আরবরা প্রাচীনকাল হতেই বাণিজ্যের জন্য সুপরিচিত ছিল।পনেরশ শতাব্দীর শেষের দিকে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা কর্তৃক বিবাদপূর্ণ ভূমধ্যসাগর আর বিপদজনক আরব উপদ্বীপ এড়িয়ে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ পাড়ি দিয়ে ইউরোপ হতে ভারতে আসার নৌপথ আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত আরবরাই ছিল প্রাচ্যের সাথে পাশ্চাত্যের বাণিজ্যিক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।[৩]তাই ইউরোপীয়রা আরবদের মাধ্যমেই এশিয়ার পণ্য ক্রয় করতেন আবার, তাদের মাধ্যমেই এশিয়ায় তাদের পণ্য বিক্রয় করতেন।
৮৫১ খ্রিস্টাব্দে আরব ভৌগোলিক সোলাইমান তার " সিলসিলাত উত তওয়ারিখ " নামক গ্রন্থে এশিয়ার উপকূলবর্তী বিভিন্ন বন্দর ও বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এরপর, ইবনে খুরদাদবা তার " কিতাব-উল-মাসালিক-আল-মাসালিক" নামক গ্রন্থে আরব দেশ হতে চীন সাম্রাজ্য পর্যন্ত বাণিজ্য পথের বর্ণনা দেন।এছাড়া, তৎকালীন আল মাসুদী, আল ইদ্রিসীসহ আরো অনেক আরব ভৌগোলিক এশিয়ার বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরে আরবদের বাণিজ্যের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।[১] ইসলামের প্রচার-প্রসারে এসকল আরব সমুদ্র বিহারীদের অবদান অনস্বীকার্য। সিন্ধু হতে মালাবার, চট্টগ্রাম, আরাকান, মালয় উপদ্বীপ, সুমাত্রা প্রভৃতি সমুদ্র উপকুলবর্তী মুসলিম অঞ্চল আজও তার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
আরাকান রাজ বংশীয় উপাখ্যান 'রদজা তুয়ে' এর একটি উপাখ্যানে বর্ণিত আছে যে, " এ সময়ের শেষ ভাগে কান-রা-দজা-গীর বংশধর মহুতইঙ্গ ত চন্দয়ত সিংহাসনে আরোহণ করেন।এই রাজা ২২ বছর রাজত্ব করার পর মারা যান।কথিত আছে যে, তার সময়ে (৭৮৮ - ৮১০খিঃ) কয়েকটি কুল অর্থাৎ, বিদেশী জাহাজ রনবী দ্বীপের সঙ্গে সংঘর্ষে ভেঙ্গে পড়ে এবং জাহাজের মুসলিম আরোহীদের আরাকানে পাঠানো হয়।সেখানে তারা গ্রামাঞ্চলে বসবাস শুরু করেন।"[১,৩]
এই উপাখ্যানের অন্য জায়গায় লিপিবদ্ধ আছে যে, ৯৫৩ খৃ. আরাকানের রাজা সুলত ইঙ্গ চন্দয়স ' সুরতন' বিজয়ে বের হন এবং সেদেশে একটি বিজয় স্তম্ভ স্থাপন করেন।রাজার উক্তি অনুসারে স্তম্ভের নাম হয় ' চিত্তগৌং' অর্থাৎ যুদ্ধ করা উচিত নয়।চিত্তগৌং হতে চিটাগং নামের উৎপত্তি বলে অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের ধারনা।অনেকে মনে করেন, 'সুরতন' শব্দটি 'সুলতান' শব্দের আরাকানী সংস্করণ এবং তদানুসারে তারা দাবী করেন যে, সেসময়ে চট্টগ্রামে মুসলমানরা একটি আরব রাষ্ট্র গঠন করেছিলো, [১,২]তবে তা নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কিন্তু, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা এবং ব্যাকরনে ব্যাপক আরবি ভাষার ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়,যেমন ক্রিয়াপদের পূর্বে না ব্যাবহার করা।চট্টগ্রামের অনেক এলাকার নাম আরবি যেমন, আল করন, সুলুক উল বহর, বাকালিয়া ইত্যাদি। চট্টগ্রামের স্থানীয় লোকদের মুখাবয়ব আরবদের অনুরূপ বলে অনেকে মনে করেন।
