বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আসসালামু আলাইকুম। দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামে আপনাকে স্বাগতম।
আপনার আসল ইমেইল এড্রেস দিয়ে এখানে আইডি খুলবেন না। আগে আসল ইমেইল আইডী দিয়ে থাকলে সেটাও পরিবর্তন করুন।
পাসওয়ার্ড ও ইমেইল এড্রেস পরিবর্তনের জন্য Settings - Edit Email and Password এ ক্লিক করুন।
আমাদের বর্তমান আইপি এড্রেসঃ https://82.221.139.185
***
বাংলা না দেখা গেলে, এখানে ক্লিক করুন
*****
ফোরামে সদস্য হতে চাইলে এখানে রেজিষ্টার করুন
*****
ফোরামের অনিওন এড্রেসঃ dawah4m4pnoir4ah.onion
*****
Announcement
Collapse
No announcement yet.
নাইন-ইলেভেনের সারাদিনে আমেরিকান হাই-কমান্ডের প্রকম্পিত টাইমলাইন
নাইন-ইলেভেনের সারাদিনে আমেরিকান হাই-কমান্ডের প্রকম্পিত টাইমলাইন
সকাল ৮ টা ৩২ বাজে। বুশ এতোক্ষণ ফ্লোরিডার কলোনি বিচ রিসোর্টে নারী ও অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছিল। দিনটা খুবই উজ্জল ছিলো।
. চিত্রঃ ফ্লোরিডার কলোনি বিচ রিসোর্ট। এটি বর্তমানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। অল্পক্ষণের মধ্যেই সে রওয়ানা দিলো নিকটস্থ একটা ইলিমেন্টারি স্কুলের উদ্দ্যেশ্যে। উদ্দেশ্য স্কুল পরিদর্শন ও সেখানকার নতুন সিলেবাসের ব্যাপারে জানা।
. চিত্রঃ ঐতিহাসিক সেই স্কুল যেখানে বসে বুশ জানতে পারে দুনিয়ার গতিপথ পরিবর্তনকারী সেই হামলার ব্যাপারে।
৮:৩২ এ আকস্মিকভাবে ফ্লাইট-১১ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর টাওয়ারে ঢুকে পড়ে।
ভিডিওঃ ফ্লাইট ইলেভেন নর্থ টাওয়ারে ঢুকে পড়ার দৃশ্য। এক ফ্রেঞ্চ ফিল্মমেকার এই ভিডিও ধারণ করে, যখন সে এক পুলিশ অফিসারকে নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরী করছিলো।
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত হানার মাত্র ১ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের মধ্যে WNYW টিভির এক সাংবাদিক প্রথমবারের মতো এই দৃশ্য ধারণ করে এবং টুইন টাওয়ারে হামলার দৃশ্য মিডিয়াতে চলে আসে। তারপরে সিএনএন, সিএনবিসি, এবিসি, এনবিএস, ফক্স, বিবিসি সবাই। মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় গোটা বিশ্বে এই সংবাদ পৌছে যায়। আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়া ও মিডলইস্ট সহ যেসব যায়গায় কম্যুনিকেশন সিস্টেম উন্নত সেসব জায়গায় ততক্ষনে টিভি চ্যানেলে তা দেখানো শুরু হয়েছে।
ভিডিওঃ টুইন টাওয়ারে হামলার প্রথম ফুটেজ। WNYW এর রিপোর্টারের ক্যামেরায়।
স্কুল পরিদর্শনে যেতে যেতেই প্রেসিডেন্ট বুশ জানতে পারলো উত্তর টাওয়ারে একটা বিমান ঢুকে পড়েছে। এটা একটা দুর্ঘটনা হতে পারে। অন্যান্য আমেরিকানরাও এটাকে দুর্ঘটনাই হিসেবে দেখছিল।
বুশ এটাকে পাত্তা দিতে চায়নি। স্কুল পরিদর্শনের দিকেই ফোকাস করলো।
