*****
বিসমিল্লাহ আর-রাহমান আর-রাহীম
.
শাইখ সাথে পা ভাজ করে বসলেন। স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যের সাথে আমামাহ ঠিক করলেন। তারপর ধীরে ধীরে তাঁর চারপাশে বসে থাকা ছাত্রদের দিকে এক একে তাকালেন। তাঁরা বসে ছিল স্থির হয়ে, নিবিষ্ট মনে মাটির দিকে চোখ নামিয়ে – যেন তাঁদের মাথায় পাখি বসে আছে, আর একটু নড়াচড়াতেই উড়ে যাবে। শাইখ শুরু করলেনঃ
.
“হে বৎস, কাল আমরা কিতাবের কোথায় শেষ করেছিলাম?”
.
“আমরা লেখকের এই বক্তব্য পর্যন্ত পৌছেছিলাম – “ জামা’আ হল তাই যা হাক্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি শুধু একজন সম্পূর্ণ সত্যকে স্বীকার করে, তবে সেটাই জামা’আ, যদি তাতে একজন থাকে, তাও।“”
.
.
“হ্যা, হ্যা। আর আমি তোমাদের বলেছিলাম যে হাক্ব হল তা-ই যার উপর আমাদের এই জামা’আ আছে। আর যে আমাদের সাথে দ্বিমত করবে, সে জামা’আ ত্যাগ করবে। এবং সে তাঁর এই কাজের মাধ্যমে দ্বীনের মধ্যে বিদ’আ করেছে এবং মুমিনদের রাস্তার বিপরীত পথে চলে গেছে, এবং...”
.
হঠাৎ ভেসে আসা দরজায় আঘাতের শব্দে শাইখের কথায় বাঁধা পড়লো...
.
শাইখ কথা থামিয়ে একজন ছাত্রের দিকে তাকালেন। তৎক্ষণাৎ ছাত্রটি উঠে গিয়ে দরজা খুললো...
.
দরজার ওপাড়ে দাড়ানো উস্কখুস্ক চুলের, কালি মাখা মুখের লোকটি চেঁচাতে শুরু করলোঃ
.
“ইয়া শাইখ ! ইয়া শাইখ ! আদিলের ঘরে আগুন লেগেছে, সব পুড়ে যাচ্ছে...”
.
শাইখ জায়গায় বসে মাথা ঘুড়িয়ে শব্দের উৎসের দিকে তাকালেন। শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলেনঃ
.
“আর তাতে আমার কি?”
.
“আমাদের এই মুহূর্তে আপনার এবং আপনার ছাত্রদের সাহায্য বড়ই প্রয়োজন হে শাইখ…”
.
“তুমি চাও আদিলের অসতর্কতার কারণে,সে যে সমস্যায় পতিত হয়েছে, আমি সেটার সমাধান করি?”
.
“শাইখ, বাসা ভর্তি নারী আর শিশু, এরা সবাই মারা পড়বে!”
.
“এসবই আদিলের কর্মফল। সে নিজেই এই বিপদ ডেকে এনেছে”
.
এটুকু বলেই শাইখ তাঁর ছাত্রের প্রতি ইশারা করলেন। উস্কখুস্ক চুলের কালিমাখা লোকটির মুখের উপর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। শাইখ আবার তাঁর দারস শুরু করলেনঃ
.
“ হে আমার সন্তানেরা, যেনে রাখো, যারাই আমাদের জামা’আর বিরুদ্ধে কথা বলে তারা গোমরাহ, বিদ’আতি এবং মন্দের অনুসরণকারী”
.
একজন ছাত্র প্রশ্ন করলোঃ
.
“যদি তারা আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত হয়, তাও?”
.
“কিভাবে তারা আহলুস সুন্নাহ-র অন্তর্ভুক্ত হতে পারে? তুমি কি এখনো বুঝতে পারছো না? কেউ আমাদের জামা’আর বিরোধিতা করার পরও কিভাবে আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বরং সে একজন বিদ’আতি। না, বরং সে আহলুল বিদ’আর চাইতেও নিকৃষ্ট, কারণ সে এমন সব ব্যক্তিদের তাবলিস করে যাদের বেশীরভাগ…”
.
দরজায় করাঘাতের শব্দে আবারো শাইখের কথায় ছেদ পড়লো। একজন ছাত্র উঠে গিয়ে দরজা খুললো। চৌকাঠের ওপাড় থেকে সেই একই উস্কখুস্ক চুলের, কালিমাখা মুখের লোক আর্তনাদ করে উঠলোঃ
.
