Announcement

Collapse
No announcement yet.

অভিশপ্ত ইহুদী জাতির উত্থান-পতনের গল্প; অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত || পর্ব-২ || বনী ইসরায়েলের পূর্বপুরুষ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অভিশপ্ত ইহুদী জাতির উত্থান-পতনের গল্প; অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত || পর্ব-২ || বনী ইসরায়েলের পূর্বপুরুষ

    অভিশপ্ত ইহুদী জাতির উত্থান-পতনের গল্প; অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত || পর্ব-২ || বনী ইসরায়েলের পূর্বপুরুষ




    হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। নবুওয়াতের দীপ্তিমান আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। দুনিয়া ও আসমানে তিনি খলিলুল্লাহ উপাধিতে ভূষিত। পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তি। তাঁকে বলা হয় “father of faith” বা “জাতির পিতা”। একেশ্বরবাদীর দাবিদার প্রধান তিনটি ধর্ম— ইহুদি-খ্রিস্টান-মুসলিম— সকলের কাছেই তিনি স্বীকৃত ও মাননীয়। পৃথিবীর ইতিহাসে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত লক্ষাধিক নবী-রাসূল তাঁর বংশধর। হযরত ইসহাক ও হযরত ইসমাইল আলাইহিমাস সালাম তাঁর সুযোগ্য ও সম্মানিত দুই পুত্র। বনী ইসরায়েলের সকল নবী ও রাসূল হযরত ইসহাক আলাইহিস সালামের বংশধর। আর হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের বংশধারাকে গৌরবান্বিত করেছেন সকল নবীদের সর্দার রাসূলে আরাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম। নবী ইউসুফের পিতা নবী ইয়াকূব ছিলেন নবী ইসহাকের সন্তান। নবী ইয়াকূবের আরেক নাম ইসরায়েল, যার অর্থ আব্দুল্লাহ বা আল্লাহর বান্দা। আলাইহিমুস সালাম। তাঁর সন্তান ছিল ১২ জন। এদের থেকেই পরবর্তী সময়ে ১২টি গোত্রের উদ্ভব ঘটে। ইতিহাসে যারা “বনী ইসরায়েল” নামে প্রসিদ্ধ। বনী ইসরায়েলের সবাই কিন্তু ইহুদী নয়। কেননা, খ্রিস্টানরাও মূলত বনী ইসরায়েল। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী হওয়ার কারণে তারা খ্রিস্টান নাম ধারণ করে। হযরত ইয়াকূব আলাইহিস সালামের ১২ জন সন্তানের নামে ১২টি গোত্র ছিল, যাদের মধ্যে চতুর্থ সন্তানের নাম ইয়াহুদা (বা ইয়াহুযা) হওয়ায় তার গোত্রের নাম হয় ইয়াহুদি। কালক্রমে বাকি গোত্রগুলোর নাম মুছে গিয়ে সবার নাম পড়ে যায় ইসরায়েলি। কিন্তু বর্তমানে ইসরায়েলি আর ইহুদি ভিন্ন কিছু থাকেনি; বরং ইসরায়েলিরা ইয়াহুদিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে সবাই ইয়াহুদি হয়ে যায়।

    (এক) হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সংক্ষিপ্ত জীবনী দিয়েই আমরা আমাদের এই সিরিজের সূচনা করছি।

    হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সংক্ষিপ্ত জীবনী:

    হযরত নূহ আলাইহিস সালামের সময়কার প্লাবনের ১ হাজার ৮১ বছর পর ইরাকের বাবেল শহরের এক মূর্তিপূজকের ঘরে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিল আজর।

    (দুই) সেসময় ইরাকের বাবেলে নমরূদ নামক এক জালেম বাদশার বাদশাহী ছিল।

    (তিন) তার বসবাস ছিল ইরাকের বাবেল শহরে। {১}

    নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকেই হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নিজ সম্প্রদায়কে একত্ববাদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন। তাদের উপাস্যদের অক্ষমতা তাদের সামনে স্পষ্ট করে তুলতে থাকেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
    ثُمَّ نُكِسُوا عَلَى رُءُوسِهِمْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هَؤُلَاءِ يَنْطِقُونَ (65) قَالَ أَفَتَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكُمْ شَيْئًا وَلَا يَضُرُّكُمْ (66) أُفٍّ لَكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَفَلَا تَعْقِلُونَ (67)
    এরপর এদের (কাফেরদের) মস্তক অবনত হয়ে গেল এবং তারা বলল: ‘(হে ইবরাহীম) তুমি তো জানই যে, এরা (মূর্তিরা) কথা বলে না’। তিনি বললেন, তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত কর যা তোমাদের কোনো উপকারও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না? {২}

