অবশেষে মরার জন্য ইহুদিরা ফিলিস্তিনের ভূমিতে একত্রিত হয়েছে। দশা তাদেরকে ফিলিস্তিন টেনে এনেছে। পাপিষ্ঠ, অভিশপ্ত, নবীদের হত্যাকারী নরাধম ইয়াহুদের দল খায়বার ও মদিনায় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে যে ধোলাই খেয়েছিল তাতে তাদের শিক্ষা হয়নি। একরাশ ঘৃণা আর বিদ্বেষ বুকে লালন করে এরা ভেড়ার পালের মতো দিক্বিদিক পালিয়ে যায়। আর বাস্তুভিটাহীন শতসহস্র বছর ধরে রাজাদের দ্বারেদ্বারে ভিক্ষা করতে থাকে।
উদ্বাস্ত্তের মতো ঘুরতে থাকা পৃথিবীর একমাত্র যাযাবর জাতি হল ইহুদিরা। যাদেরকে যেই পায়, সেই মার দেয়। যেখানেই পায়, লাঞ্ছিত করে। কেননা, আল্লাহ তাদের কপালে লাঞ্ছনার তিলক এঁটে দিয়েছেন।
ضربت عليهم الذلة أينما ثقفوا إلا بحبل من الله و حبل من الناس
আর তাই, বিংশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত-ও এরা ছিল বিশ্বজুড়ে চরম লাঞ্ছিত ও অপমানিত। না তাদের কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল, না ছিল কোনো নিজস্ব রাজ্য, যথায় তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে। কিছুকাল আগেও কিনা যারা মুসলমানদের দরবারে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করতো। এমনকি, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকেও এরা ইউরোপে প্রচুর নিগ্রহের শিকার হয়। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের হাতে যে ধোলাই খেয়েছে তা তো বলাইবাহুল্য। তবে অবশেষে চতুরতা আর দক্ষতাবলে বিংশ শতাব্দীতে এরা বিশ্বরাজনীতির মূল মঞ্চে উঠে আসতে সক্ষম হয় এবং বৃটেন আর আমেরিকার পা ধরে জোরপূর্বক ফিলিস্তিনের ভূমিতে নিজেদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে নেয় এবং আজো পর্যন্ত আমেরিকার অর্থ-অস্ত্র-মদদে সম্পূর্ণ অমানবিকভাবে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং তাঁদের ভিটেমাটি দখল করছে।
ইহুদিদের অপরাধ—
১) দ্বীনে মুসা (আ.) থেকে মুরতাদ হয়ে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وما أولئك بالمؤمنين
"এরা মুমিন নয়”। —(মায়েদা, ৪৩) ২) কিতাবুল্লাহ তাওরাতের বিকৃতি ও গোপন করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۙ أُولَٰئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ
“নিসন্দেহে যারা আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবের অংশবিশেষ গোপন করে এবং তা বিকৃতির বিনিময়ে স্বল্পমূল্য নেয়, এরা অগ্নি ছাড়া আর কিছুতেই উদর ভরে না”। —(বাকারা, ১৭৪)৩) প্রেরিত নবীদের সঙ্গে গাদ্দারি করা।
আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ, মুসা (আ.)-কে কষ্টপ্রদান, মুসা ও হারুন (আ.)-র সঙ্গে গাদ্দারি, কাওমে সাবতের সীমালঙ্ঘন, মনমতো না হওয়াতে নবীদের মিথ্যাচার, ক্ষণে ক্ষণে শিরক ও মূর্তিপূজকদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া—সবই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন,
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُوا مَا آتَيْنَاكُم بِقُوَّةٍ وَاسْمَعُوا ۖ قَالُوا سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا
৪) আম্বিয়ায়ে কেরামকে হত্যা করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ففريقا كذبتم و فريقا تقتلون
"অতঃপর একদল নবীকে মিথ্যাচার করলে এবং অন্যদলকে প্রাণে মারলে”। —(বাকারা, ৮৭) গড়ে ডজন-ডজন নবী ও নেককারদের হত্যা করে দিনশেষে কিছুই হয়নি এমন বেশধারণকারী পাষণ্ড-নির্দয় জাতি হল ইহুদি জাতি। অভিশপ্ত!!!