৯:০৩ বাজে। গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে United Flight 175 এর একটি বিমান দক্ষিন টাওয়ারে ঢুকে পড়ে।
ভিডিওঃ সাউথ টাওয়ারে হামলার কয়েকটি ফুটেজ একত্রে
বুশ যখন ক্লাসরুমে স্টুডেন্টদের পাঠদানের দিকে ফোকাস করছিলো দ্বিতীয় হামলার কথা তখনো জানেনা। হামলার মাত্র দুই মিনিট পরে বুশের সেক্রেটারি তার কানে কানে এসে বললো, "A second plane hit the second tower, America under attack"
. চিত্রঃ বুশের সেক্রেটারি তার কানে কানে হামলার খবর জানাচ্ছে
আগামী কিছুক্ষণের জন্য বুশকে অস্থির দেখা যাবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে উঠে যায়। তাড়াহুড়ো করে পাশের একটি ক্লাসরুমে বুশ তার সিনিয়র হোয়াইট হাউস স্টাফদের সঙ্গে মিটিং করে। এরই মধ্যে টিভিতে প্রদর্শিত হচ্ছিলো হামলার দৃশ্য। সেখানে বসে কি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো। আমেরিকার বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন দিকে। ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি তখন হোয়াইট হাউসের বাঙ্কারে লুকিয়েছেন।
.চিত্রঃ স্কুলের একটি রুমে দেশের হালতের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা চলতেছে
ইতোমধ্যেই একটি বিবৃতি প্রস্তুত করা হলো। এবং স্কুলের একটি রুম থেকে বুশ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলো। বুশ টেরোটিস্ট হামলার ব্যাপারে অবগত করলো এবং জানিয়ে দিলো যে অপরাধীদের খুব দ্রুতই পাকড়াও করা হবে। এরই মধ্যে আরেকটি বিমান পেন্টাগনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলো।
ভিডিওঃ স্কুল থেকে জাতির উদ্দেশ্যে বুশের ভাষণ। (সতর্কতাঃ মহিলা উপস্থিত)
জাতির উদ্দেশ্যে ঐদিন প্রথম ভাষণ দেয়ার পরপরই বুশ রওয়ানা দিলো সারোস্টা ইনটারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। এই এয়ারপোর্টে Air Force 1 এর একটি বিমান অপেক্ষা করছিলো। এই বিমান বুশকে নিয়ে ওয়াশিংটন পৌছানোর কথা। এয়ারপোর্টে পৌছাতেই ওয়াশিংটনে পেন্টাগনে হামলার খবর পৌছালো। ৯:৩৭ এ পোন্টাগনে American Airlines Flight 77 বিমানটি হামলা করে।
ভিডিওঃ পেন্টাগনে প্লেন হামলার দৃশ্য
ভিডিওঃ সিবিসি নিউজের এর রিপোর্টে পেন্টাগন হামলার পরবর্তী দৃশ্য
বিমানে ঢুকার পরপরই বিমান চালু করে দেয়া হয়। যদিও বিমান তার রেস্টিং প্লেস থেকে রানওয়ের বামদিকে উড্ডয়ন করার কথা ছিলো, বিমান থেকে পাইলট ও নিরাপত্তারক্ষীরা দেখতে পেলো প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে একটা লোক রানওয়ের এক প্রান্তে হাতে কিছু একটা নিয়ে দাঁড়ানো। নিঃসন্দেহে এটা বোমা বা বন্দুক হবে এবং সে হয়তো মুজাহিদদের কেউ যে বিমানে প্রেসিডেন্টের ওপর হামলার জন্য ওঁৎ পেতে আছে।
পাইলট তখন বিমানকে ডানদিকে ঘুরিয়ে দিলো। আসলে ঐ লোকটা একটা ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়ানো ছিলো। আমেরিকা জুড়ে সৃষ্টি হওয়া আতঙ্ক তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির তৈরি করে। ৯ঃ৫৭ তে বিমানটি উড্ডয়ন শুরু করে।
