সালমান আবেদি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ২২ বছরের এক যুবক। গত সোমবার ম্যানচেস্টারে তিনি শহীদি হামলা চালিয়ে অন্তত ২২জন হারবি কাফেরকে হত্যা করেছেন ও আহত করেছেন ৫৯ জনকে । সালমানকে ছোট থেকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা বলেছেন তিনি ছিলেন একজন শান্ত-সুবোধ, চুপচাপ বালক।
লিবিয়ার সাবেক একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির আমলে লিবিয়া ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় সালমানের পরিবার। সালমানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ম্যানচেস্টারেই। চার ভাইবোনের মধ্যে সেজ সালমান। শাহাদাতের পূর্ব পর্যন্ত সুবোধ ও শান্ত ছেলে হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি।
১০ বছর আগে ম্যানচেস্টারের দক্ষিণাংশে বাস করতে শুরু করে সালমানের পরিবার। ম্যানচেস্টারের এই অংশে লিবিয়া থেকে আসা বহু মুসলিম পরিবারের বাস। এলাকাবাসী জানায়, অন্য ভাইবোনদের চেয়ে সালমান ছিলেন বেশি চুপচাপ-শান্ত।
ম্যানচেস্টারে বাস করলেও ধর্মীয় রীতিনীতি পুরোপুরি মেনে চলত সালমানের পরিবার। পরিবারের সব সদস্য স্থানীয় মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তেন। সালমানের পরিবারকে কাছে থেকে দেখেছেন—এমন কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, সালমানের ভাই ইসমাইল বেশ চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে। তবে সালমান খুব শান্ত। এলাকার মানুষের প্রতি সব সময় সম্মান দেখাতেন।
২০১৪ সালে ম্যানচেস্টারে নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় সালফোর্ডে ব্যবসায় শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন সালমান। তবে দুই বছর পর ডিগ্রি না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন তিনি। শান্ত প্রকৃতির সালমান এই দুই বছরে কখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ভবনেও থাকতেন না। কোনো অপরাধের সঙ্গে কোনো দিন তাঁর নাম ওঠেনি।
এই সালমানই গত সোমবার শরীরে বিস্ফোরক জড়িয়ে শহীদি হামলা পরিচালনা করেন বলে জানায় ম্যানচেস্টার পুলিশ। শান্ত এই ছেলেটির মনে যে জিহাদ ও মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করার ভাবনা ঢুকেছিল তা বোঝা যায় মসজিদের এক মুরজিয়া ইমামের বক্তব্যে। ওই ইমাম জানায়, ২০১৫ সালে ঘটা এক শহীদি হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একদিন বক্তব্য দিচ্ছিল সে ইমাম। সালমান বেশ খেপে যান। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যের।
সালমানের বন্ধুরা জানান, তিন সপ্তাহ আগে লিবিয়া গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরেন কয়েক দিন আগে। লিবিয়া থেকে ফিরে এসেই তিনি শহীদি হামলা পরিচালনা করে শাহাদাত অর্জন করেন। তাকাব্বালাল্লাহ।
Comment