১৮৭২ সালের আগে কেউ ধারনায় করতে পারে নি যে, বাংলায় মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।১৮৭২ সালে বেভারলি সাহেবের তত্ত্বাবধানে প্রথম আদমশুমারী হয়।তখনই আবিষ্কৃত হয় বাংলায় মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মুসলমান। এ অঞ্চলে মুসলমানদের ব্যাপক উপস্থিতির অন্যতম প্রধান কারন, সুলতানি শাসন আমলে ইসলাম প্রচারক সূফীদের ব্যাপক সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং তাদের সাথে সুলতানদের সুসম্পর্ক। [৪] ইতিহাস খুজলে দেখা যায়, ইসলাম প্রচারক এসব সূফীরা কোন ধরনের বিপদের সমুক্ষীন হলে সুলতানগণ সেনাবাহিনী দিয়ে সাহায্য করতেন, আবার সীমান্তে অন্য রাজ্যের সাথে সুলতানদের সংঘর্ষ হলে সুফীরা নিজেদের অনুসারীদের নিয়ে সুলতানের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন।
ইবনে বতুতা ১৩৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন এবং সিলেটে গিয়ে হযরত শাহ জালালের সাথে দেখা করে ফিরার পথে সোনারগাঁও গমন করেন।তিনি বলেন যে, সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ সূফীদের অত্যন্ত ভক্তি করতেন এবং আদেশ জারী করেন যেন, সূফীদের নিকট হতে পথকর বা নৌকা ভাড়া আদায় করা না হয় এবং সুফীরা কোন শহরে পৌঁছালে যেন তাদের অর্ধ দিনার প্রদান করা হয় এবং প্রয়োজনে যাতে তাদের খাওয়া পরার ব্যাবস্থা করা হয়। [১]
হযরত শাহ জালালের জন্ম ১২৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ই মে ইয়েমেনে।পিতা মাহমুদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম এবং মাতা সৈয়দা হাসেনাহ ফাতিমাহ।শৈশবেই তিনি পিতৃ-মাতৃহীন হন এবং তার পিতা জিহাদে শাহাদাত বরন করেন।তার খালু হযরত সৈয়দ আহমদ কবীর সোহরাওয়ার্দী শাহ জালাল উদ্দীন বোখারী নামক এক দরবেশের নির্দেশে তাকে লালন পালন করেন এবং জাহেরি বাতেনি উভয় শাস্ত্রে দীক্ষিত করে তোলেন। তিনি আপন মাতুলের নিকট সোহরাওয়ার্দী তরিকাও শিক্ষা করেন।ইতিমধ্যে তার কামালিয়াত প্রাপ্তির খবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর তার মাতুল তাকে একখন্ড মাটি প্রদান করে দুরদেশ গমন করার নির্দেশ দেন এবং বললেন যে, দুর দেশে যেখানে এ মাটির সাথে অনুরুপ মাটি পাবে সেখানে আস্তানা বা খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম প্রচারে ব্রতী হতে।
এরপর, শাহ জালাল রহ. বহু দেশ বিদেশ অতিক্রম করে ভারতের দিল্লিতে এসে উপস্থিত হন এবং বিখ্যাত সূফী নিজামুদ্দিন আউলিয়ার সাথে কিছুদিন অবস্থান করেন।দিল্লী পরিত্যাগের প্রাক্কালে বাবা নিজামুদ্দিন শাহ জালালকে কতগুলো কবুতর উপহার দেন যা পরবর্তীতে জালালী কবুতর নামে পরিচিতি পায়। [২]
শ্রীহট্টে*ইসলাম জ্যোতি*সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থের বর্ণনা অনুসারে তুর্কি বিজয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীহট্টে মুসলমান জনবসতি গড়ে ওঠে । এ সময় শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্যে গৌড়-গোবিন্দ নামে এক অত্যাচারী হিন্দু রাজা ছিল। গৌড় রাজ্যের অধিবাসী বুরহান উদ্দীন নামক জনৈক মুসলমান নিজ ছেলের*আকিকা উপলক্ষে গরু জবাই করলে গৌড়ের হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দের কাছে অপরাধী সাব্যস্ত হন।এ কারণে, গোবিন্দ বুরহান উদ্দীনের শিশু ছেলেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে।*বুরহান উদ্দীন বাংলার তত্কালীন সুলতান শামস উদ্দীন ফিরুজ শাহের নিকট গিয়ে এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ করলে রাজা তার ভাগিনেয় সিকান্দর গাজীকে প্রকাণ্ড সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে শ্রীহট্টের গৌড় রাজার বিরুদ্ধে প্রেরণ করে যুদ্ধে পরাজিত হন। সিকান্দর গাজীর বিফল মনোরথের সংবাদ দিল্লীর সম্রাট*আলাউদ্দীন খিলজীর*নিকট পৌঁছলে তিনি মর্মাহত হন। তখন তিনি সৈয়দ নাসির উদ্দীন নামে জনৈক বুজুর্গ সৈনিককে রাজা গোবিন্দের বিরুদ্ধে সিপাহসালার পদ প্রদান করে সিকান্দর গাজীর কাছে প্রেরণ করেন। এদিকে বুরহান উদ্দীন তখন দিল্লীতে অবস্থান করছিলেন। এসময় শাহ জালালও তার সঙ্গীদের নিয়ে দিল্লীতে আসেন । ঐতিহাসিক আজহার উদ্দীন ধরনা করে দিল্লীতেই বুরহান উদ্দীনের সাথে শাহ জালালের সাক্ষাৎ হয় এবং এখানেই বুরহান উদ্দীন নিজের দুঃখময় কাহিনী তার নিকট বর্ণনা করেন ।*
শাহ জালাল দিল্লী হতে বুরহান উদ্দীনকে সহ ২৪০ জন সঙ্গীসহচর সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হলেন। সাতগাঁও এসে ত্রিবেণীর নিকট দিল্লীর সম্রাট প্রেরিত অগ্রবাহিনী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের সাথে মিলিত হন।*সৈয়দ নাসির উদ্দীন*শাহ জালাল সম্পর্কে অবগত হয়ে তদীয় শিষ্যত্ব গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। পথে পথে শাহ জালালের শিষ্য বর্ধিত হতে লাগল । ত্রিবেণী থেকে বিহার প্রদেশে আসার পর আরো কয়েকজন ধর্মযোদ্ধা অনুষঙ্গী হলেন। যাদের মধ্যে হিসাম উদ্দীন, আবু মোজাফর উল্লেখযোগ্য। এখান থেকে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের আনিত এক হাজার অশ্বারোহী ও তিন হাজার পদাতিক সৈন্যসহ শাহ জালাল নিজ সঙ্গীদের নিয়ে সোনারগাঁ অভিমুখে সিকান্দর গাজীর সাথে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
শাহ জালাল*সোনারগাঁ*আসা মাত্রই শাহ সিকান্দর গাজীর সাথে সাক্ষাৎ হয়। সিকান্দর গাজী শাহ জালালকে সসম্মানে গ্রহণ করলেন । শাহ জালাল তার সঙ্গী অনুচর ও সৈন্যসহ শাহ সিকান্দরের শিবিরে সমাগত হয়ে সিকান্দর হতে যুদ্ধ বিষয়ে সব বিষয় অবগত হন। সিকান্দর শাহ জালালের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শিষ্যগ্রহণপূর্বক সিলেট অভিমুখে যাত্রা করলেন। এভাবে শাহ জালালের শিষ্য সংখ্যা বেড়ে ৩৬০ জনে পৌঁছায়। এদিকে*গৌড় গৌবিন্দ*নিজস্ব চর দ্বারা শাহ জালালের সমাগম সংবাদ পেয়ে; নতুন এ দল যাতে ব্রহ্মপুত্র নদী পার না হতে পারেন, সে জন্য নদীর সমস্ত নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেয়। শাহ জালালের ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি তার শিষ্যদের নিয়ে বিনা বাধায় জায়নামাজের সাহায্যে ব্রহ্মপুত্র নদী অতিক্রম করেন*।
শাহ জালাল ফতেপুর হতে যাত্রা করে সুরমা তীরে অবস্থান নিলেন, এ নদী পার হলেই গৌড়ের *রাজধানী। শাহ জালাল তিন দিন সিলেটে অবস্থান করার পর, মিনারের টিলায় অবস্থিত রাজবাড়ি প্রথমে দখল নিলেন।তখন রাজা গোবিন্দ গড়দুয়ারস্থিত রাজবাড়ি হতে পালিয়ে পেচাগড়ের গুপ্তগিরি দুর্গে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তার আর কোন হদিস মেলেনি।[৩]
যুদ্ধ শেষে সিকান্দার গাজীকে সিলেটের শাসক নিযুক্ত করা হয় এবং হযরত খানকাহ প্রতিষ্ঠা করে এখানেই বাকি জীবন এখানেই এবাদত বন্দেগি করে কাটিয়ে দেন। ৫৯১ হিজরি মোতাবেক ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং পূর্বনির্দেশ অনুযায়ী তাকে তার খানকার সন্নিকটে সমাহিত করা হয়।এরপর, তৎকালীন সুলতান এখানে একটি সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন যা শাহ জালালের দরগা নামে পরিচিত। দরগায় শাহ জালালের ব্যাবহৃত তরবারি জুলফিকার সংরক্ষিত আছে।[২]