বিমানটি একদম স্টিপ এঙ্গেলে আকাশের দিকে উড়ছিলো। বিমান সাধারণতঃ শ্যালো এঙ্গেলে আকাশে উড্ডয়ন করে যা ৪৫ ডিগ্রি এর কম হয়ে তাকে। কিন্ত স্টিপ এঙ্গেল হলো ৪৫ ডিগ্রির চেয়ে অনেক বেশী যা ইমার্জেন্সি উড্ডয়নের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। বিমান উড্ডয়নের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছিলো এই ভয় থেকে যে কি জানি যদি আশাপাশে কোনো মুজাহিদ লুকিয়ে থাকে এবং সে রকেট ফায়ার করে বসে।
এয়ারফোর্স ওয়ান এর বিমানটি খুবই শক্তিশালী। এতে রয়েছে বিলাসবহুল রুম, ফ্লাইং ওভাল অফিস, কিচেন, হাসপাতাল, অপারেশন থিয়েটার, মিসাইল প্রতিরক্ষা ও উন্নতমানে যোগাযোগ সিস্টেম। এই কারণে একে Flying Fortress(উড়ন্ত দূর্গ) বলা হয়। এটি আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
. চিত্রঃ এয়ারফোর্স ওয়ান এর ভিতরে বুশ এদিকে United Airlines Flight 93 এর বিমানটি ৮:৪২ এ নিউ জার্সি থেকে স্যান ফ্র্যান্সিসকোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছিলো। ৯:২৮ এ এটি তার দিক পরিবর্তন দিক পরিবর্তন করে এবং ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। তখনই এর মধ্যে থাকা একজন মুজাহিদ ভুলক্রমে রেডিও করে ফেলেন,
"Ladies and gentlemen: here the captain. Please sit down, keep remaining sitting. We have a bomb on board."
এই মেসেজের উদ্দেশ্য ছিলো যাত্রীদেরকে সতর্ক করা তারা যেনো লাফালাফি না করে। কিন্তু এই বার্তা চলে যায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের অফিসে। ফলে আমেরিকানরা জেনে যায় যে আরেকটি বিমান হাইজ্যাক হয়েছে এবং এটি ওয়াশিংটনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এটির পরবর্তী টার্গেট হতে পারে হোয়াইট হাউজ। এতোক্ষন যাবত এটি ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে আগাচ্ছে যেটা নিয়ে চিন্তিত আমেরিকার প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো। দ্রুতই এর ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আদেশ আসা প্রয়োজন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বুশ কিংবা সেক্রেটারি ডোনাল্ড র্যামসফেল্ড কারোই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। রামসফেল্ড পেন্টাগনে বিমান হামলায় আহতদের সহযোগীতা করা নিয়ে ব্যাস্ত। এদিকে ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি হোয়াইট হাউজের গভীরে বাঙ্কারের ভিতর লুকিয়েছেন। বুশের তো কোনো খোঁজই নেই। হাই কমান্ডের জাতির এই দুঃসময়ে জাতিকে ফেলে পালানোটা কাপুরুষতা ঠেকছিলো অনেকের কাছে।
. চিত্রঃ হোয়াইট হাউজের বাংকারের ভিতরে ডিক চেনি।
