ওয়ালা-বারা ইসলামের একটি মৌলিক আকীদা। সাহাবায়ে কেরাম ওয়ালা-বারার উপর এমনভাবে আমল করেছেন যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, তাই এ ব্যাপারে তাদের কিছু বিস্ময়কর ঘটনা সংক্ষেপে তুলে করছি, যেন আমরা ওয়ালা-বারার উপর আমলের স্বরুপ জানতে পারি।
১ – ইমাম মুসলিম ইবনে আব্বাস রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণণা করেন, “বদর যুদ্ধে সত্তরজন কাফের বন্দী হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ব্যাপারে আবু বকর ও উমরের সাথে পরামর্শ করেন, আবু বকর রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, এরা তো আমাদেরই আত্মীয়-স্বজন, সুতরাং আমার মত হলো তাদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া, যেন এই অর্থের মাধ্যমে আমরা কাফেরদের বিরুদ্ধে শক্তি অর্জন করতে পারি। এবং আশা করি আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তাওফিক দিবেন। কিন্তু উমর বলেন, আমার মত আবু বকরের মতের থেকে ভিন্ন, আমার মত হলো, আমরা নিজ হাতে তাদেরকে হত্যা করবো, আলী তার ভাই আকীলকে হত্যা করবে, আমি আমার আত্মীয় অমুককে হত্যা করবো। কেননা এরাই কুফরের নেতৃবৃন্দ”। মুসনাদে আহমদের বর্ণণায় অতিরিক্ত এসেছে, “যেন আল্লাহ তায়ালা দেখে নেন, কাফেরদের প্রতি আমাদের অন্তরে কোন নম্রতা নেই”। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবুবকরের পরামর্শ গ্রহণ করে বন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দেন, কাফেরদের শক্তি খর্ব করার জন্য হত্যা করাই সংগত ছিল। মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদীস নং: ১৭৬৩ মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং: ২০৮)
২ - আব্দুল্লাহ বিন শাওযাব রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, বদর যুদ্ধের দিন আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাযিআল্লাহু আনহুর বাবা তাকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করছিলো, কিন্তু আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন সে বারবার এমন করলো তখন আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে খতম করে দিলেন। এই প্রেক্ষিতেই অবতীর্ণ হয়, لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ (যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে তাদেরকে তুমি আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধীদের ভালোবাসতে দেখবে না, যদিও বিরোধীবাদীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা জ্ঞাতী-গোষ্ঠী হয়। সুরাতুল মুজাদালা, আয়াত: ২২) (আলমু’জামুল কাবীর তবরানী, হাদীস : ৩৬০, আলইসাবাহ, হাফেয ইবনে হাযার, ৫/২৮৬, হাফেয ইবনে হাযার এই হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)
৩ – একব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল আমার পিতা আপনার নিন্দা করতো, তাই আমি তাকে হত্যা করে ফেলেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কাজে কোন কষ্ট পাননি। (সুনানে বাইহাকী, হাদীস : 17042, আলইসাবাহ, লিলহাফেয ইবনে হাযার, ৯/৬২ বাইহাকী বলেন, এটি সহীহ সনদে বর্ণিত মুরসাল হাদীস)
৪ - বদরের যুদ্ধের সময় আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুর ছেলে আব্দুর রহমান কাফের ছিল এবং মুশরিকদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিল, পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণের পর তিনি আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, “বদরের যুদ্ধের দিন আমি আপনাকে দেখেছিলাম, (এবং ইচ্ছে করলে আপনাকে টার্গেট করতে পারতাম কিন্তু হত্যা করার ইচ্ছা না থাকায়) পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিলাম। জবাবে আবুবকর বলেন, কিন্তু আমি যদি তোমাকে দেখতে পেতাম তাহলে তোমাকে হত্যা করে ফেলতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৭৯৫০)
