্ব আট দশকের বেশী সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। এমনিভাবে আমেরিকার নেতৃত্বে পবিত্র ভূমি মক্কা মদিনার দেশে ক্রুসেডারদের দখলদারিত্বের দশ বছরের (শায়েখ যখন আলোচনা করেছিলেন তখন কার কথা) অধিককাল অতিবাহিত হয়ে গেছে! لا حولَ ولا قوَّةَ إلَّا باللهِ
এতসব সীমাহীন মুসীবত ও বিপদ-আপদ সত্ত্বেও মানুষ এখনো পর্যন্ত উদাসীন হয়ে আছে এবং দ্বীনের সাহায্যের জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সুতরাং আমরা আল্লাহরই কাছে ফরিয়াদ করি আর শক্তি ও সামর্থ্যের মালিক তো শুধু আল্লাহ তাআলাই।
অপরদিকে অপব্যাখ্যাকারীর সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে। যারা অসংখ্য মনগড়া দলীল দিয়ে জিহাদ ছেড়ে বসে থাকা বৈধ করে নিয়েছে। ফলস্বরূপ, সত্য দ্বীনের কটাক্ষ করা হচ্ছে এবং দয়াময় রহমানের শরীয়াহকে জীবনাচার থেকে দূর করে দেয়া হয়েছে। বান্দাদের উপর তাদের রবের জীবন-বিধান কোথাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মানুষের জীবনাচার শরীয়াহর বিধান থেকে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ লাঞ্ছনা ও অপমানকে দূর করার ক্ষেত্রে নবী কারীম সা-এর. মানহাজ ও কর্মপদ্ধতি থেকে হাজার মাইল দূরে পড়ে রয়েছে।
সাহাবায়ে কেরামগণের আদর্শই মুক্তির পথ
সুতরাং দ্বীন বিজয়ের সঠিক কর্মপদ্ধতি বুঝার সর্বোত্তম উপায় হল, আমরা আমাদের আসলাফদের বরকতময় যুগের স্মৃতিগুলো আলোচনা করবো এবং দেখবো যে, সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর জীবনাচার কেমন ছিল? তাহলে ইনশাআল্লাহ সত্য মিথ্যা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
হযরত কা‘ব বিন মালিক রাযি. এর শিক্ষণীয় ঘটনা
আমি সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর পূণ্যময় সীরাতের মাঝে গভীর ভাবে লক্ষ্য করেছি। তখন এ বিষয়ে দৃষ্টান্ত হিসাবে হযরত কা‘ব বিন মালিক রাযি. এর হাদিসকে অধিক সুস্পষ্ট পেয়েছি। এ হাদিসটি সহীহাইন (বুখারী ও মুসলিম) ছাড়াও হাদিসের অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। এ সুদীর্ঘ হাদিসে এই মহান সাহাবী রাযি. নিজের মানবীয় স্বভাব ও দুর্বলতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। মিথ্যা কসমকারীদের মত কোন ধরণের অনর্থক ও বানোয়াট কাহিনীর আশ্রয় নেন নি। সুতরাং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ক্রোধ সেসব বানোয়াট ও মিথ্যা প্রলাপকারীর উপরই পতিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে এমন কঠোর শব্দ ব্যবহার করেছেন যা অন্য কারো ব্যাপারে ব্যবহার করেন নি।
আসুন! নিজের নফসের চিকিৎসা করি
আসুন আমরা সত্য ও স্পষ্ট ভাষণের মূর্ত প্রতীক এ শব্দগুলো একটু দেখি। তাহলে আমরা সেসব লোকদের স্বভাব প্রকৃতি বুঝতে পারব যারা জিহাদ ছেড়ে বসে আছে। সাথে সাথে আত্মসংশোধনের চেষ্টা করতে পারব এবং মুজাহিদীন, আলেম-উলামা ও নিজেদেরকে উপদেশ দিতে পারব। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি যে, তিনি যেন আমাদেরকে এর উপর সর্বোত্তম আমলের তাওফীক দান করেন!
[1] সূরা আলে-ইমরান: ১০২
আরও পড়ুন
Comment