আনসারি সাহাবীর বিস্ময়কর মেহমানদারি।
শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ
সহিহ বুখারিতে এসেছে রাসূল ﷺইরশাদ করেন
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ اﻵخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيفَهُ
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।" (সহিহ বুখারি:৬১৩৫) প্রিয় নবী ﷺমের এই হাদিস থেকে বুঝা যায় ইসলামি শরিয়ায় মেহমানকে সম্মান করার সবিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, আর মেহমানকে সম্মান করার একটি বিশেষ দিক হল মেহমানের খানাপিনা ও আরামকে নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়া, সাহাবিরা মেহমানদের অত্যন্ত সম্মান করতেন সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে জৈনিক আনসারির মেহমানদারি এক বিস্ময়কর গঠনা বর্ণনা হয়েছে, সেই গঠনায় স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামিন হেসেছেন এবং সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন আর যেই বান্দার কাজে আল্লাহ হাসেন তার জন্য কোনো আজাব নেই।
কেননা হাসি হল আল্লাহর সন্তুষ্টি পরিচায়ক এই গঠনাটি গঠেছিল রাতের আধারে আর আল্লাহ রব্বুল আলামিন দিনের আলোতে তা প্রকাশ করে দেন এবং এই ব্যাপারে রাসূলﷺমের উপর ওহী নাজিল করেন, গঠনাটি বর্ণণা করেছেন হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু একবার জৈনিক সাহাবি রাসূলﷺমের কাছে এসে বললেন হে আল্লাহর রাসূল! আমি শ্রান্ত, ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত মূলত তিনি কারো মেহমান হতে চাচ্ছিলেন রাসূলﷺতাঁর এক স্ত্রীর কাছে খবর পাঠালেন তিনি বললেন সেই মহান সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্যদ্বীন সহ প্রেরণ করেছেন আমার কাছে পানি ছাড়া কিছুই নেই। রাসূলﷺ একে একে সকল স্ত্রীরির কাছে খবর পাঠালেন সবার কাছ থেকে একও উত্তর এল, কারো কাছেই পানি ছাড়া কিছুই নেই।
প্রিয় ভাই! কি আশ্চর্য গঠনা দেখুন একজন ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধান, অথচ তাঁর ঘরে পানি ছাড়া খাওয়ার জন্য কিছুই নেই সুবহানাল্লাহ! নিজের ঘর থেকে কোনো ব্যবস্থা করতে না পারাই রাসূলﷺসাহাবিদের সম্মোধন করে বললেন .
مَنْ يُضِيفُ هَذا اللَّيْلَةَ رَحِمَهُ اللهُ؟
"এই লোকটিকে আজ রাতে কে মেহমানদারি করব? আল্লাহ তাকে রহম করুন।"
তখন জৈনিক আনসারি সাহাবি দাঁড়িয়ে বললেন আমি তাঁর মেহমানদারি করব হে আল্লাহর রাসূল! তারপর মেহমানকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে গেলেন এবং স্ত্রীরিকে বললেন ঘরে আল্লাহর রাসূলের মেহমানকে নিয়ে এসেছি সম্মানের সঙ্গে তার মেহমানদারির ব্যবস্থা কর, স্ত্রীরি বললেন ঘরে তো বাচ্চাদের খাবার ছাড়া কিছুই নেই, আনসারি সাহাবি বললেন তুমি খানা প্রস্তুত কর বাতি জালাও আর বাচ্চারা খেতে চাইলে তাদের ঘুম পাড়িয়ে দেও আমরা যখন মেহমানকে নিয়ে খেতে বসব তখন তুমি বাতি ঠিক করার অযুহাতে বাতিটি নিবিয়ে দিবে এই অল্প খাবারে যদি আমরাও অংশগ্রহণ করি তাহলে মেহমান তৃপ্তি বড়ে খেতে পারবেনা, অন্ধকারে আমরাও খাওয়ার বান করব কিন্তু খাবনা, স্বামীর কথা মত স্ত্রীরি খাবার প্রস্তুত করলেন বাতি জালালেন এবং বাচ্চাদের ঘুমপাড়িয়ে দিলেন, যখন মেহমানকে নিয়ে খেতে বসলেন স্ত্রীরি গিয়ে বাতি ঠিক করার বাহানায় বাতিটি নিবিয়ে দিলেন তাঁরা এমন ভাব করলেন যেন তাঁরাও মেহমানের সঙ্গে খাচ্ছেন রাসূলুল্লাহর মেহমান পেটভরে খেলেন আর তারা অভুক্ত রইলেন।
