Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাসুলুল্লাহ ﷺমেহমান হলেন আনসারি সাহাবির বাড়িতে|| শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ |

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাসুলুল্লাহ ﷺমেহমান হলেন আনসারি সাহাবির বাড়িতে|| শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ |

    রাসুলুল্লাহ ﷺমেহমান হলেন আনসারি সাহাবির বাড়িতে


    শাইখ তামিম আল-আদনানী হাফিজাহুল্লাহ






    সিরাতের পরতে পরতে আমরা খুঁজে পাই রাসুলুল্লাহ ﷺও সাহাবিদের মেহমানদারির অসংখ্য ঘটনা। কখনো রাসুলুল্লাহ ﷺমেজবান হয়েছেন। কখনো বা সাহাবিদের বাড়িতে মেহমান হয়েছেন। আজ আমরা আলোচনা করব জনৈক আনসারি সাহাবির বাড়িতে রাসুলুল্লাহ ﷺমের মেহমান হওয়ার একটি সুন্দর ঘটনা। ঘটনাটি এসেছে সহিহ মুসলিমে। বর্ণনা করেছেন হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াআল্লাহু আনহু। "" একদিন রাতে বা দিনে রাসুলুল্লাহ ﷺঘর থেকে বের হলেন। পথিমধ্যে দেখা হয়ে গেল আবু-বকর ও উসমানের সঙ্গে। তিনি বললেন:
    مَا أَخْرَجَكُمَا مِنْ بُيُوتِكُما هذِه السَّاعَةَ؟
    'এ সময় তোমরা ঘরের বাইরে কেন?
    তারা উভয়েই উত্তর দিলেন: হে আল্লাহর রাসুল! ক্ষুধার কারনে। ক্ষুধার কষ্ট সইতে না পেরে আমরা বাইরে বেরিয়ে পড়েছি। তাদের কথা শুনে রাসুলুল্লাহ ﷺবললেন:
    وَأَنَا ٭ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ٭ لأخْرَجَنِي الَّذِي أخْرَجَكُما ٭ قُوما
    ' ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের মত আমাকেও ক্ষুধাই ঘরের বাইরে টেনে এনেছে চলো আমার সঙ্গে।'
    আবু বকর ও উমর রাদিয়াআল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ ﷺএর সঙ্গে চলতে লাগলেন। ইমাম নবিব রহিমাহুল্লাহ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ' এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ ﷺও বড় বড় সাহাবিরা কীভাবে দুনিয়াকে পরিত্যাগ করেছিলেন এবং ক্ষুধা ও তৃষ্ণার যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন।'


    প্রিয় ভাই! আজ আমরা সামান্য দরিদ্রতার মুখোমুখি হলে কিংবা কয়েকদিন অর্থকষ্টে ভুগলে কত অস্থির হয়ে উঠি। অথচ দেখুন, ইসলামের রাষ্ট্রের প্রধান হয়েও রাসুলুল্লাহ ﷺএর জীবন কেমন ছিল? কেমন ছিল তার শ্রেষ্ঠ সাহাবিদের জীবন। ক্ষুধার কষ্ট সইতে না পেরে তাদের রাস্তায় বের হয়ে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে!

    প্রিয় ভাই! এরাই তো আমাদের আদর্শ! আমাদের জীবনপথের প্রেরণা! আল্লাহ তাআলা তাঁদের মতো আমাদেরকেও আখিরাতমুখী জীবন যাপনের তাওফিক দিন।

    রাসুলুল্লাহ ﷺআবু বকর ও উমর রাদিয়াআল্লাহু আনহু কে নিয়ে চলতে লাগলেন। হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা জনৈক আনসারি সাহাবির বাড়ির সামনে এলেন। সাহাবিটির নাম আবুল হাইছাম মালিক রাদিয়াআল্লাহু আনহু দেখা গেল, তিনি বাড়িতে নেই। সাহাবির স্ত্রী রাসুলুল্লাহ ﷺও দুই সাহাবিকে দেখে বলেন:
    مَرْ حَبَاً وَأَهلأ
    {স্বাগত! আসুন, আসুন! হে আল্লাহর রাসুল!}
    রাসুলুল্লাহ ﷺবললেন: 'আবুল হাইসাম কোথায়? সাহাবির স্ত্রী উত্তর দিলেন: 'আমাদের জন্য মিষ্টি পানির খোঁজে গেছেন।' ইমাম নববি রহিমাহুল্লাহ বলেন: 'এখান থেকে বোঝা যায়, মেহমানদেরকে স্বাগতম জানানো, তাঁদের আগমনে খুশি প্রকাশ করা এবং তাঁদের সম্মান করা মুস্তাহাব।' রাসুলুল্লাহ ﷺসাহাবির স্ত্রীর মধ্যে যখন এই কথাগুলো হচ্ছিল, এরি মধ্যেই ' তার স্বামী আনসারি সাহাবি আবুল হাইসাম মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে পড়লেন।' তিনি এসেই দুই সাথীসহ দাঁড়ানো রাসুলুল্লাহ ﷺকে দেখে খুশিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে উঠলেন: আলহামদুলিল্লাহ! মেহমান পেয়ে আজ আমার মত সম্মানিত কেই হতে পারেনি!!!! তারপর তিনি ঘরের ভেতর ছুটে গেলেন এবং খেজুরের একটি কাঁদি নিয়ে ফিরলেন এতে কাঁচা, পাকা ও শুকনো সব ধরনের খেজুর ছিল। খেজুরের কাঁদিটি মেহমানদের সামনে রেখে বললেন: নিন নিন, খেতে শুরু করুন আপনারা।


