যদি বলা হয় বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত এসল্ট রাইফেল কোনটি তাহলে অনেকই বলবেন একে-৪৭ ৷ এক পরিসংখ্যান মতে পৃথিবীতে ৫০০ মিলিয়ন আগ্নেয়াস্ত্রের ১০০ মিলিয়ন কালাশনিকভ পরিবারের ও তার ৪ ভাগের ৩ ভাগ হচ্ছে একে-৪৭ ৷
একে-৪৭এর নির্মাতা হচ্ছে মিখাইল কালাশনিকভ ৷ ১৯১৯ সালে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ও ১৯৩৮ সালে তিনি সোভিয়েত রেড আর্মিতে যোগদান করেন ৷ প্রথমে ট্যাংক মেকানিক হিসাবে যোগদান করলেও পরে ট্যাংক ব্যাটালিয়নের কমান্ডারও হন ৷ যুদ্ধের সময় তিনি জার্মানদের সাথে লড়তে গিয়ে প্রচন্ড আহত হন ও সাময়িক ছুটিতে যান ৷ ঐসময় জার্মানদের তৈরি এসল্ট রাইফেল সোভিয়েতদের উদ্বিগ্ন করে তোলে ৷ কারন সোভিয়েতদের ppsh-41 সাবমেশিন গান ও মোজিন নাগেন্ট বোল্ট একশন রাইফেল থেকে জার্মান Sturmgewehr 44 ছিলো অনেক উন্নত ও ভয়ংকর ৷
তাই তিনি একটি নতুন রাইফেল ডিজাইন করার চিন্তা করেন ৷ প্রথমে তা ব্যর্থ হয় সোভিয়েত আর্মি তা গ্রহন করেনি ৷ ১৯৪৭ সালে মিখাইল কালাশনিকভ ও আরো কয়েকজন মিলে একে-৪৭ ডিজাইন করেন ৷ সোভিয়েত আর্মি এর পারফরমেন্স এ অবাক হয় ও পরে তা গ্রহন করে নেয় ৷
AK-47 এর A এসেছে রাশিয়ার Avtomat শব্দ থেকে যার অর্থ স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেটিক ৷ K এসেছে মিখাইল কালাশনিকভ এর নামের কালাশনিকভ থেকে ৷ 47 হচ্ছে এর প্রস্তুতির বছর ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পর সোভিয়েতরা SKS ও RPD LIGHT MACHINE GUN তৈরি করে ৷ সার্ভিসে আসার পর তা SKS কে রিপ্লেস করে ৷ তারই সাথে কয়েক বছর পর আসে RPK লাইট মেশিন গান যা দেখতে কিছুটা একে-৪৭ এর মত তবে ব্যারেল তুলনামূলক বড় ৷ AK-47 সেই গুলিই ব্যবহার করতো যা SKS ও RPD LIGHT MACHINE গান করে ৷ তা হচ্ছে ১৯৪৩ এ আবিষ্কৃত 7.62*39 mm M43 কার্টিজ ৷ ১৯৫৬ সালে চীন একে কপি করে টাইপ-৫৬ বানায় যা আমাদের পুলিশ ব্যবহার করে ৷
১৯৫৯ সালে একে-৪৭ এর আপগ্রেডেড ভার্সন AKM বের করা হয় ৷ যার ওজন একটু কম , উন্নত স্ট্যাম্পড রিসিভার ও মাজেল ব্রেক থাকে ৷ ৭.৬২ কার্টিজের মূল সমস্যা হচ্ছে রিকয়েল ও ব্লোব্যাক ৷ অর্থাৎ চালানোর সময় রাইফেল ধাক্কা দেয় বেশি ৷ তাই ১৯৭৪ সালে সোভিয়েতরা 5.45*39mm কার্টিজের AK-74 বের করে ৷ এর রিকয়েল ছিল অনেক কম এবং একুরেসি ছিলো বেশি ৷ তাছাড়া ভেদনক্ষমতা বাড়াতে এর মাজেল ভেলোসিটি বা গুলির বেগ বাড়ানো হয় ৷ এই একে-৭৪ ই রাশিয়ার পদাতিক বাহিনীর মূল অস্ত্র ৷ এরপর আপগ্রেড হিসাবে আসে AK-12 AK-15 সহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট
Comment