Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০১ || কাব বিন মালিক (রাঃ) এর ঘটনা থেকে শিক্ষা || শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ. || পর্ব- ০৮

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০১ || কাব বিন মালিক (রাঃ) এর ঘটনা থেকে শিক্ষা || শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ. || পর্ব- ০৮


    দারুল ইরফান কর্তৃক প্রকাশিত
    কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
    শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.

    এর থেকে
    পর্ব-

    ================================================== ===============================



    জনবল বৃদ্ধি নয়, ফরজ আদায়ই কাম্য

    ত্রিশ হাজারের বাহিনী থেকে মাত্র তিনজন পশ্চাতে থেকে যাওয়ায় কি জনবলের দিক থেকে কোন পার্থক্য সৃষ্টি করে? কিন্তু কথা আসলে অন্তরাত্মার, প্রকৃত ব্যাপার ঈমানের! এ অন্তর কিভাবে দ্বীনের সাহায্য ছেড়ে বসে থাকতে প্রস্তুত হয়ে গেল? তাদের পিছনে থেকে যাওয়া বাহিনীতে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটা কোন বিষয় নয়।

    প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ তাআলা আপনার উপর একটি অতি গুরুত্ব পূর্ণ আমানত এবং ফরজ বিধান আরোপ করেছেন যা আদায় করা আপনার অবশ্য কর্তব্য।

    সুতরাং তাঁর থেকে সম্পর্ক ছিন্নের নির্দেশ এসে গেল এবং পৃথিবী তার জন্য পাল্টে গেল, এমনকি আপন সত্ত্বাও তাঁর কাছে অপরিচিত হয়ে গেল।

    তিনি বলেন, ‘আমার থেকে যখন মুসলমানদের সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারটি দীর্ঘ হয়ে গেল তখন গাসসানের বাদশাহর পক্ষ থেকে এক দূত আমার কাছে এলো।’

    আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, গাসসানবাসীরা কাইলা বংশোদ্ভূত, বনী আউস, খাজরাজ এবং তাদের মাঝে বংশীয় সম্পর্ক ছিল। কারণ, তাদের মা এক ও অভিন্ন ছিল। সুতরাং গাসসানবাসীদের পর্যন্ত সংবাদ পৌঁছে গেলে, তাদের বাদশাহ এই সংবাদ পাঠাল, ‘আপনি আমাদের কাছে চলে আসুন। আমরা সম্পদ দিয়ে আপনার সহযোগিতা করব। লাঞ্ছনা ও অপমানের ভূমি ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসুন।’ তিনি বলেন, ‘কাফের মুশরিকরাও আমার ব্যাপারে ঘৃণ্য আশা করতে শুরু করেছিল।

    জিহাদ পরিত্যাগকারীদের অবস্থা এমনি হয়ে থাকে। ঘাতক শাসকবর্গ ও আমলারাও তাদের কাছে মন্দ আশা করে। দ্বীনের সাহায্য থেকে তাদেরকে আরও দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন,
    وَلا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ أَوْلِيَاءَ ثُمَّ لا تُنْصَرُونَ
    “তোমরা জালেমদের প্রতি ঝুঁকে পড় না। নতুবা তোমাদেরকে আগুন স্পর্শ করবে[1]

    তিনি বলেন, আমি গাসসান বাদশাহর সেই পত্র চুলায় নিক্ষেপ করলাম।

    ঈমান ও জিহাদের গভীর সম্পর্ক

    যখন পরিস্থিতি তাঁর উপর সংকীর্ণ হয়ে গেল সেই সময়ের কথা বলেন, আমি আমার চাচাত ভাই আবু কাতাদা রাযি. এর বাগানে দেয়াল টপকে প্রবেশ করলাম। তিনি আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিলেন। আমি তাকে বললাম, হে আবু কাতাদা! আমি তোমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, তুমি কি জানোনা যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভালবাসি?

    আল্লাহর বান্দারা! একটু ঈমান এবং জিহাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে চিন্তা করুন।
    পৃথিবী তাঁর উপর সংকীর্ণ হয়ে গেল। নিজেকে তাঁর অপরিচিত মনে হল। এখন নিজের চাচাত ভাইয়ের পক্ষ থেকেও বিমুখতা প্রদর্শন। এমনিতেই যখন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়েছেন, তখন কিভাবে সম্ভব যে, পৃথিবী তার জন্য প্রশস্ত থাকবে? কিভাবে তাঁর আত্মা নিশ্চিন্ত থাকবে?

