مؤسسة الشهداء
আশ শুহাদা মিডিয়া
Ash Shuhada Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
أيام الشيخ أبو مصعب السوري الأخيرة
শায়খ আবু মুসআব সুরি’র শেষ দিনগুলো
The Last Days of Sheikh Abu Musab al-Suri
حسام جازماتي
হুসাম জাযমাতি
Husam Jazamati

শায়খ আবু মুসআব সুরি’র শেষ দিনগুলো
হুসাম জাযমাতি
মাত্র সাতচল্লিশ বছর বয়সে, এই বিখ্যাত জিহাদি চিন্তাবিদ তাঁর বিশাল বই ‘দাওয়াতুল মুকাওমাতুল ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়া’ «دعوة المقاومة الإسلامية العالمية» শেষ করেছিলেন। বইটির শেষ অধ্যায়ে, যা তিনি ‘সমাপ্তির সুধা’ «مسك الختام» নামে অভিহিত করেন, সেখানে ফিতনা, কিয়ামতের আলামত এবং শেষ যুগের ঘটনাবলি সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীস উল্লেখ করেছিলেন। এরপর তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অসিয়তও বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন।
প্রকৃতপক্ষে, তাঁর অন্তর্দৃষ্টি তাঁকে ঠকায়নি। ২০০৪ সালের শেষ মাসে, যখন তিনি তিন বছর ধরে বইটি লিখে শেষ করেন এবং জিহাদি অঞ্চলগুলোতে বিতরণের জন্য প্রকাশ করেন, এর কয়েক মাস পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণের পর, আরব মুজাহিদদের ধরার জন্য অভিযান চালানোর সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু অবশেষে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তাঁকে গ্রেফতার করে ফেলে। এই গ্রেফতার তাঁকে বিভিন্ন মহাদেশের কারাগারের দীর্ঘ যাত্রায় ঠেলে দেয়, যা সর্বশেষ তাঁকে দামেস্কে নিয়ে গিয়ে থামে।
সিরিয়ায় ‘কার্যক্রম’ পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা তাঁকে জিহাদের অন্যতম পরিচিত ব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহর কাছে নিয়ে যায়, যিনি আরব মুজাহিদদের অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিলেন। এই পথ তাঁকে আফগানিস্তানে নিয়ে যায় এবং সেখানেই তাঁর সঙ্গী মুহাম্মাদ বাহাইয়া- যিনি আফগানিস্তানে ‘আবু খালিদ সুরি’ নামে পরিচিত ছিলেন- এর সঙ্গে পরিচয় হয়।
আবু মুসআব সুরি রহিমাহুল্লাহ, যিনি মাঝে মাঝে ছদ্মনাম উমর আবদুল হাকিম ব্যবহার করতেন, তাঁর আসল নাম মোস্তফা আস-সিত মারইয়াম। তিনি ১৯৫৮ সালে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন, কিন্তু ১৯৮০ সালে ইসলামী বিপ্লবের প্রভাব তাঁর পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তিনি সিরিয়ার ‘আত-তালিয়া আল-মুকাতিলার’ সঙ্গে যোগ দেন।
এই সময়ে, সিরিয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড তাঁকে জর্ডানে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের কাজে যুক্ত হন। তবে, তাঁর এই প্রচেষ্টা সিরিয়ার মাটিতে কোনো কার্যকর ফলাফল আনতে পারেনি। ১৯৮২ সালের প্রথম তিন মাসে, যখন হামার গণহত্যা ঘটে, তখন তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃত্বের খুব কাছাকাছি ছিলেন। তবে এই ঘটনার পরে, তিনি তাদের তীব্র সমালোচনা করেন।
১৯৯০ সালে পেশাওয়ারে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত বই ‘আস-সাওরাতুল ইসলামিয়া-আল-জিহাদিয়া ফী সুরিয়া’ «الثورة الإسلامية الجهادية في سوريا» ‘সিরিয়ায় ইসলামী জিহাদি বিপ্লব’-এ তিনি স্পষ্টভাবে ‘আত-তালিয়ার’ পক্ষে অবস্থান নেন। যদিও তখন ‘আত-তালিয়া’ কার্যত বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
এই সময়ে, আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ এবং তাঁর সঙ্গী মুহাম্মাদ বাহাইয়া একত্রে জিহাদের পথ অনুসরণ করেন। তাঁদের পথ শুরু হয় স্পেনে। সেখানে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ নিজ স্ত্রীকে ইসলামে দাওয়াত দেন এবং তাঁকে জিহাদিদের এই অদ্ভুত জগতে নিয়ে আসেন।