সকাল হলে আনসারি সাহাবি রাসূলﷺমের দরবারে গেলেন রাসূলﷺসাহাবিকে দেখে বললেন
ضَحِكَ اللهُ اللَّيْلَةَ أَوْ عَجِبَ٭ مِنْ فَعَالِكُمَا
"গতরাতে তোমাদের কাণ্ড দেখে আল্লাহ তায়া'লা হেসে দিয়েছেন অথবা বলেছেন, তোমাদের প্রতি খুশি হয়েছেন।"(সহিহ বুখারি, ৩৭৯৮; সহিহ মুসলিম: ২০৫০)
তার পর আল্লাহ রব্বুল আলামিন এই আয়াত নাজিল করেন,
وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
"আর তারা নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও নিজেদের ওপর অন্যদের অগ্রাধিকার দেয়। আর মনের কার্পণ্য থেকে যাদের মুক্ত রাখা হয়েছে তারাই সফলকাম।" (সূরা হাশর, ৫৯:০৯)
সুবাহানাল্লাহ! কত মোবারক এই মেহমানদারি কত মোবারক এই মেজবান যাদের মেহমানদারি দেখে স্বয়ং আল্লাহ হাসেন এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আল্লাহ তায়া'লা আমাদেরও মেহমানদারির তাওফিক দিন আমাদের আমল গুলোকেও এভাবে কবুল করুন আমীন। ইয়া রব্বাল আলামিন।
শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ
সহিহ বুখারিতে এসেছে রাসূল ﷺইরশাদ করেন
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَومِ اﻵخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيفَهُ
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।" (সহিহ বুখারি:৬১৩৫) প্রিয় নবী ﷺমের এই হাদিস থেকে বুঝা যায় ইসলামি শরিয়ায় মেহমানকে সম্মান করার সবিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, আর মেহমানকে সম্মান করার একটি বিশেষ দিক হল মেহমানের খানাপিনা ও আরামকে নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয়া, সাহাবিরা মেহমানদের অত্যন্ত সম্মান করতেন সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে জৈনিক আনসারির মেহমানদারি এক বিস্ময়কর গঠনা বর্ণনা হয়েছে, সেই গঠনায় স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামিন হেসেছেন এবং সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন আর যেই বান্দার কাজে আল্লাহ হাসেন তার জন্য কোনো আজাব নেই।
কেননা হাসি হল আল্লাহর সন্তুষ্টি পরিচায়ক এই গঠনাটি গঠেছিল রাতের আধারে আর আল্লাহ রব্বুল আলামিন দিনের আলোতে তা প্রকাশ করে দেন এবং এই ব্যাপারে রাসূলﷺমের উপর ওহী নাজিল করেন, গঠনাটি বর্ণণা করেছেন হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু একবার জৈনিক সাহাবি রাসূলﷺমের কাছে এসে বললেন হে আল্লাহর রাসূল! আমি শ্রান্ত, ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত মূলত তিনি কারো মেহমান হতে চাচ্ছিলেন রাসূলﷺতাঁর এক স্ত্রীর কাছে খবর পাঠালেন তিনি বললেন সেই মহান সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্যদ্বীন সহ প্রেরণ করেছেন আমার কাছে পানি ছাড়া কিছুই নেই। রাসূলﷺ একে একে সকল স্ত্রীরির কাছে খবর পাঠালেন সবার কাছ থেকে একও উত্তর এল, কারো কাছেই পানি ছাড়া কিছুই নেই।
প্রিয় ভাই! কি আশ্চর্য গঠনা দেখুন একজন ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধান, অথচ তাঁর ঘরে পানি ছাড়া খাওয়ার জন্য কিছুই নেই সুবহানাল্লাহ! নিজের ঘর থেকে কোনো ব্যবস্থা করতে না পারাই রাসূলﷺসাহাবিদের সম্মোধন করে বললেন .
