খোরাসানের পথে হিজরত করা একজন পাকিস্তানি বোনের আত্মজীবনী, পর্ব-৩
খাওলা বিনতে আব্দুল আজিজ
যে বিষয়টি আমাকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছে তা হল তাদের “ক্লাস সিস্টেম”। সেনাবাহিনীর একজন সাধারণ ব্যক্তির মর্যাদা একটি ফালতু কুত্তার চেয়ে বেশি না। তালেবানের একজন কমান্ডার সেনাদের সাধারণ সদস্যদের উদাহরণ এই বাক্যগুলোতে ব্যক্ত করেছেন যে,“বাহিনীতে সাধারণ সিপাহীদের অবস্থা শুদ্রদের ন্যায়(হিন্দুদের নিম্নশ্রেনী)এবং অফিসারদের অবস্থা হলো ব্রাহ্মণদের(হিন্দুদের উচ্চ শ্রেণী)ন্যায়। অফিসারদের টয়লেট সাধারণ সৈন্যদের ব্যারাকের চেয়ে উত্তম। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী জমিনে সবচেয়ে বড় আহমক; যারা নিজেদের দুনিয়া ও আখেরাত সামান্য কিছু টাকার বিনিময় বিক্রি করে দিয়েছে। আর সাধারণ সৈনিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং তারা ভাতাও পায় সবচেয়ে কম।”
মোট কথা, এসব নোংরা চরিত্রের কারণে অন্যদের মতো সৈন্যদের প্রতি আমার ধারণাও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু আমি যেহেতু আমার চারপাশে এই সিস্টেমের বিপরীত কোন বিদ্রোহ দেখতে পাচ্ছিলাম না। আর কেউ যদি চোখের ইশারায়ও কোন কথা বলতো তাহলে তাকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, গাদ্দার এবং
রাষ্ট্রের শত্রু ভাবা হতো। যার ফলে এমন কল্পনাকারী নিজেই লজ্জিত হতো। তাই, আমিও অন্ধকারের চাদর মুড়ি দিয়ে নিলাম।
২০০১ সালের পর যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রকাশ্যভাবে ক্রুসেডারদের সঙ্গ দিয়ে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানকে ধ্বংসের কাজে সরাসরি অংশ গ্রহণ শুরু করলো তখনও আমি হতভাগ্যতার কারণে এই সেনাদের ওয়াফাদারীর গুন-কীর্তন করতে থাকি। আমি এবং আমার মতো অনেক যুবক এটা ভাবতে থাকি যে, এসবকিছুই পারভেজ মোশাররফ দেশকে টিকিয়ে রাখার জন্যই করছে এবং ইমারাতে ইসলামীতে থাকা মুজাহিদীনরা আসলে ইহুদী এবং ইন্ডিয়ান এজেন্ট যারা পাকিস্তানকে দূর্বল করতে চাচ্ছে।
এখানে আমি দাজ্জালী মিডিয়ার কথাও স্মরণ করছি যে, স্থল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো জাতিসংঘ এবং আমেরিকার নেতৃত্বে মিডিয়া যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছিল। পুরা বিশ্বে ইমার্জেন্সী হামলার গুরুত্বটা তুলে ধরেছে এবং ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানকে মানবতার নিকৃষ্ট শত্রু ও সন্ত্রাসীদের মারকায প্রমাণিত করেছে। সিকিউরিটি ফোর্সে একের পর এক বৈঠকে বসানো হচ্ছিল। বিভিন্ন খবর ও টকশোর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং মানুষের মাঝে এই অনুভূতি সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছিল যে, আমেরিকা এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি যার সামনে অন্যান্য শক্তিশালী জাতীগুলো অনেক তুচ্ছ। আমাদের জীবন এবং মরণ আমেরিকার হাতে।
মোট কথা, ‘আমেরিকান ভূত’ এসেম্বলী এবং পার্লামেন্টে খাড়া করে দেওয়া হলো যার সামনে আমাদের বুদ্ধিজীবি এবং সেনাপ্রধানরা সেজদায় লুটিয়ে পড়ল। সাধারণ মানুষ এবং সাধারণ সৈন্যরা এই সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে নিরব তামাশার পাত্র হয়ে নিজেদের বুদ্ধিজীবিদের পিছনে ছুটতে লাগল। বাস্তবতা হলো, আমি সহ অনেক লোকই জেনে বুঝেও অজ্ঞ সেজেছিল। নিজ স্বার্থ এবং মৃত অনুভূতিই কাজ করছিল। অন্যথায়, তখনো হক্ব এবং বাতিল এই পরিমাণ উজ্বল ছিল যে, সাধারণ ব্যক্তির জন্যও চেনা সহজ ছিল। কিন্তু প্রত্যেক যুগেই হক্ব চেনাটা মুশকিল ছিল না। বরং হক্বের সাথী হওয়া এবং তাগুতের সাথে টক্কর দেওয়াটাই মুশকিল ছিল।
আমাকে সবচেয়ে বেশী এই প্রশ্নটাই করা হয় যে, সর্বশেষ আমি কিভাবে হঠাৎ আল্লাহর তাওফীকে অন্ধকার থেকে আলোর সফরে বের হয়েছি? বাস্তবতা হলো, আমি এরকম হেদায়াতের অনুসন্ধান অনেক বছর যাবতই করেছি। যেমনটা আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, আমি এমন জীবন ব্যবস্থার অনুসন্ধান করছিলাম যা মানবতাকে বর্তমান জুলুমী জীবন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি দিবে এবং ন্যায়পরায়ণ ও নিরাপদ জীবন ব্যবস্থার ধারক বাহক হবে। যা মানুষের শারিরিক এবং আত্মিক উভয়ের উন্নতির কারণ হবে।