অবশেষে আফগানিস্তানে স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার আগে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ সময় কাটিয়েছেন ফ্রান্স, স্পেন এবং ব্রিটেনে। এর আগে তিনি সফর করেছেন জর্ডান, ইরাক এবং সৌদি আরব। ধীরে ধীরে তিনি একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ থেকে হয়ে উঠেন সামরিক প্রকৌশলের প্রশিক্ষক, তারপর জিহাদি ইতিহাসবিদ এবং তাত্ত্বিক। তিনি বেশ কয়েকটি বই রচনা করেন, যেখানে কখনও নিজের দেশ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যেমন: ‘আহলুসসুন্নাহ ফিশ শাম ফী মুওয়াজাহাতিন নুসাইরিয়া ওয়াস সালীবিয়াহ ওয়াল ইয়াহুদ’ «أهل السنة في الشام في مواجهة النصيرية والصليبية واليهود», আবার কখনও নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লিখেছেন ‘মুখতাসারু শাহাদাতী আলাল জিহাদ ফিল জাযায়ের’ «مختصر شهادتي على الجهاد في الجزائر»। ১৯৯৮ সালে তিনি কাবুলে বসে লেখেন ‘আফগানিস্তান ওয়াত তালেবান ওয়া মারেকাতুল ইসলাম আল-ইয়াওম’ «أفغانستان والطالبان ومعركة الإسلام اليوم»। এই বইয়ে তিনি তালেবান আন্দোলনের প্রতি গভীর আগ্রহ এবং ইসলামী আমিরাতের বৈধতার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
তাঁর এই সমর্থন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে যখন তিনি মোল্লা উমরকে আমীরুল মুমিনীন হিসেবে আনুগত্য প্রদর্শন করেন। কাবুলে বসবাসের মাত্র এক বছরের মাথায়, ১৯৯৯ সালে, তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘আল-গুরাবা প্রশিক্ষণ শিবির’। এটি ছিল তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ এই প্রশিক্ষণ শিবিরকে বর্ণনা করেছিলেন এভাবে— “এটি এমন একটি স্কুল, যেখানে যোদ্ধাদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক, শারঈ, এবং সামরিক পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করে দেয়া হয়।” এখানে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জিহাদি দলগুলোকে প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা দিতেন। তাঁর বেশিরভাগ শিক্ষার ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং এখনো ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।
এই সময়ের মধ্যে তাঁর পরিচিত একজন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ উসামা রহিমাহুল্লাহকে ভালোভাবেই চিনতেন। যখন উসামা রহিমাহুল্লাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পরিকল্পনা করছিলেন, তখন এটি আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ, এমনকি তালেবানদের কাছেও বিস্ময়কর ছিল। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ নিজে এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। জানা যায়, তিনি বরাবরই নিজের চিন্তা-ভাবনা এবং পন্থা অনুসরণ করতে পছন্দ করতেন।
তবে ২০০১ সালের সেই হামলার পর আমেরিকা যখন তালেবান সরকার উৎখাত এবং আল-কায়েদার সদস্যদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করে, তখন এর শিকার হন সকল বিদেশি জিহাদি। এ সময় আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকেও আত্মগোপনে যেতে হয়।
এই আত্মগোপনকালীন সময়ে তিনি রচনা করেন তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত এবং দীর্ঘ বই ‘আল-দাওয়াতুল মুকাওয়ামাহ আল-ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়াহ’ «دعوة المقاومة الإسلامية العالمية» । বইটির শুরুতে তিনি এটিকে তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে উল্লেখ করেন। এখানে তিনি তাঁর পঁচিশ বছরের অভিজ্ঞতা এবং জিহাদি আন্দোলনের ভেতর ও বাইরের নানা ঘটনা তুলে ধরেছেন। এটি ১৬০০ পৃষ্ঠার বিশাল এক গ্রন্থ, যেখানে ইসলামের ইতিহাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, বিভিন্ন ইসলামী ও জিহাদি আন্দোলনের পদ্ধতি এবং তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া, এটি ধারণ করেছে যুদ্ধের কৌশল, শারঈ বিধান, নৈতিক শিক্ষা, সামরিক প্রস্তুতি, ভীতি প্রদর্শন কৌশল, অর্থায়ন এবং জিহাদের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টির পদ্ধতি।
