Announcement

Collapse
No announcement yet.

বাহ! বাহ! আবু মেহজান! কত যে সৌভাগ্য আপনার!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বাহ! বাহ! আবু মেহজান! কত যে সৌভাগ্য আপনার!

    আবু মেহজান সাকাফি (রা) শরাব পান করতেন। শরাবপানের কারণে কয়েকবার সাজাও ভোগ করেছেন। এরপরও শরাব ত্যাগ করতে পারেননি। স্বভাবকবি ছিলেন। শরাবের প্রতি আসক্তির কারণে তিনি তাঁর ছেলেকে অসিয়ত করে বলেছিলেন

    ‘‘আমি যখন মারা যাবো, তখন আমাকে আঙ্গুর গাছের নিকট কোরো দাফন
    যেন মৃত্যুর পরও গাছের ডাল আমার হাড়কে করতে পারে পরিতৃপ্ত
    দেখ! খোলা মাঠে আমাকে দাফন করো না
    তা হলে মৃত্যুর পর এর স্বাদ আর পাব না’’


    মুসলমানেরা পারস্যদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য কাদিসিয়ার দিকে রওয়ানা হলো। আবু মেহজান (রা)ও তাঁদের সাথে গেলেন। পাথেয়ের মধ্যে শরাব লুকিয়ে রাখলেন। ইসলামী বাহিনী কাদিসিয়ায় পৌছল। পারস্যদের সিপাহসালার রুস্তম মুসলমানদের সিপাহসালার হযরত সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইল। উভয়ের মধ্যে পত্র লেনদেন হল।
    আবু মেহজান (রা) এটাকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করলেন। ছাউনি থেকে দূরে গিয়ে এক জায়গায় শরাব পান করলেন। হযরত সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা) জানতে পেরে খুবই অসন্তুষ্ট হলেন। তাঁকে বেড়ি বেঁধে একটি তাঁবুতে বন্দী রাখার নির্দেশ করা হল।

    যুদ্ধ শুরু হল। আবু মেহজান সাকাফি (রা) যদিও গোনাহগার ছিলেন, শরাবি ছিলেন; কিন্তু ছিলেন তো মুসলমান। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের মহব্বতে কমতি ছিল না । দীনের খেদমতের জন্য মাতাল ছিলেন। নিজের এই করুন অবস্থার উপর আক্ষেপ করতে করতে চোখের পানি ফেলতে লাগলেন।

    ‘‘দুঃখের জন্য এটাই যথেষ্ট যে , ঘোড়সওয়ার সামনের দিকে যাচ্ছে এগিয়ে;
    ঘোড়ার পায়ের আঘাত দিয়ে মাটি থেকে কঙ্কর উড়িয়ে;
    আর আমাকে বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে জিঞ্জির দিয়ে।
    দাঁড়াতে চেষ্টা করলে বসতে বাধ্য করে পায়ের বেড়ি।
    এখানে দরজা বন্ধ করে আমাকে করে রাখা হয়েছে বন্ধী।
    ফলে আমি কাউকে ডাকলেও শুনতে পায় না কেউ।
    আমি সম্পদশালী; আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আছে।
    কিন্তু তারা আমাকে এখানে রেখে গেছে একাকী,
    যেন আমার কোনো বন্ধুই নেই।
    আল্লাহর সংগে অঙ্গীকার করেছি, যার সঙ্গে ভঙ্গ করি না অঙ্গীকার -
    এই বার যদি আমাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়
    তাহলে শরাবের মুখও দেখব না আর।’


    এরপর তিনি উঁচু আওয়াজে ডাকতে লাগলেন।
    হযরত সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস রাযি.র স্ত্রী নিকটেই কোথাও ছিলেন। আওয়াজ শুনতে পেয়ে তিনি এগিয়ে এলেন।
    জিজ্ঞাসা করলেন, কী ব্যাপার ? চিৎকার করলেন কেন?

