Announcement

Collapse
No announcement yet.

অ্যাটাক হেলিকপ্টার t-129 এর পরিচয়।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অ্যাটাক হেলিকপ্টার t-129 এর পরিচয়।


    বাংলাদেশ আর্মি তাদের এভিয়েশন গ্রুপের জন্য অনেক আগেই ৮ টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে তুরস্ক থেকে T-129 ATAK হেলিকপ্টার কেনার সম্ভাবনা আছে।তুরস্কের তৈরী এই হেলিকপ্টার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

    লাইট এট্যাক হেলিকপ্টার নিয়ে আলোচনা হলে বর্তমানে যে সকল হেলিকপ্টার গুলোর নাম আসে তার মধ্যে অন্যতম তুরস্কে তৈরী T129 এট্যাক হেলিকপ্টার। ইতালিয়ান আগস্টা-১২৯ এট্যাক হেলিকপ্টার এর উপর ভিত্তি করে বানানো এই হেলিকপ্টার টি সর্ব প্রথম সার্ভিসে আসে ২০১৪ সালে। ইতালিয়ান A-129 এট্যাক হেলিকপ্টার এর উপর ভিত্তি করে বানানো হলেও এটি কে তার থেকে আরো উন্নত হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে মুলত এর অস্ত্র আর নতুন প্রজন্মের এভিউনিক্স এর জন্য। ২৩৫০ কেজি ওজনের এই হেলিকপ্টার টি সর্বোচ্চ ৫০০০ কেজি পর্যন্ত ওজন নিয়ে উড়তে সক্ষম। এই হেলিকপ্টার পরিচালনায় একজন পাইলট এবং একজন ওয়েপন অপারেটর / কো পাইলট প্রয়োজন হয়। এই সব সাধারন তথ্যসমূহ মোটামোটি সবার জানা তাই অজানা কিছু তথ্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। প্রথমেই এই হেলিকপ্টার টির মুল অংশ বা এর প্রযুক্তিগত তথ্য নিয়ে আলোচনা করছি।

    ★ প্রযুক্তিগত_তথ্যসমুহঃ

    T129 এট্যাক হেলিকপ্টার টিকে এর প্রাথমিক ভার্ষন বা এর ভিত্তি A-129 এট্যাক থেকে উন্নত বলার মুল কারন এতে ব্যাবহার করা আধুনিক সেন্সর এর জন্য। T129 হেলিকপ্টার টিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি Forward Looking Infrared (FLIR) টার্গেটিং সিস্টেম যা একই সাথে টার্গেট খুজে বের করা এবং টার্গেট লক্ষ্য করে মিসাইল লক করার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সিস্টেম টি তে একটি লেজার রেঞ্জ ফাইন্ডার আছে যা ১০ কিমি পর্যন্ত দূরত্বে আকাশে বা ভুমিতে থাকা যে কোন টার্গেট কে খুজে বের করতে সক্ষম। এছাড়া এতে রয়েছে একটি CCTV ক্যামেরা যা সার্ভেল্যান্স মিশন পরিচালনা এবং শত্রু এলাকার ম্যাপিং করতে সক্ষম।; দিনে রাতে সমান কার্যকারীতার জন্য এতে রয়ছে একটি হেলমেট মাউন্টেন নাইট ভিশন সিস্টেম যা রাতের বেলাও ৮ কিমি পর্যন্ত টার্গেট খুজে বের করতে সক্ষম। পূর্ব থেকে ঠিক করে রাখা নিদিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে এই হেলিকপ্টার এ রয়েছে Weapons ballistic Trajectory System. গ্রাউন্ড বেসড থেকে সরাসরি মিশন পরিচালনায় এতে এয়ারক্রাফট মিশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইন্সটল করা হয়েছে। যা পাইলট এবং ওয়েপন অপারেটর এর কাজ অনেক বেশি সহজ করে দেয়। যদি কোন কারনে এর টার্গেটিং সিস্টেম বিকল হয়ে পরে তবে ইমারজেন্সি হিসাবে এতে একটি বিকপ্ল লকেটিং সিস্টেম রয়েছে। সর্বোশেষ সংযোজন হিসাবে এতে এখন মিলডার মিলিমিটার ওয়েব রাডার ব্যবহার করা হচ্ছে। যা এখনো পরীক্ষাধীন রয়েছে তবে ২০১৬ সাল থেকে এটি পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যাবহার শুরু হয়। এই রাডার ৩০-৩০০গিগাহার্জ এর সিগ্নাল ব্যবহার করে থাকে; এই রাডার রেঞ্জ ১২ কিমি। এই রাডার সংযুক্ত হওয়ায় প্রথম সুবিধা হলো এই হেলিকপ্টার টি এখন রাডার গাইডেড মিসাইল ব্যবহার করতে পারবে। এবং দিনে রাতে খারাপ আবহওয়ার দরুন FLIR সিস্টেম এর কার্যকারীতা কমে গেলেও রাডার থাকায় টার্গেট খুজে বের করতে কোন সমস্যা হবে না।

