————————–— بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ————————–—
আপনি কি জানেন ম্যালওয়্যার – ভাইরাস, স্প্যাইওয়্যার, এডওয়্যার, ট্রোজান এবং ওয়ার্ম কী? আলাদা আলাদা ভাবে এগুলো কীভাবে কাজ করে এবং কী ধরনের ক্ষতি করে? অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখতে আপনাকে এসব জানতেই হবে!!
সানিম মাহবীর ফাহাদ
আপনি যদি বুঝতে পারতেন যে ইন্টারনেট ব্রাউজিং এ একটি ভুল পদক্ষেপ আপনাকে কতোটা বিপদে ফেলতে পারে তাহলে আপনি ভয়ে মুষড়ে যেতেন। কারন আমরা সাধারন মানুষরা যে সাদাসিধে ইন্টারনেট দেখি সেটা আসলে এতোটা সাদাসিধে না। এর প্রতি পদে পদে বিপদ লুকিয়ে আছে। তবে ভাগ্য ভালো যে আমরা কিছু ইন্টারনেট পলিসির কারনে খুব বেশি বিপদে পড়িনা। কিন্তু এগুলো যদি আমাদের নিজেদের উপর নির্ভর করতো তাহলে আমাদের বিপদের অন্ত থাকতো না। একটা উদাহরণ দিচ্ছি – আপনারা কমবেশি সবাই কোন না কোন আন ভেরিফাইড ওয়েব সাইট হতে ডাটা ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে খেয়াল করেছেন যে, ডাউনলোডের ডাটার সাথে আরও কিছু ডাউনলোড হয়ে যায়। অথবা আপনার কাঙ্খিত ফাইলের পরিবর্তে অন্য কিছু ডাউনলোড করে ফেলেন। বিশ্বাস না হয় এখনি ফায়ারফক্স এর জন্য ফ্ল্যাশ প্লেয়ার ডাউনলোড করুন দেখবেন সাথে McAfee Security Scan Plus ডাউনলোড হবে। অনেকটা অসচেতনতা বশত কিংবা তাড়াহুড়ার কারনে আমরা এরকম সমস্যায় পড়ি। এর কারন হলো একটি ডাউনলোড পেইজে অনেকগুলো আগে থেকে চেক করা ডাউনলোড বাটন থাকে। যারফলে একটা কিছু ডাউনলোড করতে গেলে অটোমেটিক অন্য কিছু ডাউনলোড হয়। যার ফলে হ্যাকাররা একটা সুযোগ পেয়ে যায় আপনাকে আক্রমন করার জন্য। কম্পিউটারে অনাকাঙ্খিত যা কিছু থাকে সেগুলো আমরা এক কথায় থ্রেট বলতে পারি। সবগুলো থ্রেট কিন্তু এক রকম হয়না। ইন্টারনেটে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন এসব থ্রেটস সম্পর্কে, এদের প্রকারভেদ সম্পর্কে এবং ফাংশনালিটি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারনা রাখতে হবে। আজকের টিউনে আমরা বিভিন্ন থ্রেটস এবং তাদের ফাংশনালিটি নিয়ে আলোচনা করবো।
ম্যালওয়্যার (Malware) – Malicious Software
ম্যালওয়্যার (Malware) হলো Malicious Software এর সংক্ষিপ্ত রূপ। আমরা অধিকাংশ কম্পিউটার ব্যবহারকারী যেটাকে ভাইরাস হিসাবে মনে করি সেটাই আসলে ম্যালওয়্যার। এই ম্যালওয়্যার (Malware) – Malicious Software এর অনেকগুলো ফর্ম আছে। যাদের মধ্যে ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার সহ আরও অনেক কিছু রয়েছে। সাধারন ভাবে যে সমস্ত প্রোগ্রাম খারাপ মানুষিকতা থেকে অন্যদের ক্ষতিকরার জন্য তৈরী করে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাকেই ম্যালওয়্যার বলে। নিচে ম্যালওয়্যারের কিছু প্রকারভেদ দেখুন।
সৌভাগ্যবশত আমাদের ইন্টারনেট সিকিউরিটি কিংবা এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো প্রতিনিয়ত এই ম্যালওয়্যারকে খুঁজে চলেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, কী হতো যদি এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো না থাকতো? অথবা কী হবে যদি আপনার পিসি ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হয়। প্রশ্নের উত্তর পেতে টিউনের বাকী অংশে আপনাকে স্বাগতম। আজ আমরা জানবো বিভিন্ন ম্যালওয়্যার, তাদের কাজ এবং তাদের দ্বারা ক্ষতির প্রভাব এবং প্রতিকার সম্পর্কে।
