দারুল ইরফান কর্তৃক প্রকাশিত
কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.
এর থেকে
শেষ পর্ব
==================================================
===============================
কা‘ব বিন মালেক রাযি. এর ঘটনা থেকে শিক্ষা
শায়খ আবু আব্দুল্লাহ উসামা রহ.
এর থেকে
শেষ পর্ব
==================================================
===============================
সাইয়্যেদুনা জাফর রাযি. এর কবিতা
পরিশেষে, আমি নিজেকে এবং সকল মুসলমানকে কতিপয় কবিতার মাধ্যমে উৎসাহিত করতে চাই, যাতে আমরা এই পথে পূর্ণ একাগ্রতার সাথে লেগে থাকি। সাহাবায়ে কেরাম রাযি. যুদ্ধের ময়দানে কবিতা আবৃতি করতেন। এগুলোর মাঝে হযরত জাফর রাযি. এর কয়েকটি কবিতা রয়েছে। তাঁর অন্তর এই কবিতা আবৃতি করে সেসব কিছুই দেখত যা হযরত আনাস বিন নাদার রাযি. উহুদের যুদ্ধে দেখেছেন। সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, হযরত আনাস রাযি. হযরত সাদ ইবনে মুয়াজ রাযি. কে বললেন,
واها لريح الجنة أجده دون أحد
‘হে সাদ! কি চমৎকার ....... এই তো জান্নাতের সুঘ্রাণ! আমি তা উহুদের পাদদেশ থেকে উপলব্ধি করছি।’ [1]
তিনি তখনও মদিনায়ই ছিলেন। কিন্তু ঈমানের দৃঢ়টা ছিল এমন যে, তিনি জান্নাতের সুঘ্রাণ শুকে ফেলেছেন। মুতার যুদ্ধে যখন লোকেরা যুদ্ধের রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়ল তখন তরবারির ঝন-ঝনানি এবং ধুলা-বালির অন্ধকারে হযরত জাফর রাযি. বিশ্বাসের নূরে নূরান্বিত হয়ে এই কবিতা গুলো আবৃতি করতে লাগলেন,
يا حبذا الجنة واقترابها
طيبة وبارد شرابها
والروم روم قد دنا عذابها
علي ان لاقيتها ضرابها
নয়নাভিরাম জান্নাত এবং তাঁর নৈকট্যের কথা আমি কি বলব এবং তার ঠাণ্ডা সুপেয় পানীয়ের কি বা বর্ণনা দিব
এখন রোমকদের উপর শাস্তি আপতিত হওয়ার সময় হয়ে গেছে
আমি তাদেরকে নির্ভয়ে ও নিঃসঙ্কোচে আক্রমণ করতেই থাকব অতঃপর
তাদেরকে খুঁজে খুঁজে প্রহার করতে থাকবো।
طيبة وبارد شرابها
والروم روم قد دنا عذابها
علي ان لاقيتها ضرابها
নয়নাভিরাম জান্নাত এবং তাঁর নৈকট্যের কথা আমি কি বলব এবং তার ঠাণ্ডা সুপেয় পানীয়ের কি বা বর্ণনা দিব
এখন রোমকদের উপর শাস্তি আপতিত হওয়ার সময় হয়ে গেছে
আমি তাদেরকে নির্ভয়ে ও নিঃসঙ্কোচে আক্রমণ করতেই থাকব অতঃপর
তাদেরকে খুঁজে খুঁজে প্রহার করতে থাকবো।
সাইয়্যেদুনা আসেম বিন ছাবিত রাযি. এর কবিতা
সাইয়্যেদুনা আসেম বনি ছাবিত ইবনে আকদাহ রাযি. যখন দাওয়াত ও তাবলীগের উদ্দেশ্যে হুযাইল গোত্রের শাখা বনী লাহইয়ানের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন বনু লাহইয়ানের লোকেরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। তাঁরা দশজন ছিলেন, এর বিপরীতে লাহইয়ানের লোকেরা প্রায় একশত ছিল। বনু লাহইয়ানের লোকেরা তাঁকে বলল, তোমরা নিজেদেরকে আমাদের কাছে সপে দাও,
হযরত আসেম রাযি. বললেন যে,
‘আমি নিজেকে কোন কাফেরের আশ্রয়ে দিতে পারি না।’
তারা তাঁকে জীবিত পাকড়াও করার চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু আসেম রাযি. অস্বীকার করতে থাকেন এবং কবিতা আবৃতি করতে থাকেন।
ما علتي وأنا جَلْدُ نابل * والقوس فيها وتر عنابل
تزل عن صفحتها المعابل * الموت حق والحياة باطل
إن لم أقاتلكم فأمي هابل
আমার যুদ্ধ করতে কি অন্তরায় আছে
অথচ আমি বীর বাহাদুর এবং সুদক্ষ তীরন্দাজ,
মৃত্যু সত্য এবং এই ক্ষণস্থায়ী জীবন মিথ্যা,
যদি আমি তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করি তাহলে এই জীবন কিসের জন্য?
