ফেসবুক সতর্কতা!
আমাদের কর্মব্যস্ত জীবনের অবসর সময়ের পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধরাও প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করছেন। ব্যবহারকারী বিবেচনায় বর্তমানে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা যত বেশি সময় ফেসবুক ব্যবহার করেন, তত বেশি নিজের জীবন নিয়ে হতাশ হন, আর নিজের দুঃখ বাড়িয়ে তোলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জরিপ ফলাফলে দেখা গেছে, ফেসবুক আসক্ত হয়ে আমাদের নিদ্রা অভ্যাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট পেতে বারবার ফেসবুকে চোখ রাখায় মানুষের ঘুমের প্যাটার্ন পুরোপুরি নষ্ট করে দিচ্ছে। এ ছাড়াও নানাবিধ সমস্যার কারণ ফেসবুক। অবাক করার বিষয় হলো ব্যবহারকারীর ঘুমাতে যাওয়ার সময় জানে ফেসবুক। সোস্যাল মাধ্যমটি গ্রাহকের এত বেশি তথ্য সংগ্রহ করে যে, তারা বলে দিতে পারে আপনি কখন ঘুমাতে যান। ড্যানিশ সফটওয়্যার ডেভেলপার সোরেন লুইভ-জনসেন একটি টুল উন্নয়ন করেছেন, যার মাধ্যমে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর রাতে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে ওঠা থেকে শুরু করে নানা অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করা সম্ভব। বিষয়টির সঙ্গে ডাটা প্রাইভেসি ইস্যু জড়িত থাকার কারণে এ টুল ডিঅ্যাকটিভ করার অনুরোধ করেছিল ফেসবুক। অনলাইনে আমরা অনেক সময় খুব বেশি তথ্য প্রকাশ করে ফেলি। কিন্তু আমরা জানি না যে, এটা অন্যরা কিভাবে ব্যবহার করছে বা করতে পারে। অনেকেই মনে করেন, আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে ফেসবুক অনেক কাজের। যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে, শিক্ষার বাহন হিসেবে, কিংবা বিনোদনের অনুষঙ্গ হিসেবে চাইলেই এর সম্ভাবনার দিকগুলোকে কোনোভাবে অস্বীকার করা যাবে না। পুরনো বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক বা সহকর্মীদের সাথে সহজে যোগাযোগ, খবরাখবর নেয়া, কী হলো না হলো, দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, কে কী বলছে- এসব জানতে পারা, কার বেবি হলো, ছেলে না মেয়ে, কে পাস করল না করল থেকে শুরু করে এই মাত্র খেলাম, কখন বাথরুমে যাচ্ছি- এসব ছোটখাটো বিষয় পর্যন্ত শেয়ার করছি। মাঝে সাঝে মনে হয়, লেখাপড়ার প্রয়োজনে গ্রুপ ডিসকাশনসহ কত না উপকার করছে ফেসবুক। যে সামাজিক যোগাযোগে মানুষের কাছে আসার কথা, সেই দেখা যাচ্ছে বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রীকে পর করে দিচ্ছে, দূরে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফেসবুকে এত ফ্রেন্ড, সে-ই দেখা যায় পড়ন্ত বিকেলে কিংবা সাঁঝবেলার মলিন আলোয় ঘরের কোণায় বসে ফেসবুকে লিখছে- আমি একা!
বিষণ্নতার জন্য দায়ী :
ফেসবুকে দীর্ঘ সময় কাটানো ব্যক্তিরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়। গত বছরের এক জরিপ অনুযায়ী, ত্রবল হিংসা একসময় হতাশায় পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে আপনাকে বিষণ্ন করে তুলবে। যেসব ফেসবুক ব্যবহারকারী বন্ধুর অনলাইন কার্যক্রম এবং ভার্চুয়াল লাইফস্টাইল দেখে হিংসাবোধ করেন। মূলত তারাই বেশি বিষণ্নতায় ভুগতে থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া ফেসবুক মানুষের মনোযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে। সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গড় মনোযোগের হার অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ জন্য ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সোস্যাল মাধ্যমগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে। ডিজিটাল জীবনধারার দ্বারা সৃষ্ট ক্রমাগত বিক্ষিপ্ত মনোভাব মস্তিষ্কের রসায়ন পরিবর্তন করে দিচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ সময় কোনো কাজে মনোযোগ দেয়ার মতা হারাচ্ছি আমরা।
সম্পর্ক নষ্টের কারণ :
সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মানুষকে একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমানে দাম্পত্যজীবনে বিভেদ সৃষ্টির জন্য এ ধরনের মাধ্যমগুলোর ভূমিকা খুবই নেতিবাচক। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো নষ্ট করে ধারাবাহিক ফেসবুক নোটিফিকেশন চেক করার মতো অভ্যাস দেখা যাচ্ছে। এছাড়া বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সোস্যাল মিডিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা বাস্তবজীবন নাজুক করে তোলে। ভার্চুয়াল জগতে একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও প্রকৃত অর্থে কারো সাথে সংযুক্ত থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
চিন্তাধারার সীমাবদ্ধতা :