তবে বইটি এতই বিশদ এবং তাত্ত্বিক ছিল যে, কেউ তা পুরোপুরি পড়তে পারেনি—সম্ভবত একমাত্র আবু খালেদ ছাড়া। আবু খালেদ ছিলেন তাঁর কাছের একজন সঙ্গী, যিনি সব সময় তাঁর প্রয়োজন মেটাতেন এবং তাঁর কঠিন মেজাজ সহ্য করতেন।
অনেক দিন আগে যখন নতুন প্রজন্মের জিহাদিরা বই পড়ার চেয়ে ভিডিও বার্তা দেখায় বেশি আগ্রহী হচ্ছিল, তখন এইট বইটি ইন্টারনেটের জিহাদি ফোরামগুলোতে বেশ সাড়া ফেলেছিল। সেই সময়ে উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ ছিলেন গোপনে, আর তাঁর জায়গা নিচ্ছিলেন আবু মুসআব আল-জারকাবি রহিমাহুল্লাহর ভিডিও বার্তাগুলো। তবে ‘আল-দাওয়াতুল মুকাওয়ামাহ আল-ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়াহ’ বইটি আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহর নামকে জিহাদি চিন্তাধারার এক ‘চতুর মেধাবী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। যদিও কেউ কেউ ভুল করে তাঁকে আল-কায়েদার অন্যতম প্রধান কৌশলবিদ হিসেবে দেখছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নজরে আসা এই ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
২০০৫ সালের মে মাসের শুরুতে, আবু খালিদ বর্ণনা করেন যে, তাঁর শিক্ষক তাঁকে একটি ফ্ল্যাশ মেমোরিতে সংরক্ষিত ফাইল আবুল ফারাজ আল-লিবিকে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন। আল-লিবি সেই ফাইলটি একাধিক যোগাযোগকারীর মাধ্যমে বিন লাদেনের কাছে পাঠানোর দায়িত্বে ছিলেন। নির্ধারিত সময়েই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আবু খালিদ এবং আল-লিবিকে গ্রেফতার করে। এর কিছু সময় পর আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহকেও আটক করা হয়।
আবু খালিদ জানান, সেই ফাইলটিতে একটি সতর্কবার্তা ছিল, যা ইরাকি শাখার চরমপন্থার বিষয়ে আল-কায়েদার নেতৃত্বকে জানানো উদ্দেশ্য ছিল। এই ঘটনায় তিনি আল-লিবির ওপর দোষারোপ করেন এবং বলেন, তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল দুর্বল।
সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আল-লিবির গ্রেফতারকে স্বাগত জানান। তাঁকে তখন ‘আল-কায়েদার তৃতীয় প্রধান এবং অপারেশন প্রধান’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল, যদিও পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়। তবে আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহর গ্রেফতারের বিষয়ে অনেক মাস পর্যন্ত নীরব থাকা হয়। তাঁকে এবং আবু খালিদকে একটি মার্কিন কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তদন্তে দেখা যায়, তাঁরা আল-কায়েদার সদস্য নন এবং যুক্তরাষ্ট্র বা তার দূতাবাস, স্বার্থ বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। পরে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর দুইজনই সিরিয়ার রাজধানীতে পৌঁছান। সামরিক গোয়েন্দা শাখার প্রধান আসিফ শওকতের উপর তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে ইসলামপন্থীদের বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিল। সে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে তাঁর আদর্শ ত্যাগ করার জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার জন্য চাপ দেন। আবু খালিদ জানান, তাঁর শিক্ষক তাঁকে শওকতের দাবি পূরণ করার জন্য কাগজে সই করতে বলেন, যাতে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ বলেছিলেন, তিনি একজন সুপরিচিত লেখক, তাই এমন কাজ করা তাঁর জন্য অসম্ভব।
শওকত প্রতিদিন প্রায়ই আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহর বিষয়ে খোঁজখবর নিত এবং তাঁকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতনের আদেশ দিত। পরে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে সামরিক আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁকে ‘আল-তালিয়া আল-মুকাতিলা’ এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। এ ধরনের অভিযোগের শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড।
