
৪। মৌলভি আব্দুস সালাম হানাফী:

তার পিতার নাম আলী মরদান। তিনি ১৩৪৮ হিজরি সোলার সনে দারজাব জেলার গর্দান গ্ৰামে জন্মগ্রহণ করেন। জেলাটি পূর্বে ফারইয়াব প্রদেশের মধ্যে ছিল, তবে বর্তমানে জাওজান প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত।
জিহাদ যখন শুরু হয় তখন তিনি নিজ গ্ৰামে ধর্মীয় পড়াশোনায় মগ্ন ছিলেন। তারপর আরবি ব্যাকরণ ও আইন শাস্ত্রের প্রাথমিক গ্ৰন্থাবলী অধ্যয়ন করেন। সেই সাথে যুক্তিবিদ্যা, গণিত, আইনশাস্ত্র, আবৃত্তি,তাজবীদ ইত্যাদি বিষয়াবলী সার-এ-পুল ও ফারইয়াবের স্বনামধন্য শিক্ষাবিদদের কাছে অধ্যয়ন করেন। অধিকতর শিক্ষার জন্য তিনি পাকিস্তানে পাড়ি জমান। এখানে তিনি যুক্তিবিদ্যা, আইন শাস্ত্রের মূলনীতি, সাহিত্য, ইমান আকিদা ও কোরআনের অনুবাদ অধ্যয়ন করেন। এসব করেন মারতুং, ডাংগি ও পেশোয়ারে। তারপর তিনি দারুল উলুম করাচী যান। এখানে তিনি দাওরায়ে হাদীস (এম, এ ইসলামিক স্টাডিজ/ অ্যারাবিক) সমাপন করেন। তারপর ভাওয়ালপুরে উসূলে ইফতা, উসূলে হাদীস, তাফসির ও ফিকহ অধ্যয়ন করেন। তারপর রহিম ইয়ারখান জামিয়া তাফসিরিয়ায় ফতোয়া লিখন পরিত্যক্ত সম্পত্তি বন্টনের নীতিমালা অধ্যয়ন করেন। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকটি ভাষা শিক্ষার কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। ছুটির সময়ে অফিস প্রোগ্ৰাম, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও একাউন্টিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মৌলভি হানাফী শিক্ষা সমাপনের পর শিল্পকলা , ইসলামিক সায়েন্স,তিরমিজী শরীফ ও উত্তরাধিকার আইন শাস্ত্রের অধ্যাপনা করেছেন।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে দীর্ঘ তিন বছর ইসলামী সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
তার মাতৃভাষা উজবেকি ছাড়াও পশ্তু, ফার্সি, ইংরেজি, আরবি, উর্দু,কিরগিজ,তুর্কমেনি ও তুর্কি ভাষায় তিনি অনর্গল কথা বলতে পারেন। কান্দাহারে যখন হরকতে তালেবানের যাত্রা শুরু হয় তখন তিনি ফারইয়াব প্রদেশে শিক্ষকতার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্র-শিক্ষক নিয়ে হরকতে তালেবানে যোগ দেন।
ইসলামী ইমারাহর শাসনকালে প্রথমে ফারাহ প্রদেশের শিক্ষা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর এক বছর তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০১ সালে মার্কিন আগ্ৰাসন শুরু হওয়ার পর ইসলামী ইমারাহ মৌলভি আব্দুস সালাম হানাফীকে জাওজান প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত করে। এর অল্প কিছুকাল পর মরহুম আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ তাকে পলিটিক্যাল কমিশন ও নেতৃত্ব পরিষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেন। বর্তমানে মৌলভি হানাফী পলিটিক্যাল কমিশনের ডেপুটি ও সংলাপ দলের সদস্য।
৫। মোল্লা আব্দুল মান্নান উমরী:

মোল্লা আব্দুল মান্নান উমরী কান্দাহার প্রদেশের মাইওয়ান্দ জেলার অধিবাসী। তিনি মরহুম আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ এর ভাই। অল্প বয়সে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। আফগানিস্তানের বিখ্যাত আলেমদের কাছ থেকে তিনি ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন। ধর্ম প্রচার, ইসলামী ইমারাহর জন্য লোক সংগ্ৰহ করা, যুদ্ধে সর্বসাধারণের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করা ও আবাসিক সমস্যাবলীর সমাধান সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি সংলাপ দলের সদস্য।
৬। আলহাজ্ব মৌলভি আব্দুল কবীর:

আলহাজ্ব মৌলভি আব্দুল কবীর মুহাম্মদ জানের পুত্র। ১৯৭২ ইং সালে বাগলান প্রদেশের নাহরীন জেলার অন্তর্গত কারিয়া তাংগি তাবাকান অঞ্চলের জাদরান গ্ৰামে তার জন্ম। তিনি ইসলাম ধর্ম বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করেছেন। তিনি একজন প্রখ্যাত উপজাতীয় ব্যক্তি।
ইসলামী ইমারাহর শাসনকালে লোগার ও নাংগাহার প্রদেশের গভর্নর, পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। ২০০৫ থেকে নিয়ে দুই বছর ইসলামী ইমারাহর পলিটিক্যাল কমিশনের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
তিনি বর্তমানে ইসলামী ইমারাহর নেতৃত্ব পরিষদের সদস্য, দাওয়াহ ও রিক্রুটমেন্ট কমিশনের প্রধান এবং সংলাপ দলের সদস্য।
[চলবে ইনশাআল্লাহ…]
১ম পর্ব
Comment