ফেসবুকের অ্যালগরিদম ঘিরে সোস্যাল মিডিয়া সমালোচকদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিতর্ক রয়েছে। বলা হয়, একজন গ্রাহক যে ধরনের পোস্টে ক্লিক করেন, তার ওপর ভিত্তি করে সেই ধরনের পোস্টগুলোই বেশি বেশি প্রদর্শন করা হয়। এতে ব্যবহারকারীর চিন্তাধারা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। হারিয়ে যায় জীবনের বৈচিত্র্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাইটে মানুষ কী চায়, তা নির্ধারণে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ফেসবুক। ধরা যাক, একজন গ্রাহক ফুটবলসংশ্লিষ্ট পোস্ট বেশি পছন্দ করছেন। সেক্ষেত্রে সাইটটি ওই গ্রাহকের নিউজফিডে ফুটবল সংশ্লিষ্ট পোস্ট বেশি প্রদর্শন করবে। কিন্তু সবসময় যে এমনটা হয়, তা নয়। কারণ মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ট্র্যাকিং ভুল হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফেসবুক যে হারে মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্য ট্র্যাক করছে, তাতে ভবিষ্যৎ বিপণন ও রাজনৈতিক প্রচারণা বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা। যদিও ফেসবুক কর্তৃপ এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, মানুষ সোস্যাল মিডিয়ায় যে ধরনের তথ্য চায়, সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফেসবুক। সহজ কথায় একটা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে পড়ে যাচ্ছি আমরা।
সময়ের অপচয় :
আচরণগত বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যত বেশি সময় ব্যয় করবেন, ঠিক ততটাই আপনি খারাপ অনুভব করবেন। ফেসবুককে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয়ের জন্য দায়ী করেন। ২০১৪ সালে অস্ট্রিয়ার ইন্সব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণগত বিজ্ঞানী ক্রিস্টিনা সাগিওগলুই এবং টবিয়াস গ্রিটেমেয়ার লিখিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয়, শুধু ফেসবুকের জন্য ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা অর্থহীন। এটা সময়ের অপচয়, যা স্বাভাবিক মানসিকতা নষ্ট করে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, বহুল ব্যবহৃত স্মার্টফোন ডিভাইসের ব্যাটারি দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য ফেসবুকের অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস অ্যাপকে দায়ী করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজেও এটি স্বীকার করেছে। স্মার্টফোন থেকে ফেসবুক অ্যাপ মুছে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারির স্থায়িত্ব ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যতীত অন্য অ্যাপে এত বেশি চার্জ প্রয়োজন হয় না।
–নয়া দিগন্তের সৌজন্যে
আমাদের কর্মব্যস্ত জীবনের অবসর সময়ের পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধরাও প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করছেন। ব্যবহারকারী বিবেচনায় বর্তমানে শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা যত বেশি সময় ফেসবুক ব্যবহার করেন, তত বেশি নিজের জীবন নিয়ে হতাশ হন, আর নিজের দুঃখ বাড়িয়ে তোলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জরিপ ফলাফলে দেখা গেছে, ফেসবুক আসক্ত হয়ে আমাদের নিদ্রা অভ্যাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট পেতে বারবার ফেসবুকে চোখ রাখায় মানুষের ঘুমের প্যাটার্ন পুরোপুরি নষ্ট করে দিচ্ছে। এ ছাড়াও নানাবিধ সমস্যার কারণ ফেসবুক। অবাক করার বিষয় হলো ব্যবহারকারীর ঘুমাতে যাওয়ার সময় জানে ফেসবুক। সোস্যাল মাধ্যমটি গ্রাহকের এত বেশি তথ্য সংগ্রহ করে যে, তারা বলে দিতে পারে আপনি কখন ঘুমাতে যান। ড্যানিশ সফটওয়্যার ডেভেলপার সোরেন লুইভ-জনসেন একটি টুল উন্নয়ন করেছেন, যার মাধ্যমে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর রাতে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে ওঠা থেকে শুরু করে নানা অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করা সম্ভব। বিষয়টির সঙ্গে ডাটা প্রাইভেসি ইস্যু জড়িত থাকার কারণে এ টুল ডিঅ্যাকটিভ করার অনুরোধ করেছিল ফেসবুক। অনলাইনে আমরা অনেক সময় খুব বেশি তথ্য প্রকাশ করে ফেলি। কিন্তু আমরা জানি না যে, এটা অন্যরা কিভাবে ব্যবহার করছে বা করতে পারে। অনেকেই মনে করেন, আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে ফেসবুক অনেক কাজের। যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে, শিক্ষার বাহন হিসেবে, কিংবা বিনোদনের অনুষঙ্গ হিসেবে চাইলেই এর সম্ভাবনার দিকগুলোকে কোনোভাবে অস্বীকার করা যাবে না। পুরনো বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক বা সহকর্মীদের সাথে সহজে যোগাযোগ, খবরাখবর নেয়া, কী হলো না হলো, দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, কে কী বলছে- এসব জানতে পারা, কার বেবি হলো, ছেলে না মেয়ে, কে পাস করল না করল থেকে শুরু করে এই মাত্র খেলাম, কখন বাথরুমে যাচ্ছি- এসব ছোটখাটো বিষয় পর্যন্ত শেয়ার করছি। মাঝে সাঝে মনে হয়, লেখাপড়ার প্রয়োজনে গ্রুপ ডিসকাশনসহ কত না উপকার করছে ফেসবুক। যে সামাজিক যোগাযোগে মানুষের কাছে আসার কথা, সেই দেখা যাচ্ছে বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রীকে পর করে দিচ্ছে, দূরে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফেসবুকে এত ফ্রেন্ড, সে-ই দেখা যায় পড়ন্ত বিকেলে কিংবা সাঁঝবেলার মলিন আলোয় ঘরের কোণায় বসে ফেসবুকে লিখছে- আমি একা!
