কি বলা হয়েছিল সেই ঐতিহাসিক ফতোয়ায়
সালিম শেহজাদের ভাষ্যমতে:
হিমেল রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী;
ঐতিহাসিক সেই ফতোয়াটির অনুবাদ কর্ম চলমান ছিল।প্রায় দুই তৃতীয়াংশ অনুবাদ করা হয়েছিল এরই মাঝে আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইয়েরা এর অনুবাদ প্রকাশ করে প্ল্যাটফর্মে দিয়েছেন। তবে আমার এই লেখাটি যেহেতু একটি ঘটনার ইতিহাস লেখা উদ্দেশ্য, তো সেই ইতিহাসের অংশ হিসেবে আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের প্রকাশিত ফতোয়াটি উল্লেখ করে দিচ্ছি।
Bengali Translation || ওয়ানা অপারেশনের ব্যাপারে পাকিস্তানের উলামায়ে কেরামের সম্মিলিত ফাতওয়া
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%9F%E0%A6%BE
সালিম শেহজাদের ভাষায়:
পাক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কেন শুরু হল?
(পাকিস্তানে জিহাদের প্রেক্ষাপট ও প্রকৃত বাস্তবতা)
রক্তাক্ত লাল মসজিদ নামক বইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী বিষয়টি এমন যে,
চলবে ইনশাআল্লাহ....
সালিম শেহজাদের ভাষ্যমতে:
"আবদুল আজিজের ফতোয়া
=====================
- আজিজ গভীর ধর্মীয় জ্ঞানে পরিপূর্ণ অতিসংবেদনশীল ব্যক্তি ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তাকফিরের আহ্বান তার সম্মান মর্যাদাবোধ এবং পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ হারানোর কারণ হয়েছিল। সশস্ত্র ইসলামী আন্দোলনকারীদের(মুজাহিদদের) বিরুদ্ধে অপারেশন সত্ত্বেও সামরিক বাহিনীর সাথে তার ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখার অর্থ-তার বিশ্বাস কে বঞ্চিত করা।
- আবদুল আজিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একটি ছদ্মপরিচয় অনুসারে তার নিজের দারুল ইফতা থেকে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে মুসলিমদের বিরুদ্ধে (পাকি নাপাক ফৌজ) অভিযান চালানোর পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঈমান ও বিশ্বাসের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা একটি চিঠি(প্রশ্ন) ছিল।এই প্রশ্নের জবাবে তিনি একটি ফতোয়ায় বলেছিলেন:
- দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় নিহত পাকিস্তানি সৈন্যদের মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা জায়েয নেই।"
(আরব্য রজনীর অজানা অধ্যায়)
হিমেল রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী;
- এই ফতোয়ায় বলা হয়েছিল, পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যারা নিহত হবে, তারা শহিদের মর্যাদা লাভ করবে।
মূল ফতোয়া
ঐতিহাসিক সেই ফতোয়াটির অনুবাদ কর্ম চলমান ছিল।প্রায় দুই তৃতীয়াংশ অনুবাদ করা হয়েছিল এরই মাঝে আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইয়েরা এর অনুবাদ প্রকাশ করে প্ল্যাটফর্মে দিয়েছেন। তবে আমার এই লেখাটি যেহেতু একটি ঘটনার ইতিহাস লেখা উদ্দেশ্য, তো সেই ইতিহাসের অংশ হিসেবে আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের প্রকাশিত ফতোয়াটি উল্লেখ করে দিচ্ছি।
Bengali Translation || ওয়ানা অপারেশনের ব্যাপারে পাকিস্তানের উলামায়ে কেরামের সম্মিলিত ফাতওয়া
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%9F%E0%A6%BE
ফতোয়ার ও প্রভাব এবং ফলাফল
সেই ফতোয়া ও প্রভাব এবং ফলাফল নিয়ে বিভিন্ন লেখনীতে আসা মতামত এখানে তুলে ধরছি
সালিম শেহজাদের ভাষায়:
- "আজিজ ২০০৪ সালে এই ফতোয়া (ধর্মীয় আদেশ) জারি করে ছিলেন। ফতোয়ার বিশাল প্রভাব পড়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েক ডজন সৈন্য যুদ্ধের জন্য তাদের সিনিয়রদের আদেশ অস্বীকার করেছিল এবং শত শত কর্মকর্তা ও সৈন্য চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে এবং মুজাহিদদের সাথে একটি চুক্তি করতে বাধ্য করেছিল।ফতোয়াটি ছিল সামরিক বাহিনী ও মুজাহিদদের মধ্যে একটি নতুন আদর্শিক যুদ্ধের সূচনা।এর চেয়েও বড় সমস্যা হলো, এটি আদিবাসী অঞ্চলে সেনাবাহিনীর পরাজয়ের চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক ছিল। মোশাররফ সরকার আদিবাসী অঞ্চলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার জন্য ব্যাপক কর্মযজ্ঞ আঞ্জাম দিয়েছিল এবং শরীয়তের মূলনীতি বিরুদ্ধ কথা বলার জন্য কতিপয় আলেম ভাড়া করে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ পর্যন্ত করেছিল।......"