    একত্ববাদের দাওয়াত থেকে তিনি আপন পিতাকেও মাহরূম করেননি। নিজের পিতাকেও তিনি অনবরত একত্ববাদের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা। তাঁর দাওয়াত গ্রহণ না করে আপন পিতাসহ সবাই তাঁর ঘোর শত্রুতে পরিণত হয়ে যায়। স্বয়ং পিতার পক্ষ থেকে হুমকি নেমে আসে: “হে ইবরাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছো? যদি তুমি নিবৃত্ত না হও তবে আমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে তোমাকে হত্যা করব। তুমি চিরদিনের জন্য আমার থেকে দূর হয়ে যাও”। {৩}

    হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম হুমকি-ধমকিতে একত্ববাদের দাওয়াত থেকে দমে যাবার পাত্র ছিলেন না। তিনি বরং সবকিছুকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন উপায়ে হকের দাওয়াত অব্যাহত রাখলেন। একদিন কৌশলে তাদের মূর্তিশালায় গিয়ে মূর্তিগুলো ভেঙে আসলেন। তাদেরকে বুঝালেন, তোমাদের এসব উপাস্যদের তো নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতাটুকুও নেই। এরা আবার তোমাদের কী উপকার করবে?? ফলে এসবের যা পরিণতি হওয়ার ছিল, তাই হলো। বাদশা নমরূদ তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করল এবং বিশাল অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপও করল। কিন্তু মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁকে রক্ষা করেন। {৪}

    হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের চাচাত বোন সারা ও তাঁর আপন ভাতিজা লূত একত্ববাদের দাওয়াতকে গ্রহণ করে নেন। তিনি চাচাত বোন সারাকে বিয়ে করেন। নিজ ক্বওমের জুলুম-নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আল্লাহর নির্দেশে একসময় তিনি মাতৃভূমি ছেড়ে হিজরত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং স্ত্রী সারা ও ভাতিজা লূতকে নিয়ে হাররানের উদ্দেশ্যে হিজরত করেন। সেখান থেকে পুনরায় তাদেরকে সাথে নিয়ে হিজরত করেন তৎকালীন শামে, বর্তমানে যা ফিলিস্তিনের নাবলুস শহর। নাবলুস পশ্চিম তীরের একটি অঞ্চল। হিজরতের সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। {৫}
    তখন থেকেই নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পদধূলিতে ধন্য হতে থাকে ফিলিস্তিনের মাটি। আজকের ফিলিস্তিনের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের স্মৃতিচিহ্ন। তাঁর সমাধিও রয়েছে ফিলিস্তিনে। মূলত তিনি দাওয়াতের কাজের জন্য একটি উত্তম ও উর্বর ভূমির সন্ধানে ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি একসময় ফিলিস্তিন ছেড়ে সিনাই উপত্যকা হয়ে মিশর চলে যান। নিয়তির খেলায় সেখানে হযরত হাজেরা আলাইহাস সালামকে বিয়ে করেন। এরপর পুনরায় নাবলুসে ফিরে আসেন। লূতকে পাঠিয়ে দেন জর্ডানে। তাঁর জীবনের বাকি অংশ মধ্যপ্রাচ্যের এক স্থান হতে অন্য স্থানে সফর করে করেই অতিবাহিত হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ২০২৫ সনে তিনি ফিলিস্তিনের হেবরনে ইন্তিকাল করেন এবং এখনও সেখানেই শুয়ে আছেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ১৭৫ বছর। {৬} পরবর্তী সময়ে তাঁর কবরের পাশে আল-খলিল নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যা ইহুদী, খ্রিস্টান ও মুসলিম— সকলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পুণ্যস্থান।

    হযরত লূত আলাইহিস সালাম:

    পূর্বেই বলে এসেছি, যারা সর্বপ্রথম হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপর ঈমান এনেছেন, তাদের মধ্যে তাঁর ভাতিজা লূত অন্যতম। হিজরতের সময় ইবরাহীম আলাইহিস সালাম লূতকে সাথে নিয়ে হিজরত করেছেন। আল্লাহ্‌ তাআলা তাকেও নবুওয়াত দান করেছেন এবং ক্বওমে সাদূমের প্রতি নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। ক্বাওমে সাদূমের অবস্থান ছিল জর্ডানে এবং তারা সমকামিতার মতো নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত ছিল। হযরত লূত আলাইহিস সালাম দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাদেরকে বুঝিয়েছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অবশেষে আল্লাহ্‌ তাআলা তাদেরকে আযাব দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তাদের বসতিকে উপরে তুলে উল্টে দিয়েছেন। ক্বওমে সাদূমের বসতিকে আল্লাহ্‌ তাআলা এমনভাবে ধ্বংস করেছেন, যে আজ পর্যন্ত সে স্থানটি এখনো হ্রদ হয়ে আছে, যা ডেড-সী বা মৃত সাগর নামে পরিচিত। তাদের পরে সেখানে আর কোনো জাতি বসবাস করতে পারেনি। তবে হযরত লূত আলাইহিস সালাম এবং তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনে এসব গর্হিত কাজ থেকে নিবৃত্ত থেকেছিল তাদেরকে আল্লাহ্‌ তাআলা আযাব থেকে বাঁচিয়েছেন। এদের মোট সংখ্যা ৪ হাজার বর্ণিত হয়েছে। {৭}