এদিকে চতুর্থ আরেকটি বিমান হাইজ্যাকের সংবাদ শুনে বুশ আকাশেই ভীত হয়ে পড়েন। তার বিমান ওয়াশিংটনের দিকে যেতে থাকলেও সেটি আসলেই ওয়াশিংটনে যাওয়া উচিত কি না এ নিয়ে ভালোই প্যানিক শুরু হয়ে যায়। হাইজ্যাক হওয়া বিমানটি যদি কোনোক্রমে এয়ারফোর্স ওয়ানকে টার্গেট করে হিট করে তাহলে এখানে শুরুতেই প্রেসিডেন্ট ডাউন হয়ে যাবে, যা আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বহিঃশত্রুর হামলায় প্রেসিডেন্ট হত্যা। এয়ারফোর্স ওয়ানের মিসাইল প্রতিরোধ সিস্টেম থাকলেও এতে সরাসরি বিমানের কলিশন ঠেকানোর প্রযুক্তি নেই।
এই ভয়ে এয়ারফোর্স ওয়ান এর বিমানটি দিক পরিবর্তন করে লুইজিয়ানার বার্কসডেল এয়ার ফোর্স বেইসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বিমানটি প্রায় ৪৫ হাজার ফুট উপরে তুলে নেয়া হয় যাতে হাইজ্যাককৃত কোনো বিমান এতে আঘাত না করতে পারে। বাইরের হুমকি প্রতিরোধ করার জন্য নিকটের এলিংটন থেকে দুটি যুদ্ধবিমান এসে যোগ দেয় তাদের যাত্রায়।
.চিত্রঃ এয়ারফোর্স ওয়ানের বিমান এদিকে হাইজ্যাককৃত United Airlines Flight 93 এর বিমানটি ওয়াশিংটনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে আতঙ্ক বাড়তে থাকে। প্রেসিডেন্ট বা প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি কারো কোনো খোঁজ না থাকায় বাঙ্কারে লুকায়িত ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির কাছে জিজ্ঞেস করা হয় কি করা যায়। ১০:১২ তে সে কোনো প্রকারের হেজিটেশন ছাড়াই বলে দেয় যে এই বিমানকে থামানোর জন্য প্রয়োজনে শুট ডাউন যেনো করা হয়। অথচ সে চিন্তা করেনি যে সে যদি বিমানে মিসাইল স্ট্রাইকের আদেশ দেয় তাহলে বুঝা যাবে যে সে এর ভিতর থাকা চল্লিশ জন আমেরিকান নাগরিকের প্রাণকে ইগনোর করছে। তাছাড়া সে মিলিটারি কমান্ড দেয়ার কোনো পারমিশন রাখে না। কারণ আমেরিকান মিলিটারি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের পরেই প্রতিরক্ষা সেক্রেটারির অবস্থান। সেক্রেটারি রামসফেল্ট তখন পেন্টাগনে।
সে ডিসিশন দেয়ার অধিকার রাখে না এবং পরবর্তীতে এটার জন্য বিচার হতে পারে তাই সে দ্রুত ১০:১৮ তে তার বুশকে ফোন দিয়ে তার অর্ডারের বিষয়টা অবহিত করে।
পরবর্তীতে ডিক চেনি এই বলে নিজেকে ডিফেন্ড করে যে এই বলে যে ৯:৪৫ এ সে নাকি বুশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলো। অথচ বুশের সেক্রেটারি অ্যারি ফ্ল্যাশার এর তাৎক্ষণিক লিখিত কল নোটে মিসাইল স্ট্রাইক করার আদেশ দেয়ার কোনো উল্ল্যেখ পাওয়া যায়নি।
অবশ্য তাদের ভাগ্য ভালো মিসাইল স্ট্রাইকের আদেশ দেয়ার দশ মিনিট আগেই ১০:০২ এ বিমানটি ক্র্যাশ করে। ৯:৫৭ তে এর বিমানের যাত্রীরা যখন জানতে পারে যে তাদের বিমান হাইজ্যাক হয়েছে তারা তখন বিদ্রোহ করে মুজাহিদদের হাত থেকে বিমান ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মুজাহিদগণ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বিমানকে রকিং(দোলানো) শুরু করেন। বিমানটি উল্টে গিয়ে ৫৬৩ মাইল পার ঘন্টা বেগে পেনসেলভেনিয়ার একটি মাঠে ক্র্যাশ করে।
.