    ★ কাউন্টার_মেজার_সিস্টেমঃ

    T-129 এট্যাক হেলিকপ্টার এ রয়েছে; ডিফেন্স এইড সুইট(DAS) ব্যবস্থা যা একটি এক্টিভ/ প্যাসিভ কাউন্টার মেজার ব্যবস্থা। এর অধীনে হেলিকপ্টার শত্রু যান থেকে আসা রাডার সিগ্নেচার খুজে বের করতে পারে এবং পাইলট কে আগেই সাবধান করে দেয়।। এই সিস্টেম এর অধীনে রয়েছে একটি স্লেফ প্রটেকশন জ্যামার যা হেলিকপ্টার এর দিকে ছুটে আসা রাডার গাইডেন মিসাইল কে জ্যাম করতে সক্ষম। এছাড়া অপ্টিকাল গাইডেড মিসাইল কে ফাকি দিতে এতে রয়েছে ফ্লেয়ার এবং; চ্যাফ লঞ্চার। যা অন্যান্য অনেক সমসাময়িক লাইট এট্যাক হেলিকপ্টারে নেই।

    ★ অস্ত্র_ব্যবস্থাঃ

    T-129 এট্যাক হেলিতে সম্পূর্ন নতুন প্রজন্মের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে প্রথমেই এতে এয়ার টু সার্ফেস গাইডেড মিসাইল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে তুরস্কের নিজ্বস ভাবে তৈরী রকেট UMTAS এন্টি ট্যাংক মিসাইল যা মুলত আমেরিকান হেলফায়ার মিসাইলের টার্কিশ সংস্করণ। এই মিসাইলের রেঞ্জ ৮ কিমি। এটি একটি ইমেজ ইনফ্রারেড এবং; লেজার গাইডেড মিসাইল। এতে AGM114-2 হেলফায়ার মিসাইলও ব্যবহার করা যায়। যা লেজার গাইডেড এবং মিলিমিটার ওয়েভ রাডার দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা যায়। এছাড়া কাস্টমাইজড করে এতে স্পাইক-এলআর মিসাইলও যুক্ত করা সম্ভব।

    রকেট হিসাবে এতে ব্যবহার করা হয়ে আমেরিকার হায়ডরা-৭০মি.মি. আনগাইডেড রকেট। যা সর্বোচ্চ ১০ কিমি দূর থেকে নিক্ষেপ করা যায়।  এছাড়া এর পাশাপাশি এতে রয়েছে তুরস্কের নিজদের তৈরী অত্যাধুনিক রকেটাসান স্কিরিট ৭০মি.মি. লেজার গাইডেড লাইট ওয়েট মিসাইল সিস্টেম যা ১.৫ থেকে ৮ কিমি পর্যন্ত দূরত্বে টার্গেটে আঘাত করতে সক্ষম। এটি মুলত এন্টি পারসোনাল, এন্টি আর্মোর রকেট হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
    এয়ার টু এয়ার মিসাইল হিসাবে এতে স্ট্রিগার এএএম, এবং মিস্ট্রাল মিসাইল ব্যবহার করা যায় যাদের রেঞ্জ ৮ কিমি।
    এছাড়া এর ওয়েপন বে তে দুইটি ১২.৭মিমি মেশিনগান পড যুক্ত করা যায়। তবে এর প্রাইমারি মেশিন গান হিসাবে রয়েছে একটি ২০ মি.মি. এম-১৯৭ ৩ ব্যারেলের গ্যাটলিং ক্যানন যা ৫০০ রাউন্ড ফায়ার করতে সক্ষম।