    হযরত ইসমাইল ও ইসহাক আলাইহিমাস সালাম

    (চার) হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের থেকে আল্লাহ্‌ তাআলা অনেক বড় বড় পরীক্ষা নিয়েছেন। আর তিনি সব পরীক্ষাতেই কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এর মধ্যে একটি পরীক্ষা এ-ও ছিল যে, বার্ধক্য পর্যন্ত আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁকে কোনো সন্তান দান করেননি। তাঁর বয়স যখন ৮৬ বছর তখন আল্লাহ্‌ তাআলা বিবি হাজেরার গর্ভে তাঁর প্রথম সন্তান ইসমাইলকে দান করেন। জন্মের পর মা-ছেলেকে নির্বাসনের নির্দেশ দিয়ে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরীক্ষা নেন। নির্দেশনা অনুযায়ী আরবের মক্কায় তাদেরকে নির্বাসনে রেখে আসেন। সাথে নিয়ে আসা খাদ্য-পানীয় ফুরিয়ে যাওয়ার পর বিবি হাজেরার সাফা-মারওয়ার মধ্যখানে দৌড়ঝাঁপ, শিশু ইসমাইল বুঝমান হওয়ার পর আল্লাহ্‌ তাআলার পক্ষ থেকে তাঁকে জবাইয়ের ইঙ্গিত এবং সন্তানের মায়া ত্যাগ করে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা, শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি বিষয়গুলো কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষের জন্য আল্লাহ্‌ তাআলা হজ্জের করণীয় হিসেবে স্মরণীয় করে রেখেছেন। ইসমাইল আলাইহিস সালামকে সাথে নিয়ে পিতা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বাইতুল্লাহর পুনর্নির্মাণ করেন। বিবি হাজেরা ও ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে সেখানে বসতি গড়ে ওঠে, যা আজকের মক্কা নগরী। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামের বংশের মধ্যে শুধুমাত্র শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম এসেছেন। এছাড়া অন্য কেউ তাঁর বংশে নবী হয়ে আসেননি। ১৩৭ বছর বয়সে তিনি ইন্তিকাল করেন। হিজর নামক স্থানে নিজ মায়ের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়।

    ইসমাইলের জন্মের প্রায় ১৪ বছর পর ইবরাহীমের বয়স যখন ১০০ বছর এবং সারার বয়স যখন ৯০ বছর তখন আল্লাহ্‌ তাআলা সারার গর্ভে তাঁকে দ্বিতীয় সন্তান ইসহাকের সুসংবাদ দান করেন। বিয়ের পর থেকে এই দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সারার গর্ভে ইবরাহীমের আর কোনো সন্তান হয়নি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ তাআলা ইরশাদ করেন:
    وَبَشَّرْناهُ بِإِسْحاقَ نَبِيًّا مِنَ الصَّالِحِينَ. وَبارَكْنا عَلَيْهِ وَعَلى إِسْحاقَ وَمن ذُرِّيَّتِهِما مُحْسِنٌ وَظالِمٌ لِنَفْسِهِ مُبِينٌ
    আর আমি তাঁকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের, যে সৎকর্মশীলদের থেকে একজন নবী ছিলেন। তাঁকে এবং ইসহাককে আমি বরকত দান করেছি।
    وَامْرَأَتُهُ قائِمَةٌ فَضَحِكَتْ فَبَشَّرْناها بِإِسْحاقَ وَمن وَراءِ إِسْحاقَ يَعْقُوبَ. قالَتْ يَا وَيْلَتى أَأَلِدُ وَأَنَا عَجُوزٌ وَهذا بَعْلِي شَيْخاً إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عَجِيبٌ.
    আর তাঁর স্ত্রী নিকটেই দাঁড়িয়েছিল, সে হেসে ফেলল। এরপর আমি তাঁকে ইসহাকের ও ইসহাকের পরবর্তী ইয়াকূবেরও জন্মের সুসংবাদ দিলাম। সে বলল, কী আশ্চর্য! সন্তানের জননী হব আমি, যখন আমি বৃদ্ধা এবং এই আমার স্বামীও বৃদ্ধ! এটা অবশ্যই এক অদ্ভুত ব্যাপার! {৮}

