সোনালী যুগের সোনালী মানুষ -১
আমর ইবনুল আস রাযিঃ পর্ব-১
হে অাল্লাহ আপনি আমাকে আদেশ করেছিলেন আমি পালন করি নি। আপনি আমাকে নিষেধ করেছিলেন আমি মান্য করি নি।
হে অাল্লাহ আপনার ক্ষমা ব্যতিত আমার কোন উপায় নেই, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
এ দোয়া করতে করতে তিনি দুনিয়ার এ তুচ্ছ জী্ন ত্যাগ করে অাল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান।
এই মহা মনিষীর জীবনী মুসলিম উম্মাহর জন্য কিয়ামত অবধি বিরাট এক শিক্ষা হয়ে থাকবে। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পৃথিবীর দুটো বড় বড় প্রদেশ বিজয় করেছিলেন। ১. মিসর ২. ফিলিস্তিন।
হিজরতের অর্ধ শতাব্দী পূর্বে জন্মের মাধ্যমে এই মহান ব্যক্তির জীবন শুরু হয় এবং হিজরত পরবর্তী তেয়াল্লিশ সনে মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
তাঁর পিতা "আস ইবনে ওয়ায়েল " তৎকালীন যুগে মক্কার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি ছিল। বংশ হিসেবেও ছিল উচ্চ পর্যায়ের।
ইসলাম শুরুর যুগে মুসলিমরা যখন মক্কার কাফেরদের মাত্রাতিরিক্ত অত্যচার ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হাবশায় হিজরত করেন। তখন কুরাইশরা তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের শাস্তি দিতে মক্কায় ফিরিয়ে আনার জন্য মনস্থ করে, আর এ গুরুত্বপূ্র্ণ কাজের জন্য যাকে নির্বাচন করে তিনি হলেন আমর ইবনুল আস রাযিঃ। কারণ তৎকালীন হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশীর সাথে তাঁর ছিল পুরোনো বন্ধুত্ব। তাই তারা তাঁকে বিভিন্ন উপহার ও উপঢৌকন দিয়ে নাজ্জাশীর কাছে প্রেরণ করে।
নাজ্জাশীকে গিয়ে প্রস্তাব করেন, আমাদের কিছু লোক নিজেদের পিত্যপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে নিজেরা নতুন এক ধর্ম আবিষ্কার করেছে। আর কুরাইশ তাদের ফিরিয়ে নিতে আপনার অনুমতি নিতে আমাকে প্রেরণ করে। তখন নাজ্জাশী একদল সাহাবীকে ডেকে পাঠালেন। তারপর তাঁদের সাথে ইসলাম নিয়ে আলাপচারিতা করেন। তখন নাজ্জাশী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলেন এটাই সত্য ধর্ম। সে তৎক্ষণাৎ অামর ইবনুল অাসকে তাঁদের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। এবং তার দেয়া সব উপঢৌকন তাকে ফিরিয়ে দেয়।
অামর ইবনুল আস যখন চলে যাচ্ছেন তখন নাজ্জাশী তাকে বলল, হে আমর! তুমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন ও বুদ্ধিমান হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদের বিষয় থেকে তুমি দূরে আছো?
নিশ্চয় তিনি এবং যা কিছু তিনি নিয়ে এসেছেন সবই বাস্তব সত্য। তখন আমর অবাক হয়ে বললেন! আপনিও তাই বলছেন?
পরবর্তীতে আমর মক্কায় ফিরে যাওয়ার পর থেকে বারবার নাজ্জাশীর কথা স্বরণ করে। একপর্যায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে, কিন্তু অাল্লাহ তা লিখে রেখেছিলেন অষ্টম হিজেী সনে।
এভাবে অাল্লাহ তাঁর অন্তরকে ইসলামের জন্য খুলে দেন। আর তিনি রাসূলের সাক্ষাতের জন্য বেরিয়ে পড়লেন। পথিমধ্যে ইসলামের অন্য দুই বীর খালেদ ইবনে ওয়ালিদ ও উসমান ইবনে তালহার সাথে সাক্ষাত হয়ে যায়। তারাও ইসলামের আলোয় অালোকিত হওয়ার জন্য ছুটেছিলেন।
রাসূলের কাছে পৌঁছে তারা প্রত্যকে বাইয়াত দেন। আমর ইবনুল অাস রাযিঃ বাইয়াত দেয়ার সময় নিজের হাত গুটিয়ে নেন। তখন রাসূল জিজ্ঞেস করলেন, হে আমর! কী হলো তোমার?
তখন তিনি বললেন, অামি একটা শর্তের বিনিময়ে বাইয়াত দিব। তা হলো আমার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিতে হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
إن الاسلام و الهجرة يجبان ما قبلهما
ইসলাম ও হিজরত তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়।
অতপর তিনি বাইয়াত দিয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় অাশ্রয় গ্রহণ করে।
চলবে........