“ইয়া শাইখ, আগুন সালিহ-র ঘর পর্যন্ত পৌছে গেছে…”
.
“কোন সালিহ? বিদ’আতি সালিহ?”
.
“হে শাইখ, যারা তাঁর ঘরে আটকা পড়েছে তাঁদের আগুনের হাত থেকে বাঁচান, তারপর তাঁকে নাসীহাহ করুন।“
.
শাইখ বললেনঃ “এই হল আল্লাহ-র পক্ষে থেকে ত্বরিত শাস্তি সেই ব্যক্তির জন্য যে বিদ’আ করেছে”
.
তিনি তাঁর ছাত্রের দিকে দরজা বন্ধ করার ইশারা করলেন। শাইখ আবার শুরু করলেনঃ
.
“দেখ কিভাবে আল্লাহ্* এই বিদ’আতি খবিশকে শাস্তি দিয়েছেন। আল্লাহ্* এই ব্যক্তিকে শাস্তি দিয়েছে কারণ সে আহলুস সুন্নাহর পোষাকের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু যখন সে আমাদের বরকতময় জামা’আর বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করলো, তখন আল্লাহ্* তার স্বরূপ প্রকাশ করে দিলেন। এবং তিনি সুবহানাহু তা’আলা এই বিদ’আতির শাস্তি বৃদ্ধি করে দিয়েছেন, আর তাই এখন তার ঘর আগুনে পুড়ছে।“
.
অস্বস্তির সাথে নড়েচড়ে একজন ছাত্র বললোঃ
.
“কিন্তু শাইখ…আমি সালিহকে চিনি…আর আমি তো তাঁর মধ্যে কোন বিদ’আ দেখি নি!”
.
“হাহ! তুমি দেখো নি কারণ তুমি আল জারহ ওয়াল তা’দীল সম্পর্কে এখনো সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারো নি। আর তাই আমি তোমাকে বলছিঃ যে ব্যক্তি সুন্নাহরা আড়ালে লুকিয়ে থাকে সে প্রকাশ্য বিদ’আতির চাইতে বেশি ভয়ঙ্কর। এই যে সালিহ, আমি তাকে বহুবার মাসজিদের দেখেছি। সে আমার কুশলাদি জিজ্ঞেস করা তো দূরের কথা, আমার দিকে তাকায় পর্যন্ত না ! এবং সে আমাকে এড়িয়ে চলে।“
.
“শাইখ এটা কি একটা বিদ’আ?”
.
“অবশ্যই। যদি সে আমাদের বরকতময় জামা’র সদস্য হত, তবে অবশ্যই সে আমাদের কুশলাদি জিজ্ঞেস করতো!”
.
তৃতীয়বারের মত শাইখের কথায় বাধা পড়লো। দরজা খোলা মাত্র উস্কখুস্ক চুলে, কালিমাখা চেহারার লোকটি কান্না মিশ্রিত গলায় চিৎকার করে বললোঃ
.
“ইয়া শাইখ, আগুন মাসজিদ পর্যন্ত পৌছে গেছে…”
.
শাইখ তাঁর স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যের সাথে লোকটির দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললেনঃ
.
“ আমি ভেবেছিলাম এরকমটা ঘটবে। কারণ এই মাসজিদ বিদ’আতিদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর বিদ’আতিরা এই মাসজিদে প্রবেশ করেছে, সালাত আদায় করেছে এবং তাদের বিদ’আ ছড়িয়েছে। হে ব্যক্তি! তুমি আমাদের যথেষ্ট বিরক্ত করেছো। আর এখানে আসবে না।“
.
“ইয়া শাইখ।…মাসজিদ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে!”
.
“হোক মাসজিদ…এসব কিছুর কারণ হল আদিল। সেই এসবের জন্য দায়ী”
.
তিনি ইশারায় তাঁর ছাত্রদের দরজা বন্ধ করতে বললেন।
.
.
শাইখ আবার তাঁর কথা শুরু করলেনঃ
.
.
“দেখো, আহলুল বিদ’আর গুনাহর ফলাফল। লা হাওলা ওয়ালা কু’আতা ইল্লাহ বিল্লাহ…এমনকি মাসজিদও তাঁদের বিদ’আর অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেলো না।“
.
“হে শাইখ, আমাদের কি মাসজিদের আগুন নেভাতে তাঁদের সাহায্য করা উচিৎ না?”