কম্পিউটার ভাইরাস – একটি নিরাপত্তা আতঙ্ক
ভাইরাস তৈরী হয় কম্পিউটারের জন্য ক্ষতিকর কিছু কোডের সমন্বয়ের যা কম্পিউটারে ঐ কোড সম্বলিত সফটওয়্যার ইনস্টল করার পরে কাজ শুরু করে। কম্পিউটারে একবার ভাইরাস আক্রমন করতে পারলে তারপর সেই ভাইরাস নিজে নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমস্ত কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে আপনার সব কাজ, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এমনটি অপারেটিং সিস্টেমকে অকেজো করে তুলতে পারে। সাধারনত ইউএসবি ড্রাইভ, ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড, ইমেইল এবং আরও কিছু পদ্ধতিতে আপনার কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তাছাড়া ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কোন ফাইল যদি আপনার কম্পিউটারে রান করেন তাহলে সেটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাবে।
কম্পিউটার একবার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরে সেটাকে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কারন আমি আগেই বলেছি এটা নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে এবং একা একা সমস্ত কম্পিউটারে ছড়িয়ে যেতে পারে। সেই সাথে আপনার কম্পিউটারের সমস্ত ফাইলকে আক্রান্ত করে আপনার অগোচরে আপনার সাথে যুক্ত অন্য কম্পিউটারে চলে যেতে পারে। অন্যান্য ম্যালওয়্যারের মতোই ভাইরাসের মূল উদ্দেশ্য হলো আপনার কম্পিউটারকে অপারেটিং এর অযোগ্য করে তোলা। কয়েকটি ভাইরাস ছাড়া কোন ভাইরাস অপকার ভিন্ন উপকার করেনা। ভাইরাস উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে বেশি আক্রান্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতামত হলো ম্যাক এবং লিনাক্স বেইজড অপারেটিং সিস্টেমগুলো ভাইরাসের আক্রমণ প্রবণ নয়।
এডওয়্যার (Adware) – নিজের অজান্তে অন্যের শিকার
আমরা এখন যে ম্যালওয়্যারটি নিয়ে আলোচনা করবো এটা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিরক্তিকর একটি থ্রেট হিসাবে পরিচিত। Adware হলো একঝাঁক অ্যাপ্লিকেশন অথবা সফটওয়্যারের সমষ্টি যেটা আপনার অজান্তে আপনার কম্পিউটারে চলে আসবে। সাধারনত ডাউনলোড করার সময় আমাদের মনের অজান্তে কিংবা চোখের ত্রুটির কারনে একটা ডাউনলোডের পরিবর্তে অন্যটা ডাউনলোড করে ফেলি। এর কারন অনেক সময় দেখা যায় এডওয়্যার ডাউনলোডের জন্য আগে থেকেই এডওয়্যার ডাউনলোড বাটন চেক করা থাকে। এবং উক্ত ডাউনলোড পেইজে একের অধিক ডাউনলোড বাটন থাকে। আপনি মনের ভুলে কোন একটা ক্লিক করে ফেললেই আপনার পিসিতে এডওয়্যার ডাউনলোড হওয়া শুরু করবে।
তবে এডওয়্যার ইনফেকশন যে শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের ভুলের জন্যই হবে এমনটা নয়। কারন অনেক ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যখন তাদের ডিভাইস গুলোতে এডওয়্যার (যেমন ব্রাউজার হ্যাক) দিয়ে দেয় তখন আর কিছুই করার থাকেনা। লেনেভো এবং Superfish যদি নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটায় তাহলে আমাদের সেখানে কি’বা করার থাকতে পারে?
