কিছু অভাব অভিযোগের কথা নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু এখন
দেখি—
খলীফা সুলাইমান তাঁর মৃত্যুর পূর্বে গাসবা ইবন সাদ ইবন
আসকে বিশ হাজার দীনার দান করে একটি দানপত্র লিখে
দিয়ে ছিলেন। কিন্তু টাকাটা গাসবার হাতে যাওয়ার
পূর্বেই খলীফা সুলাইমানের মৃত্যু ঘটে।
খলীফা সুলাইমানের মৃত্যুর পর উমার ইবন আবদুল আযিয
খলীফা হন। তাঁর খলীফা পদ সমাসীন হবার কয়েকদিন পর
গাসবা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে বলর, “খলীফা সুলাইমান
আমাকে কিছু অর্থ দান করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে
নির্দেশ কোষাগারে এসে পৌঁছেছে। আপনি আমার বন্ধুলোক,
আশা করি আমার জন্য খলীফা সুলাইমানের সে নির্দেশ
আনন্দের সাথেই কার্যকর করবেন।”
সত্যিই গাসবা উমার ইবনুল আযিযের বন্ধু ছিল। তিনি
সহাস্যে বললেন, “কতটাকাঃ” গাসবা উত্তর দিল “বিশ
হাজার দিনার।” শুনে খলীফা উমাররে ভ্রুদ্বয় কুঞ্চিত হয়ে
উঠলো। তিন বললেন, “সর্ব সাধারনের সম্পত্তি থেকে কোন
একজনকে বিনা করণে এত টাকা দেয়া কিভাবে সম্ভব?
আল্লাহর কসম, আমর পক্ষে এটা কিছুতেই সম্ভব নয়।”
শুনে গাসবা খুবই রেগে গেল। কিন্তু রাগ চেপে সে চিন্তা
করতে লাগল, কিভাবে খলীফাকে উচিত জবাব দেয়া যায়,
কি কর তাকে জব্দ করা যায়।
সে উমার উবন আব্দুল আযিযকে খোঁচা দেয়ার একটি পথ পেল।
সে বিদ্রুপের হাসি হেসে বলল, “খলীফা সুলাইমনা
আপনাকেও জাবালুল ওয়ারস’ –এর জায়গীল দগান করেছেন।
ওটা সম্পর্কে তাহলে আপনার সিদ্ধান্ত কি হবে?”
প্রশ্ন শুনে খলীফা হাসলেন, “তোমার ব্যাপারে
সিদ্ধান্তের অনেক আগে খলীফার আসনে বসার সংগে সংগেই
জাবালুল ওয়ারস’ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। ওটা
যেখান থেকে এসেছে, সেখানেই ফিরে যাবে, তারপর
উপযুক্ত প্রার্থীকে তা দিয়ে দেয়া হবে।” বলে তিনি
ছেলেকে দিয়ে সিন্দুক থেকে দলিল-দস্তাবেজ আনালেন।
তারপর ‘জাবালুল ওয়ারস’ –এর দলিলটি বের করে গাসবার
সামনেই ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে দিলেন। গাসবা আর
একটি কথাও না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
ন্যায় ও সুবিচারের ভিত্তিতে যে সব ফরমান অতীতে জারি
হয়নি, উমার ইবন আব্দুল আযিয সে সমস্তই বাতিল করে
দিয়েছিলেন। ফলে পূর্ববর্তী অলীফারা বনু উমাইয়াকে
অন্যায়ভাবে যেসব ভাতা মঞ্জুর করেছিলেন, সে সব বন্ধ
হয়ে গিয়েছিল। এই সাথে খলীফার এক ফুফুরও ভাতা বন্ধ
হয়েছিল। একদিন ফুফু এই অভিযোগ নিয়ে তাঁর কাছে
আসলেন। খলীফা তখন রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
অল্পক্ষণ পরে আবার তাঁর সামনে গিয়ে দেখলেন খলীফা
খেতে বসেছেন। তাঁর সামনে দু’টুকরো রুটি, একটু লবণ ও
সামান্য কিছু তেল। ফুফু খলীফার খাবারে আয়োজন দেখে
বললেন, “কিছু অভাব অভিযোগের কথা বলতে এসেছিলাম,
কিন্তু এখন দেখি তোমার অভাব-অভিযোগের কথাই আমাকে
বলতে হবে।” ফুফুর অভিযোগের জবাবে খলিফা বললেন, “কি
করব ফুফু আম্মা, এর চেয়ে ভালো ভাবার সংগতি আমার নেই।”
ফুফু অনেক ভূমিকার পর বনি উমাইয়ার পক্ষ থেকে বললেন,
“তুমি তাদের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছ, অথচ তুমি সেসব দান
করনি?” খলীফা বললেন, “সত্য ও ন্যায় যা আমি তাই
করেছি।” তারপর তিনি একটি দনিার, একটি জলন্ত
অঙ্গারের পাত্র একটুকরো গোশত আনালেন। অঙ্গারপাত্রে
দিনারটি গরম করলেন, তারপর অগ্নিসদৃশ উত্তপ্ত দিনার
গোশতের উপর চেপে ধরলেন। গোশতটি পুড়ে গেল। খলীফা
উমার ইবন আবদুল আযিয সেদিকে ইংগিত করে বললেন,
“ফূফুজান, আপনি কি আপনার ভাতিজাকে এরূপ কঠিন শাস্তি
থেকে বাঁচাতে চান না?” ফুফু সবই বুঝলেন। লজ্জিতভাবে
ফিরে এলেনন খলীফার কাছ থেকে।
আমরা সেই সে জাতি
Comment