    তারপর হাতে ছুরি নিয়ে বকরির পালের দিকে ছুটলেন। রাসুলুল্লাহ ﷺহাঁক দিয়ে বললেন:
    إِيْاكَ وَالْحَلُوبَ
    আবুল হাইসাম! সাবধান, দুধাল বকরি জবেহ করে বসো না আবার!
    সাহাবি একটি বকরি জবেহ করলেন। দ্রুত রান্না সেরে মেহমানদের সামনে খাবার পরিবেশন করা হলো। গোশত, খেজুর ও মিষ্টি পানি খেয়ে সবাই পরিতৃপ্ত হলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ ﷺআবু-বকর ও উমরকে বললেন:
    وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ٭ لَتُسْأَلُنَّ عَنْ هَذَا النَّعِيمِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ٭ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمُ الْجُوعُ٭ ثُمَّ لَمْ تَرْجِعُوا حَتَّی أَصَابَكُمْ هَذَا النَّعِيمُ
    ' সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এই নিয়ামত সম্পর্কে কিয়ামতের দিন তোমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। ক্ষুধার যন্ত্রণা তোমাদের ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে এসেছিল আর ঘরে ফেরার আগেই তোমরা এই নিয়ামত পেয়ে গেছ।' (মুসলিম: ২০৩৮)


    প্রিয় ভাই! এই ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম, মেহমানদের সম্মান করা, মেহমানদের আগমনে খুশি প্রকাশ করা, তাদের জন্য উপযুক্ত মেহমানদারির ব্যবস্থা করা রাসুলুল্লাহ ﷺএর সুন্নাহ ও আদর্শ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন। আমিন! ইয়া রাব্বাল আলামিন।
    ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

  • #2
    সম্মানীত ভাই! অনেক উত্তম একটা কাজ করেছেন,
    আল্লাহ্ কবুল করুন,আমাদের কে আমল করার তাওফিক দান করুন,
    এবং আমাদের সকলকে শায়েখ উসামা রহিমাহুল্লাহর মত কবুল করুন আমীন।

    Comment


    • #3
      গোশত, খেজুর ও মিষ্টি পানি খেয়ে সবাই পরিতৃপ্ত হলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু-বকর ও উমর রাযি.কে বললেন:
      وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ٭ لَتُسْأَلُنَّ عَنْ هَذَا النَّعِيمِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ٭ أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمُ الْجُوعُ٭ ثُمَّ لَمْ تَرْجِعُوا حَتَّی أَصَابَكُمْ هَذَا النَّعِيمُ
      ' সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এই নিয়ামত সম্পর্কে কিয়ামতের দিন তোমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। ক্ষুধার যন্ত্রণা তোমাদের ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে এসেছিল, আর ঘরে ফেরার আগেই তোমরা এই নিয়ামত পেয়ে গেছ।' (মুসলিম: ২০৩৮)

      প্রিয় ভাই! এই ঘটনা থেকে আমরা আরো বুঝতে পারলাম যে, গোশত, খেজুর ও মিষ্টি পানি খেয়ে সবাই পরিতৃপ্ত হলেন। তারপর রাসূল ভাবলেন- তারা আবার দুনিয়াবী নিয়ামত পেয়ে আখেরাত ভুলে যায়নি তো? তাই রাসূল এমন একটি কথা বললেন, যার দ্বারা পরক্ষণেই সবাই আখেরাতমুখী হয়ে গেলেন। আর তা হলো: “সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এই নিয়ামত সম্পর্কে কিয়ামতের দিন তোমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে।” সুবহানাল্লাহ!
      আমাদের জন্য এখানে শিক্ষার অনেক উপকরণ রয়েছে। আমরাও য়েন দুনিয়াবী অফুরন্ত নিয়ামতে মাঝে ডু্বে আখেরাতকে ভুলে না যাই।
      আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        আল্লাহু আকবার! তারা দুনিয়া বিমুখতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
        হে আল্লাহ! আমাদেরকেও সবর ও শোকরের যিন্দেগী নসীব করুন। আমীন
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment

        Working...
        X