বিষণ্নতার জন্য দায়ী :
ফেসবুকে দীর্ঘ সময় কাটানো ব্যক্তিরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়। গত বছরের এক জরিপ অনুযায়ী, ত্রবল হিংসা একসময় হতাশায় পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে আপনাকে বিষণ্ন করে তুলবে। যেসব ফেসবুক ব্যবহারকারী বন্ধুর অনলাইন কার্যক্রম এবং ভার্চুয়াল লাইফস্টাইল দেখে হিংসাবোধ করেন। মূলত তারাই বেশি বিষণ্নতায় ভুগতে থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া ফেসবুক মানুষের মনোযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে। সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গড় মনোযোগের হার অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ জন্য ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সোস্যাল মাধ্যমগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে। ডিজিটাল জীবনধারার দ্বারা সৃষ্ট ক্রমাগত বিক্ষিপ্ত মনোভাব মস্তিষ্কের রসায়ন পরিবর্তন করে দিচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ সময় কোনো কাজে মনোযোগ দেয়ার মতা হারাচ্ছি আমরা।
সম্পর্ক নষ্টের কারণ :
সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মানুষকে একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমানে দাম্পত্যজীবনে বিভেদ সৃষ্টির জন্য এ ধরনের মাধ্যমগুলোর ভূমিকা খুবই নেতিবাচক। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো নষ্ট করে ধারাবাহিক ফেসবুক নোটিফিকেশন চেক করার মতো অভ্যাস দেখা যাচ্ছে। এছাড়া বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সোস্যাল মিডিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা বাস্তবজীবন নাজুক করে তোলে। ভার্চুয়াল জগতে একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও প্রকৃত অর্থে কারো সাথে সংযুক্ত থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
চিন্তাধারার সীমাবদ্ধতা :
ফেসবুকের অ্যালগরিদম ঘিরে সোস্যাল মিডিয়া সমালোচকদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিতর্ক রয়েছে। বলা হয়, একজন গ্রাহক যে ধরনের পোস্টে ক্লিক করেন, তার ওপর ভিত্তি করে সেই ধরনের পোস্টগুলোই বেশি বেশি প্রদর্শন করা হয়। এতে ব্যবহারকারীর চিন্তাধারা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। হারিয়ে যায় জীবনের বৈচিত্র্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাইটে মানুষ কী চায়, তা নির্ধারণে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ফেসবুক। ধরা যাক, একজন গ্রাহক ফুটবলসংশ্লিষ্ট পোস্ট বেশি পছন্দ করছেন। সেক্ষেত্রে সাইটটি ওই গ্রাহকের নিউজফিডে ফুটবল সংশ্লিষ্ট পোস্ট বেশি প্রদর্শন করবে। কিন্তু সবসময় যে এমনটা হয়, তা নয়। কারণ মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ট্র্যাকিং ভুল হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফেসবুক যে হারে মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্য ট্র্যাক করছে, তাতে ভবিষ্যৎ বিপণন ও রাজনৈতিক প্রচারণা বিষয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা। যদিও ফেসবুক কর্তৃপ এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, মানুষ সোস্যাল মিডিয়ায় যে ধরনের তথ্য চায়, সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফেসবুক। সহজ কথায় একটা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে পড়ে যাচ্ছি আমরা।
সময়ের অপচয় :
আচরণগত বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যত বেশি সময় ব্যয় করবেন, ঠিক ততটাই আপনি খারাপ অনুভব করবেন। ফেসবুককে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয়ের জন্য দায়ী করেন। ২০১৪ সালে অস্ট্রিয়ার ইন্সব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণগত বিজ্ঞানী ক্রিস্টিনা সাগিওগলুই এবং টবিয়াস গ্রিটেমেয়ার লিখিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয়, শুধু ফেসবুকের জন্য ইন্টারনেট ব্রাউজিং করা অর্থহীন। এটা সময়ের অপচয়, যা স্বাভাবিক মানসিকতা নষ্ট করে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, বহুল ব্যবহৃত স্মার্টফোন ডিভাইসের ব্যাটারি দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য ফেসবুকের অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস অ্যাপকে দায়ী করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজেও এটি স্বীকার করেছে। স্মার্টফোন থেকে ফেসবুক অ্যাপ মুছে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারির স্থায়িত্ব ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যতীত অন্য অ্যাপে এত বেশি চার্জ প্রয়োজন হয় না।
–নয়া দিগন্তের সৌজন্যে
Comment