    ★ এভিউনিক্সঃ

    T-129 এট্যাক হেলিকপ্টার এর এভিউনিক্স ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত।  এর এভিউনক্স হিসাবে রয়েছে এভিউনিক্স সেন্ট্রাল কমান্ড কম্পিউটার (ACCC) ডিজিটাল ফুল এক্সিস ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম, ২ টি মাল্টিফাংশনাল ডিসপ্লে, ইন্ট্রিগ্রেট আইএনএস, জিপিএস ডপ্লার নেভিগেশন সিস্টেম, ডিজিটাল ম্যাপ, VHF/UHF কমিউনিকেশন সিস্টেম আইএফএফ ট্রান্সপন্ডারসহ এয়ার ডেটা সিস্টেম এবং রাডার অল্টামিটার।

    বলতে গেলে এটি পুরোপুরি হাইটেক এভিয়েশন প্রযুক্তির এক টি প্যাকেজ।

    ★ পাওয়ার_প্লান্টঃ

    এর পাওয়ার প্লান্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে দুইটি LHTEC CTS800-4A turboshaft ঈঞ্জিন যার প্রতিটি  ১৩৬১ হর্স পাওয়ার উৎপন্ন করতে সক্ষম এবং; ফুল লোডড অবস্থায় একে ২৭৮ কিমি প্রতি ঘন্টা গতি তে উড্ডয়ন করাতে সক্ষম। এই দুইটি ঈঞ্জিন হেলিকপ্টার টিকে ১২ মিটার পার সেকেন্ড গতি তে উপরে তুলতে পারে এবং সর্বোচ্চ ৬০৯৬ মিটার উচ্চতায় এটি অপারেশন পরিচালনা করতে পারে।

    ★ অসুবিধা_সমুহঃ

    এই হেলিকপ্টার এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। এটি A129 মাগাস্টা হেলিকপ্টার থেকে সংস্কার করা হলেও এর সেন্সর তুরস্কের তৈরী যেগুলো ওজন অপেক্ষাকৃত বেশি যা হেলিকপ্টার টির উড্ডয়নে সমস্যার সৃস্টি করত। এই সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে হেলিকপ্টার টির পেছনে ১৩৭ কেজি অতিরিক্ত ওজন যোগ করা হয় যার ফলে এর গতি এবং উচ্চতা হ্রাস পায়। এই ১৩৭ কেজি অতিরিক্ত ওজন হেলিকপ্টার টির ওয়েপন লোডও কমিয়ে দিয়েছে।

    এর আরেকটি সমস্যা হলো এর মিলিমিটার ওয়েভ রাডার। পৃথিবীতে যে কয়েকটি এট্যাক হেলিকপ্টার এই ধরনের রাডার ব্যাবহার করে তার অধিকাংশ মেইন রোটার এর উপর রাডার স্থাপন করে আর কিছু ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার এর ঠিক সামনে এই রাডার বসানো হয়। কিন্তু T-129 এর ক্ষেত্রে এই রাডার এর ওয়েপন বে তে বহন করতে হয়। যা এর ওয়েপন লোড কমিয়ে দেয়। তবে এই রাডার কে রোটার মাউন্টেন রাডার হিসাবে যুক্ত করার বেপারে কাজ করা হচ্ছে। তবে আপাতত এই রাডার সহ নিলে সেক্ষেত্রে সেটি ওয়েপন বেতে বহন করতে হবে।

    তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
    শরিয়াহর জন্য আমরা নিবেদিত.....

  • #2
    আল্লাহ তা‘আলা আপনার সকল মেহনতকে কবুল করুন এবং আমাদেরকে উপকৃত করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X