চার
আর-রবি ইবনু সাবিহ আলবাসরী রহ. (১৬০হি.)
আর-রবি ইবনু সাবিহ আলবাসরী রহ. (১৬০হি.)
বসরার বিশিষ্ট আবেদ ও যাহেদ। হাসান বসরী রহ. এর শাগরেদ। এছাড়াও মুহাম্মাদ ইবনু সিরিন, আতা ইবনু আবি রাবাহ, সাবিত বুনানি প্রমুখ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। ওয়াকি ইবনুল জাররাহ, আব্দুর রহমান ইবনু মাহদি, আবু দাউদ তায়ালিসি, সুফিয়ান সাউরি, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক প্রমুখ তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।
ইয়াহইয়া ইবনু মায়ীন ও আহমাদ ইবনু হাম্বলসহ অনেকে তাকে ছিকাহ তথা হাদিসে নির্ভরযোগ্য বলেছেন।
আমীরুল মু’মিনীন মাহদির আমলে হিন্দুস্তানে জিহাদ করতে এসে তিনি মারা যান। বিজয়ের পর বাহিনি যখন ফিরে যাচ্ছিল, তখন বিশেষ এক রোগ দেখা দেয়। তাতে আক্রান্ত হয়ে রবি রহ. সহ এক হাজার মুজাহিদ মারা যান। তাছাড়া জাহাজ ডুবিতেও অনেকে মারা যান। আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহম করুন। তাদেরই কুরবানির উসিলায় আজ আমরা ঈমানদার। ১৬০ হিজরির আলোচনায় ইমাম যাহাবি রহ. বলেন,
وفيها افتتح المسلمون وعليهم عبد الملك المسمعي مدينة كبيرة بالهند ... وتُوفي في غزوة الهند في الرجعة بالبحر الربيع بن صبيح البصري صاحب الحسن. اهـ
“আব্দুল মালিক আলমিসমায়ির নেতৃত্বে এ বছর মুসলমানগণ হিন্দুস্তানের বিশাল একটি এলাকা বিজয় করেন। ... এ গাযওয়াতুল হিন্দে সমূদ্রপথে ফেরার সময় হাসান বসরী রহ. এর শাগরেদ রবি ইবনু সাবিহ রহ. মৃত্যুবরণ করেন।”- আলইবার ১/১৭৯ ***
পাঁচ
শাকিক আলবালখি রহ. (১৯৪হি.)
ইব্রাহিম ইবনু আদহাম রহ. এর মুরীদ। তাসাউফ জগতে অতি পরিচিত ব্যক্তি। প্রথমে আবু হানিফা রহ. এর সান্যিধ্য গ্রহণ করেন। তার ওফাতের পর যুফার রহ. এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। উভয়ের কাছ থেকে ইলমে ফিকহ শিখেন। আবু ইউসুফ রহ. থেকেও ফিকহ শিখার সুযোগ হয়েছে। শাকিক আলবালখি রহ. (১৯৪হি.)
তিনি এক দিকে যেমন ছিলেন দুনিয়া বিমুখ যাহেদ ইবাদতগুজার, অন্যদিকে ছিলেন অনন্য সাধারণ মুজাহিদ। ইমাম যাহাবি রহ. বলেন,
وقد جاء عن شقيق مع تألهه وزهده، أنه كان من رؤوس الغزاة. وروى: محمد بن عمران، عن حاتم الأصم، قال: كنا مع شقيق ونحن مصافو العدو الترك، في يوم لا أرى إلا رؤوسا تندر ، وسيوفا تقطع، ورماحا تقصف، فقال لي: كيف ترى نفسك، هي مثل ليلة عرسك؟ قلت: لا والله. قال: لكني أرى نفسي كذلك. اهـ
“শাকিক রহ. এর ব্যাপারে জানা যায় যে, আবেদ ও যাহেদ হওয়ার পাশাপাশি তিনি শীর্ষস্থানীয় মুজাহিদ ছিলেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইমরান, হাতিম আলআছাম্ম থেকে বর্ণনা করেন, একবার তুর্কি দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শাকিকের সাথে আমরা কাতারবন্দী দণ্ডায়মান ছিলাম। সেদিন এমনই এক ভয়াবহ দিন ছিল যে, শুধু দেখছি- দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। তরবারি ভেঙে খানখান হচ্ছে। বৃষ্টির মতো তীর-বর্শা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। এমন সময় তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘নিজেকে কেমন অনুভব করছো? বাসর রাতের মতো মনে হচ্ছে কি’? আমি উত্তর দিলাম, ‘না তো’। তিনি বললেন, তবে আমার কিন্তু এমনই অনুভব হচ্ছে।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৮/৭১এ মর্দে মুজাহিদ অবশেষে ১৯৪ হিজরিতে মা-ওয়ারাউন নাহরে এক যুদ্ধে শহীদ হন। আব্দুল কাদির আলকুরাশি রহ. (৭৭৫হি.) বলেন,
مات قتيلا شهيدا فى غزوة كولار سنة أربع وتسعين ومائة رحمه الله تعالى. اهـ
“১৯৪ হিজরিতে কুলার যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। আল্লাহ তাআলা তার উপর রহম করুন।”- আলজাওয়াহিরুল মুজিয়্যাহ ফি তাবাকাতিল হানাফিয়্যাহ ২৫৮ ***
Comment