    আবু মেহজান রাযি. মিনতি করে বলতে লাগলেন-
    ‘আল্লাহর ওয়াস্তে আমার বেড়ি খুলে দিন এবং সাদের ঘোড়া ‘বলকা’ আমাকে দিন। আমিও যুদ্ধ করবো। আল্লাহ তা’আলা যদি আমার ভাগ্যে শাহাদাত লিখে থাকেন তা হলে তো আমার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়ে যাবে। আর যদি জীবিত থাকি তাহলে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে আপনার নিকট ওয়াদা করছি আমি ফিরে আসব। আপনি আবার আমাকে বেড়ি পরিয়ে দিবেন।’

    তিনি বারবার কবিতা পাঠ করছিলেন এবং এই অনুনয় করছিলেন। হযরত সাদ (রা) এর স্ত্রীর মনে দয়া জাগল। বেড়ি খুলে দিলেন; বলকা ঘোড়াও দিলেন। আবু মেহজান (রা) বর্ম পরিধান করলেন। মাথা ও মুখ টোপ দ্বারা ঢেকে নিলেন। চিতার গতিতে ঘোড়ায় উঠলেন এবং যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।


    জী-হ্যাঁ, গোনাহ করা সত্ত্বেও শয়তান আবু মেহজান (রা)কে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারেনি। কারণ তাঁর দৃষ্টি ছিল পরকালের দিকে। দুনিয়া ও দুনিয়ার সম্পদের দিকে তাঁর কোনও আকর্ষণবোধ ছিলনা।
    আবু মেহজান (রা) যুদ্ধের ময়দানে কাফিরদের মাথা নিয়ে খেলতে শুরু করলেন। তাঁর বীরত্বে সবাই বিস্মিত ছিল। কিন্তু কেউ তাঁকে চিনতে পারে নি। কারণ যুদ্ধ শুরুর সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

    সিপাহসালার সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা)র পায়ে ফোঁড়া ছিল। তাই তিনি যুদ্ধের ময়দানে নামতে পারেননি। তবে দূর থেকে তিনি যুদ্ধের পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করছিলেন।
    একজন অশ্বারোহীকে বীরের মত শত্রুদের কাতার তছনছ করতে দেখলেন। তিনি বিস্মিত হলেন।
    বললেন, ‘আক্রমণ তো আবু মেহজানের, আর লাফ হল বলাকার। কিন্তু আবু মেহজান এখানে কোত্থেকে? সে তো বন্দী! বলকাও বাঁধা।’

    যুদ্ধ শেষ হলে আবু মেহজান (রা) কয়েদখানায় ফিরে এলেন এবং বেড়ি পরে নিলেন। সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা) নীচে এসে ঘোড়াকে ঘর্মাক্ত পেলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কি? ঘোড়া ঘামে ভেজা কেন?

    লোকেরা আবু মেহজান (রা) এর কথা বললে তিনি খুশি হলেন। আবু মেহজান (রা)কে মুক্ত করে দিলেন। বললেন-

    ‘খোদার কসম! আজকের পর আমি আর তোমাকে শরাব পানের কারণেও শাস্তি দিব না।’


    এতে আবু মেহজান (রা) বললেন, ‘খোদার কসম! আজকের পর আমি আর শরাব পান করবো না।’ [আল-ইসাবাঃ৭/২৯৮]

    বাহ! বাহ! আবু মেহজান! কত যে সৌভাগ্য আপনার!

    [আপনি কি জব খুজছেন? , মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান আল আরিফী]
    বিন কাসিমের রণ বেশে
    কাঁপন তুলো হিন্দ দেশে!
    দিকে দিকে লাগাও নারাহ
    জিহাদেই শান্তির ফোয়ারা!!

  • #2
    আপনি কি জব খুজছেন? সুবহানাল্লাহ! তিজারাতান লান তাবূর, ফাস্তাবশিরু বি বায়য়ীকুমল্লাজি বায়ায়তুম বিহ।ও্যা যালিকা হুয়াল ফাওজল আযীম।

    Comment


    • #3
      শাইখ আরিফীর এই বইটা অসাধারণ। যে কাউকেই উৎসাহিত করবে। বইটা প্রকাশ করেছে হুদহুদ পাবলিকেশন্স
      বিন কাসিমের রণ বেশে
      কাঁপন তুলো হিন্দ দেশে!
      দিকে দিকে লাগাও নারাহ
      জিহাদেই শান্তির ফোয়ারা!!

      Comment

      Working...
      X