مَنْ يُضِيفُ هَذا اللَّيْلَةَ رَحِمَهُ اللهُ؟
"এই লোকটিকে আজ রাতে কে মেহমানদারি করব? আল্লাহ তাকে রহম করুন।"
তখন জৈনিক আনসারি সাহাবি দাঁড়িয়ে বললেন আমি তাঁর মেহমানদারি করব হে আল্লাহর রাসূল! তারপর মেহমানকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে গেলেন এবং স্ত্রীরিকে বললেন ঘরে আল্লাহর রাসূলের মেহমানকে নিয়ে এসেছি সম্মানের সঙ্গে তার মেহমানদারির ব্যবস্থা কর, স্ত্রীরি বললেন ঘরে তো বাচ্চাদের খাবার ছাড়া কিছুই নেই, আনসারি সাহাবি বললেন তুমি খানা প্রস্তুত কর বাতি জালাও আর বাচ্চারা খেতে চাইলে তাদের ঘুম পাড়িয়ে দেও আমরা যখন মেহমানকে নিয়ে খেতে বসব তখন তুমি বাতি ঠিক করার অযুহাতে বাতিটি নিবিয়ে দিবে এই অল্প খাবারে যদি আমরাও অংশগ্রহণ করি তাহলে মেহমান তৃপ্তি বড়ে খেতে পারবেনা, অন্ধকারে আমরাও খাওয়ার বান করব কিন্তু খাবনা, স্বামীর কথা মত স্ত্রীরি খাবার প্রস্তুত করলেন বাতি জালালেন এবং বাচ্চাদের ঘুমপাড়িয়ে দিলেন, যখন মেহমানকে নিয়ে খেতে বসলেন স্ত্রীরি গিয়ে বাতি ঠিক করার বাহানায় বাতিটি নিবিয়ে দিলেন তাঁরা এমন ভাব করলেন যেন তাঁরাও মেহমানের সঙ্গে খাচ্ছেন রাসূলুল্লাহর মেহমান পেটভরে খেলেন আর তারা অভুক্ত রইলেন।
সকাল হলে আনসারি সাহাবি রাসূলﷺমের দরবারে গেলেন রাসূলﷺসাহাবিকে দেখে বললেন
ضَحِكَ اللهُ اللَّيْلَةَ أَوْ عَجِبَ٭ مِنْ فَعَالِكُمَا
"গতরাতে তোমাদের কাণ্ড দেখে আল্লাহ তায়া'লা হেসে দিয়েছেন অথবা বলেছেন, তোমাদের প্রতি খুশি হয়েছেন।"(সহিহ বুখারি, ৩৭৯৮; সহিহ মুসলিম: ২০৫০)
তার পর আল্লাহ রব্বুল আলামিন এই আয়াত নাজিল করেন,
وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
"আর তারা নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও নিজেদের ওপর অন্যদের অগ্রাধিকার দেয়। আর মনের কার্পণ্য থেকে যাদের মুক্ত রাখা হয়েছে তারাই সফলকাম।" (সূরা হাশর, ৫৯:০৯)
সুবাহানাল্লাহ! কত মোবারক এই মেহমানদারি কত মোবারক এই মেজবান যাদের মেহমানদারি দেখে স্বয়ং আল্লাহ হাসেন এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আল্লাহ তায়া'লা আমাদেরও মেহমানদারির তাওফিক দিন আমাদের আমল গুলোকেও এভাবে কবুল করুন আমীন। ইয়া রব্বাল আলামিন।
Comment