তথ্যসুত্রঃ
১) চট্টগ্রামে ইসলাম। ড. আব্দুল করিম।
২)আরাকান রাজসভায় বংলা সাহিত্য। ড. এনামুল হক ও ড. আবদুল করিম।
৩) উইকিপিডিয়া।
৮৫১ খ্রিস্টাব্দে আরব ভৌগোলিক সোলাইমান তার " সিলসিলাত উত তওয়ারিখ " নামক গ্রন্থে এশিয়ার উপকূলবর্তী বিভিন্ন বন্দর ও বাণিজ্যিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এরপর, ইবনে খুরদাদবা তার " কিতাব-উল-মাসালিক-আল-মাসালিক" নামক গ্রন্থে আরব দেশ হতে চীন সাম্রাজ্য পর্যন্ত বাণিজ্য পথের বর্ণনা দেন।এছাড়া, তৎকালীন আল মাসুদী, আল ইদ্রিসীসহ আরো অনেক আরব ভৌগোলিক এশিয়ার বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরে আরবদের বাণিজ্যের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।[১] ইসলামের প্রচার-প্রসারে এসকল আরব সমুদ্র বিহারীদের অবদান অনস্বীকার্য। সিন্ধু হতে মালাবার, চট্টগ্রাম, আরাকান, মালয় উপদ্বীপ, সুমাত্রা প্রভৃতি সমুদ্র উপকুলবর্তী মুসলিম অঞ্চল আজও তার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
আরাকান রাজ বংশীয় উপাখ্যান 'রদজা তুয়ে' এর একটি উপাখ্যানে বর্ণিত আছে যে, " এ সময়ের শেষ ভাগে কান-রা-দজা-গীর বংশধর মহুতইঙ্গ ত চন্দয়ত সিংহাসনে আরোহণ করেন।এই রাজা ২২ বছর রাজত্ব করার পর মারা যান।কথিত আছে যে, তার সময়ে (৭৮৮ - ৮১০খিঃ) কয়েকটি কুল অর্থাৎ, বিদেশী জাহাজ রনবী দ্বীপের সঙ্গে সংঘর্ষে ভেঙ্গে পড়ে এবং জাহাজের মুসলিম আরোহীদের আরাকানে পাঠানো হয়।সেখানে তারা গ্রামাঞ্চলে বসবাস শুরু করেন।"[১,৩]
এই উপাখ্যানের অন্য জায়গায় লিপিবদ্ধ আছে যে, ৯৫৩ খৃ. আরাকানের রাজা সুলত ইঙ্গ চন্দয়স ' সুরতন' বিজয়ে বের হন এবং সেদেশে একটি বিজয় স্তম্ভ স্থাপন করেন।রাজার উক্তি অনুসারে স্তম্ভের নাম হয় ' চিত্তগৌং' অর্থাৎ যুদ্ধ করা উচিত নয়।চিত্তগৌং হতে চিটাগং নামের উৎপত্তি বলে অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের ধারনা।অনেকে মনে করেন, 'সুরতন' শব্দটি 'সুলতান' শব্দের আরাকানী সংস্করণ এবং তদানুসারে তারা দাবী করেন যে, সেসময়ে চট্টগ্রামে মুসলমানরা একটি আরব রাষ্ট্র গঠন করেছিলো, [১,২]তবে তা নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কিন্তু, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা এবং ব্যাকরনে ব্যাপক আরবি ভাষার ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়,যেমন ক্রিয়াপদের পূর্বে না ব্যাবহার করা।চট্টগ্রামের অনেক এলাকার নাম আরবি যেমন, আল করন, সুলুক উল বহর, বাকালিয়া ইত্যাদি। চট্টগ্রামের স্থানীয় লোকদের মুখাবয়ব আরবদের অনুরূপ বলে অনেকে মনে করেন।
তথ্যসুত্রঃ
১) চট্টগ্রামে ইসলাম। ড. আব্দুল করিম।
২)আরাকান রাজসভায় বংলা সাহিত্য। ড. এনামুল হক ও ড. আবদুল করিম।
৩) উইকিপিডিয়া।