__চিত্রঃ পেনসেলভেনিয়ায় বিধ্বস্থ ফ্লাইট ৯৩ বিমানের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহের দৃশ্য অবশেষে অনেক চড়াই উৎরাই পাড়ি দিয়ে Air Force One বিমানটি ১১:৪৫ এ বার্কসডেল এয়াফোর্স বেসে পৌছায়। সেখানে প্রেসিডেন্ট বুশ জাতির উদ্দেশ্যে তার দ্বিতীয় ভাষণ দেয়। ভিডিওতে তাকে ভীত ও প্রকম্পিত দেখা যায়।
ভিডিওঃ বার্কসডেল এয়ারবেস থেকে বুশের বক্তব্য
বক্তব্য দেয়ার দিতে দিতেই শুরু হলো আরেক বিপত্তি। সিক্রেট সার্ভিসের লোকেরা তাকে বললো এখান থেকে ওয়াশিংটনে নয়, বরং নেব্রাসকার বাঙ্কারে যেতে হবে। বুশ পড়ে গেলো লজ্জায়। তার দেশ যেখানে আক্রান্ত সেখানে পালিয়ে বাংকারে বাংকারে থাকাটা লজ্জাজনক। সে বললো যে সে ওয়াশিংটন যেতে চায়। কিন্তু সিকিউরিটি এজেন্সি তাকে নাকি যেতে দেয়নি। দুপুর ১ঃ৪৮ এ এটি নেব্রাসকার STRATCOM বাংকারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।
বাঙ্কারটি মাটি থেকে প্রায় ৪০ ফুট নিচে অবস্থিত। এটি পুরো কংক্রিটের দেয়ালে তৈরি এবং পারমাণবিক বিস্ফোরণ সহ্য করতে পারে। এর যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। আমেরিকার অনেক গভীরে এটি অবস্থিত হওয়ায় বহিঃশত্রুর জন্য এতে রিচ করা অনেক কঠিন।
ভিডিওঃ নেব্রাসকায় অবস্থিত স্ট্র্যাটকম বাংকার।
ততক্ষনে আমেরিকার আকাশ খালি। শুধুমাত্র একটি বিমান আমেরিকার আকাশে উড়ছে, সেটা হলো এয়ারফোর্স ওয়ান। ১২ঃ১৫ এর মধ্যেই সব বিমানকে আকাশ থেকে নামিয়ে নেয়া হয়েছে।
২:৫০ এ বুশের এয়ারফোর্স ওয়ান নেব্রাসকার স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড এর বাংকারে ল্যান্ড করে। সেখান থেকে বুশকে বাংকারে সরিয়ে নেয়া হয়। এখন প্রেসিডেন্ট টেরোরিস্টদের হাত থেকে নিরাপদ। তাছাড়া সারা দেশের সঙ্গে কমিউনিকেশন সহজ।
ভিডিওঃ STRATCOM বাংকারে ল্যান্ড করছে বুশ।
৪:৩৫ বাজে। ততক্ষণে আমেরিকার ওপর আক্রমণ বন্ধ হয়ে গেছে। টুইন টাওয়ার ধ্বসে পরেছিলো সকালেই। উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এবার ওয়াশিংটন যেতে হবে। তাই বুশের বিমান নেব্রাসকা থেকে এবার ওয়াশিংটনের Joint Base Andrews এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। বিমানটি অত্যন্ত কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। ভিতরে আছে সিক্রেট সার্ভিস মেম্বারদের প্রতিরক্ষা, বাইরে আছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। কোনো বিমান বা মিসাইল পৌছা কঠিন।
এরই মধ্যে এক ভয়াবহ সংবাদ এসে পৌছলো হোয়াইট হাউজে। একটি কল আসলো হোয়াইট হাউজে যেখানে বার্তা ছিলো "Angel is next"। পরবর্তী টার্গেট এঞ্জেল। এঞ্জেল হলো এয়ারফোর্স ওয়ানের কোডনেইম। তা পাবলিক জানে না। অমনি বিমানে শুরু হয়ে গেলো নতুন আতঙ্ক। নিসঃন্দেহে বিমানে টেরোরিস্টদের কোনো ইন্ট্রুডার আছে যে যেকোনো মুহুর্তে প্রেসিডেন্টের কিংবা পাইলটের উপর হামলা করতে পারে।সিক্রেট সার্ভিস সঙ্গে সঙ্গে বিমানে বুশের কক্ষের কাছে ও পাইলটের ককপিটের কাছে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করলো। তারা ল্যান্ড করার আগ পর্যন্ত থেকে গেলো।