আল্লাহ তাআলা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই সকল সাহাবীদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান!
নিজেদের পবিত্র ভূখণ্ডগুলোর আযাদীর জন্য জেগে উঠুন!
আজ আমাদের পবিত্র ভূখণ্ডগুলো ইহুদী ও খৃষ্টানরা দখল করে আছে। বস্তুত যার অন্তরে ঈমানের হালকা ঝলকও বাকী রয়েছে, এই পরিস্থিতিতে সে নিশ্চিন্তে বসে থাকতে পারে না।
আমি আমার আলোচনার সমাপ্তি টানবো ইহুদী ও খৃষ্টানদের দ্বারা বেষ্টিত বাইতুল মুকাদ্দাস এবং বাইতুল্লাহ সম্পর্কিত এই কবিতা আবৃতির মাধ্যমে,
أهالي فلسطين احتسوا أكؤس الشجى *** وجرح حجاز فيك ما عاد يضمر
وليس بنو الإسلام إلا نجائب *** لفقدك أضنتها المصيبة ضمر
ولكنهم رغم الجراح يقينهم *** بعودة أمجاد الخلافة يكبر
وقد أقسموا بالله أن جهادهم *** سيمضي ولو كسرى تحدى وقيصر
ফিলিস্তিন কবে থেকে খুনের ঢোক গিলছে হিজাযের জখম তো এখনও আমাদের হৃদয়ে লেগে রয়েছে ইসলামের প্রতিটি সন্তান আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদার প্রতীক এবং এসব জখমের চিন্তা তাদের নিদ্রা হারাম করে রেখেছে
কিন্তু জখম স্বত্বেও খিলাফার পূণঃপ্রতিষ্ঠার উপর তাদের বিশ্বাস অটল অবিচল
তারা আল্লাহর নামে শপথ করে ফেলেছে যে,
তাদের জিহাদ অব্যাহত থাকবে চাই কিছরা চোখ রাঙিয়ে তাকাক কিংবা কায়ছার মোকাবেলায় এসে যাক।
আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করি যে, তিনি যেন আমাদের শহীদদের কবুল করে নেন!
আমাদেরকে যেন তাঁর পথে নিহত হওয়ার সৌভাগ্য দান করেন যাতে তাঁর কালিমা সুউচ্চ হয়!
এই উম্মাহকে যেন হেদায়েত ও কল্যাণের এমন একটি পরিবেশ দান করেন, যেখানে তার অবাধ্যরা অপমানিত হবে এবং তার অনুগত বান্দারা হবে সম্মানিত।
যে যুগে কল্যাণের আদেশ দেয়া হবে এবং অকল্যাণ ও মন্দ থেকে বাধা দেয়া হবে! নিশ্চয়ই তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট হেদায়েত, তাকওয়া এবং দুনিয়া থেকে অমুখাপেক্ষীতার ফরিয়াদ করছি!
হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন! আমীন
اللهم صل وسلم وبارك على سيدنا محمد، و على آله و صحبه أجمعين.
و آخر دعوانا أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعالَمِين.
****************
و آخر دعوانا أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعالَمِين.
****************
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ ﴿آلعمران: ١٦٩﴾
আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না।
বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। (৩: ১৬৯)
[1] মুসলিম
আরও পড়ুন
১৪ তম পর্ব
Comment