(আরব্য রজনীর অজানা অধ্যায়)
পাক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কেন শুরু হল?
কাবায়েলি অঞ্চলে মুজাহিদদের উপর পাক সরকার কর্তৃক আক্রমণ করার পর ডলার খোর জেনারেলদের গাদ্দারি ও চক্রান্তের কারণে সেসময় মুজাহিদগন পাক সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে বাধ্য হন।
লাল মসজিদের ফতোয়া প্রদানের ঘটনার পর মুজাহিদদের কেন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হতে হয়েছিল এব্যাপারে উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিঃ আস সাহাব মিডিয়ার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন:
- "এটা আমি স্পষ্ট করে দিবো যে, দীর্ঘ একটা সময় অবধি আফগানিস্তানে আমেরিকাই ছিল মুজাহিদদের প্রধান টার্গেট। এ জন্য মুজাহিদ বাহিনী কোনোভাবেই পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু তারাই মুজাহিদদের বাধ্য করেছে এবং তাঁদেরকে দুটি অপশনের যেকোনো একটি বেছে নিতে হলো।
- প্রথম অপশন ছিল, পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে না লড়া। যার অবধারিত ফলাফল হলো, জিহাদি আন্দোলন নিঃশেষ হওয়া আর আমেরিকার এখানে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া। (এমন সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল পাকিস্তানের গাদ্দার জেনারেলদের মাধ্যমে)
- দ্বিতীয় অপশন: পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা। যার ফলাফল দাঁড়ায়; জিহাদ, শরীয়ত বাস্তবায়ন এবং ইসলাম বিজয়ের আন্দোলনকে রক্ষা করা। এ জন্যই মুজাহিদগণ দ্বিতীয় অপশনটি গ্রহণ করেছেন। মুজাহিদগণ আত্মরক্ষার জন্য রণাঙ্গনে নেমে পড়েন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা নিজ মোজেজা দেখান। আল্লাহ তাআলার সাহায্য আর মুজাহিদদের কারামত এখানে জনসাধারণের দৃষ্টিগোচর হয়। যার কারণে মুজাহিদরা আরও বলবান হয়ে উঠেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমেরিকার স্বপ্ন মিসমার হয়ে যায়।
অবশেষে তাদের সৈন্যবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। মুজাহিদ বাহিনী ও অন্যত্রের মুসলমানদের আত্মত্যাগ ফলপ্রসূ হয়েছে।
এরপর আলহামদুলিল্লাহ, জিহাদের জন্য সাহায্যকারী অঞ্চল মিলে যায়। এই আশ্রয়স্থল বা গন্তব্য ২০০৫/২০০৬ সালেই অর্জিত হয়েছিল। আর যখনই এটা হাতে আসে তখন থেকেই আফগান জিহাদ আরো বেগবান হয়ে উঠে। অথচ ইতিপূর্বে আফগানিস্তানে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুজাহিদগণ বেশ দুর্বল ছিলেন। যেন পাকিস্তান জিহাদের প্রথম সাফল্যই হলো আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদ সুশৃঙ্খল হওয়া। আর এটা স্পষ্ট যে, এটা হয়েছে পাকিস্তান আনসার হাউস হওয়ার সুবাদে। এ কারণেই পরবর্তী দশ বছর অবধি এই ঘাঁটি কুফরী বাহিনীর আক্রমণ এবং মার্কিন বাহিনীর ড্রোন হামলার টার্গেট হিসেবে থাকে।
(পাকিস্তানে জিহাদের প্রেক্ষাপট ও প্রকৃত বাস্তবতা)
একথা আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট যে,পাক সরকারের ইসলাম মিটিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত ছিন্ন করতেই মুজাহিদগন পাঁচ শতাধিক সুনামধন্য প্রখ্যাত আলেমগনের ফতোয়ার আলোকে জিহাদের জন্য বাধ্য হন।উনারা নিজেরা আগ বাড়িয়ে লড়াই শুরু করেননি।
গাজী সাহেবের গ্রেফতারি
