কম্পিউটারের কোনও পাসওয়ার্ডই অভেদ্য নয়। তা সে যতই জটিল হোক না কেন। যে কেউ যখন তখন এই নিরাপত্তার দেওয়াল ভেঙে ঢুকে পড়তে পারে। চুরি, ছিনতাই তো সামান্যই, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙেচুরে দিয়ে কোনও দেশকে ধ্বংসও করে দিতে পারে শত্রুপক্ষের সেনাবাহিনী!
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম্পিউটার প্রযুক্তির যত উন্নতি হচ্ছে, ততই দুর্বল হয়ে পড়ছে গোপন পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা। সেই ‘তালা’ খোলার ‘চাবি’র অভাব হচ্ছে না। চাবি বানানোটাও খুব সহজ হয়ে যাচ্ছে।
পাসওয়ার্ডের ‘চরিত্র’ সরল, সাদাসিধে বা অত্যন্ত জটিল, ক্রূর, কূটিল, যা-ই হোক না কেন। পাসওয়ার্ডের ‘চরিত্র’ ঠিক হয় তার ‘ক্যারেক্টার’ দিয়ে। নানা ভাবে সেই ‘ক্যারেক্টার’ বানানো হয়। কখনও শুধুই সংখ্যা (নাম্বার) দিয়ে। কখনও শুধুই ছোট ও বড় ইংরেজি বর্ণ (অ্যালফাবেটস)। আবার কখনও সংখ্যা আর ছোট ও বড় বর্ণের মিশেল (মিক্সড ফর্ম-১) ঘটিয়ে। কখনও বা সংখ্যা, ছোট ও বড় বর্ণ আর প্রতীক বা চিহ্নের (সিম্বল) মিশ্রণে (মিক্সড ফর্ম-২)। সংখ্যা হোক বা বর্ণ অথবা প্রতীক, কিংবা তাদের মিশেল ঘটানো হোক যে ভাবেই, কম্পিউটার পাসওয়ার্ডের ক্যারেক্টার খুব কম হলে, হতে হয় ৩টি। সর্বাধিক ১৮টি। এরই মধ্যে নানা ধরনের পারম্যুটেশন ও কম্বিনেশনের মাধ্যমে কোটি কোটি পাসওয়ার্ড তৈরি করা যায়।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গবেষণা ও উপদেষ্টা সংস্থা ‘গার্টনার’-এর দেয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, দিন দিন কম্পিউটার প্রযুক্তি যে ভাবে তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে তাতে শুধু সংখ্যা দিয়ে বানানো পাসওয়ার্ডের তালা খোলাটাই সবচেয়ে সহজ। সেই সব পাসওয়ার্ডগুলির ক্যারেক্টার যদি ৩ থেকে ৮-এর মধ্যে হয়, তা হলে সবে ‘অআকখ’ শেখা ‘হ্যাকার’রাও তা সঙ্গে সঙ্গে খুলে ফেলতে পারবেন। ৯ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে ৪ সেকেন্ড। ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, এবং ১৫ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে যথাক্রমে ৪০ সেকেন্ড, ৬ মিনিট, ১ ঘণ্টা, ১১ ঘণ্টা, ৪ দিন এবং ৪৬ দিন। ১৬ আর ১৭ ক্যারেক্টরের পাসওয়ার্ড ভাঙতে সময় লাগবে যথাক্রমে ১ বছর এবং ১২ বছর। একটু বেশি সময় লাগবে ১৭ ক্যারেক্টরের ক্ষেত্রে। ১২৬ বছর।