২০১১ সালের গ্রীষ্মে তাঁদের দুজনকে সাঈদনায়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত (ক্রস-চেক করা) মিলে যাওয়া বিবরণ অনুযায়ী— যার মধ্যে একটি হলো ‘সাইদনাইয়া কারাগারের বন্দী এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের সমিতি’ এর সমস্ত সাক্ষ্য ও বিবরণ অনুযায়ী- তাঁদেরকে প্রথমে একই সেলে রাখা হয়েছিল। তবে কিছুদিন পরে, আবু খালিদ একটি মুচলেকায় স্বাক্ষর করার পর তাঁদের আলাদা করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, শওকতের মনোযোগ ছিল আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহর দিকে। সে প্রায় প্রতিদিনই তাঁর ওপর নির্যাতনের নির্দেশ দিত। একপর্যায়ে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে সামরিক আদালতে তোলা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ‘আত-তালিয়া আল-মুকাতিলা’ এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সামরিক শাখার সদস্য। এ অভিযোগে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।
রায় কার্যকর করতেও দেরি করা হয়নি। ২০১১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে, যখন আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি ছিলেন, তখনই তাঁকে ফাঁসির কাষ্ঠে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, কয়েক সপ্তাহ পর আবু খালিদ মুক্তি পান। তবে তিনি নিশ্চিতভাবে জানতে পারেননি তাঁর শিক্ষকের (আবু মুসআব) প্রকৃত পরিণতি।
আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ তাঁর শেষ বইয়ের একটি চিঠিতে পরিবারের সদস্যদেরকে আল্লাহভীরুতা অবলম্বন এবং ধৈর্য ধারণ করার উপদেশ দেন। তিনি তাঁর সাথিদের সতর্ক করে বলেন:
“যদি আল্লাহ আমাকে বন্দীত্বে ফেলে রাখেন... তবে জেনে রাখুন, একজন বন্দী তাঁর ইচ্ছার অধিকারী নয়। তাঁর জোরপূর্বক আদায় করা কথার কোনো মূল্য নেই। যদি আমি এমন কিছু বলি বা করি যা এই বইয়ে উল্লেখিত জিহাদের আহ্বান কিংবা আমাদের যে বিশ্বাস ও নীতিতে আমরা অবিচল, তার বিপরীত হয়, তবে তা অগ্রাহ্য করবেন। সেসব কথা দেয়ালে ছুঁড়ে মারবেন।”
তিনি আরও বলেন,
“যদি আমি মারা যাই কিংবা নিহত হই, যারা আমার দাফনের দায়িত্ব নেবেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ—দাফনের ক্ষেত্রে সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করবেন—যেন আমার ভাগ্যে একটা কবর জুটে।”
এরপর অনেক গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে এখানে-সেখানে দেখা গেছে। এ ধরনের গুজবের ভিত্তি ছিল সেই সময়কার ধারণা যে, সরকার জিহাদিদের মুক্তি দিয়ে বিদ্রোহকে ইসলামিক রূপ দিতে এবং তা দমন করার অজুহাত তৈরি করতে চাচ্ছিল। তবে প্রকৃতপক্ষে, তিনি দামেস্কের নাজহা এলাকার একটি গণকবরে শায়িত ছিলেন—যে স্থানটি সরকার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের দাফনের জন্য ব্যবহার করত।
*****
روابط بي دي اب
PDF (825 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮২৫ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/0yho1...ngulo.pdf/file
روابط ورد
Word (593 KB)
ওয়ার্ড [৫৯৩ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/8hqyh...gulo.docx/file
روابط الغلاف- ١
book Banner [574 KB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫৭৪ কিলোবাইট]
https://mega.nz/file/8JxSRSYY#ltwSX0...VUB7IQtUiZBg8E
روابط الغلاف- ٢
Banner [732 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭৩২ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/t6kuz...ngulo.jpg/file
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الشهداء للإنتاج الإعلامي
আপনাদের দোয়ায়
আশ শুহাদা মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
In your dua remember your brothers of
Ash Shuhada Media