৫) দ্বীনে ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
فَلَمَّا جَاءَهُم مَّا عَرَفُوا كَفَرُوا بِهِ ۚ فَلَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الْكَافِرِ
"অতপর যখনই তাদের কাছে পূর্বপরিচিত সেই কিতাব ও নবী আসল, তারা তা অস্বীকার করে বসল। আল্লাহর অভিশাপ এই সব কাফেরদের জন্য”। —(বাকারা, ৮৯) ৬) রাসূল (স.)-র প্রাণনাশের চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اذْكُرُواْ نِعْمَتَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُواْ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُم
“হে মুমিনগন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো। যখন একদল লোক তোমাদের দিকে হাত বাড়াতে সংকল্প করেছিল। অতঃপর তিনি তাদের হাত আটকে দিলেন”। —(মায়েদা, ১১) অত্র আয়াতে আল্লাহর রাসূলকে পাথর ও বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার ইঙ্গিত রয়েছে। এছাড়া যাদু প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার ঘটনা সর্বজনবিধিত।
৭) রাসূলুল্লাহ (স.)-র শানে কটুক্তি করা।
ইহুদি নারী, ইহুদি কবি ও ইহুদি নেতৃবৃন্দ কর্তৃক রাসূল (স.)-র কুৎসা রটনা। যার মধ্যে কতকের হত্যা উল্লেখযোগ্য। যেমন, কা'ব-রাফে-হুজালী, আবদুল্লাহ বিন উম্মে মাকতুমের জায়গীরদার ইহুদি নারী।
৮) মুসলমানদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এবং তাদের আকাশচুম্বী একতায় ফাটল ধরিয়ে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর পায়তারা করা।
যারমধ্যে এক ইহুদি স্বর্ণকারের নারী অপমান, আউস ও খাজরাজের মাঝে অতীত বিদ্বেষ টেনে এনে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর পায়তারা, আলী ও মুয়াবিয়া (র.)-কে গৃহযুদ্ধে জড়াতে প্রত্যক্ষ ইন্ধন উল্লেখযোগ্য।
৯) জলিলুল কদর সাহাবীদের গুপ্তহত্যা করা।
এরমধ্যে খলীফা উসমান, আলী, মুয়াবিয়া ও আমর বিন আস (র.) উল্লেখযোগ্য। যাদের মধ্যে খলীফাদ্বয় শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
১০) বিগত প্রায় দেড়সহস্র বছর ধরে পর্দার অন্তরালে ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা।
বিশেষত মুসলমানদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সামরিক, রাজনৈতিক অবনতিতে পর্দার অন্তরালে সক্রিয় থাকা।
১১) বিশ্বনবী (স.)-র লাশ চুরির মত জঘন্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া।
যদিও অনেক ইতিহাসবিদ এটির উল্লেখ করেন নি। আবার অনেকে লাশচুরিতে সংশ্লিষ্টদেরকে খৃষ্টান আখ্যায়িত করেছেন।
১৩) ইতোপূর্বে বনী উমাইয়ার খুনাখুনি এবং উসমানী সালতানাত, খাওয়ারিজম সাম্রাজ্য ও সেলজুকী সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অতিমাত্রায় যাদুবিদ্যার চর্চা করা।
যেমন, আবু ঈসা, লি মুলান, ইয়াকুব, ইসরাইল, জেভি এবং রাজকীয় যাদুকর ডেভিড রক ফেলার । এছাড়া যাদুকর বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, নিউটন, ডারউন, মেক্লে, কার্ল মার্কস, রিকার্ডো, জেং, কপারনিকাস, রুশু, কেপলার, বিকন, গ্যালিলিও, ডেন্টন, টলস্টয়, এ্যাবট সেইজ এরা সকলেই কাবালায় চরম পারদর্শী ইহুদি আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানী।
১৪) এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীন ভূখণ্ড গিলে ফেলার মধ্যদিয়ে মানবতার দুশমন দাজ্জাল আগমনের পথ সুগম করা।
ঊনিশ শতকের শেষ দশকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন আজ পুরোপুরি বাস্তবতার পোশাক পরিধান করেছে এবং বেলফোর ডিক্লারেশন, খেলাফত বিলুপ্তি, ইউএন কমিটমেন্ট, আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে আরবদের পরাজয়, আনোয়ার সাদাতের আশ্চর্য শান্তিচুক্তি, অসলো চুক্তি এবং ওয়াশিংটনের টানা মদদে গতকালের স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রায় ৭৮% ভূমি আজ ইসরায়েলের পেটে।
প্রতারক গাদ্দার ইহুদি জাতির এতোসব অপরাধের একমাত্র শাস্তি হলো তরবারির নীচে কচুকাটা হওয়া। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইহুদিদেরকে মুসলমানরা গাছ-পাথরের সাহায্যে কচুকাটা করা পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না। প্রস্তুত আছেন তো সকলে ইহুদিদের কচুকাটা করতে??? আল্লাহ আমাদের সকলকে ইহুদিদের ধরে ধরে কচুকাটা করার তাওফিক দান করুন।
Comment