ট্রোজান এবং ব্যাকডোর্স (Trojans and Backdoors) – ঘরের শত্রু বিভীষণ
ট্রোজান ম্যালওয়্যারের নামকরণ করা হয়েছে ট্রোজান হর্স থেকে। ট্রোজান হর্স সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য ট্রোজান হর্স বিষয়ে সামান্য কিছু ধারনা দেওয়া থেকে আমি লোভ সামলাতে পারছিনা। আপনারা হয়তো ঐতিহাসিক ট্রয় এবং ট্রোজানদের যুদ্ধের কাহিনী জানেন। ট্রোজানরা যখন ট্রয় নগরী আক্রমন করতে আসে তখন ট্রয় নগরীর চারপাশের প্রাচীর ভেদ করে ট্রোজানরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছিলো না। পরে তারা বুদ্ধি করে নিজেদের যুদ্ধ জাহাজগুলোকে লুকিয়ে রেখে সমুদ্রতীরে বিশাল এক কাঠের ঘোড়া তৈরী করে। যার ভেতরে ট্রোজান বীরগণ লুকিয়ে ছিলেন। ট্রয় নগরীর রাজা যখন বুঝতে পারলেন যে ট্রোজানরা পালিয়ে গেছে এবং তিনি সমুদ্রতীরে একটি কাঠের বিশাল আকৃতির ঘোড়া দেখতে পেলেন। তিনি সেটাকে দেবতার আশির্বাদ ভেবে ট্রয় নগরীর ভেতরে নিয়ে আসলেন। তারপর রাতের অন্ধকারে ট্রোজান সৈন্যরা ঘোড়া ভেঙ্গে বের হয়ে আসলো এবং দুর্গের দরজা ভেতর থেকে খুলে দিয়ে ট্রোজান সেনাবাহিনীল ভেতরের ঢুকার রাস্তা বের করে দেয়। এভাবেই ট্রয় নগরী বায়রের শক্তিশালী প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও অরক্ষিত অবস্থায় ধ্বংস হয়ে যায়।
ট্রোজান ভাইরাসের সাথে ট্রোজান হর্সের এই ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কারন ট্রোজান ভাইরাস ঠিক এভাবেই কাজ করে। এটি সন্তর্পনে আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং তারপর আপনার অজান্তে এটি সার্ভারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। যখন সফল হয় তখন আপনার পিসির নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যকডোর ওপেন হয়ে যায়। তারমানে হ্যাকাররা দুরে থেকেই আপনার পিসি নিয়ন্ত্রন করতে পারে এবং আপনার যাবতীয় গোপন জিনিস তারা হাতিয়ে নেয়।
তবে আক্রান্ত হওয়ার পরে আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার পিসি ট্রোজান ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তাহলে সব চেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি যদি ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ রাখেন তাহলে হ্যাকাররা কোন ভাবেই আপনার পিসি নিয়ন্ত্রন করতে বা তথ্য চুরি করতে পারবে না। কানেকশন বন্ধ রেখে আপনি খুব সহজেই ট্রোজান রিমুভার দিয়ে ট্রোজান ভাইরাস অপসারন করতে পারবেন।
আপনি কি জানেন ম্যালওয়্যার – ভাইরাস, স্প্যাইওয়্যার, এডওয়্যার, ট্রোজান এবং ওয়ার্ম কী? আলাদা আলাদা ভাবে এগুলো কীভাবে কাজ করে এবং কী ধরনের ক্ষতি করে? অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখতে আপনাকে এসব জানতেই হবে!!
সানিম মাহবীর ফাহাদ
আপনি যদি বুঝতে পারতেন যে ইন্টারনেট ব্রাউজিং এ একটি ভুল পদক্ষেপ আপনাকে কতোটা বিপদে ফেলতে পারে তাহলে আপনি ভয়ে মুষড়ে যেতেন। কারন আমরা সাধারন মানুষরা যে সাদাসিধে ইন্টারনেট দেখি সেটা আসলে এতোটা সাদাসিধে না। এর প্রতি পদে পদে বিপদ লুকিয়ে আছে। তবে ভাগ্য ভালো যে আমরা কিছু ইন্টারনেট পলিসির কারনে খুব বেশি বিপদে পড়িনা। কিন্তু এগুলো যদি আমাদের নিজেদের উপর নির্ভর করতো তাহলে আমাদের বিপদের অন্ত থাকতো না। একটা উদাহরণ দিচ্ছি – আপনারা কমবেশি সবাই কোন না কোন আন ভেরিফাইড ওয়েব সাইট হতে ডাটা ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে খেয়াল করেছেন যে, ডাউনলোডের ডাটার সাথে আরও কিছু ডাউনলোড হয়ে যায়। অথবা আপনার কাঙ্খিত ফাইলের পরিবর্তে অন্য কিছু ডাউনলোড করে ফেলেন। বিশ্বাস না হয় এখনি ফায়ারফক্স এর জন্য ফ্ল্যাশ প্লেয়ার ডাউনলোড করুন দেখবেন সাথে McAfee Security Scan Plus ডাউনলোড হবে। অনেকটা অসচেতনতা বশত কিংবা তাড়াহুড়ার কারনে আমরা এরকম