আশ শুহাদা মিডিয়া
Ash Shuhada Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
أيام الشيخ أبو مصعب السوري الأخيرة
শায়খ আবু মুসআব সুরি’র শেষ দিনগুলো
The Last Days of Sheikh Abu Musab al-Suri
حسام جازماتي
হুসাম জাযমাতি
Husam Jazamati

শায়খ আবু মুসআব সুরি’র শেষ দিনগুলো
হুসাম জাযমাতি
মাত্র সাতচল্লিশ বছর বয়সে, এই বিখ্যাত জিহাদি চিন্তাবিদ তাঁর বিশাল বই ‘দাওয়াতুল মুকাওমাতুল ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়া’ «دعوة المقاومة الإسلامية العالمية» শেষ করেছিলেন। বইটির শেষ অধ্যায়ে, যা তিনি ‘সমাপ্তির সুধা’ «مسك الختام» নামে অভিহিত করেন, সেখানে ফিতনা, কিয়ামতের আলামত এবং শেষ যুগের ঘটনাবলি সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীস উল্লেখ করেছিলেন। এরপর তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অসিয়তও বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন।
প্রকৃতপক্ষে, তাঁর অন্তর্দৃষ্টি তাঁকে ঠকায়নি। ২০০৪ সালের শেষ মাসে, যখন তিনি তিন বছর ধরে বইটি লিখে শেষ করেন এবং জিহাদি অঞ্চলগুলোতে বিতরণের জন্য প্রকাশ করেন, এর কয়েক মাস পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণের পর, আরব মুজাহিদদের ধরার জন্য অভিযান চালানোর সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু অবশেষে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তাঁকে গ্রেফতার করে ফেলে। এই গ্রেফতার তাঁকে বিভিন্ন মহাদেশের কারাগারের দীর্ঘ যাত্রায় ঠেলে দেয়, যা সর্বশেষ তাঁকে দামেস্কে নিয়ে গিয়ে থামে।
সিরিয়ায় ‘কার্যক্রম’ পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা তাঁকে জিহাদের অন্যতম পরিচিত ব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহর কাছে নিয়ে যায়, যিনি আরব মুজাহিদদের অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিলেন। এই পথ তাঁকে আফগানিস্তানে নিয়ে যায় এবং সেখানেই তাঁর সঙ্গী মুহাম্মাদ বাহাইয়া- যিনি আফগানিস্তানে ‘আবু খালিদ সুরি’ নামে পরিচিত ছিলেন- এর সঙ্গে পরিচয় হয়।
আবু মুসআব সুরি রহিমাহুল্লাহ, যিনি মাঝে মাঝে ছদ্মনাম উমর আবদুল হাকিম ব্যবহার করতেন, তাঁর আসল নাম মোস্তফা আস-সিত মারইয়াম। তিনি ১৯৫৮ সালে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন, কিন্তু ১৯৮০ সালে ইসলামী বিপ্লবের প্রভাব তাঁর পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তিনি সিরিয়ার ‘আত-তালিয়া আল-মুকাতিলার’ সঙ্গে যোগ দেন।
এই সময়ে, সিরিয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড তাঁকে জর্ডানে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের কাজে যুক্ত হন। তবে, তাঁর এই প্রচেষ্টা সিরিয়ার মাটিতে কোনো কার্যকর ফলাফল আনতে পারেনি। ১৯৮২ সালের প্রথম তিন মাসে, যখন হামার গণহত্যা ঘটে, তখন তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃত্বের খুব কাছাকাছি ছিলেন। তবে এই ঘটনার পরে, তিনি তাদের তীব্র সমালোচনা করেন।
১৯৯০ সালে পেশাওয়ারে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত বই ‘আস-সাওরাতুল ইসলামিয়া-আল-জিহাদিয়া ফী সুরিয়া’ «الثورة الإسلامية الجهادية في سوريا» ‘সিরিয়ায় ইসলামী জিহাদি বিপ্লব’-এ তিনি স্পষ্টভাবে ‘আত-তালিয়ার’ পক্ষে অবস্থান নেন। যদিও তখন ‘আত-তালিয়া’ কার্যত বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
এই সময়ে, আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ এবং তাঁর সঙ্গী মুহাম্মাদ বাহাইয়া একত্রে জিহাদের পথ অনুসরণ করেন। তাঁদের পথ শুরু হয় স্পেনে। সেখানে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ নিজ স্ত্রীকে ইসলামে দাওয়াত দেন এবং তাঁকে জিহাদিদের এই অদ্ভুত জগতে নিয়ে আসেন।