.
শাইখ গলা পরিষ্কার করলেন…
.
“হে বৎস…যারা আগুন নেভানোর কাজ করছে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের লোক আছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিদ’আতি, কেউ কেউ ফুসসাক্ব…আর আমাদের জামা’আ এসব থেকে মুক্ত। যদি আমরা তাদের সাহায্য করতে যাই, তবে আমাদের মধ্যে তাদের অকল্যাণ প্রবেশ করবে।“
.
তিনি একজন ছাত্রের দিকে তাকিয়ে আদেশ দিলেনঃ
.
“তুমি পড়া শুরু করো, বারাকাল্লাহু ফীক”
.
কিন্তু ছাত্রটি কিতাব থেকে পড়া শুরু করার আগেই , একটি বিকট শব্দ তাদের হতচকিত করে দিলো।
.
শাইখসহ তারা সকলে দরজার দিকে ছুটে গেলেন
.
কিন্তু দরজাটা কোন ক্রমেই খুলছিল না। আর তখনই তাদের চোখের সামনে তাদের ধরের দেয়াল ধ্বসে পড়তে শুরু করলো…
.
আর চারদিক থেকে আগুন তাদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করলো।“
.
***
.
-লিখিত- ২-ই জিলক্বদা, ১৪২২ হিজরি
আল্লামা শাইখ নাসির বিন হামাদ আল-ফাহদ
.
আল্লাহ্* যেন মুরতাদ আল-সাউদের কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি ত্বরান্বিত করেন।
.
.
.আল্লাহ্* যেন মুসলিম উম্মাহকে ত্যাগকারী, শাসকদের ইবাদাতকারী 'আলেমদের বিচারের দিনে, এইসব শাসকদের সাথেই একত্রিত করেন। আল্লাহ্* যেন বিদ'আ, ইরজা ও গুলুহ থেকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আকে রক্ষা করেন।
link>
এভাবে শাইখ নাসিরকে নির্যাতন করা হয়। ইনি হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি হাদীসের নয়টি কিতাব [৯টি খন্ড না] মুখস্থ করেছেন।
আল্লাহু মুস্তা'আন
সংগৃহীত
বিসমিল্লাহ আর-রাহমান আর-রাহীম
.
শাইখ সাথে পা ভাজ করে বসলেন। স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যের সাথে আমামাহ ঠিক করলেন। তারপর ধীরে ধীরে তাঁর চারপাশে বসে থাকা ছাত্রদের দিকে এক একে তাকালেন। তাঁরা বসে ছিল স্থির হয়ে, নিবিষ্ট মনে মাটির দিকে চোখ নামিয়ে – যেন তাঁদের মাথায় পাখি বসে আছে, আর একটু নড়াচড়াতেই উড়ে যাবে। শাইখ শুরু করলেনঃ
.
“হে বৎস, কাল আমরা কিতাবের কোথায় শেষ করেছিলাম?”
.
“আমরা লেখকের এই বক্তব্য পর্যন্ত পৌছেছিলাম – “ জামা’আ হল তাই যা হাক্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি শুধু একজন সম্পূর্ণ সত্যকে স্বীকার করে, তবে সেটাই জামা’আ, যদি তাতে একজন থাকে, তাও।“”
.
.
“হ্যা, হ্যা। আর আমি তোমাদের বলেছিলাম যে হাক্ব হল তা-ই যার উপর আমাদের এই জামা’আ আছে। আর যে আমাদের সাথে দ্বিমত করবে, সে জামা’আ ত্যাগ করবে। এবং সে তাঁর এই কাজের মাধ্যমে দ্বীনের মধ্যে বিদ’আ করেছে এবং মুমিনদের রাস্তার বিপরীত পথে চলে গেছে, এবং...”
.
হঠাৎ ভেসে আসা দরজায় আঘাতের শব্দে শাইখের কথায় বাঁধা পড়লো...
.
শাইখ কথা থামিয়ে একজন ছাত্রের দিকে তাকালেন। তৎক্ষণাৎ ছাত্রটি উঠে গিয়ে দরজা খুললো...
.
দরজার ওপাড়ে দাড়ানো উস্কখুস্ক চুলের, কালি মাখা মুখের লোকটি চেঁচাতে শুরু করলোঃ
.
“ইয়া শাইখ ! ইয়া শাইখ ! আদিলের ঘরে আগুন লেগেছে, সব পুড়ে যাচ্ছে...”