আমর ইবনুল আস রাযিঃ পর্ব-১
হে অাল্লাহ আপনি আমাকে আদেশ করেছিলেন আমি পালন করি নি। আপনি আমাকে নিষেধ করেছিলেন আমি মান্য করি নি।
হে অাল্লাহ আপনার ক্ষমা ব্যতিত আমার কোন উপায় নেই, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
এ দোয়া করতে করতে তিনি দুনিয়ার এ তুচ্ছ জী্ন ত্যাগ করে অাল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান।
এই মহা মনিষীর জীবনী মুসলিম উম্মাহর জন্য কিয়ামত অবধি বিরাট এক শিক্ষা হয়ে থাকবে। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পৃথিবীর দুটো বড় বড় প্রদেশ বিজয় করেছিলেন। ১. মিসর ২. ফিলিস্তিন।
হিজরতের অর্ধ শতাব্দী পূর্বে জন্মের মাধ্যমে এই মহান ব্যক্তির জীবন শুরু হয় এবং হিজরত পরবর্তী তেয়াল্লিশ সনে মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
তাঁর পিতা "আস ইবনে ওয়ায়েল " তৎকালীন যুগে মক্কার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি ছিল। বংশ হিসেবেও ছিল উচ্চ পর্যায়ের।
ইসলাম শুরুর যুগে মুসলিমরা যখন মক্কার কাফেরদের মাত্রাতিরিক্ত অত্যচার ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হাবশায় হিজরত করেন। তখন কুরাইশরা তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের শাস্তি দিতে মক্কায় ফিরিয়ে আনার জন্য মনস্থ করে, আর এ গুরুত্বপূ্র্ণ কাজের জন্য যাকে নির্বাচন করে তিনি হলেন আমর ইবনুল আস রাযিঃ। কারণ তৎকালীন হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশীর সাথে তাঁর ছিল পুরোনো বন্ধুত্ব। তাই তারা তাঁকে বিভিন্ন উপহার ও উপঢৌকন দিয়ে নাজ্জাশীর কাছে প্রেরণ করে।
নাজ্জাশীকে গিয়ে প্রস্তাব করেন, আমাদের কিছু লোক নিজেদের পিত্যপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে নিজেরা নতুন এক ধর্ম আবিষ্কার করেছে। আর কুরাইশ তাদের ফিরিয়ে নিতে আপনার অনুমতি নিতে আমাকে প্রেরণ করে। তখন নাজ্জাশী একদল সাহাবীকে ডেকে পাঠালেন। তারপর তাঁদের সাথে ইসলাম নিয়ে আলাপচারিতা করেন। তখন নাজ্জাশী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলেন এটাই সত্য ধর্ম। সে তৎক্ষণাৎ অামর ইবনুল অাসকে তাঁদের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে। এবং তার দেয়া সব উপঢৌকন তাকে ফিরিয়ে দেয়।
অামর ইবনুল আস যখন চলে যাচ্ছেন তখন নাজ্জাশী তাকে বলল, হে আমর! তুমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন ও বুদ্ধিমান হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদের বিষয় থেকে তুমি দূরে আছো?
নিশ্চয় তিনি এবং যা কিছু তিনি নিয়ে এসেছেন সবই বাস্তব সত্য। তখন আমর অবাক হয়ে বললেন! আপনিও তাই বলছেন?
পরবর্তীতে আমর মক্কায় ফিরে যাওয়ার পর থেকে বারবার নাজ্জাশীর কথা স্বরণ করে। একপর্যায়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠে, কিন্তু অাল্লাহ তা লিখে রেখেছিলেন অষ্টম হিজেী সনে।
এভাবে অাল্লাহ তাঁর অন্তরকে ইসলামের জন্য খুলে দেন। আর তিনি রাসূলের সাক্ষাতের জন্য বেরিয়ে পড়লেন। পথিমধ্যে ইসলামের অন্য দুই বীর খালেদ ইবনে ওয়ালিদ ও উসমান ইবনে তালহার সাথে সাক্ষাত হয়ে যায়। তারাও ইসলামের আলোয় অালোকিত হওয়ার জন্য ছুটেছিলেন।
রাসূলের কাছে পৌঁছে তারা প্রত্যকে বাইয়াত দেন। আমর ইবনুল অাস রাযিঃ বাইয়াত দেয়ার সময় নিজের হাত গুটিয়ে নেন। তখন রাসূল জিজ্ঞেস করলেন, হে আমর! কী হলো তোমার?
তখন তিনি বললেন, অামি একটা শর্তের বিনিময়ে বাইয়াত দিব। তা হলো আমার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিতে হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
إن الاسلام و الهجرة يجبان ما قبلهما
ইসলাম ও হিজরত তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়।
অতপর তিনি বাইয়াত দিয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় অাশ্রয় গ্রহণ করে।
চলবে........
Comment