অবশেষে আফগানিস্তানে স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার আগে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ সময় কাটিয়েছেন ফ্রান্স, স্পেন এবং ব্রিটেনে। এর আগে তিনি সফর করেছেন জর্ডান, ইরাক এবং সৌদি আরব। ধীরে ধীরে তিনি একজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ থেকে হয়ে উঠেন সামরিক প্রকৌশলের প্রশিক্ষক, তারপর জিহাদি ইতিহাসবিদ এবং তাত্ত্বিক। তিনি বেশ কয়েকটি বই রচনা করেন, যেখানে কখনও নিজের দেশ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যেমন: ‘আহলুসসুন্নাহ ফিশ শাম ফী মুওয়াজাহাতিন নুসাইরিয়া ওয়াস সালীবিয়াহ ওয়াল ইয়াহুদ’ «أهل السنة في الشام في مواجهة النصيرية والصليبية واليهود», আবার কখনও নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লিখেছেন ‘মুখতাসারু শাহাদাতী আলাল জিহাদ ফিল জাযায়ের’ «مختصر شهادتي على الجهاد في الجزائر»। ১৯৯৮ সালে তিনি কাবুলে বসে লেখেন ‘আফগানিস্তান ওয়াত তালেবান ওয়া মারেকাতুল ইসলাম আল-ইয়াওম’ «أفغانستان والطالبان ومعركة الإسلام اليوم»। এই বইয়ে তিনি তালেবান আন্দোলনের প্রতি গভীর আগ্রহ এবং ইসলামী আমিরাতের বৈধতার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
তাঁর এই সমর্থন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে যখন তিনি মোল্লা উমরকে আমীরুল মুমিনীন হিসেবে আনুগত্য প্রদর্শন করেন। কাবুলে বসবাসের মাত্র এক বছরের মাথায়, ১৯৯৯ সালে, তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘আল-গুরাবা প্রশিক্ষণ শিবির’। এটি ছিল তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ এই প্রশিক্ষণ শিবিরকে বর্ণনা করেছিলেন এভাবে— “এটি এমন একটি স্কুল, যেখানে যোদ্ধাদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক, শারঈ, এবং সামরিক পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করে দেয়া হয়।” এখানে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জিহাদি দলগুলোকে প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা দিতেন। তাঁর বেশিরভাগ শিক্ষার ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং এখনো ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।
এই সময়ের মধ্যে তাঁর পরিচিত একজন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ উসামা রহিমাহুল্লাহকে ভালোভাবেই চিনতেন। যখন উসামা রহিমাহুল্লাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পরিকল্পনা করছিলেন, তখন এটি আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ, এমনকি তালেবানদের কাছেও বিস্ময়কর ছিল। আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ নিজে এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। জানা যায়, তিনি বরাবরই নিজের চিন্তা-ভাবনা এবং পন্থা অনুসরণ করতে পছন্দ করতেন।
তবে ২০০১ সালের সেই হামলার পর আমেরিকা যখন তালেবান সরকার উৎখাত এবং আল-কায়েদার সদস্যদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করে, তখন এর শিকার হন সকল বিদেশি জিহাদি। এ সময় আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকেও আত্মগোপনে যেতে হয়।
এই আত্মগোপনকালীন সময়ে তিনি রচনা করেন তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত এবং দীর্ঘ বই ‘আল-দাওয়াতুল মুকাওয়ামাহ আল-ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়াহ’ «دعوة المقاومة الإسلامية العالمية» । বইটির শুরুতে তিনি এটিকে তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে উল্লেখ করেন। এখানে তিনি তাঁর পঁচিশ বছরের অভিজ্ঞতা এবং জিহাদি আন্দোলনের ভেতর ও বাইরের নানা ঘটনা তুলে ধরেছেন। এটি ১৬০০ পৃষ্ঠার বিশাল এক গ্রন্থ, যেখানে ইসলামের ইতিহাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, বিভিন্ন ইসলামী ও জিহাদি আন্দোলনের পদ্ধতি এবং তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া, এটি ধারণ করেছে যুদ্ধের কৌশল, শারঈ বিধান, নৈতিক শিক্ষা, সামরিক প্রস্তুতি, ভীতি প্রদর্শন কৌশল, অর্থায়ন এবং জিহাদের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টির পদ্ধতি।