সমস্যায় পড়ি। এর কারন হলো একটি ডাউনলোড পেইজে অনেকগুলো আগে থেকে চেক করা ডাউনলোড বাটন থাকে। যারফলে একটা কিছু ডাউনলোড করতে গেলে অটোমেটিক অন্য কিছু ডাউনলোড হয়। যার ফলে হ্যাকাররা একটা সুযোগ পেয়ে যায় আপনাকে আক্রমন করার জন্য। কম্পিউটারে অনাকাঙ্খিত যা কিছু থাকে সেগুলো আমরা এক কথায় থ্রেট বলতে পারি। সবগুলো থ্রেট কিন্তু এক রকম হয়না। ইন্টারনেটে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন এসব থ্রেটস সম্পর্কে, এদের প্রকারভেদ সম্পর্কে এবং ফাংশনালিটি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারনা রাখতে হবে। আজকের টিউনে আমরা বিভিন্ন থ্রেটস এবং তাদের ফাংশনালিটি নিয়ে আলোচনা করবো।
ম্যালওয়্যার (Malware) – Malicious Software
ম্যালওয়্যার (Malware) হলো Malicious Software এর সংক্ষিপ্ত রূপ। আমরা অধিকাংশ কম্পিউটার ব্যবহারকারী যেটাকে ভাইরাস হিসাবে মনে করি সেটাই আসলে ম্যালওয়্যার। এই ম্যালওয়্যার (Malware) – Malicious Software এর অনেকগুলো ফর্ম আছে। যাদের মধ্যে ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার সহ আরও অনেক কিছু রয়েছে। সাধারন ভাবে যে সমস্ত প্রোগ্রাম খারাপ মানুষিকতা থেকে অন্যদের ক্ষতিকরার জন্য তৈরী করে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাকেই ম্যালওয়্যার বলে। নিচে ম্যালওয়্যারের কিছু প্রকারভেদ দেখুন।
সৌভাগ্যবশত আমাদের ইন্টারনেট সিকিউরিটি কিংবা এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো প্রতিনিয়ত এই ম্যালওয়্যারকে খুঁজে চলেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, কী হতো যদি এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো না থাকতো? অথবা কী হবে যদি আপনার পিসি ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হয়। প্রশ্নের উত্তর পেতে টিউনের বাকী অংশে আপনাকে স্বাগতম। আজ আমরা জানবো বিভিন্ন ম্যালওয়্যার, তাদের কাজ এবং তাদের দ্বারা ক্ষতির প্রভাব এবং প্রতিকার সম্পর্কে।
কম্পিউটার ভাইরাস – একটি নিরাপত্তা আতঙ্ক
ভাইরাস তৈরী হয় কম্পিউটারের জন্য ক্ষতিকর কিছু কোডের সমন্বয়ের যা কম্পিউটারে ঐ কোড সম্বলিত সফটওয়্যার ইনস্টল করার পরে কাজ শুরু করে। কম্পিউটারে একবার ভাইরাস আক্রমন করতে পারলে তারপর সেই ভাইরাস নিজে নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমস্ত কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে আপনার সব কাজ, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এমনটি অপারেটিং সিস্টেমকে অকেজো করে তুলতে পারে। সাধারনত ইউএসবি ড্রাইভ, ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড, ইমেইল এবং আরও কিছু পদ্ধতিতে আপনার কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তাছাড়া ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কোন ফাইল যদি আপনার কম্পিউটারে রান করেন তাহলে সেটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাবে।
কম্পিউটার একবার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরে সেটাকে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কারন আমি আগেই বলেছি এটা নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে এবং একা একা সমস্ত কম্পিউটারে ছড়িয়ে যেতে পারে। সেই সাথে আপনার কম্পিউটারের সমস্ত ফাইলকে আক্রান্ত করে আপনার অগোচরে আপনার সাথে যুক্ত অন্য কম্পিউটারে চলে যেতে পারে। অন্যান্য ম্যালওয়্যারের মতোই ভাইরাসের মূল উদ্দেশ্য হলো আপনার কম্পিউটারকে অপারেটিং এর অযোগ্য করে তোলা। কয়েকটি ভাইরাস ছাড়া কোন ভাইরাস অপকার ভিন্ন উপকার করেনা। ভাইরাস উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে বেশি আক্রান্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতামত হলো ম্যাক এবং লিনাক্স বেইজড অপারেটিং সিস্টেমগুলো ভাইরাসের আক্রমণ প্রবণ নয়।