    হযরত ইসহাক আলাইহিস সালামের অবস্থান ছিল ইবরাহীম আলাইহিস সালামের আবাসভূমি ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরে। তিনি এখানেই থাকতেন। কিন্তু স্থানীয়দের অত্যাচারে তিনি সেখান থেকে হিজরত করে হেবরনে চলে যান। সেখানেও একই অবস্থার সৃষ্টি হলে তিনি আবারও হিজরত করে চলে যান বীরশেবায়। এসবগুলোই ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চল।

    হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম রেবেকা নামক এক মহিলাকে বিয়ে করেন। তার গর্ভ থেকে দুজন জমজ সন্তান হয়। একজন হলেন ঈস বা ইসাও। অপরজন ইয়াকূব, যাকে ইসরায়েল নামে ডাকা হতো। ইয়াকূব আলাইহিস সালামকে আল্লাহ্‌ তাআলা নবুওয়াত দান করে সম্মানিত করেছেন। এরপর এই বংশ থেকে একের পর নবী আসতেই থাকেন। এমনকি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সমস্ত নবী-রাসূল হযরত ইসহাক আলাইহিস সালামের বংশ থেকেই এসেছেন। {৯}

    বলতে গেলে বনী ইসরায়েলের ইতিহাসের সূচনা এই ইয়াকূব আলাইহিস সালামের থেকেই। তাঁর সন্তানদেরকেই ইতিহাসে বনী ইসরায়েল নামে ডাকা হয়। তাই তিনিই আমাদের এই সিরিজের মূল ব্যক্তি। তাঁর এবং তাঁর সন্তানদের ইতিহাস নিয়ে রচিত হবে আমাদের আগামী পর্ব, ইনশাআল্লাহ্‌।

    টীকা:
    (এক) অথবা বিষয়টিকে এভাবেও বলা যায় যে, বর্তমানে যারাই নিজেদেরকে তাওরাতের অনুসারী দাবি করে তাদেরকেই ইহুদী বলা হয়। পূর্বের সেই গোত্রবিভাজন বর্তমানে মুছে গেছে।
    (দুই) কারো কারো মতে তার মূল নাম ছিল তারাখ/তারাহ। আজর একটি মূর্তির নাম ছিল। সে উক্ত মূর্তির উপাসনা করত বলেই তার উপাধী পড়ে যায় আজর। আজর মূর্তির ব্যবসাও করত।

    (চার) হযরত ইসমাইল ও ইসহাক আলাইহিমাস সালাম ছাড়াও হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের আরো ৬ জন সন্তান ছিলেন। বিবি সারা ইন্তিকাল করলে তিনি ক্বাতূরা নামক জনৈকা মহিলাকে বিয়ে করেন। বাকি ৬ সন্তান তাঁর গর্ভ থেকেই জন্মেছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ নবুওয়াত লাভ করেননি বিধায় তাদের আলোচনাও বাকি দুজনের মতো হয় না।


    তথ্যসূত্র:
    {১} তারিখে উম্মতে মুসলিমাহ-১/৮৭
    {২} সূরা আম্বিয়া, আয়াত নং-৬৫-৬৭
    {৩} সূরা মারয়াম; আয়াত নং-৪৬, ৪৭ ও ৪৮
    {৪} সূরা আম্বিয়া, আয়াত নং ৫৮-৬৯
    {৫} সূরা আনকাবূত, আয়াত নং-২৬, তাফসীরে কুরতুবী ও তাফসীরে তাবারী দ্রষ্টব্য
    {৬} আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া, ১/৩৪৮, ৩৫২ ও ৪০৩
    {৭} সূরা হূদ, আয়াত নং, ৬৯-৮৩, আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১/৪০৮-৪০৯
    {৮} সূরা হুদ, আয়াত নং-৭১-৭২
    {৯} আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১/১৯১-১৯৪
    {১০} তারীখে তাবারী-১/২৩৪, দারুত তুরাস


    প্রথম পর্ব- অভিশপ্ত ইহুদী জাতির উত্থান-পতনের গল্প; অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ।। পর্ব-১।। সিরিজের ভূমিকা।
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    আগামী পর্ব দ্রুত আনার তাওফিক আল্লাহ্‌ তাআলা আপনাদের দান করুন, আমীন
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment

    Working...
    X