তবে বইটি এতই বিশদ এবং তাত্ত্বিক ছিল যে, কেউ তা পুরোপুরি পড়তে পারেনি—সম্ভবত একমাত্র আবু খালেদ ছাড়া। আবু খালেদ ছিলেন তাঁর কাছের একজন সঙ্গী, যিনি সব সময় তাঁর প্রয়োজন মেটাতেন এবং তাঁর কঠিন মেজাজ সহ্য করতেন।
অনেক দিন আগে যখন নতুন প্রজন্মের জিহাদিরা বই পড়ার চেয়ে ভিডিও বার্তা দেখায় বেশি আগ্রহী হচ্ছিল, তখন এইট বইটি ইন্টারনেটের জিহাদি ফোরামগুলোতে বেশ সাড়া ফেলেছিল। সেই সময়ে উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ ছিলেন গোপনে, আর তাঁর জায়গা নিচ্ছিলেন আবু মুসআব আল-জারকাবি রহিমাহুল্লাহর ভিডিও বার্তাগুলো। তবে ‘আল-দাওয়াতুল মুকাওয়ামাহ আল-ইসলামিয়্যা আল-আলামিয়াহ’ বইটি আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহর নামকে জিহাদি চিন্তাধারার এক ‘চতুর মেধাবী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। যদিও কেউ কেউ ভুল করে তাঁকে আল-কায়েদার অন্যতম প্রধান কৌশলবিদ হিসেবে দেখছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নজরে আসা এই ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
২০০৫ সালের মে মাসের শুরুতে, আবু খালিদ বর্ণনা করেন যে, তাঁর শিক্ষক তাঁকে একটি ফ্ল্যাশ মেমোরিতে সংরক্ষিত ফাইল আবুল ফারাজ আল-লিবিকে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন। আল-লিবি সেই ফাইলটি একাধিক যোগাযোগকারীর মাধ্যমে বিন লাদেনের কাছে পাঠানোর দায়িত্বে ছিলেন। নির্ধারিত সময়েই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আবু খালিদ এবং আল-লিবিকে গ্রেফতার করে। এর কিছু সময় পর আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহকেও আটক করা হয়।
আবু খালিদ জানান, সেই ফাইলটিতে একটি সতর্কবার্তা ছিল, যা ইরাকি শাখার চরমপন্থার বিষয়ে আল-কায়েদার নেতৃত্বকে জানানো উদ্দেশ্য ছিল। এই ঘটনায় তিনি আল-লিবির ওপর দোষারোপ করেন এবং বলেন, তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল দুর্বল।
সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আল-লিবির গ্রেফতারকে স্বাগত জানান। তাঁকে তখন ‘আল-কায়েদার তৃতীয় প্রধান এবং অপারেশন প্রধান’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল, যদিও পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়। তবে আবু মুসআব আস-সুরি রহিমাহুল্লাহর গ্রেফতারের বিষয়ে অনেক মাস পর্যন্ত নীরব থাকা হয়। তাঁকে এবং আবু খালিদকে একটি মার্কিন কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তদন্তে দেখা যায়, তাঁরা আল-কায়েদার সদস্য নন এবং যুক্তরাষ্ট্র বা তার দূতাবাস, স্বার্থ বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। পরে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর দুইজনই সিরিয়ার রাজধানীতে পৌঁছান। সামরিক গোয়েন্দা শাখার প্রধান আসিফ শওকতের উপর তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে ইসলামপন্থীদের বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিল। সে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে তাঁর আদর্শ ত্যাগ করার জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার জন্য চাপ দেন। আবু খালিদ জানান, তাঁর শিক্ষক তাঁকে শওকতের দাবি পূরণ করার জন্য কাগজে সই করতে বলেন, যাতে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ বলেছিলেন, তিনি একজন সুপরিচিত লেখক, তাই এমন কাজ করা তাঁর জন্য অসম্ভব।
শওকত প্রতিদিন প্রায়ই আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহর বিষয়ে খোঁজখবর নিত এবং তাঁকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতনের আদেশ দিত। পরে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে সামরিক আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁকে ‘আল-তালিয়া আল-মুকাতিলা’ এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। এ ধরনের অভিযোগের শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড।
