দারুল ইরফান কর্তৃক প্রকাশিত
কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.
এর থেকে
পর্ব-৭
================================================== ===============================
কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.
এর থেকে
পর্ব-৭
================================================== ===============================
সত্য পথের একটি বড় বাঁধা সামাজিক চাপ
হযরত কা‘ব রাযি. বলেন যে, ‘যখন আমি রাসূলের কাছ থেকে বের হলাম তখন আমার গোত্র বনু সালামার কিছু লোক এসে আমাকে তিরস্কার করতে লাগল।’তারা তাঁকে এ বলে তিরস্কার করছিল, তুমি ভুল স্বীকার করতে গেলে কেন? যদি তুমি কোন ওজর পেশ করতে তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর রাসূলের ক্ষমা প্রার্থনা করাই যথেষ্ট হয়ে যেত।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে ক্রমাগত তিরস্কার করছিল, এমনকি এক পর্যায়ে আমি ইরাদা করে ফেললাম যে, দ্বিতীয় বার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে নিজের পিছনের কথাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করব।’
চিন্তা করুন! মানবীয় আত্মার এই স্বভাবজাত দুর্বলতা একজন সাহাবীর এখানেও স্থান করে নিয়েছে। সমাজ, পরিবার-পরিজন এবং আশ-পাশের চাপ এত কঠিন হয়ে থাকে যে, কখনো কখনো সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর মত নির্বাচিত ব্যক্তিগণও সাময়িক ভাবে এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। সুতরাং ভাবা যেতে পারে যে, বর্তমানে এ চাপ কত কঠিন হবে যখন পরিস্থিতি একেবারে পাল্টে গেছে। লোকদের অধিকাংশই জিহাদ থেকে পশ্চাতে বসে আছে। তবে এ পরিস্থিতিতেও একটি দল এমন আছে যাদেরকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাঁর রাহে জিহাদের তাওফিক দান করেছেন। এটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলার দয়া ও অনুগ্রহ। আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, তিনি আমাদের অবিচলতা দান করুন এবং এই নিয়ামত দানে সৌভাগ্যমণ্ডিত করুন। এমনকি যখন আমরা আমাদের মালিকের সাথে মিলিত হবো তখন তিনি আমাদের প্রতি যেন সন্তুষ্ট থাকেন।
হযরত কা‘ব রাযি. এর অবশিষ্ট দুই সাথীর আচরণ
হযরত কা‘ব রাযি. বলেন, অতঃপর আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, অন্য কারো সাথেও কি এমন আচরণ হয়েছে যা আমার সাথে হয়েছে?
তখন তারা বলল, ‘হ্যাঁ! তোমার সাথে আরও দুজন লোক রয়েছে। তারাও তেমনি বলেছে যা তুমি বলেছ, ফলে তাদের তা-ই বলা হয়েছে যা তোমাকে বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা দু’জন মুরারা ইবনে রাবী রাযি. এবং হিলাল ইবনে উমাইয়া রাযি.। যারা সত্যবাদী মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং বদর যুদ্ধে শরীক ছিলেন। এটা শুনে আমি প্রশান্তি লাভ করলাম এবং আমি আমার পূর্বের অবস্থানে অবিচল রইলাম।’
শুধুমাত্র একটি যুদ্ধে না যাওয়ার কারণে সম্পর্ক ছিন্ন
অতঃপর সম্পর্ক ছিন্ন এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার নির্দেশও এসে গেল। শুধু একটিবার দ্বীনের সাহায্য ত্যাগ করার কারণে। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য সমগ্র পৃথিবী সম্পূর্ণ পাল্টে গেল, এটা আর সেই পৃথিবী থাকল না যাকে আমি চিনতাম। এবং আমার নিজ সত্ত্বা পর্যন্ত আমার জন্য অপরিচিত হয়ে গেল।’
আল্লাহর বান্দারা! একটু ভাবুন! এই জিহাদ পরিত্যাগ করার জন্য কে তাঁর থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করছে? মানবকুল সর্দার, রাসূলুল্লাহ সাঃ যদি কারো প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যান তাহলে আসমান জমিনের মালিকও তার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে যান। এটা কত গুরুতর ব্যাপার!
আরও পড়ুন
Comment