.
শাইখ জায়গায় বসে মাথা ঘুড়িয়ে শব্দের উৎসের দিকে তাকালেন। শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলেনঃ
.
“আর তাতে আমার কি?”
.
“আমাদের এই মুহূর্তে আপনার এবং আপনার ছাত্রদের সাহায্য বড়ই প্রয়োজন হে শাইখ…”
.
“তুমি চাও আদিলের অসতর্কতার কারণে,সে যে সমস্যায় পতিত হয়েছে, আমি সেটার সমাধান করি?”
.
“শাইখ, বাসা ভর্তি নারী আর শিশু, এরা সবাই মারা পড়বে!”
.
“এসবই আদিলের কর্মফল। সে নিজেই এই বিপদ ডেকে এনেছে”
.
এটুকু বলেই শাইখ তাঁর ছাত্রের প্রতি ইশারা করলেন। উস্কখুস্ক চুলের কালিমাখা লোকটির মুখের উপর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। শাইখ আবার তাঁর দারস শুরু করলেনঃ
.
“ হে আমার সন্তানেরা, যেনে রাখো, যারাই আমাদের জামা’আর বিরুদ্ধে কথা বলে তারা গোমরাহ, বিদ’আতি এবং মন্দের অনুসরণকারী”
.
একজন ছাত্র প্রশ্ন করলোঃ
.
“যদি তারা আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত হয়, তাও?”
.
“কিভাবে তারা আহলুস সুন্নাহ-র অন্তর্ভুক্ত হতে পারে? তুমি কি এখনো বুঝতে পারছো না? কেউ আমাদের জামা’আর বিরোধিতা করার পরও কিভাবে আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বরং সে একজন বিদ’আতি। না, বরং সে আহলুল বিদ’আর চাইতেও নিকৃষ্ট, কারণ সে এমন সব ব্যক্তিদের তাবলিস করে যাদের বেশীরভাগ…”
.
দরজায় করাঘাতের শব্দে আবারো শাইখের কথায় ছেদ পড়লো। একজন ছাত্র উঠে গিয়ে দরজা খুললো। চৌকাঠের ওপাড় থেকে সেই একই উস্কখুস্ক চুলের, কালিমাখা মুখের লোক আর্তনাদ করে উঠলোঃ
.
“ইয়া শাইখ, আগুন সালিহ-র ঘর পর্যন্ত পৌছে গেছে…”
.
“কোন সালিহ? বিদ’আতি সালিহ?”
.
“হে শাইখ, যারা তাঁর ঘরে আটকা পড়েছে তাঁদের আগুনের হাত থেকে বাঁচান, তারপর তাঁকে নাসীহাহ করুন।“
.
শাইখ বললেনঃ “এই হল আল্লাহ-র পক্ষে থেকে ত্বরিত শাস্তি সেই ব্যক্তির জন্য যে বিদ’আ করেছে”
.
তিনি তাঁর ছাত্রের দিকে দরজা বন্ধ করার ইশারা করলেন। শাইখ আবার শুরু করলেনঃ
.
“দেখ কিভাবে আল্লাহ্* এই বিদ’আতি খবিশকে শাস্তি দিয়েছেন। আল্লাহ্* এই ব্যক্তিকে শাস্তি দিয়েছে কারণ সে আহলুস সুন্নাহর পোষাকের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু যখন সে আমাদের বরকতময় জামা’আর বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করলো, তখন আল্লাহ্* তার স্বরূপ প্রকাশ করে দিলেন। এবং তিনি সুবহানাহু তা’আলা এই বিদ’আতির শাস্তি বৃদ্ধি করে দিয়েছেন, আর তাই এখন তার ঘর আগুনে পুড়ছে।“
.
অস্বস্তির সাথে নড়েচড়ে একজন ছাত্র বললোঃ
.
“কিন্তু শাইখ…আমি সালিহকে চিনি…আর আমি তো তাঁর মধ্যে কোন বিদ’আ দেখি নি!”
.
“হাহ! তুমি দেখো নি কারণ তুমি আল জারহ ওয়াল তা’দীল সম্পর্কে এখনো সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারো নি। আর তাই আমি তোমাকে বলছিঃ যে ব্যক্তি সুন্নাহরা আড়ালে লুকিয়ে থাকে সে প্রকাশ্য বিদ’আতির চাইতে বেশি ভয়ঙ্কর। এই যে সালিহ, আমি তাকে বহুবার মাসজিদের দেখেছি। সে আমার কুশলাদি জিজ্ঞেস করা তো দূরের কথা, আমার দিকে তাকায় পর্যন্ত না ! এবং সে আমাকে এড়িয়ে চলে।“
.