ছোট ও বড় ইংরেজি বর্ণ (অ্যালফাবেটস) দিয়ে তৈরি পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে খুব বেশি হলে সময় লাগতে পারে যথাক্রমে ৮ সেকেন্ড, ৫ মিনিট, ৩ ঘণ্টা, ৪ দিন এবং ১৬৯ দিন। ১১ ও ১২ ক্যারেক্টারের রহস্য ভেঙে ফেলা যাবে যথাক্রমে ১৬ বছর আর ৬০০ বছরের মধ্যে। ১৩ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে ২১ হাজার বছর। ১৪, ১৫ এবং ১৬ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে লাগবে যথাক্রমে ৭ লাখ ৭৮ হাজার বছর, ২ কোটি ৮০ লাখ বছর এবং ১০০ কোটি বছর। ১৭ ক্যারেক্টারের তালা ভাঙতে সময় লাগবে এই ব্রহ্মাণ্ডের বয়সের দ্বিগুণেরও বেশি। ৩ হাজার ৬০০ কোটি বছর। আর ১৮ ক্যারেক্টারের জন্য লাগবে ১ লাখ কোটি বছর।
‘গার্টনার’-এর পরিসংখ্যান আরও জানিয়েছে, সংখ্যা আর ছোট ও বড় বর্ণ মিশিয়ে পাসওয়ার্ড বানানো হলে, সেই দেয়াল ভাঙতে একটু অসুবিধা হয় হ্যাকারদের। সময়টা একটু বেশি লাগে। কিন্তু সেই ‘দেয়াল’টাও অভেদ্য নয় মোটেই। ‘তালা’ খুলে ফেলা যায় একটু কায়দা-কসরত করে।
মিক্সড ফর্ম-১ এর ক্ষেত্রে ৩ আর ৪ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেলা যায় সঙ্গে সঙ্গেই। ৫, ৬, ৭ এবং ৮ ক্যারেক্টারের রহস্য ভেদ করতে সময় লাগে যথাক্রমে ৩ সেকেন্ড, ৩ মিনিট, ৩ ঘণ্টা এবং ১০ দিন। ৯ ক্যারেক্টারের জন্য লাগে ১৫৩ দিন আর ১০ ক্যারেক্টারের জন্য সময় লাগে ১ বছর। ১১ ক্যারেক্টারের জন্য ১০৬ বছর। তবে ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে সময়টা একটু বেশিই লাগবে। যথাক্রমে ৬ হাজার বছর, ১০ লাখ ৮ হাজার বছর, ২ কোটি ৫০ লাখ বছর, ১০০ কোটি বছর এবং ৯ হাজার ৭০০ কোটি বছর। মানে, এই ব্রহ্মাণ্ডের বয়সের ৬ গুণ! আর ১৭ এবং ১৮ ক্যারেক্টারের জন্য লাগে যথাক্রমে ৬ লাখ কোটি বছর আর ৩৭৪ লাখ কোটি বছর।
সবাই যেমন পাসওয়ার্ড চান, তা ভাঙতে লাগে ৫৭ দিন! হ্যাকারদের কাজটা আরও কিছুটা কঠিন হয়ে যায় সংখ্যা, ছোট, বড় বর্ণ, প্রতীক, চিহ্ন মিশিয়ে পাসওয়ার্ড বানানো হলে। সেখানেও অবশ্য ৩ আর ৪ ক্যারেক্টারের তালা খুলে ফেলা সম্ভব সঙ্গে সঙ্গেই। ৮ ক্যারেক্টার খুলতে সময় লাগে ৫৭ দিন। ৯ ক্যারেক্টার খুলতে সময় লাগে ১২ বছর। তবে ৯ ক্যারেক্টারের পর থেকেই সময়ের হিসাবটা লাফিয়ে অনেকটা বেড়ে যায়। ১০ ক্যারেক্টারে সময় লাগে ৯২৮ বছর। ১১-য় ৭১ হাজার বছর। ১২-য় ৫০ লাখ বছর। ১৩ ক্যারেক্টার থাকলেই হিসাবটা পৌঁছে যায় কোটি বছরে। ৪২ কোটি ৩০ লাখ বছর। ১৫-য় পৌঁছলে সেটা হয়ে যায় ২ লাখ কোটি বছর। ১৬-য় ১৯৩ লাখ কোটি বছর।
দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অনলাইন ভার্সন থেকে সংগৃহীত ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম্পিউটার প্রযুক্তির যত উন্নতি হচ্ছে, ততই দুর্বল হয়ে পড়ছে গোপন পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা। সেই ‘তালা’ খোলার ‘চাবি’র অভাব হচ্ছে না। চাবি বানানোটাও খুব সহজ হয়ে যাচ্ছে।
পাসওয়ার্ডের ‘চরিত্র’ সরল, সাদাসিধে বা অত্যন্ত জটিল, ক্রূর, কূটিল, যা-ই হোক না কেন। পাসওয়ার্ডের ‘চরিত্র’ ঠিক হয় তার ‘ক্যারেক্টার’ দিয়ে। নানা ভাবে সেই ‘ক্যারেক্টার’ বানানো হয়। কখনও শুধুই সংখ্যা (নাম্বার) দিয়ে। কখনও শুধুই ছোট ও বড় ইংরেজি বর্ণ (অ্যালফাবেটস)। আবার কখনও সংখ্যা আর ছোট ও বড় বর্ণের মিশেল (মিক্সড ফর্ম-১) ঘটিয়ে। কখনও বা সংখ্যা, ছোট ও বড় বর্ণ আর প্রতীক বা চিহ্নের (সিম্বল) মিশ্রণে (মিক্সড ফর্ম-২)। সংখ্যা হোক বা বর্ণ অথবা প্রতীক, কিংবা তাদের মিশেল ঘটানো হোক যে ভাবেই, কম্পিউটার পাসওয়ার্ডের ক্যারেক্টার খুব কম হলে, হতে হয় ৩টি। সর্বাধিক ১৮টি। এরই মধ্যে নানা ধরনের পারম্যুটেশন ও কম্বিনেশনের মাধ্যমে কোটি কোটি পাসওয়ার্ড তৈরি করা যায়।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গবেষণা ও উপদেষ্টা সংস্থা ‘গার্টনার’-এর দেয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, দিন দিন কম্পিউটার প্রযুক্তি যে ভাবে তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে তাতে শুধু সংখ্যা দিয়ে বানানো পাসওয়ার্ডের তালা খোলাটাই সবচেয়ে সহজ। সেই সব পাসওয়ার্ডগুলির ক্যারেক্টার যদি ৩ থেকে ৮-এর মধ্যে হয়, তা হলে সবে ‘অআকখ’ শেখা ‘হ্যাকার’রাও তা সঙ্গে সঙ্গে খুলে ফেলতে পারবেন। ৯ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে ৪ সেকেন্ড। ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, এবং ১৫ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে যথাক্রমে ৪০ সেকেন্ড, ৬ মিনিট, ১ ঘণ্টা, ১১ ঘণ্টা, ৪ দিন এবং ৪৬ দিন। ১৬ আর ১৭ ক্যারেক্টরের পাসওয়ার্ড ভাঙতে সময় লাগবে যথাক্রমে ১ বছর এবং ১২ বছর। একটু বেশি সময় লাগবে ১৭ ক্যারেক্টরের ক্ষেত্রে। ১২৬ বছর।