২০১১ সালের গ্রীষ্মে তাঁদের দুজনকে সাঈদনায়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত (ক্রস-চেক করা) মিলে যাওয়া বিবরণ অনুযায়ী— যার মধ্যে একটি হলো ‘সাইদনাইয়া কারাগারের বন্দী এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের সমিতি’ এর সমস্ত সাক্ষ্য ও বিবরণ অনুযায়ী- তাঁদেরকে প্রথমে একই সেলে রাখা হয়েছিল। তবে কিছুদিন পরে, আবু খালিদ একটি মুচলেকায় স্বাক্ষর করার পর তাঁদের আলাদা করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, শওকতের মনোযোগ ছিল আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহর দিকে। সে প্রায় প্রতিদিনই তাঁর ওপর নির্যাতনের নির্দেশ দিত। একপর্যায়ে আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে সামরিক আদালতে তোলা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ‘আত-তালিয়া আল-মুকাতিলা’ এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সামরিক শাখার সদস্য। এ অভিযোগে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।
রায় কার্যকর করতেও দেরি করা হয়নি। ২০১১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে, যখন আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি ছিলেন, তখনই তাঁকে ফাঁসির কাষ্ঠে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, কয়েক সপ্তাহ পর আবু খালিদ মুক্তি পান। তবে তিনি নিশ্চিতভাবে জানতে পারেননি তাঁর শিক্ষকের (আবু মুসআব) প্রকৃত পরিণতি।
আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহ তাঁর শেষ বইয়ের একটি চিঠিতে পরিবারের সদস্যদেরকে আল্লাহভীরুতা অবলম্বন এবং ধৈর্য ধারণ করার উপদেশ দেন। তিনি তাঁর সাথিদের সতর্ক করে বলেন:
“যদি আল্লাহ আমাকে বন্দীত্বে ফেলে রাখেন... তবে জেনে রাখুন, একজন বন্দী তাঁর ইচ্ছার অধিকারী নয়। তাঁর জোরপূর্বক আদায় করা কথার কোনো মূল্য নেই। যদি আমি এমন কিছু বলি বা করি যা এই বইয়ে উল্লেখিত জিহাদের আহ্বান কিংবা আমাদের যে বিশ্বাস ও নীতিতে আমরা অবিচল, তার বিপরীত হয়, তবে তা অগ্রাহ্য করবেন। সেসব কথা দেয়ালে ছুঁড়ে মারবেন।”
তিনি আরও বলেন,
“যদি আমি মারা যাই কিংবা নিহত হই, যারা আমার দাফনের দায়িত্ব নেবেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ—দাফনের ক্ষেত্রে সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করবেন—যেন আমার ভাগ্যে একটা কবর জুটে।”
এরপর অনেক গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, আবু মুসআব রহিমাহুল্লাহকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে এখানে-সেখানে দেখা গেছে। এ ধরনের গুজবের ভিত্তি ছিল সেই সময়কার ধারণা যে, সরকার জিহাদিদের মুক্তি দিয়ে বিদ্রোহকে ইসলামিক রূপ দিতে এবং তা দমন করার অজুহাত তৈরি করতে চাচ্ছিল। তবে প্রকৃতপক্ষে, তিনি দামেস্কের নাজহা এলাকার একটি গণকবরে শায়িত ছিলেন—যে স্থানটি সরকার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের দাফনের জন্য ব্যবহার করত।
*****
روابط بي دي اب
PDF (825 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮২৫ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/0yho1...ngulo.pdf/file
روابط ورد
Word (593 KB)
ওয়ার্ড [৫৯৩ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/8hqyh...gulo.docx/file
روابط الغلاف- ١
book Banner [574 KB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫৭৪ কিলোবাইট]
https://mega.nz/file/8JxSRSYY#ltwSX0...VUB7IQtUiZBg8E
روابط الغلاف- ٢
Banner [732 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭৩২ কিলোবাইট]
https://www.mediafire.com/file/t6kuz...ngulo.jpg/file
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الشهداء للإنتاج الإعلامي
আপনাদের দোয়ায়
আশ শুহাদা মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
In your dua remember your brothers of
Ash Shuhada Media
Comment