রাসুল (সা.)-এর ব্যবহৃত তরবারি🗡🗡🗡
মুলঃ মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা
বীরত্ব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। জীবনে একাধিক যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন এবং সত্য ও সুন্দরের পক্ষে বারবার তাঁর বীরত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
তাঁর বীরত্বের অন্যতম নিদর্শন তাঁর ব্যবহৃত তরবারিগুলো। রাসুল্লাহ (সা.)-এর ব্যবহৃত ৯টি তরবারির পরিচয় তুলে ধরা হলো।
আল মাছুর : এটি রাসুল (সা.)-এর প্রথম তরবারি, যা তিনি ওয়ারিশ সূত্রে পেয়েছিলেন। তরবারির ওপর খোদাই করে লেখা ছিল আবদুল্লাহ ইবনে মুত্তালিব। এর দৈর্ঘ্য ছিল ৯৯ সেন্টিমিটার। ব্লেডের দৈর্ঘ্য ছিল ৮১ সেন্টিমিটার। আর হাতল ছিল ১৪ সেন্টিমিটারের। নান্দনিক এই তরবারির প্রস্থ ছিল ৪ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে গিয়ে ৩.৫ সেন্টিমিটার হয়ে গেছে।
আল কাদিব : এটি ছিল লোহার তৈরি অত্যন্ত মজবুত তরবারি।
এর দৈর্ঘ্য ছিল ১০০ সেন্টিমিটার। প্রস্থ ছিল ২.৮ সেন্টিমিটার। এই তরবারির ব্লেড ছিল তুলনামূলক চিকন, যার উপরিভাগ ছিল মাত্র ২.২ সেন্টিমিটার। মজবুত এই তরবারিকে সঠিকভাবে চালানোর জন্য ছিল ১৪ সেন্টিমিটার হাতল। শুধু ব্লেডের দৈর্ঘ্য ছিল ৮৬ সেন্টিমিটার।
আল আদব : এই তরবারি সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) ওহুদের যুদ্ধ চলাকালে রাসুল (সা.)-কে উপহার দিয়েছিলেন। এর আগে এই তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন বিশিষ্ট সাহাবি আবু দুজানা (রা.)। বর্তমানে এটি কায়রোর জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
জুলফিকার : এটি রাসুল (সা.)-এর ব্যবহৃত তরবারিগুলোর মধ্যে অন্যতম। ওহুদের যুদ্ধে রাসুল (সা.) এই তলোয়ার ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা.)-কে উপহার দেন। ইসলামী ইতিহাসের সূত্র থেকে জানা যায়, ওহুদের যুদ্ধে মক্কার সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধার ঢাল ও শিরস্ত্রাণ এক আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করেন আলী (রা.)। এই আঘাতে তার তরবারিও ভেঙে যায়। এই ঘটনার পর রাসুল (সা.) তাঁর ‘জুলফিকার’ নামের নিজ তরবারি আলী (রা.)-কে দেন। এই তরবারির দৈর্ঘ্য ছিল ১০৪ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে ব্লেডের অংশ ছিল ৮৯ সেন্টিমিটার। এর হাতল ছিল অন্যান্য তরবারির তুলনায় হালকা ও বড়, ১৫ সেন্টিমিটার। মজবুত এই তরবারির প্রস্থও ছিল কিছুটা মোটা, ৬ সেন্টিমিটার, যার উপরিভাগ ছিল ৪.৫ সেন্টিমিটার। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর তরবারির বাঁটের অগ্রভাগ ছিল রুপার তৈরি। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৮১)। হাদিসবিশারদদের মতে, তরবারিটি ‘জুলফিকার’। মক্কা বিজয়ের দিন এটি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিল।
আল কুলায়ি : বনু কাইনুকা থেকে গনিমতস্বরূপ রাসুল (সা.) যে তিনটি তরবারি পেয়েছিলেন, এটি তার একটি। এটি সাধারণত ভ্রমণকালে নিরাপত্তার জন্য তা ব্যবহার করা হতো। যুদ্ধের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হতো না। হাতলসহ এই তরবারির দৈর্ঘ্য ১১৪ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে ব্লেড ছিল ৯১ সেন্টিমিটার। তরবারিটির প্রস্থ ছিল ৫.৫ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে গিয়ে ৪.৫ সেন্টিমিটার হয়ে যায়।
আল হাত্তাপ : এটি রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে ভারী তরবারি, যা যুদ্ধের জন্য বেশ উপযোগী ও কার্যকর। এটিও বনু কায়নুকা গোত্র থেকে পাওয়া গনিমতের মধ্যে ছিল। হাতলসহ এই তরবারির দৈর্ঘ্য ১১৩ সেন্টিমিটার, যার ব্লেড ছিল ৯৮ সেন্টিমিটার। ধারালো এই তরবারির প্রস্থ ছিল ৮ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে ৬ সেন্টিমিটারে শেষ হয়েছে।
আর রাসুব : এটি এমন একটি তরবারি, যা রুপা দিয়ে মোড়ানো ছিল। এটি রাসুল (সা.)-এর তরবারিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লম্বা, যার দৈর্ঘ্য ছিল ১৪০ সেন্টিমিটার। অনেকের ধারণা, এটি ছিল জাফর সাদিক (রা.)-এর তরবারি।
আল বাত্তার : রাসুল (সা.)-এর এই তরবারির ওপর খোদাই করে লেখা ছিল ‘আল কিসাস’ (মৃত্যুদণ্ড) এবং ‘সাইফুল আদল’ (ন্যায়ের তরবারি)। এ ছাড়া সেই তরবারিতে ছিল নান্দনিক নকশা।
আল মিখজাম : রুপায় মোড়ানো ছিল আল মিখজাম, যা রাসুল (সা.) বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছেন।