    তিনি চাচ্ছিলেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভালবাসার ব্যাপারে নিশ্চয়তা লাভ করবেন। এজন্য তিনি আবু কাতাদা রাযি. কে বললেন, হে আবু কাতাদা! আমি তোমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, তুমি কি জানোনা, আমি আল্লাহ ও তার রাসূল সাকে. ভালবাসি?

    জিহাদ পরিত্যাগের পর ভালবাসার দাবীও সন্দেহপূর্ণ

    আল্লাহু আকবার! দ্বীনের সাহায্য ছেড়ে পশ্চাতে বসে থাকা কত বড় অপরাধ। একটু চিন্তা করুন!
    আমাদের অন্তরের নূর কি এর কারণে নয়? এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে যে, আমরা দ্বীনের সাহায্য ছেড়ে মহিলাদের সাথে বসে থাকবো। আবার এ কল্পনাও করতে থাকবো যে, আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভালবাসি? হযরত কা‘ব রাযি. বলেন, ‘তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না।’

    কেননা, সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা ছিল। সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপার এত কঠিন ছিল যে, তিনি এই ঘটনার শুরুতে বলেন, ‘আমি তাকে সালাম দিলাম কিন্তু তিনি আমার সালামের জবাব পর্যন্ত দিলেন না।’
    অথচ তিনি তাঁর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু আল্লাহর সাহায্য ত্যাগকারীর উপর শাস্তি বাস্তবায়নকারী নির্দেশকে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেনঅবশ্য এরপরে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে স্বীয় রহমত দ্বারা ঢেকে নিয়েছেন। তাদের তাওবা কবুল করেছেন এবং তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। হযরত কা‘ব রাযি. বলেন, ‘আমি তাকে দ্বিতীয় বার কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। আমি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভালবাসি? তিনি তখনও কোন জবাব দিলেন না। অতঃপর আমি তৃতীয় বার কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি জানোনা, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভালবাসি? তখন তিনি জবাব দিলেন, ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ই ভাল জানেন’ হযরত কা‘ব রাযি. বলেন যে, ‘একথা শুনে আমি সেখান থেকে ফিরে এলাম আর আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল।’

    তিনি কান্না শুরু করলেন। কারণ, মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি ঈমান এবং তাঁদের ভালবাসা। অথচ এ ব্যাপারে তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সাথীও সত্যায়ণ করতে অস্বীকার করল। তাহলে আর কি মূল্য থাকে এ জীবনের? হযরত আবু কাতাদা রাযি. হযরত কা‘ব রাযি. এর কথাকে না সত্যায়ণ করলেন না অস্বীকার করলেন। বরং বললেন, ‘আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই ভাল জানেন।’

    [1] সূরা হুদ: ১১৩


    আরও পড়ুন

    ৭ম পর্ব ------------------------------------------------------------------------ ৯ম পর্ব

    Last edited by tahsin muhammad; 07-26-2023, 08:26 PM.

  • #2
    আল্লাহু আকবার ! মনে হচ্ছে এই লেখাগুলো পড়তেই নিয়মিত ফোরামে আসা উচিত। নিজের ভিতরে কি যে এক আলোড়ন কাজ করছে বলে বুঝানো যাবে না। আলহামদুলিল্লাহ্‌

    সকল ভাইকে অনুরোধ করছি, আসুন আমরা সবাই মিলে পড়ি, নিজেদের ইসলাহ করি। প্রত্যেকে নিজের শিক্ষাগুলো কমেন্ট জানাই। তাহলে দেখা যাবে একজনের থেকে অন্যজন আরো অনেক কিছু শিখে নিতে পারবো ইনশাআল্লাহ।


    এগুলোও হোক আমাদের নিয়মিত মুজাকারা মজলিশ !

    Comment


    • #3
      মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি ঈমান এবং তাঁদের ভালবাসা।
      আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই মূল্যবান সম্পদ অর্জন করার ও তা ধরে রাখার তৌফিক দিন। আমীন

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে প্রকৃত মুহাব্বাতের দাবিদার হওয়ার ও নিফাকী থেকে বেচে থাকার তাওফীক দান করুন।

        Comment

        Working...
        X