তত্ত্বসূত্রঃ
১) চট্টগ্রামে ইসলাম। ড. আব্দুল করিম
২) বাংদেশের সূফী সাধক।ড. গোলাস সাকলায়েন
৩)উইকিপিডিয়া
৪)বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য। আকবর আলী খান।
ইবনে বতুতা ১৩৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন এবং সিলেটে গিয়ে হযরত শাহ জালালের সাথে দেখা করে ফিরার পথে সোনারগাঁও গমন করেন।তিনি বলেন যে, সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ সূফীদের অত্যন্ত ভক্তি করতেন এবং আদেশ জারী করেন যেন, সূফীদের নিকট হতে পথকর বা নৌকা ভাড়া আদায় করা না হয় এবং সুফীরা কোন শহরে পৌঁছালে যেন তাদের অর্ধ দিনার প্রদান করা হয় এবং প্রয়োজনে যাতে তাদের খাওয়া পরার ব্যাবস্থা করা হয়। [১]
হযরত শাহ জালালের জন্ম ১২৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ই মে ইয়েমেনে।পিতা মাহমুদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম এবং মাতা সৈয়দা হাসেনাহ ফাতিমাহ।শৈশবেই তিনি পিতৃ-মাতৃহীন হন এবং তার পিতা জিহাদে শাহাদাত বরন করেন।তার খালু হযরত সৈয়দ আহমদ কবীর সোহরাওয়ার্দী শাহ জালাল উদ্দীন বোখারী নামক এক দরবেশের নির্দেশে তাকে লালন পালন করেন এবং জাহেরি বাতেনি উভয় শাস্ত্রে দীক্ষিত করে তোলেন। তিনি আপন মাতুলের নিকট সোহরাওয়ার্দী তরিকাও শিক্ষা করেন।ইতিমধ্যে তার কামালিয়াত প্রাপ্তির খবর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর তার মাতুল তাকে একখন্ড মাটি প্রদান করে দুরদেশ গমন করার নির্দেশ দেন এবং বললেন যে, দুর দেশে যেখানে এ মাটির সাথে অনুরুপ মাটি পাবে সেখানে আস্তানা বা খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম প্রচারে ব্রতী হতে।
এরপর, শাহ জালাল রহ. বহু দেশ বিদেশ অতিক্রম করে ভারতের দিল্লিতে এসে উপস্থিত হন এবং বিখ্যাত সূফী নিজামুদ্দিন আউলিয়ার সাথে কিছুদিন অবস্থান করেন।দিল্লী পরিত্যাগের প্রাক্কালে বাবা নিজামুদ্দিন শাহ জালালকে কতগুলো কবুতর উপহার দেন যা পরবর্তীতে জালালী কবুতর নামে পরিচিতি পায়। [২]
শ্রীহট্টে*ইসলাম জ্যোতি*সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থের বর্ণনা অনুসারে তুর্কি বিজয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীহট্টে মুসলমান জনবসতি গড়ে ওঠে । এ সময় শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্যে গৌড়-গোবিন্দ নামে এক অত্যাচারী হিন্দু রাজা ছিল। গৌড় রাজ্যের অধিবাসী বুরহান উদ্দীন নামক জনৈক মুসলমান নিজ ছেলের*আকিকা উপলক্ষে গরু জবাই করলে গৌড়ের হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দের কাছে অপরাধী সাব্যস্ত হন।এ কারণে, গোবিন্দ বুরহান উদ্দীনের শিশু ছেলেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে।*বুরহান উদ্দীন বাংলার তত্কালীন সুলতান শামস উদ্দীন ফিরুজ শাহের নিকট গিয়ে এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ করলে রাজা তার ভাগিনেয় সিকান্দর গাজীকে প্রকাণ্ড সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে শ্রীহট্টের গৌড় রাজার বিরুদ্ধে প্রেরণ করে যুদ্ধে পরাজিত হন। সিকান্দর গাজীর বিফল মনোরথের সংবাদ দিল্লীর সম্রাট*আলাউদ্দীন খিলজীর*নিকট পৌঁছলে তিনি মর্মাহত হন। তখন তিনি সৈয়দ নাসির উদ্দীন নামে জনৈক বুজুর্গ সৈনিককে রাজা গোবিন্দের বিরুদ্ধে সিপাহসালার পদ প্রদান করে সিকান্দর গাজীর কাছে প্রেরণ করেন। এদিকে বুরহান উদ্দীন তখন দিল্লীতে অবস্থান করছিলেন। এসময় শাহ জালালও তার সঙ্গীদের নিয়ে দিল্লীতে আসেন । ঐতিহাসিক আজহার উদ্দীন ধরনা করে দিল্লীতেই বুরহান উদ্দীনের সাথে শাহ জালালের সাক্ষাৎ হয় এবং এখানেই বুরহান উদ্দীন নিজের দুঃখময় কাহিনী তার নিকট বর্ণনা করেন ।*