মুলঃ মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা
বীরত্ব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। জীবনে একাধিক যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন এবং সত্য ও সুন্দরের পক্ষে বারবার তাঁর বীরত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
তাঁর বীরত্বের অন্যতম নিদর্শন তাঁর ব্যবহৃত তরবারিগুলো। রাসুল্লাহ (সা.)-এর ব্যবহৃত ৯টি তরবারির পরিচয় তুলে ধরা হলো।
আল মাছুর : এটি রাসুল (সা.)-এর প্রথম তরবারি, যা তিনি ওয়ারিশ সূত্রে পেয়েছিলেন। তরবারির ওপর খোদাই করে লেখা ছিল আবদুল্লাহ ইবনে মুত্তালিব। এর দৈর্ঘ্য ছিল ৯৯ সেন্টিমিটার। ব্লেডের দৈর্ঘ্য ছিল ৮১ সেন্টিমিটার। আর হাতল ছিল ১৪ সেন্টিমিটারের। নান্দনিক এই তরবারির প্রস্থ ছিল ৪ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে গিয়ে ৩.৫ সেন্টিমিটার হয়ে গেছে।
আল কাদিব : এটি ছিল লোহার তৈরি অত্যন্ত মজবুত তরবারি।
এর দৈর্ঘ্য ছিল ১০০ সেন্টিমিটার। প্রস্থ ছিল ২.৮ সেন্টিমিটার। এই তরবারির ব্লেড ছিল তুলনামূলক চিকন, যার উপরিভাগ ছিল মাত্র ২.২ সেন্টিমিটার। মজবুত এই তরবারিকে সঠিকভাবে চালানোর জন্য ছিল ১৪ সেন্টিমিটার হাতল। শুধু ব্লেডের দৈর্ঘ্য ছিল ৮৬ সেন্টিমিটার।
আল আদব : এই তরবারি সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) ওহুদের যুদ্ধ চলাকালে রাসুল (সা.)-কে উপহার দিয়েছিলেন। এর আগে এই তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন বিশিষ্ট সাহাবি আবু দুজানা (রা.)। বর্তমানে এটি কায়রোর জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
জুলফিকার : এটি রাসুল (সা.)-এর ব্যবহৃত তরবারিগুলোর মধ্যে অন্যতম। ওহুদের যুদ্ধে রাসুল (সা.) এই তলোয়ার ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা.)-কে উপহার দেন। ইসলামী ইতিহাসের সূত্র থেকে জানা যায়, ওহুদের যুদ্ধে মক্কার সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধার ঢাল ও শিরস্ত্রাণ এক আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করেন আলী (রা.)। এই আঘাতে তার তরবারিও ভেঙে যায়। এই ঘটনার পর রাসুল (সা.) তাঁর ‘জুলফিকার’ নামের নিজ তরবারি আলী (রা.)-কে দেন। এই তরবারির দৈর্ঘ্য ছিল ১০৪ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে ব্লেডের অংশ ছিল ৮৯ সেন্টিমিটার। এর হাতল ছিল অন্যান্য তরবারির তুলনায় হালকা ও বড়, ১৫ সেন্টিমিটার। মজবুত এই তরবারির প্রস্থও ছিল কিছুটা মোটা, ৬ সেন্টিমিটার, যার উপরিভাগ ছিল ৪.৫ সেন্টিমিটার। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর তরবারির বাঁটের অগ্রভাগ ছিল রুপার তৈরি। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৮১)। হাদিসবিশারদদের মতে, তরবারিটি ‘জুলফিকার’। মক্কা বিজয়ের দিন এটি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিল।
আল কুলায়ি : বনু কাইনুকা থেকে গনিমতস্বরূপ রাসুল (সা.) যে তিনটি তরবারি পেয়েছিলেন, এটি তার একটি। এটি সাধারণত ভ্রমণকালে নিরাপত্তার জন্য তা ব্যবহার করা হতো। যুদ্ধের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হতো না। হাতলসহ এই তরবারির দৈর্ঘ্য ১১৪ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে ব্লেড ছিল ৯১ সেন্টিমিটার। তরবারিটির প্রস্থ ছিল ৫.৫ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে গিয়ে ৪.৫ সেন্টিমিটার হয়ে যায়।
আল হাত্তাপ : এটি রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে ভারী তরবারি, যা যুদ্ধের জন্য বেশ উপযোগী ও কার্যকর। এটিও বনু কায়নুকা গোত্র থেকে পাওয়া গনিমতের মধ্যে ছিল। হাতলসহ এই তরবারির দৈর্ঘ্য ১১৩ সেন্টিমিটার, যার ব্লেড ছিল ৯৮ সেন্টিমিটার। ধারালো এই তরবারির প্রস্থ ছিল ৮ সেন্টিমিটার, যা উপরিভাগে ৬ সেন্টিমিটারে শেষ হয়েছে।
আর রাসুব : এটি এমন একটি তরবারি, যা রুপা দিয়ে মোড়ানো ছিল। এটি রাসুল (সা.)-এর তরবারিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লম্বা, যার দৈর্ঘ্য ছিল ১৪০ সেন্টিমিটার। অনেকের ধারণা, এটি ছিল জাফর সাদিক (রা.)-এর তরবারি।
আল বাত্তার : রাসুল (সা.)-এর এই তরবারির ওপর খোদাই করে লেখা ছিল ‘আল কিসাস’ (মৃত্যুদণ্ড) এবং ‘সাইফুল আদল’ (ন্যায়ের তরবারি)। এ ছাড়া সেই তরবারিতে ছিল নান্দনিক নকশা।
আল মিখজাম : রুপায় মোড়ানো ছিল আল মিখজাম, যা রাসুল (সা.) বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছেন।
Comment