সন্ধ্যা ৬:৪৪ এ বুশের বিমান ওয়াশিংটনে এন্ড্রুস এয়ারফোর্স বেইসে ল্যান্ড করলো। সেখান থেকে বুশকে গাড়িতে করে হোয়াইট হাউসে নিয়ে যাওয়া হলো। হোয়াইট হাউজে ওভাল অফিসে বলে বুশ এবার বক্তব্য চূড়ান্ত বক্তব্য দিলো জাতির উদ্দেশ্যে, "আজকের এই ধরণের ম্যাস মার্ডারের উদ্দেশ্য ছিলো আমাদের জাতিকে গোলমালে ফেলা এবং পিছু হটানো। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের দেশ অত্যন্ত শক্তিশালী। ... টেররিস্ট হামলা আমাদের বড় বিল্ডিংগুলোকে নাড়াতে পেরেছে। কিন্তু তা আমেরিকার ফাউন্ডেশনকে নাড়াতে পারবে না। আজকের হামলা স্টিলকে বিক্ষিপ্ত করেছে। কিন্তু আমেরিকার সংকল্পের স্টিলকে ক্ষয় করতে পারবে না।"
ভিডিওঃ সন্ধ্যায় বুশের বক্তব্য
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক দানবীয় বিজয়ীশক্তির উপর আজকের এই হামলা আগামী দিনের ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দিবে। গোটা বিশ্বে গেড়ে বসা অত্যন্ত শক্তিশালী এক সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থাকে ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষেপ করবে।
ভিডিওঃ টুইন টাওয়ার কলাপ্স করছে। এর সঙ্গে ভুপাতিত হচ্ছে আমেরিকার একাধিপত্য।
টুইন টাওয়ার হামলা, বা ৯/১১ হামলা যেই নামেই ডাকা হোকনা কেন, এই হামলা যে আল-কায়েদার মুজাহিদরাই করেছেন, তার প্রমাণসহ দুই পর্বের ভিডিও আল-কায়েদার অফিসিয়াল মিডিয়া আস-সাহাব কর্তৃক হামলার পঞ্চম বর্ষপূর্তিতে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে 'দ্যা ম্যানহাটন রেইড' নামে প্রকাশ করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার সুবিন ম্যাথিউ নামে একজন ইউটিউবে ফিজিক্সের সূত্র/মূলনীতির আলোকে থ্রিডি এনিমেশন করে দেখিয়েছেন যে কিভাবে বিমান হিট করার কারণেই টুইন টাওয়ার ধ্বসে পড়েছে। এই ভিডিওতে তিনি সকল কন্সপিরেসি থিওরির উত্তরও দিয়েছেন। আলাদা একটা ভিডিওতে তিনি বিল্ডিং নাম্বার সেভেন কিভাবে এমনি এমনি ধ্বসে পড়েছিল, তারও বিষয় তিনি সেই সময়কার নানাজনের ধারন করা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে করে দেখিয়েছেন।
এই নিয়ে তার তিনটি ভিডিও আছে ইউটিউবে- ভিডিওগুলো ইংলিশে। তবে ইউটিউবে সেটিংস থেকে সাবটাইটেল বা ক্যাপশন অন করে, অটো ট্রান্সলেট থেকে বাংলা সিলেক্ট করে সহজেই উপভোগ করতে পারেন।
প্রিয় ভিজিটর ভাইয়েরা- ৯/১১ এর ঐতিহাসিক হামলার স্মৃতিচারণে জিহাদী উলামা-মাশায়েখ এর বিভিন্ন উক্তি ও মন্তব্যগুলো আপনারা ফোরামে পোস্ট করতে পারেন ইনশা আল্লাহ
Comment