“শাইখ এটা কি একটা বিদ’আ?”
.
“অবশ্যই। যদি সে আমাদের বরকতময় জামা’র সদস্য হত, তবে অবশ্যই সে আমাদের কুশলাদি জিজ্ঞেস করতো!”
.
তৃতীয়বারের মত শাইখের কথায় বাধা পড়লো। দরজা খোলা মাত্র উস্কখুস্ক চুলে, কালিমাখা চেহারার লোকটি কান্না মিশ্রিত গলায় চিৎকার করে বললোঃ
.
“ইয়া শাইখ, আগুন মাসজিদ পর্যন্ত পৌছে গেছে…”
.
শাইখ তাঁর স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যের সাথে লোকটির দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললেনঃ
.
“ আমি ভেবেছিলাম এরকমটা ঘটবে। কারণ এই মাসজিদ বিদ’আতিদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর বিদ’আতিরা এই মাসজিদে প্রবেশ করেছে, সালাত আদায় করেছে এবং তাদের বিদ’আ ছড়িয়েছে। হে ব্যক্তি! তুমি আমাদের যথেষ্ট বিরক্ত করেছো। আর এখানে আসবে না।“
.
“ইয়া শাইখ।…মাসজিদ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে!”
.
“হোক মাসজিদ…এসব কিছুর কারণ হল আদিল। সেই এসবের জন্য দায়ী”
.
তিনি ইশারায় তাঁর ছাত্রদের দরজা বন্ধ করতে বললেন।
.
.
শাইখ আবার তাঁর কথা শুরু করলেনঃ
.
.
“দেখো, আহলুল বিদ’আর গুনাহর ফলাফল। লা হাওলা ওয়ালা কু’আতা ইল্লাহ বিল্লাহ…এমনকি মাসজিদও তাঁদের বিদ’আর অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেলো না।“
.
“হে শাইখ, আমাদের কি মাসজিদের আগুন নেভাতে তাঁদের সাহায্য করা উচিৎ না?”
.
শাইখ গলা পরিষ্কার করলেন…
.
“হে বৎস…যারা আগুন নেভানোর কাজ করছে তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের লোক আছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিদ’আতি, কেউ কেউ ফুসসাক্ব…আর আমাদের জামা’আ এসব থেকে মুক্ত। যদি আমরা তাদের সাহায্য করতে যাই, তবে আমাদের মধ্যে তাদের অকল্যাণ প্রবেশ করবে।“
.
তিনি একজন ছাত্রের দিকে তাকিয়ে আদেশ দিলেনঃ
.
“তুমি পড়া শুরু করো, বারাকাল্লাহু ফীক”
.
কিন্তু ছাত্রটি কিতাব থেকে পড়া শুরু করার আগেই , একটি বিকট শব্দ তাদের হতচকিত করে দিলো।
.
শাইখসহ তারা সকলে দরজার দিকে ছুটে গেলেন
.
কিন্তু দরজাটা কোন ক্রমেই খুলছিল না। আর তখনই তাদের চোখের সামনে তাদের ধরের দেয়াল ধ্বসে পড়তে শুরু করলো…
.
আর চারদিক থেকে আগুন তাদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করলো।“
.
***
.
-লিখিত- ২-ই জিলক্বদা, ১৪২২ হিজরি
আল্লামা শাইখ নাসির বিন হামাদ আল-ফাহদ
.
আল্লাহ্* যেন মুরতাদ আল-সাউদের কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি ত্বরান্বিত করেন।
.
.
.আল্লাহ্* যেন মুসলিম উম্মাহকে ত্যাগকারী, শাসকদের ইবাদাতকারী 'আলেমদের বিচারের দিনে, এইসব শাসকদের সাথেই একত্রিত করেন। আল্লাহ্* যেন বিদ'আ, ইরজা ও গুলুহ থেকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আকে রক্ষা করেন।
link>
এভাবে শাইখ নাসিরকে নির্যাতন করা হয়। ইনি হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি হাদীসের নয়টি কিতাব [৯টি খন্ড না] মুখস্থ করেছেন।
আল্লাহু মুস্তা'আন
সংগৃহীত
Comment