এডওয়্যার (Adware) – নিজের অজান্তে অন্যের শিকার
আমরা এখন যে ম্যালওয়্যারটি নিয়ে আলোচনা করবো এটা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিরক্তিকর একটি থ্রেট হিসাবে পরিচিত। Adware হলো একঝাঁক অ্যাপ্লিকেশন অথবা সফটওয়্যারের সমষ্টি যেটা আপনার অজান্তে আপনার কম্পিউটারে চলে আসবে। সাধারনত ডাউনলোড করার সময় আমাদের মনের অজান্তে কিংবা চোখের ত্রুটির কারনে একটা ডাউনলোডের পরিবর্তে অন্যটা ডাউনলোড করে ফেলি। এর কারন অনেক সময় দেখা যায় এডওয়্যার ডাউনলোডের জন্য আগে থেকেই এডওয়্যার ডাউনলোড বাটন চেক করা থাকে। এবং উক্ত ডাউনলোড পেইজে একের অধিক ডাউনলোড বাটন থাকে। আপনি মনের ভুলে কোন একটা ক্লিক করে ফেললেই আপনার পিসিতে এডওয়্যার ডাউনলোড হওয়া শুরু করবে।
তবে এডওয়্যার ইনফেকশন যে শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের ভুলের জন্যই হবে এমনটা নয়। কারন অনেক ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যখন তাদের ডিভাইস গুলোতে এডওয়্যার (যেমন ব্রাউজার হ্যাক) দিয়ে দেয় তখন আর কিছুই করার থাকেনা। লেনেভো এবং Superfish যদি নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটায় তাহলে আমাদের সেখানে কি’বা করার থাকতে পারে?
ট্রোজান এবং ব্যাকডোর্স (Trojans and Backdoors) – ঘরের শত্রু বিভীষণ
ট্রোজান ম্যালওয়্যারের নামকরণ করা হয়েছে ট্রোজান হর্স থেকে। ট্রোজান হর্স সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য ট্রোজান হর্স বিষয়ে সামান্য কিছু ধারনা দেওয়া থেকে আমি লোভ সামলাতে পারছিনা। আপনারা হয়তো ঐতিহাসিক ট্রয় এবং ট্রোজানদের যুদ্ধের কাহিনী জানেন। ট্রোজানরা যখন ট্রয় নগরী আক্রমন করতে আসে তখন ট্রয় নগরীর চারপাশের প্রাচীর ভেদ করে ট্রোজানরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছিলো না। পরে তারা বুদ্ধি করে নিজেদের যুদ্ধ জাহাজগুলোকে লুকিয়ে রেখে সমুদ্রতীরে বিশাল এক কাঠের ঘোড়া তৈরী করে। যার ভেতরে ট্রোজান বীরগণ লুকিয়ে ছিলেন। ট্রয় নগরীর রাজা যখন বুঝতে পারলেন যে ট্রোজানরা পালিয়ে গেছে এবং তিনি সমুদ্রতীরে একটি কাঠের বিশাল আকৃতির ঘোড়া দেখতে পেলেন। তিনি সেটাকে দেবতার আশির্বাদ ভেবে ট্রয় নগরীর ভেতরে নিয়ে আসলেন। তারপর রাতের অন্ধকারে ট্রোজান সৈন্যরা ঘোড়া ভেঙ্গে বের হয়ে আসলো এবং দুর্গের দরজা ভেতর থেকে খুলে দিয়ে ট্রোজান সেনাবাহিনীল ভেতরের ঢুকার রাস্তা বের করে দেয়। এভাবেই ট্রয় নগরী বায়রের শক্তিশালী প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও অরক্ষিত অবস্থায় ধ্বংস হয়ে যায়।
ট্রোজান ভাইরাসের সাথে ট্রোজান হর্সের এই ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কারন ট্রোজান ভাইরাস ঠিক এভাবেই কাজ করে। এটি সন্তর্পনে আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং তারপর আপনার অজান্তে এটি সার্ভারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। যখন সফল হয় তখন আপনার পিসির নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যকডোর ওপেন হয়ে যায়। তারমানে হ্যাকাররা দুরে থেকেই আপনার পিসি নিয়ন্ত্রন করতে পারে এবং আপনার যাবতীয় গোপন জিনিস তারা হাতিয়ে নেয়।
তবে আক্রান্ত হওয়ার পরে আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার পিসি ট্রোজান ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তাহলে সব চেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি যদি ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ রাখেন তাহলে হ্যাকাররা কোন ভাবেই আপনার পিসি নিয়ন্ত্রন করতে বা তথ্য চুরি করতে পারবে না। কানেকশন বন্ধ রেখে আপনি খুব সহজেই ট্রোজান রিমুভার দিয়ে ট্রোজান ভাইরাস অপসারন করতে পারবেন।
Comment