শাহ জালাল দিল্লী হতে বুরহান উদ্দীনকে সহ ২৪০ জন সঙ্গীসহচর সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হলেন। সাতগাঁও এসে ত্রিবেণীর নিকট দিল্লীর সম্রাট প্রেরিত অগ্রবাহিনী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের সাথে মিলিত হন।*সৈয়দ নাসির উদ্দীন*শাহ জালাল সম্পর্কে অবগত হয়ে তদীয় শিষ্যত্ব গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। পথে পথে শাহ জালালের শিষ্য বর্ধিত হতে লাগল । ত্রিবেণী থেকে বিহার প্রদেশে আসার পর আরো কয়েকজন ধর্মযোদ্ধা অনুষঙ্গী হলেন। যাদের মধ্যে হিসাম উদ্দীন, আবু মোজাফর উল্লেখযোগ্য। এখান থেকে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের আনিত এক হাজার অশ্বারোহী ও তিন হাজার পদাতিক সৈন্যসহ শাহ জালাল নিজ সঙ্গীদের নিয়ে সোনারগাঁ অভিমুখে সিকান্দর গাজীর সাথে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
শাহ জালাল*সোনারগাঁ*আসা মাত্রই শাহ সিকান্দর গাজীর সাথে সাক্ষাৎ হয়। সিকান্দর গাজী শাহ জালালকে সসম্মানে গ্রহণ করলেন । শাহ জালাল তার সঙ্গী অনুচর ও সৈন্যসহ শাহ সিকান্দরের শিবিরে সমাগত হয়ে সিকান্দর হতে যুদ্ধ বিষয়ে সব বিষয় অবগত হন। সিকান্দর শাহ জালালের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শিষ্যগ্রহণপূর্বক সিলেট অভিমুখে যাত্রা করলেন। এভাবে শাহ জালালের শিষ্য সংখ্যা বেড়ে ৩৬০ জনে পৌঁছায়। এদিকে*গৌড় গৌবিন্দ*নিজস্ব চর দ্বারা শাহ জালালের সমাগম সংবাদ পেয়ে; নতুন এ দল যাতে ব্রহ্মপুত্র নদী পার না হতে পারেন, সে জন্য নদীর সমস্ত নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেয়। শাহ জালালের ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি তার শিষ্যদের নিয়ে বিনা বাধায় জায়নামাজের সাহায্যে ব্রহ্মপুত্র নদী অতিক্রম করেন*।
শাহ জালাল ফতেপুর হতে যাত্রা করে সুরমা তীরে অবস্থান নিলেন, এ নদী পার হলেই গৌড়ের *রাজধানী। শাহ জালাল তিন দিন সিলেটে অবস্থান করার পর, মিনারের টিলায় অবস্থিত রাজবাড়ি প্রথমে দখল নিলেন।তখন রাজা গোবিন্দ গড়দুয়ারস্থিত রাজবাড়ি হতে পালিয়ে পেচাগড়ের গুপ্তগিরি দুর্গে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তার আর কোন হদিস মেলেনি।[৩]
যুদ্ধ শেষে সিকান্দার গাজীকে সিলেটের শাসক নিযুক্ত করা হয় এবং হযরত খানকাহ প্রতিষ্ঠা করে এখানেই বাকি জীবন এখানেই এবাদত বন্দেগি করে কাটিয়ে দেন। ৫৯১ হিজরি মোতাবেক ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং পূর্বনির্দেশ অনুযায়ী তাকে তার খানকার সন্নিকটে সমাহিত করা হয়।এরপর, তৎকালীন সুলতান এখানে একটি সমাধি সৌধ নির্মাণ করেন যা শাহ জালালের দরগা নামে পরিচিত। দরগায় শাহ জালালের ব্যাবহৃত তরবারি জুলফিকার সংরক্ষিত আছে।[২]
তত্ত্বসূত্রঃ
১) চট্টগ্রামে ইসলাম। ড. আব্দুল করিম
২) বাংদেশের সূফী সাধক।ড. গোলাস সাকলায়েন
৩)উইকিপিডিয়া
৪)বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য। আকবর আলী খান।
Comment