সবরের অটল পর্বত শাইখ উসামা রাহিঃ
শাইখ উসামা রাহিঃ যখন সুদানে থেকে আমেরিকা ও তাগুত সৌদি শাসকদের মুখোশ উন্মোচন করে একের পর এক বিবৃতি প্রকাশ করছিলেন, তখন তাকে সৌদিতে ফিরিয়ে নিতে বাদশাহ ফাহাদ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল। ১৯৯৪ সালের শুরুর দিকে শাইখকে সৌদিতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য শাইখের কয়েকজন ভাই (যাদের মধ্যে শাইখের বড় ভাই বকর বিন লাদেনও ছিলেন) ও শাইখের মুহতারামা মা-কে তাদের নিজস্ব বিমানযোগে একদিনে তিনবার সুদানে পাঠিয়েছিল। তারা বাদশাহ ফাহাদের পক্ষ থেকে শাইখের কাছে এই প্রস্তাব রাখেন যে, যদি তিনি সৌদি ফিরে যান তাহলে তার সকল অপরাধ (?) ক্ষমা করে দেওয়া হবে, ১৯৯২ সালে তার যত সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স ফ্রিজ করা হয়েছিল তার মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া হবে, সাথে সাথে তার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু সুদৃঢ় পর্বতের সামনে ঝড়ো হাওয়া কীইবা করতে পারে। শাইখ উসামা রাহিঃ পাহাড়সম দৃঢ়তা নিয়ে তাদের সকল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
আলে সৌদের তাগুতগোষ্ঠি সর্বোচ্চ যা করার সব করল। তারা শাইখের জাতীয়তা ছিনিয়ে নিল এবং বিন লাদেন পরিবারকে বাধ্য করে নামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করল, যাতে বিন লাদেন পরিবার তাদের ভাই উসামা থেকে নিজেদের দায়মুক্ত ঘোষণা করে। এই বিবৃতিটি যে পুরোটাই বানোয়াট তারা যেন এ ব্যাপারে সামান্য ইঙ্গিতও না দেয়, এজন্য তাদেরকে হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হয়েছিল।
বাস্তবিক অর্থেই এই কঠিন পরিস্থিতিগুলো শাইখের মাঝে চুল পরিমাণ পরিবর্তনও আনতে পারেনি। আমার (শাইখ আবু খুবাইব সুদানি হাফিঃ) স্পষ্ট মনে আছে, শাইখ অনেক বেশি বেশি হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল পড়তেন। তাকে সবসময় স্থির দেখতাম। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিতেন। তিনি বলতেন - তোমরা বেশি বেশি হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকিল পড়ো।
এ ব্যাপারে শাইখ উসামা রাহিঃ বলেন -
"আমেরিকা আমাদের চুপ থাকার বিনিময় নিয়ে আমাদের সাথে দর কষাকষি করতে চায়। আমেরিকা ও তার আঞ্চলিক গোলামেরা অসংখ্যবার আমার নীরবতাকে কিনে নিতে চেয়েছে। তারা লোভ দেখিয়েছে - চুপ থাকো, তাহলে তোমার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিব, তোমার সম্পদ ফিরিয়ে দিব, তোমার পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দিব, তোমার বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দিব। এই সবকিছুর বিনিময় শুধু আমার চুপ থাকা। তারা মনে করেছে, মানুষ শুধু দুনিয়ার জন্যই বেঁচে থাকে। তারা ভুলে গিয়েছে, আমরা যদি আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমাদের সর্বস্ব বিলিয়ে না দেই, তবে আমাদের এই অস্তিত্বের কোনই মূল্য নেই।"
Comment