চলবে
খাওলা বিনতে আব্দুল আজিজ
যে বিষয়টি আমাকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছে তা হল তাদের “ক্লাস সিস্টেম”। সেনাবাহিনীর একজন সাধারণ ব্যক্তির মর্যাদা একটি ফালতু কুত্তার চেয়ে বেশি না। তালেবানের একজন কমান্ডার সেনাদের সাধারণ সদস্যদের উদাহরণ এই বাক্যগুলোতে ব্যক্ত করেছেন যে,“বাহিনীতে সাধারণ সিপাহীদের অবস্থা শুদ্রদের ন্যায়(হিন্দুদের নিম্নশ্রেনী)এবং অফিসারদের অবস্থা হলো ব্রাহ্মণদের(হিন্দুদের উচ্চ শ্রেণী)ন্যায়। অফিসারদের টয়লেট সাধারণ সৈন্যদের ব্যারাকের চেয়ে উত্তম। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী জমিনে সবচেয়ে বড় আহমক; যারা নিজেদের দুনিয়া ও আখেরাত সামান্য কিছু টাকার বিনিময় বিক্রি করে দিয়েছে। আর সাধারণ সৈনিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং তারা ভাতাও পায় সবচেয়ে কম।”
মোট কথা, এসব নোংরা চরিত্রের কারণে অন্যদের মতো সৈন্যদের প্রতি আমার ধারণাও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু আমি যেহেতু আমার চারপাশে এই সিস্টেমের বিপরীত কোন বিদ্রোহ দেখতে পাচ্ছিলাম না। আর কেউ যদি চোখের ইশারায়ও কোন কথা বলতো তাহলে তাকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, গাদ্দার এবং
রাষ্ট্রের শত্রু ভাবা হতো। যার ফলে এমন কল্পনাকারী নিজেই লজ্জিত হতো। তাই, আমিও অন্ধকারের চাদর মুড়ি দিয়ে নিলাম।
২০০১ সালের পর যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রকাশ্যভাবে ক্রুসেডারদের সঙ্গ দিয়ে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানকে ধ্বংসের কাজে সরাসরি অংশ গ্রহণ শুরু করলো তখনও আমি হতভাগ্যতার কারণে এই সেনাদের ওয়াফাদারীর গুন-কীর্তন করতে থাকি। আমি এবং আমার মতো অনেক যুবক এটা ভাবতে থাকি যে, এসবকিছুই পারভেজ মোশাররফ দেশকে টিকিয়ে রাখার জন্যই করছে এবং ইমারাতে ইসলামীতে থাকা মুজাহিদীনরা আসলে ইহুদী এবং ইন্ডিয়ান এজেন্ট যারা পাকিস্তানকে দূর্বল করতে চাচ্ছে।
এখানে আমি দাজ্জালী মিডিয়ার কথাও স্মরণ করছি যে, স্থল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো জাতিসংঘ এবং আমেরিকার নেতৃত্বে মিডিয়া যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছিল। পুরা বিশ্বে ইমার্জেন্সী হামলার গুরুত্বটা তুলে ধরেছে এবং ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানকে মানবতার নিকৃষ্ট শত্রু ও সন্ত্রাসীদের মারকায প্রমাণিত করেছে। সিকিউরিটি ফোর্সে একের পর এক বৈঠকে বসানো হচ্ছিল। বিভিন্ন খবর ও টকশোর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং মানুষের মাঝে এই অনুভূতি সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছিল যে, আমেরিকা এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি যার সামনে অন্যান্য শক্তিশালী জাতীগুলো অনেক তুচ্ছ। আমাদের জীবন এবং মরণ আমেরিকার হাতে।
মোট কথা, ‘আমেরিকান ভূত’ এসেম্বলী এবং পার্লামেন্টে খাড়া করে দেওয়া হলো যার সামনে আমাদের বুদ্ধিজীবি এবং সেনাপ্রধানরা সেজদায় লুটিয়ে পড়ল। সাধারণ মানুষ এবং সাধারণ সৈন্যরা এই সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে নিরব তামাশার পাত্র হয়ে নিজেদের বুদ্ধিজীবিদের পিছনে ছুটতে লাগল। বাস্তবতা হলো, আমি সহ অনেক লোকই জেনে বুঝেও অজ্ঞ সেজেছিল। নিজ স্বার্থ এবং মৃত অনুভূতিই কাজ করছিল। অন্যথায়, তখনো হক্ব এবং বাতিল এই পরিমাণ উজ্বল ছিল যে, সাধারণ ব্যক্তির জন্যও চেনা সহজ ছিল। কিন্তু প্রত্যেক যুগেই হক্ব চেনাটা মুশকিল ছিল না। বরং হক্বের সাথী হওয়া এবং তাগুতের সাথে টক্কর দেওয়াটাই মুশকিল ছিল।
আমাকে সবচেয়ে বেশী এই প্রশ্নটাই করা হয় যে, সর্বশেষ আমি কিভাবে হঠাৎ আল্লাহর তাওফীকে অন্ধকার থেকে আলোর সফরে বের হয়েছি? বাস্তবতা হলো, আমি এরকম হেদায়াতের অনুসন্ধান অনেক বছর যাবতই করেছি। যেমনটা আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, আমি এমন জীবন ব্যবস্থার অনুসন্ধান করছিলাম যা মানবতাকে বর্তমান জুলুমী জীবন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি দিবে এবং ন্যায়পরায়ণ ও নিরাপদ জীবন ব্যবস্থার ধারক বাহক হবে। যা মানুষের শারিরিক এবং আত্মিক উভয়ের উন্নতির কারণ হবে।
চলবে
Comment