৫ – বদরের যুদ্ধে মুসয়াব বিন উমায়েরের ভাই আবু আযীয বিন উমায়ের বন্দী হয়। এক আনসারী সাহাবী তাকে বন্দী করে বাঁধছিলেন, তখন মুসয়াব বিন উমায়ের তাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। ভাইকে বন্দী করতে দেখে তিনি আনসারীকে বলেন, একে কষে বাঁধো, এর মা অনেক সম্পদশালী, তুমি বেশ ভালো মুক্তিপণ পাবে। এ কথা শুনে আবু আযীয বলল, ভাইয়ের জন্য এটাই আপনার অসিয়্যাত ? মুসয়াব রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, আমার ভাই তো এই আনসারী, তুমি নও !! (আলবিদায়া ওয়াননিহায়া, ইবনে কাসীর, ৫/১৯১)
৬ - ইবনে হিশাম তার সীরাত গ্রন্থে বর্ণনা করেন, “উমর রাযিআল্লাহু আনহু সাইদ বিন আস রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, সম্ভবত তোমার ধারণা, আমি তোমার বাবাকে হত্যা করেছি, যদি আমি তাকে হত্যা করতাম তাহলে তোমার কাছে ওযরখাহি করতাম না। কিন্তু আমি তাকে হত্যা করিনি। বরং আমি আমার মামা আস বিন হিশাম বিন মুগিরাকে হত্যা করেছি। তোমার পিতাকে তো তার চাচাত ভাই আলী হত্যা করেছে।” আলইসাবাহর বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে, “উমর রাযিআল্লাহুর কথা শুনে সাইদ বিন আস বলেন, যদি আপনি তাকে হত্যা করতেন তাহলে আপনি হতেন হকের উপরে আর সে হত বাতিলের উপরে”। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ২/৩০১, আলইসাবাহ ৪/৩৪২)
৭ - আবুয্ যিনাদ বলেন, বদরের যুদ্ধের সময় আবু হুযাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু তার বাবা উতবাকে দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করেন, কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বাবার সাথে যুদ্ধ করতে নিষেধ করেন। ওয়াকেদী বলেন, আব্দুর রহমান বিন আবু বকর বদরের দিন মুশরিকদের পক্ষ থেকে মুসলমানদের দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করে, তখন আবু বকর রাযিআল্লাহু তার মোকাবেলা করার জন্য তার দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এই বলে নিবৃত্ত করেন, হে আবু বকর, (তোমার জীবন বাঁচিয়ে রেখে) আমাদেরকে তোমার দ্বারা উপকৃত হতে দাও। (সুনানে বাইহাকী, হাদিস : ১৬৭৭৪)
১ – ইমাম মুসলিম ইবনে আব্বাস রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণণা করেন, “বদর যুদ্ধে সত্তরজন কাফের বন্দী হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ব্যাপারে আবু বকর ও উমরের সাথে পরামর্শ করেন, আবু বকর রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, এরা তো আমাদেরই আত্মীয়-স্বজন, সুতরাং আমার মত হলো তাদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া, যেন এই অর্থের মাধ্যমে আমরা কাফেরদের বিরুদ্ধে শক্তি অর্জন করতে পারি। এবং আশা করি আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তাওফিক দিবেন। কিন্তু উমর বলেন, আমার মত আবু বকরের মতের থেকে ভিন্ন, আমার মত হলো, আমরা নিজ হাতে তাদেরকে হত্যা করবো, আলী তার ভাই আকীলকে হত্যা করবে, আমি আমার আত্মীয় অমুককে হত্যা করবো। কেননা এরাই কুফরের নেতৃবৃন্দ”। মুসনাদে আহমদের বর্ণণায় অতিরিক্ত এসেছে, “যেন আল্লাহ তায়ালা দেখে নেন, কাফেরদের প্রতি আমাদের অন্তরে কোন নম্রতা নেই”। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবুবকরের পরামর্শ গ্রহণ করে বন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দেন, কাফেরদের শক্তি খর্ব করার জন্য হত্যা করাই সংগত ছিল। মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদীস নং: ১৭৬৩ মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং: ২০৮)
