৭। মৌলভি আমির খান মুত্তাকী:
মৌলভি আমির খান মুত্তাকীর পিতার নাম হাজী নাদির খান। ১৩৪৯ হিজরি সোলার সনে হেলমান্দ প্রদেশের নাদ আলী জেলার জারগূন গ্ৰামে তার জন্ম। তিনি মহল্লার মসজিদ ও স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন।
কমিউনিস্ট বিপ্লব ও তৎপরবর্তী সোভিয়েত বাহিনীর হামলার কারণে বহু আফগান দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। সেসময় সাত বছর বয়সে তিনি পিতা-মাতার সাথে পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানে হিজরত করেছিলেন। তখন তিনি কেবল তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
শরণার্থী হিসেবে পাকিস্তানে অবস্থানকালে তিনি ধর্মীয় জ্ঞানার্জন চালিয়ে যান এবং তরুণ মুজাহিদ হিসেবে জিহাদের ময়দানেও কাজ করেন। মৌলভি আমির খান মুত্তাকী কাবুলে ইসলামী ইমারাহর শাসন শেষ হওয়ার পর ধর্মীয় শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং ডিগ্রি লাভ করেন।
১৩৭৩ হিজরি সোলার সনে তালেবান দুর্নীতি ও নৈরাজ্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করে। তখন তিনি হরকতে তালেবানে যোগ দেন এবং তালেবান আন্দোলনের পরিকল্পনার অধীনে জিহাদ শুরু করেন।
কান্দাহার দখলের পর ভয়েস অফ শরিয়াহ রেডিওর প্রধান এবং হরকতে তালেবানের উচ্চ পরিষদের সদস্য হিসেবে মৌলভি আমির খান মুত্তাকীকে নিয়োগ দেয়া হয়। মৌলভি আমির খান মুত্তাকী তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। কাবুল বিজয়ের পূর্বপর্যন্ত তিনি এসব দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৩৭৯ হিজরি সোলার সনে যখন কাবুল বিজয় হয় তখন তাকে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী করা হয়। পাশাপাশি তিনি ছিলেন ইসলামী ইমারাহর মুখপাত্র। মিডিয়ায় ইসলামী ইমারাহর অবস্থান তিনিই তুলে ধরতেন।
১৩৭৮ হিজরি সোলার সনের ‘আকরাব’ মাসে মহাব্যবস্থাপক ও ‘হুত’ মাসে তাঁকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মার্কিন আগ্ৰাসনের পূর্বপর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে বহাল ছিলেন।
বিরোধীদের সাথে সংলাপের জন্য মরহুম আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ তাঁকে সংলাপ দলের প্রধান নিযুক্ত করেছিলেন। ৬+২ ফরমেটে (৬ বলতে চীন, ইরান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান,তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং ২ বলতে আমেরিকা ও রাশিয়াকে বুঝাচ্ছে) প্রথমে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাশখন্দে তারপর তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে এবং এরপরে জেদ্দায় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মার্কিনীদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলাকালে মৌলভি আমির খান মুত্তাকী বেশ কয়েক বছর ধরে ইসলামী ইমারাহর সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান ছিলেন।
তিনি তাঁর সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে শত্রুদের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে কার্যকর একটি বেতার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। কর্মঠ ও উদ্যমী একটি মিডিয়া টিমের সাহায্যে তিনি সর্বসাধারণকে জিহাদমুখী করতে এবং শত্রুদের অপপ্রচারের জবাব দিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
মৌলভি আমির খান মুত্তাকী ইসলামী ইমারাহর নেতৃত্ব পরিষদের সদস্য। ২৫/০৯/১৪৩৯ হিজরি সনে তাঁকে ইসলামী ইমারাহর লীডারশিপ অফিসের প্রধান করা হয়। দুই বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেছেন।
১২/০২/২০১৯ এ আমেরিকার সাথে যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তিনি তাতে ইসলামী ইমারাহর পক্ষ থেকে অংশগ্ৰহণ করেছিলেন। আন্তঃআফগান সংলাপের জন্য ইসলামী ইমারাহ যে প্রতিনিধি দল গঠন করেছে তিনি এই দলটিরও সদস্য।
[চলবে ইনশাআল্লাহ…]
আগের পর্বগুলো দেখুন-
পর্ব-১: https://dawahilallah.com/showthread.php?21233
পর্ব-২: https://dawahilallah.com/showthread.php?21254
Comment