ছোট ও বড় ইংরেজি বর্ণ (অ্যালফাবেটস) দিয়ে তৈরি পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে খুব বেশি হলে সময় লাগতে পারে যথাক্রমে ৮ সেকেন্ড, ৫ মিনিট, ৩ ঘণ্টা, ৪ দিন এবং ১৬৯ দিন। ১১ ও ১২ ক্যারেক্টারের রহস্য ভেঙে ফেলা যাবে যথাক্রমে ১৬ বছর আর ৬০০ বছরের মধ্যে। ১৩ ক্যারেক্টারের তালা খুলতে লাগবে ২১ হাজার বছর। ১৪, ১৫ এবং ১৬ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে লাগবে যথাক্রমে ৭ লাখ ৭৮ হাজার বছর, ২ কোটি ৮০ লাখ বছর এবং ১০০ কোটি বছর। ১৭ ক্যারেক্টারের তালা ভাঙতে সময় লাগবে এই ব্রহ্মাণ্ডের বয়সের দ্বিগুণেরও বেশি। ৩ হাজার ৬০০ কোটি বছর। আর ১৮ ক্যারেক্টারের জন্য লাগবে ১ লাখ কোটি বছর।
‘গার্টনার’-এর পরিসংখ্যান আরও জানিয়েছে, সংখ্যা আর ছোট ও বড় বর্ণ মিশিয়ে পাসওয়ার্ড বানানো হলে, সেই দেয়াল ভাঙতে একটু অসুবিধা হয় হ্যাকারদের। সময়টা একটু বেশি লাগে। কিন্তু সেই ‘দেয়াল’টাও অভেদ্য নয় মোটেই। ‘তালা’ খুলে ফেলা যায় একটু কায়দা-কসরত করে।
মিক্সড ফর্ম-১ এর ক্ষেত্রে ৩ আর ৪ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেলা যায় সঙ্গে সঙ্গেই। ৫, ৬, ৭ এবং ৮ ক্যারেক্টারের রহস্য ভেদ করতে সময় লাগে যথাক্রমে ৩ সেকেন্ড, ৩ মিনিট, ৩ ঘণ্টা এবং ১০ দিন। ৯ ক্যারেক্টারের জন্য লাগে ১৫৩ দিন আর ১০ ক্যারেক্টারের জন্য সময় লাগে ১ বছর। ১১ ক্যারেক্টারের জন্য ১০৬ বছর। তবে ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ ক্যারেক্টারের পাসওয়ার্ড ভাঙতে সময়টা একটু বেশিই লাগবে। যথাক্রমে ৬ হাজার বছর, ১০ লাখ ৮ হাজার বছর, ২ কোটি ৫০ লাখ বছর, ১০০ কোটি বছর এবং ৯ হাজার ৭০০ কোটি বছর। মানে, এই ব্রহ্মাণ্ডের বয়সের ৬ গুণ! আর ১৭ এবং ১৮ ক্যারেক্টারের জন্য লাগে যথাক্রমে ৬ লাখ কোটি বছর আর ৩৭৪ লাখ কোটি বছর।
সবাই যেমন পাসওয়ার্ড চান, তা ভাঙতে লাগে ৫৭ দিন! হ্যাকারদের কাজটা আরও কিছুটা কঠিন হয়ে যায় সংখ্যা, ছোট, বড় বর্ণ, প্রতীক, চিহ্ন মিশিয়ে পাসওয়ার্ড বানানো হলে। সেখানেও অবশ্য ৩ আর ৪ ক্যারেক্টারের তালা খুলে ফেলা সম্ভব সঙ্গে সঙ্গেই। ৮ ক্যারেক্টার খুলতে সময় লাগে ৫৭ দিন। ৯ ক্যারেক্টার খুলতে সময় লাগে ১২ বছর। তবে ৯ ক্যারেক্টারের পর থেকেই সময়ের হিসাবটা লাফিয়ে অনেকটা বেড়ে যায়। ১০ ক্যারেক্টারে সময় লাগে ৯২৮ বছর। ১১-য় ৭১ হাজার বছর। ১২-য় ৫০ লাখ বছর। ১৩ ক্যারেক্টার থাকলেই হিসাবটা পৌঁছে যায় কোটি বছরে। ৪২ কোটি ৩০ লাখ বছর। ১৫-য় পৌঁছলে সেটা হয়ে যায় ২ লাখ কোটি বছর। ১৬-য় ১৯৩ লাখ কোটি বছর।
দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অনলাইন ভার্সন থেকে সংগৃহীত ।
Comment