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে "লাল মসজিদ সেই সময় আন্দোলনের রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যখন পাকিস্তান সরকার বিভিন্ন অঞ্চলে তাওহীদবাদি মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায় এবং যার কারণে মুজাহিদদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়।এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লাল মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আজিজ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তার সেই ঐতিহাসিক ফতোয়া দেন।পরবর্তীতে যাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে ও আল্লামা আব্দুর রশীদ গাজী শহীদ রহঃ এর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করা হয়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে "লাল মসজিদ সেই সময় আন্দোলনের রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যখন পাকিস্তান সরকার বিভিন্ন অঞ্চলে তাওহীদবাদি মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায় এবং যার কারণে মুজাহিদদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়।এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে লাল মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আজিজ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তার সেই ঐতিহাসিক ফতোয়া দেন।পরবর্তীতে যাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে ও আল্লামা আব্দুর রশীদ গাজী শহীদ রহঃ এর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করা হয়।
(রক্তাক্ত লাল মসজিদ:৫ নং পৃষ্ঠা)
- "এই ঘটনার (ঐতিহাসিক ফতোয়া প্রদানের পর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার)পরে পাকিস্তানি সরকার আব্দুল রাশিদ গাজীকে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি ভবন, আইনসভা ও সেনা সদর দপ্তর উড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উত্থাপন করে।
- "এসময় লাল মসজিদের অধীনে পরিচালিত মহিলা মাদ্রাসা জামিয়া হাফসায় পুলিশ দুবার প্রবেশ করে নেহাত পর্দানশীন ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং অনেক ছাত্রীকে আহত করে।"
(রক্তাক্ত লাল মসজিদ:৫ নং পৃষ্ঠা)
- কিন্তু কেন্দ্রীয় ধর্মমন্ত্রী এজাজুল হক, যিনি ছিলেন প্রাক্তন পাকিস্তানি রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউল হকের ছেলে এবং লাল মসজিদের একজন পৃষ্ঠপোষক, আব্দুল রাশিদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছেন। এই সমঝোতা অনুযায়ী আব্দুল রাশিদ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত না হওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন, বিনিময়ে তাকে মুক্তি প্রদান করা হয়। কিন্তু এই সমঝোতা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।"
তবে গাজী সাহেবের গ্রেফতারি পর্যন্ত পাক সরকার ক্ষ্যান্ত থাকেনি বরং ইসলামাবাদের প্রাণকেন্দ্র থেকে এমন আন্দোলন এই নাপাক সরকার কর্তৃক চিন্তার কারণে পরিনত হয়।তাই তারা এই আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।
রক্তাক্ত লাল মসজিদ নামক বইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী বিষয়টি এমন যে,
- "কিন্তু এ আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার ঘৃন্য স্বার্থে ইসলামাবাদে সাত সাতটি মসজিদ শহীদ করে দেওয়া হয়,আরো দশটি মসজিদকে নোটিশ দেয়া হয় এবং এছাড়াও অতিরিক্ত ৮০ টি মসজিদ ও মাদ্রাসাকে ধ্বংসের তালিকায় রাখা হয়।সাত সাতটি মসজিদের শাহাদাত কোনো মামুলি ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এব্যাপারটি ইসলামপন্থীদের মধ্যে তেমন ভারী কোনো উদ্বেগ বা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। ইসলামাবাদে নামকাওয়াস্তে কিছু প্রতিবাদ আন্দোলন হয়েছে তবে তা-ও খুব অল্প সময়ে ঝিমিয়ে পড়েছে।এই সঙ্গীন পরিস্থিতিতে উম্মাহর দরদি মনিষী দুভাই হযরত মাওলানা আবদুল্লাহ শহীদ রহঃ এর জানেশিন দুই যোগ্য সাহেবজাদা শরিয়াহ বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে সেসময় প্রতিবাদ মূখর হয়েছেন।...
চলবে ইনশাআল্লাহ....