২ - আব্দুল্লাহ বিন শাওযাব রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, বদর যুদ্ধের দিন আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাযিআল্লাহু আনহুর বাবা তাকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করছিলো, কিন্তু আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন সে বারবার এমন করলো তখন আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে খতম করে দিলেন। এই প্রেক্ষিতেই অবতীর্ণ হয়, لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ (যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে তাদেরকে তুমি আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধীদের ভালোবাসতে দেখবে না, যদিও বিরোধীবাদীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা জ্ঞাতী-গোষ্ঠী হয়। সুরাতুল মুজাদালা, আয়াত: ২২) (আলমু’জামুল কাবীর তবরানী, হাদীস : ৩৬০, আলইসাবাহ, হাফেয ইবনে হাযার, ৫/২৮৬, হাফেয ইবনে হাযার এই হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)
৩ – একব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল আমার পিতা আপনার নিন্দা করতো, তাই আমি তাকে হত্যা করে ফেলেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কাজে কোন কষ্ট পাননি। (সুনানে বাইহাকী, হাদীস : 17042, আলইসাবাহ, লিলহাফেয ইবনে হাযার, ৯/৬২ বাইহাকী বলেন, এটি সহীহ সনদে বর্ণিত মুরসাল হাদীস)
৪ - বদরের যুদ্ধের সময় আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুর ছেলে আব্দুর রহমান কাফের ছিল এবং মুশরিকদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিল, পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণের পর তিনি আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, “বদরের যুদ্ধের দিন আমি আপনাকে দেখেছিলাম, (এবং ইচ্ছে করলে আপনাকে টার্গেট করতে পারতাম কিন্তু হত্যা করার ইচ্ছা না থাকায়) পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিলাম। জবাবে আবুবকর বলেন, কিন্তু আমি যদি তোমাকে দেখতে পেতাম তাহলে তোমাকে হত্যা করে ফেলতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৭৯৫০)
৫ – বদরের যুদ্ধে মুসয়াব বিন উমায়েরের ভাই আবু আযীয বিন উমায়ের বন্দী হয়। এক আনসারী সাহাবী তাকে বন্দী করে বাঁধছিলেন, তখন মুসয়াব বিন উমায়ের তাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। ভাইকে বন্দী করতে দেখে তিনি আনসারীকে বলেন, একে কষে বাঁধো, এর মা অনেক সম্পদশালী, তুমি বেশ ভালো মুক্তিপণ পাবে। এ কথা শুনে আবু আযীয বলল, ভাইয়ের জন্য এটাই আপনার অসিয়্যাত ? মুসয়াব রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, আমার ভাই তো এই আনসারী, তুমি নও !! (আলবিদায়া ওয়াননিহায়া, ইবনে কাসীর, ৫/১৯১)
৬ - ইবনে হিশাম তার সীরাত গ্রন্থে বর্ণনা করেন, “উমর রাযিআল্লাহু আনহু সাইদ বিন আস রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, সম্ভবত তোমার ধারণা, আমি তোমার বাবাকে হত্যা করেছি, যদি আমি তাকে হত্যা করতাম তাহলে তোমার কাছে ওযরখাহি করতাম না। কিন্তু আমি তাকে হত্যা করিনি। বরং আমি আমার মামা আস বিন হিশাম বিন মুগিরাকে হত্যা করেছি। তোমার পিতাকে তো তার চাচাত ভাই আলী হত্যা করেছে।” আলইসাবাহর বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে, “উমর রাযিআল্লাহুর কথা শুনে সাইদ বিন আস বলেন, যদি আপনি তাকে হত্যা করতেন তাহলে আপনি হতেন হকের উপরে আর সে হত বাতিলের উপরে”। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ২/৩০১, আলইসাবাহ ৪/৩৪২)
৭ - আবুয্ যিনাদ বলেন, বদরের যুদ্ধের সময় আবু হুযাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু তার বাবা উতবাকে দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করেন, কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বাবার সাথে যুদ্ধ করতে নিষেধ করেন। ওয়াকেদী বলেন, আব্দুর রহমান বিন আবু বকর বদরের দিন মুশরিকদের পক্ষ থেকে মুসলমানদের দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করে, তখন আবু বকর রাযিআল্লাহু তার মোকাবেলা করার জন্য তার দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এই বলে নিবৃত্ত করেন, হে আবু বকর, (তোমার জীবন বাঁচিয়ে রেখে) আমাদেরকে তোমার দ্বারা উপকৃত হতে দাও। (সুনানে বাইহাকী, হাদিস : ১৬৭৭৪)
Comment